মেঘ ও ঝড়
মেঘ ও ঝড়
গুরু শিষ্য দুই অমূল্য রতন ;
বৈশাখী মেঘ আর জৈষ্ঠ্যের ঝড়,
শুনেছি তাদের দীর্ঘ কথোপকথন ;
আম কাঁঠালের গন্ধে বন্ধ ঘর ।
দেখেছি কোথায় ; কোন জায়গায় ;
চামড়ার চোখ বুঝেনি কিছু,
আমায় দেখে কেবলই চেঁচায় ;
এবার বাপু ছাড় তো পিছু ।
মুখোমুখি বসে ওরা দুইজন ;
পরিচিত স্বর; চেনা ভঙ্গিমা,
চুরুলিয়া নাকি শান্ত ভীষণ ;
শান্তিনিকেতন কি জঙ্গী মা !
চুলদাড়ি গোঁফ রূপালী সাদা ;
আলখাল্লায় চির চেনা,
অন্যের পায়ের চটিতে কাদা ;
ঝাঁকড়া চুলের কারখানা ।
মন অশান্ত দুই জনারই ;
যেন বিরক্ত আমায় দেখে,
চলে যাও ; কিছু নেই বলারই ;
জৈষ্ঠ্যের ঝড় কবিতা লেখে ।
ভারি অশান্ত শান্তি কেতন ;
বড় অসহায় জানিস দুখু,
আসতে যেতে নিচ্ছে বেতন ;
নোবেল কোথায় রুখুসুখু !
গর্জায় সাগর এরা অজাগর ;
রসের ধারা পেয়েও হাতে,
নোবেল হয়তো নয়কো ডাগর;
অগ্নিবীণাও ভেঙেছে রাতে ।
বাঙালি ওরা; আরাম প্রিয় ;
পুরানো ঘি আঙুলে মেখে,
গন্ধ শুঁকে ; নস্যি দিও ;
পাহাড় প্রমাণ স্বপ্ন দেখে ।
যবে গেলি তুই কবরতলে ;
দেয়নি হাতে অগ্নিবীণা,
বিষের বাঁশী ঝর্ণার জলে ;
দিয়েছে ফেলে হৃদয়হীনা ।
বৈশাখী মেঘ আকাশ থেকে;
অশ্রু ঝরায় বাদল বানে,
জৈষ্ঠ্যের ঝড় বলল হেঁকে ;
জনম দিন তবু ভরায় গানে ।
পারেনি ওরা রাখতে ধরে ;
প্রাণাধিক প্রিয় বৃক্ষ আমার,
দিয়েছে কেটে কেমন করে ;
বুকটা এখন তপ্ত ধামার ।
একটি বৃন্তে কুসুম দু'টি ;
ফুটত গাছে সুরভি দিতে,
যা বাছা! যা গুটিগুটি ;
বুকফাটা শ্বাস নিতে নিতে।