নুনের ভাগ
নুনের ভাগ
এখন এক কিলো নুনের দাম প্রায় পঁচিশ টাকা,
বেশ মনে আছে দামটা ছিলো দশ পয়সা একসময়।
না, তখনও জানতাম না নুনের কতো দাম,
কারো নুন খেলে নাকি গুণ গাইতে হয়, শুনেছিলাম।
একদিন তেঁতুল তলায় বেশ কিছু তেঁতুল,
দুই বন্ধু মিলে কুড়িয়েছিলাম।
কিন্তু যা টক! এমনি এমনি কি করে খাওয়া যায়!
টিফিনের বাঁচানো পয়সা ছিল সাথে,
তার থেকে দশ পয়সা নিয়ে হাতে_______
পথের বাঁ ধারের একটি মুদির দোকানে গিয়ে,
শুধু দশ পয়সার নুন চেয়েছিলাম।
যতটা নুন দিতে চাইলো কাগজের এক বড় ঠোঙায়,
দেখে তো আমাদের আক্কেল গুড়ুম !
বুঝিয়ে তখন কথাটা খুলে বলি, না না অতটা নয় !
এই তেঁতুল গুলো খাবো, একটুখানি নেবো।
দোকানদারের নাম "হরি" কিনা জানা ছিলো না,
কিছুতেই সে তো আর পয়সা নেবে না।
হরির মতোই একটু সদয় হাসি হেসে,
কাগজের পুরিয়াতে নুন দিয়েছিলো ভালোবেসে!
দুজনে মিলে সেই নুন ভাগ করে মজায় তেঁতুল খাই।
বুঝিনা কি করে এত গুলো বছর যে চলে যায়।
অতীতের এসব অযাচিত ভালোবাসার কথা ভেবে,
আজও চোখে কি করে যেন নোনা জল এসে যায় ।
কিন্তু শুধুই করে টলোমল, পারেনা জলটা পড়তে,
আনন্দ টা বেশ পারে চোখের জল শুষে নিতে।
নির্দিষ্ট জায়গাটা আজ আর মনে নেই,
ওপাশে কোথায় আগেকার মতো মুদীর দোকানটাই!
মনে মনে তাই, আমার হরি মুদীকে ধন্যবাদ জানাই,
ঐ মানুষটার গুণ গাওয়া হলো কি না তা জানা নেই।
শুধু মাত্র মন আর ক্যামেরা ছাড়া
এমন কোনও খাঁচা নেই এই দুনিয়ায়,
যেখানে কারো শৈশবকে বন্দী করে রাখা যায়।
কিন্তু সময়! সে তো একেবারেই চলে যায়।
তাকে বন্দী করার মতো কোনও ফন্দী নেই।