রাইগঞ্জ
রাইগঞ্জ


আমার শহর যেন রাইকিশোরী, কৃষ্ণের প্রিয়তমা,
ভাগাভাগির পশ্চিম দিনাজপুরের এটি এক মহকুমা।
বহু গ্ৰামের রায় দের গঞ্জ, গড়ে ওঠে কুলিকের তীরে,
বন্দর, মোহনবাটি, বিধাননগর বাড়ে ধীরে ধীরে।
পালদের জনদরদী রাজারা সদাই প্রজার ভালো চায়,
বড় বড় পুকুর দীঘী কাটায়, খাল কেটে নদী বানায়।
বৃষ্টির রিমঝিম, পাখির কলতান, কুলিকের কল্লোল,
এখানেই যে শামুকখোল খুঁজে নেয় পছন্দের স্নেইল।
এন.এইচ.থার্টি ফোর দিনরাত জাগে শহরের পাশে,
অনায়াসে কুলিকের বুক চিরে সে যে বেরিয়ে আসে।
কদম, ইউক্যালিপটাস, কৃষ্ণচুড়া ও রাধাচুড়া ফুলের পাপড়ি ঝরে
রাঙা পথ যেন থাকে কার অপেক্ষায় !
হলুদ ফুলের বান্দরলড়ি/সোনাঝুরি,স্বাগত জানায়।
বেগুনী ফুলের জারুল গাছ রাস্তার ধারে সারি সারি।
এ যে আমার প্রানের শহর, রায়গঞ্জ,রাইগঞ্জ,যা বলো
এই ছোট্ট সাধের শহরটাতেই আছে যে আমার বাড়ি।
কুলিকের জল-জঙ্গল পাখীরা এতো ভালোবাসে,
পঞ্চাশ হাজারের বেশি পাখি এখানে বেড়াতে আসে।
শুধু তাই নয়, বনবিড়াল, খরগোসের সাথে সাথেই,
শেয়ালকেও তো এখানে লুকিয়ে থাকতে দেওয়া হয়।
শহর ও জঙ্গল এতো কাছে ব্যাপারটা নয় গোলমেলে,
এমন সুন্দর প্রানীদের সহাবস্থান সহজে কি মেলে !
বর্ষার ভরা নদী যায় শুকিয়ে, চৈত্রের খরা এলে,
শিয়ালমণি ফরেস্টে মেলা বসে অন্নপূর্ণা পূজো এলে।
মনে পড়ে কুলিক ব্রীজ ঝুলে যায় সাতাশীর বন্যায়,
খুব শিগগিরই মিলিটারি, এক লোহার ব্রিজ বানায়।
তাই তো আসামের সাথে বাংলার যোগাযোগ রয় !
হাঁফ ছেড়ে বাঁচে , বাস, ট্রাক আর যত সব গাড়ি ,
যখন কুলিক ব্রীজ কে ঠিক করা হয় তাড়াতাড়ি।
ভেঙেছে জেলা আজ বহু লড়াই ও সংগ্ৰামের পর,
উত্তর দিনাজপুর,যেন এই বাংলার সরু কোমর।
বাইরে থেকে চাকরি নিয়ে এসেও লোকে এই শহরে,
বানাতে চায় একদম নিজেদের পছন্দের বাড়ি ঘর।