গান্ধারীর বিলাপ
গান্ধারীর বিলাপ
আমি গান্ধারি কৌরব জননী
আজ এসেছি কুরুক্ষেত্র মাঝে
হে বীরশ্রেষ্ঠ পুত্র দুর্যোধন
কোথা তুমি ?
এ রণাঙ্গনে মোর সহস্র কুলনারী-
এসেছে দেখ; সাদা থান পরে বিরহিণী,
কোথায় ঠাঁই দিলে তাদের ফিরেও তো দেখনি!
হে কৌরব শ্রেষ্ঠ তুমি তো পেয়েছো —
বীরের সদগতি মোর অন্যপুত্রগণ সনে,
কিন্তু, আমি তব মাতা আর পুত্র প্রপুত্রবধূ
কেন তবে অশ্রুপ্লাবনে ভাসছি এমন—
সে খবর রেখেছো কি কভু?
কোথায় তব সে বীরপুঙ্গব বাণী,
বিনা যুদ্ধে আমি না দিব সুচাগ্র মেদিনী৷
আজ এ কুরুক্ষেত্র পড়ে আছে,
হস্তিনাপুর জুড়ে আলো আর কোলাহল৷
পান্ডব সব পেয়েছে অমৃতের বারি,
কৌরব নারী গিলছে শোকের হলাহল৷৷
আজ শত সহস্র প্রজ্জ্বলিত চিতা
বিরহী মনে জ্বালায় শোকের আগুন,
তোমরা যদি থাকতে আমার আঁচল ছায়ায়
এ মাতৃ মনে বই তো সুখের ফাগুন৷
সব শেষ ,আজ সবকিছু শেষ মোহে
কৌরবসম আমিও যে ছিলেম অন্ধ
রাজভামিনী রাজপুর হতে পথের ধুলায় থিতু,
কার অভিশাপে হল যে কপাল মন্দ,রাজদ্বার বন্ধ৷
আজ শুধু বিলাপে ভরা এ অন্তরে
খুঁজে চলি জঠরে রক্ত মাংসের কিছু
অবশিষ্ঠ যদি থাকে৷
হায় রে আগামী বসন্ত —
কত বে-রঙিন রঙ মেখে,
দাঁড়িয়ে আছো দুয়ারে আমার
বিলাপে বিলাপে শোকের ছায়ায় ঢেকে৷