"অথ নারী কথা"
"অথ নারী কথা"


নারী,তুই নারী,
তোর শরীর তার পরিচায়ক,
তোর হাসতে মানা;
কিন্তু চোখের কোণে লুকিয়ে
যে তোর গোপন অশ্রুকণা।
কোথা ছিলি তুই
সৃষ্টির আদিলগ্নে?
এ জগৎ-সংসার যে ঊষর
তুই বিনে,
তার কী মূল্য পেলি তুই
এ ধরাতলে?
ওরে পরার্থে নিবেদিতা,
তোর নেইকো কোন স্বাধীনতা।
নারী,তুই নারী,
পুরুষের বিষবাষ্পে তুই মুমূর্ষু,
আক্রান্ত তোর সমগ্রাংশ;
ধূলিলুণ্ঠিত তব আঁচল,
নিরালংকার মলিন তব বসন।
তোর ভালোবাসা-কে উপেক্ষা ক’রে
প্রতিনিয়ত ঠকায় তোকে যে পুরুষ
সে যে পাপিষ্ঠ ঘোর।
তুই কি এখনও আবদ্ধ বিবাহের মিথ্যা বন্ধনে?
তোর ঠাঁই যে কেবলই শিল্পীর মননে।
পুরুষের হাজারো দোষে তুই-ই তো হোস কলঙ্কিতা;
তুই মা,তুই স্ত্রী,তুই প্রেমিকা,তুই ধর্ষিতা,তুই পতিতা,
তুই প্রকৃতি,তুই দুর্গা,তুই মেরি,তুই সর্বংসহা,তুই শক্তি।
নারী,তুই নারী,
দু’চোখে তোর রঙিন স্বপ্নের মায়াঞ্জন—
আর বিষম স্পর্ধা মনে অজেয়কে জয়ের।
তবুও বারবার কেন তুই হোস পরাজিতা?
কেন ক’রে তোলা হয়না তোকে সুশিক্ষিতা?
কেন রোধ করা হয় তোর বিদ্রোহী কণ্ঠ?
তুই আজন্ম লাঞ্ছিত,আমৃত্যু পদদলিতা,
তুই সুরক্ষিতা না মাতৃগর্ভে না বহির্বিশ্বে,
তুই প্রজাতি বিপন্ন চতুষ্পার্শ্বে।
তবুও নারী,তুই নারী,
তাই,বলব,গর্জে ওঠ্ শেষবার—
সমাজের সব জীর্ণতা,
নীচতা-কে কর্ ছারখার—
ভস্মস্তূপ থেকে ওঠ্ জ্বলে—
হয়ে ওঠ্ স্ফুলিঙ্গ এবার—
খুলে দে তোর মনের বাধা—
বাঁধনহারা উদ্দাম স্রোতে ভেসে
পান কর্ জীবন-সুধা।