মা-দান
মা-দান
আবেগের বন্যায় ভেসে গেলে তো চলবে না,
খড়কুটো আঁকড়ে ধরে হলেও শিখতে হবে বাঁচতে।
শিখতে হবে যে সাঁতার কাটা কোনোমতে,
টিঁকে থাকতে হবে এই আপাত কঠিন জীবন নদীতে।
ইউগ্রিস ও টাইফ্রেটিস নদীর সংযোগস্হলে,
কিছু মানুষ আছে যাদের লোকে "মা-দান" বলে।
হাজার হাজার বছর ধরে তাদের জীবন জলেই চলে,
বুক টান করে মোকাবিলা করে কখনও বন্যা এলে।
ভেসে যাবার কথা থাকলেও যায়নি ভেসে,
শুধু খড়কুটো আঁকড়ে ধরেও বাঁচে কিসের আশে?
ওরা জানেনা লোহা লক্কড়, কাঁচ বা কাঠের কারবার,
শুধু একরকম লম্বা খড় দিয়ে ঘর বানায় চমৎকার।
তুহুল নামের সেই ঘরে,জানালা দরজা সব ই বর্তমান,
জানে তো, জীবনে আলো হাওয়ার আছে প্রয়োজন।
ভাসমান সেসব বাড়ি থেকে পাশের বাড়ি যেতে হলে,
ছেলে, মেয়ে নির্বিশেষে সকলেই নৌকা বেয়ে চলে।
জীবনের এই নদীতে তাই খড়কুটো পেয়ে গেলে,
কখনো তাকে অবহেলা করতে নেই।
কে জানে তুহুলের মতোই নামহীন সম্পর্কটাও, ইস্!
টিকে যেতে পারে হয়তো বছর পঁচিশ!
লোহা বা পেরেক নেই তাই জং ধরার কারণ নেই,
কাঁচ ব্যবহার হয়না তাই ভাঙার কোনো ভয় নেই !
হালকা, তাই জল বেড়ে গেলেও যায়না ডুবে,
রয়ে যায় মনের অতল জলের গহীন অনুভবে।
সাত পা একসাথে হাঁটলেই বন্ধুত্ব যেমন হতে পারে,
মনের কথা খুলে বললেও একে অপরের মন কাঁড়ে।
একটু পরিশ্রমে তিনদিনেই মা-দান জনজাতি,
খুব সুন্দরভাবে নানা রকম তুহুল তৈরি করে।
চাই শুধু একটু খেয়াল আর যত্নে দড়িতে বেঁধে রাখা,
ঠিক একটা সম্পর্ক তেমন করেই টিকে যায় বহুদিন,
ভালোবাসার অদৃশ্য সুতোয় যদি যায় জড়িয়ে রাখা।