মেয়েটা
মেয়েটা


সেই মেয়েটার গল্প বলি, শোনো।
সেই মেয়েটা শান্ত ভীষণ জেনো।
কালো চোখে কাজল রেখা টেনে,
লাজুক হাসি মেখে ঠোঁটের কোণে
মেয়েটা সেদিন আঠারো বছর ছুঁল।
উদাস বাউল মনের একতারাতে
গান ধরেছে মলিন চাঁদনী রাতে।
বেহায়া কোন্ মধুর বাঁশির সুরে,
ভৈরব তান বাজছে দূরের ভোরে।
মেয়েটা সেদিন স্বামীর ঘরেতে গেল।
অনেক দিনের এক স্বপ্ন ছিল তার—
ঘোড়ায় চেপে আসবে যে রাজকুমার;
ছোট্টবেলার শোনা সেই রূপকথা,
নতুন জীবন শুরুর রঙিন খাতা।
মেয়ে ভাবল তার প্রেমের দোসর হল।
স্বপ্নের ঘোর কাটল শেষে যখন,
মেয়ের পাশে অন্য পুরুষ তখন।
স্বামীর কাছে অভিযোগের পাহাড়;
চুলের মুঠি আর চড়ের উপহার।
মেয়ের দু'চোখ জুড়ে হঠাৎ বর্ষা এল।
রোজ রাত্তির অচেনা লোকের স্পর্শ,
গরম টাকা দেদার সুরার হর্ষ।
খোলা রেশমি চুল, অনাবৃত স্তন;
শরীরে যে তার দারুণ আকর্ষণ।
মেয়েটা সে'রাত বিকিয়ে গেল শেষে।
কাব্য লেখা থেমেই গেছে কবে!
পণ্য নিয়ে কে আর অত ভাবে?
মেঠো পথের মুখগুলো সব চেনা,
খোয়াব দেখার নেই তো কোনো মানা!
মেয়ে সাজল সেদিন কালী মায়ের বেশে।
চাকুর কোপে কাটল স্বামীর গলা,
"ভালোবাসি" হল না তার বলা;
হো হো ক'রে অট্টহাসি হেসে
বসল এসে মরা দেহের পাশে।
মেয়েটা সে'রাতে রইল না আর জেগে।
ঘুমের দেশে ভোরের আলোয় চেয়ে,
সে তখন এক বিশাল রাজার মেয়ে।
রূপকথাতে ফেরত যেতে যেতে,
ভালোবাসায় ভরিয়ে তাকে দিতে
কে এক টগবগিয়ে আসছে প্রবল বেগে।