পাগলা
পাগলা
প্রায় বছর তিরিশেরও আগে, আশির দশকে,
টেবিল ফ্যানটা যেদিন কেনা হয়েছিল,
বাড়িতে আসার আগেই এটা অস্ত্র বনেছিলো!
রেগে গিয়ে একজন মারতে চেয়েছিল এটা দিয়েই।
প্রয়োজন নেই জানাবার, কেন? অথবা কি কারন?
তাই সেসব কথা আর করছিনা এখানে উত্থাপন।
কাউকে না মারলেও কিছু ক্ষতি হয় টেবিল ফ্যানটার,
লোক পাওয়া যায়নি আর এই ফ্যানটা সারাবার!
সমাধান নেই, পরীক্ষা নিরিক্ষা করেছেন অনেকেই!
ইলেকট্রিক শক্ দেয় যে কেউ এটা একটু ছুলেই।
কিন্তু আজও বড় স্ট্যান্ড ফ্যানও পাল্লা দিতে পারেনা,
এমন মিষ্টি হাওয়া নেই বাড়ির আর কোনও ফ্যানেই।
তাই টেবিলে না থেকে, থাকে আমার বিছানাতেই,
শুধু বিছানায় নয়, একেবারে মশারির ভেতরেই।
আমরা জানি বলে কেউ ছুঁইনা ওটা চলার সময়,
যারা জানেনা অসাবধানে তাদেরই নিয়েই যত ভয়।
বছর দশেক আগেকার কথা হবে,
একদিন বাড়িতে নারায়ন পূজো হচ্ছিলো,
আমার মা মন দিয়ে পূজোর কাজ করছিলো।
বেশ গরম, মাস টা ছিল তখন জুলাই,
কষ্ট কমানোর জন্যে ফ্যান সেট করেছে জামাই।
হঠাৎ মায়ের গায়ে ফ্যানটার ছোঁয়া লেগে যায়,
আর যাবে কোথায়! ক্ষিপ্ত শাশুড়ি ওকে বকেছিলো।
আমার আবার খুব প্রিয় এই পাগলা টেবিল ফ্যানটাই,
প্রতিবছর গরমে ওটাকেই আমার চাই।
তা না হলে যে রাতের ঘুম উড়ে যায়,
কেউ কিছু মনে করলেও আমার কিছু করার নেই।
শুধু আমি নই, ক্ষুদে পিঁপড়ে গুলোও
টেবিল ফ্যানটা কে দেখি বেশ পছন্দ করে,
কেন যেন মাঝে মাঝেই ওর স্ট্যান্ডের ভেতর
নিজেদের অস্হায়ী বাসা বানায়।
কিছুদিন আগের কথা, এই তো মাস তিনেক আগেই,
একটু বৃষ্টি হয়েছিল, খুব মজার ঘটনা ঘটেছিল,
টেবিল ফ্যানটা আমাকেই কন্ডাক্টর বানিয়েছিলো!
শক্ লাগছিলো সবার বিছানায় বসা আমাকে ছুলেই।
তারপর ওটাকে একটা কাঠের পিঁড়িতে বসাই,
ব্যাস্! আপাতত আর কোনও রকম সমস্যা নেই।
