খাবার
খাবার
ভোর রাতে যে আমার ঘুম ভেঙে যায়,
শুনি, ইঁদুরের ছানাগুলো খিদের জ্বালায়___
চিঁ চিঁ চিঁ, চিঁ চিঁ করে মাঝে মাঝেই চেঁচায়।
বড় ইঁদুরেরা তো ফাঁদে পড়ে দেশান্তরী হয়,
কে এখন ওই ছানাপোনাদের খাবার জোগায়!
বেড়াল ও বেজি তো মাঝে মাঝেই খোঁজ নিয়ে যায়।
চেঁচানোর শব্দ শুনে কবে যে ওদের পেটে ঢোকে হায়!
সম্পর্ক গুলো সব খাদ্য-খাদকের এই দুনিয়ায়।
হয় খাবার জোগাড় করো, নয় অন্যের হাতে মরো!
নিষ্ঠুর এই নীতি মানো, তা নাহলে জায়গা ছাড়ো।
কথাটা শুনতে কঠিন বটে, কিন্তু এ যে সত্যি বড়!
কিছু মুখে খাবার দাও, তারপর তুমি তীর্থ করো,
তা নইলে তোমার সবই বৃথা, যতোই তুমি ভক্ত বড়।
পথের ধারেই রয় দেবতা , মন্দিরেতে খুঁজে মরো,
তোমার যদি বেশি থাকে, আতুরকে নাহয় দান করো।
অন্ধ, খন্জ, অনাথ শিশুর মুখে আহার দেওয়াও দড়!
পূর্ণিমার চাঁদ নাকি ঝলসানো রুটি, কবির কল্পনায়,
ক্ষুধিত মানুষ পেয়ে চাঁদটা তাই ডাকে ইশারায়।
চাঁদকে তো আমিও ডাকি আয়, আয়, আয়, আয়,
মনে ভাবি কখন জানি ও আমার টিপ হয়ে যায়।
চাঁদটা তো অন্ধকারে আমার মনে আলো ছড়ায়!
কখনো নৌকা হয়ে আমায় নিয়ে আকাশে ভেসে যায়,
মনে পড়ছেনা, স্বপ্নের দেশে কি কখনও খিদে পায়!
খিদে পেলে তাই শিশুরা চেঁচায় অথবা ঘুমিয়ে যায়।
খিদের জ্বালাই নাকি আসলে এই পৃথিবী চালায়,
ঐ জ্বালাতেই মানুষ ছোটে, আর কাজ করে যায়,
কৃষক ভায়াও তার পতিত জমিতে ফসল ফলায়।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সকলের মুখে অন্ন জোগায়!
পেটকে শান্ত করে সব মুখেতে যারা হাসি ফোঁটায়,
পৃথিবীর মানুষের কাছে কি তারা ভালোবাসা পায়?
পেট ভরা থাকলে তবেই কবিদের ভাষা জোগায়,
কৃষক, মজুর, বুদ্ধিজীবী সকলকেই প্রণাম জানায়।
