হারালাম অনেক কিছু
হারালাম অনেক কিছু
নিয়ম মাফিক ফুরিয়ে গেলো বছর,
ক্যালেন্ডারের শেষ পাতাটাও অতীত,
ঘড়ির কাঁটা বর্তুলাকার ঘুরে
নতুনের আগমন করে প্রতীত।
নবীন ভোরে অবাক চোখে দেখি
আগের মতোই কলকলিয়ে বইছে নদীর ধারা।
দিনের আকাশে রবি, রাতে জ্যোৎস্নাধারা।
প্রভাতে সোনালী কিরণ, সন্ধ্যাকাশে তারা।
সুনীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা,
পুরোনো ছন্দে জোয়ার ভাটার খেলা।
মাটির সোঁদা গন্ধ মেখে জেগে রয়েছে প্রাণ,
বসন্তের বাতাস শোনে বিহগের কলতান।
বর্ষার ধারাপাত পায় জীবনের কল্লোল,
পদ্ম পাতায় জলের গোলক চকচকে, টলমল।
রয়ে গেছে প্রকৃতির শোভা, হারিয়েছি আরো বেশি,
মানসিকতার পরিবর্তনে প্রতিবেশী পরদেশী।
জীবনের দোরগোড়ায় শিক্ষার ঘরে তালা,
বন্ধ হয়েছে মানুষ হবার পাঠশালা।
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে পরিবর্তনের পালা।
জ্বালাময়ী রোগ শিখিয়ে গেছে মুখ দেখানো মানা,
আন্তরিকতা ছিনিয়ে নিয়ে ছড়িয়ে দিয়েছে ঘৃণা।
অসুস্থকে সেবা করার ইচ্ছে আসেনি মনে,
দূরেই তাকে সরিয়ে রেখেছি,ডাকি নি নিকট পানে।
আপনি বাঁচলে উচ্চারিব নিজের বাপের নাম,
দূর হতে মৃত আত্মীয়জনে সেরেই রেখেছি প্রণাম।
একের চোখে অন্যে রোগী,বাহক হয়েছে রোগের,
ভয়ে মরে যাই, দূরত্ব বাড়াই, স্বার্থ মেনেছি নিজের।
অতিমারিতে প্রয়াত হলেও বাতাসে ছড়ায় বিষ,
সেই বিশ্বাসে ঘৃণার জ্বালায় জ্বলছি অহর্নিশ,
মানবিক বোধ লুপ্ত হয়েছে, লুপ্ত সহানুভূতি,
উন্নত এই মানব সমাজের পাশবিক পরিণতি।
