মশারি
মশারি
গ্রীষ্মের কড়া রোদে হায়!
শরীর যখন ক্লান্ত হইয়া যায়
অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো তখন যে বিছানা ছুঁতে চায়।
সূয্যিমামার যখন তেজ কমে যায়
চক্ষুদ্বয়ও চুপিসারে তখন ঘুমের প্রস্তুতি নেয়।
ইচ্ছা হলেও যে ভাই
কোনো উপায় যে দেখি নাই।
চক্ষুদ্বয় বুজে আসলেই হায়!
শরীরে কামড় বসিয়া যায়,
নিমেষেই যে কত লিটার রক্ত খাইয়া যায়
তার কোনো হিসাব খুঁজি নাই।
জীবন অতিষ্ঠ তাই
ওই ওদের কামড়ে ভাই,
এ অন্যায়, এ অন্যায়
কতকাল সইবো বলো তাই
সকলে মিলে চলো ভাই
হাইকোর্টের বিচার চায়।
বিচারপতি সব শুনে অবাক
ক্ষুদে আসামির পড়লো ডাক।
আসামি উপস্থিত হলে ভাই
বিচারপতি তাকে না দেখিতে পায়,
কোনো উপায় না পাইয়া আসামি হায়!
অভিমানের বশে কামড় দেয়।
বিচারপতি খুবই বিচক্ষণী
এ যে উড়ন্ত আসামি!!
দিবারাত্রি কোর্টে চলল সে মামলা
বুদ্ধিজীবীরা অনেক ভাবিয়া এর নাম দিল তাই
"জনগণের ওপর নির্বিচারে হামলা"।
বিচারপতি আইন খুঁজিতে যায়
কোথাও কোনো আইন না পায়
শেষমেশ জনগণের চাটি খাইয়া হায়!
মৃত্যুদণ্ড হঠাৎ ঘোষিত হইয়া যায়।
দিন নাই, ক্ষন নাই,ফাঁসিও নয় তাই
দোষীর উপযুক্ত শাস্তি দিতে হলে ভাই,
প্রচুর প্রচুর ধোঁয়া চায়।
তাই শুনে জনগণ সবাই
যেখানে সেখানে আগুন ধরিয়া দেয়
এ কি বিশৃঙ্খলতা হায়!
বুদ্ধিজীবীরা প্রশ্ন তোলে তাই।
তবুও কোনো লাভ না হয়
ওরা যে সব উড়িয়া পালাই।
উপরন্তু জনতার সমস্যা বাড়িয়া যায়
চোখে জ্বালার সৃষ্টি হয়,
শ্বাস বন্ধ হইবার আর বেশি সময় যে নাই,
এ কেমন রায় হায়!
বুঝিল তবে, এ যে জনগণের মৃত্যুদণ্ড ভাই।
আবারও মিটিং হওয়া চায়
এসো সকলে আবার মিলনের গান গায়,
দোষীর শাস্তি হওয়া চায়
সুপ্রিমকোর্টে এবার চলো তাই।
বিচারপতি সব শুনিয়া ভাই
তৎক্ষণাৎ রায় শুনিয়ে দেয়,
"ঘরে আনো গুড নাইট
ওদের সঙ্গে করবে ফাইট।"
অবশেষে ঘরে এল গুড নাইট
ওদের সঙ্গে করলো ফাইট।
ঘরে ম্যাজিক ঘটলো হঠাৎ
ওরা নিমেষেই হল কুপোকাত।
কিছুদিন ধরে তাই
জনগণের ঘুম ভাঙে না হায়!
হঠাৎ জোরালো ধ্বনি ওঠে ভাই
দিগ্বিদিক কাঁপিয়া যায়,
না চাইলেও তাই
জনগণের ঘুম উড়িয়া যায়।
বিশেষজ্ঞরা এবার চেঁচিয়ে বলে উঠলো
এ যে স্বাস্থ্যের পক্ষে নয়তো ভাল!!
কি যে করি আর
কোথায় পাবো আবার হাতিয়ার!!
বুদ্ধিজীবীরা বললো তবে
অত ভেবে কি হবে,
সকলে মিলে ধৈর্য্য ধরি
মুখে বলি হরি, হরি।
সবাই মিলে ব্যবহার করি
ওই আদিকালের পুরানো মশারি।
শেষে হরির নিকট সকলে করি আবদার
ঘুমটা এবার হয় যেন জোরদার।।