চিরস্থায়ী কিছুই নয়
চিরস্থায়ী কিছুই নয়
এখনও হয়তো আছে সেই সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দির,
আছে হয়তো রূপগন্জের ঐ গমগম করা বাজার।
রূপরাম দত্ত ছিলেন উকিল, নাটোরের রানী ভবানীর,
সম্পত্তি কিনে হলেন আদালতপুরের তালুকদার ।
নড়াইলে তিনি নিজ বসতি স্থাপন করেন।
রূপরাম এর ছেলে কালী শঙ্কর দত্তও বড় হবার পর,
নাটোরের জমিদারীতেই চাকরি করতেন।
কর্নওয়ালিসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তোতে _____
নাটোরের জমিদারীর খাজনা পড়লো বাকি ।
কালী শংকর ছিলেন যথেষ্ট চতুর ও বুদ্ধিমান !
নীলামে সম্পত্তি বিক্রি হতে থাকলে তা কিনে নেন।
বেহাত না হয়ে সম্পত্তি রইলো অন্ততঃ তাঁর কাছেই,
নড়াইলের জমিদার তিনি হয়েছিলেন এভাবেই।
শুধু তাই নয় প্রজাদের করেন উন্নয়ন ও উপকার।
একটু জমিদারী মেজাজ ছিল বটে কিন্তু দরাজ দিল !
নাম তাঁর ছড়িয়ে পড়ে, কানে যায় নবাবের,
মুর্শিদাবাদের নবাব তাঁকে রায় উপাধি প্রদান করেন।
বয়েস হলে দুই ছেলেকে করে জমিদারী অর্পণ,
তিনি স্বশরীরে কাশীবাস করতে যান।
কিন্তু দুই ছেলেই অকালে মারা যায় পর পর,
তাঁর পৌত্রেরা জমিদারীর দায়িত্ব নেয় এরপর।
নীলচাষ করে সেই সম্পত্তি তাঁরা আরো বাড়ান,
নীলকর সাহেবরাও জমিদার রাম রতন বাবুকে,
সর্বদা সমীহ করে চলতেন।
নীলকর সাহেবরা যখন প্রজাদের অত্যাচার করেন,
এবং প্রজাদের বিরূদ্ধে কেস লড়েন,
রাম রতন তখন প্রজাদের পক্ষ অবলম্বন করেন।
নড়াইলের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল,
তিনিই স্হাপন করেন।
এখানকার জমিদারেরা বংশপরম্পরায় শিক্ষিত,
সংস্কৃতি - সম্পন্ন ও পরোপোকারী ছিলেন।
তাইতো নড়াইল থেকে যশোর পর্যন্ত রাস্তা,
ও দাতব্য চিকিৎসালয় স্হাপন করেছিলেন।
চিত্রা নদী সবকিছুর সাক্ষী আজও বয়ে যায়,
যদিও জমিদারী চিরদিন থাকেনা,
পট পরিবর্তন হয়, আসলে তো চিরস্থায়ী কিছুই নয়।
