বাঁশে বাঁধানো পুঁথি
বাঁশে বাঁধানো পুঁথি
"বন্দি প্রভু গনপতি বিঘ্নেশ শুভ মূর্তি হে
পশুপতিসুত - অবতার।
সিদ্ধিপ্রদ বুদ্ধিদাতা কাত্যায়িনী তব মাতা
মহিষমর্র্দ্দিনী নাম যার হে হে ।।"
______ভবপ্রীতানন্দ ওঝা।
শিব ভক্ত বিপ্র চন্দ্র মণি ওঝা মিথিলার,
বিল্বপঞ্চক গ্রামে নিবাস ছিল যার।
বৈদ্যনাথ ধামে এসে স্ত্রী কে নিয়ে বাস করলেন,
ক্রমে তিনি হলেন সেখানকার পূজকপ্রধান।
তাঁর প্রথম পুত্রের নাম, রত্নপাণি ওঝা,
গৌরী মঠে শংকর সম্মুখে রতেন তিনি পূজা।
জয়নারায়ন ওঝা ছিলেন তাঁর প্রথম নন্দন,
আগম অনুসারে করতেন মা কালীর পূজন।
তাঁর জেষ্ঠ্য পুত্র শ্রী যদুনন্দন ওঝা, করেন স্হাপন,
গৃহে তাঁর মূর্তি শ্রীরাধিকার, সাথে রাধিকারন্জন।
তাঁর জেষ্ঠ্য পুত্রের নাম রাখলেন তিনি দেবকীনন্দন,
দেবকীনন্দনের প্রথম তনয়, রামদত্ত ওঝা মহাশয়।
তিনি স্হাপন করেন মঠসহ অন্নপূর্ণা - সূর্য - নারায়ন,
রাম-লক্ষণ-সীতা-সারদাও সেখানে পেতেন পূজন।
আনন্দ দত্ত ওঝা তাঁর জেষ্ঠ্য সূত করান গঠন,
আনন্দ - ভৈরব - মঠ, অতি নয়নরন্জন।
নির্মান করান তিনি কুর্মিডিহে এক জলাশয়,
নাম দেওয়া হলো আনন্দসাগর জলাশয়।
তাঁর জেষ্ঠ্য পুত্রের নাম শ্রী পরমানন্দ ওঝা।
তাঁর প্রথম পুত্র সর্বানন্দ ওঝার কীর্তি,
পিতামহের সেই মঠে করেন স্হাপন ভৈরবের মূর্তি।
ঈশ্বরীনন্দ ওঝা ছিলেন তাঁর প্রথম নন্দন,
গান, বাজনা উদারতায় ভরা ছিল তাঁর মন।
পূর্নানন্দ ওঝা হলেন তাঁর প্রথম বৎস,
সরবরের পঙ্কজ যেন চরিত্র তাঁর নন গন্ধমৎস।
তাই তো এলেন বংশে তাঁর প্রথম বালক শৈলজানন্দ,
স্হাপন করিলেন মঠে শ্রী বিদ্যার যন্ত্র, শৈলজা মূর্তি,
রচনা করেন গ্রন্থ, আছে তার আরো নানা কির্তী।
ফ্রেন্ড সম্মোধন করে বড়লাট, ধরেন তাঁর কর,
পেয়েছিলেন তিনি লোকের কাছে বড়ই সমাদর।
বেদান্ত স্তোত্র তার ছিল অন্তরেতে এমন ভাবে গাঁথা,
ঝর্ণার বারিধারা সম ছড়িয়ে পড়েছে যথা তথা।
শেষ জীবনে সংসার ত্যাজি চলে যান আগম সাধনে,
মত্ত হয়ে রন সেথা, সদা অভয়া পূজনে।
ত্রিপুরানন্দ ওঝা তাঁর জেষ্ঠ্য সুসন্তান,
তেজ তাঁর ছিল যেন ভাস্কর সমান।
ছিলেন তিনি নানাবিধ গুণে গুণী,
কিন্তু হায় অকালেই ত্যাজিলেন ধরনী।
তাঁর প্রথম সন্তান নাম ভবপ্রীতানন্দ,
বংশ পরিচয় যেন সকলের মনে দেয় আনন্দ।
ঝুমুর - খ্যামটা নাম দেখে করে সবাই হেলা,
নাচ - গান করে লোকে, মজা পায় মেলা।
কিন্তু লেখাপড়া জানে যারা সুধীজন,
পড়ে দেখলে বইখানা ভরবে নিশ্চয়ই মন।
পুস্তকের নাম "রসমন্জরী" রাখাটা হয়েছে অভিশাপ,
নাম দেখেই ভদ্রলোক দৌড়ে পালায়, বাপ রে বাপ!
ভেতরে তো দেখি শুধুই ঠাকুর-দেবতা !
আর আছে প্রহ্লাদ, অভিমন্যূ ও মহাভারতের কথা।
আছে কিছু কৃষ্ণ রাধিকার ছোটো ছোটো পালা,
মোহন বাঁশীর সুরে মানুষের মন হয় পাগলা।