Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

SUPRIYA MANDAL

Abstract Classics Inspirational

3  

SUPRIYA MANDAL

Abstract Classics Inspirational

শতাব্দী, ভালো থাকিস

শতাব্দী, ভালো থাকিস

4 mins
420


কবিতার নাম - "শতাব্দী, ভালো থাকিস"


লেখায় - সুপ্রিয়া মণ্ডল



শতাব্দী আমার স্কুলের বান্ধবী,

আমার কিশোরীবেলার অনেকটা সময়

কেটেছে ওর সঙ্গে।

টিফিন ভাগ করে খাওয়া থেকে,

বেঞ্চে বসে দুষ্টুমি, ডেস্কে কারুকার্য করা,

দিদিমণিদের বিভিন্ন নামকরণ,

পরিবারের সমস্যা, প্রথম প্রেমের প্রত্যাখ্যান—

সবটাতেই আমরা দু'জন ছিলাম

একে অপরের পরিপূরক।


স্কুলজীবনের ইতি ঘটতেই

আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা

বাঁক নিলো দুই দিকে।

আমি ভর্তি হলাম কলেজে,

আর শতাব্দীর সঙ্গে সম্পর্কে পড়লো ছেদ।

কিছু মাস পরে একজনের থেকে শুনলাম,

শতাব্দীর মদ্যপ বাবা জোর ক'রে

ওর বিয়ে দিয়েছে কোন্ এক পরিচিত সুপাত্রের সাথে।


টিউশন থেকে ফেরার পথে এক প্লেট এগ্ চাউমিন

দু'জনে ভাগ করে খাওয়াতে যে পরম তৃপ্তি পেতাম,

তা এখন হারিয়ে গেছে—

শতাব্দী আমার জীবন থেকে হঠাৎই

কোথায় হারিয়ে গেছে।


এরপর অনেকগুলো বছর কেটে গেলো—

একটি গার্লস্ স্কুলের শিক্ষিকার চাকরি পেলাম,

পোস্টিং হলো বাড়ি থেকে অনেক দূরে, অন্য জেলায়।

নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ;

তবুও কচি কচি মেয়েগুলোর মাঝে

নিজের সেই ফেলে আসা স্কুলজীবন

যেন আর একবার উঁকি মারলো।

আবার হারিয়ে গেলাম ওদের ভালোবাসার ছোঁয়ায়।


দিনকয়েক পরে,

সকালে খবরের কাগজে চোখ বোলাতেই,

একটা নাম দেখে, মনের মধ্যে

কেমন একটা খটকা লাগলো।

নামটা ছিলো 'শতাব্দী', তবে পদবীটা অন্য;

"স্বামী হত্যার অপরাধে স্ত্রী ধৃত"

—এই ছিলো খবরের শিরোনাম।

ইনসেটের মেয়েটির ছবিটি

কেমন যেন চেনা চেনা ঠেকলো।

ভাবলাম, নামের মিল কি আমাকে খোঁজ দেবে

আমার পুরোনো বন্ধুত্বের?

দেখলাম, পরের দিন তাকে নাকি

তোলা হবে আদালতে।

কোন্ এক অজানা আশঙ্কায়

সেদিন স্কুলে না গিয়ে ছুটলাম কোর্টের পথে।


কোর্টে তখন ভীষণ জটলা—

পুলিশভ্যান এসে একটা তরুণীকে নামালো,

কিন্তু এ কেমন খুনি?

যে নিজের মুখটাও কাপড়ে ঢাকেনি!

সঙ্গে সঙ্গেই কিছু সাংবাদিক এসে

একের পর এক প্রশ্নবাণ ছুঁড়তে লাগলো—

কিন্তু মেয়েটি একটুও দমে না গিয়ে

জোর গলায় হেসে বললো—

"আমাকে আপনারা খুনি বানিয়েই ছাড়লেন!

আর যে লোকটা দিনের পর দিন 

অত্যাচার ক'রে, একটু একটু ক'রে

আমাকে মেরে ফেলছিলো,

স্বামী হয়েও যে তার বিয়ে করা বউকে

টাকার জন্য অন্য লোকের সাথে

শুতে বাধ্য করেছিলো,

সে খুনি নয়, না?

সে কি খুন করেনি আমাকে?

ধৈর্য্যের বাঁধ একদিন শেষে ভেঙে গেলো—

চালিয়ে দিলাম চাকু শয়তানটার গলায়।"


এ আমি কাকে দেখছি?

এ তো আমার সেই শান্ত, লাজুক চাহনির

হারিয়ে যাওয়া শতাব্দী।


শতাব্দীর পর শতাব্দী ধ'রে মেয়েরা শোষিত হতে হতে

যখন মা দুর্গার মতো একদিন অস্ত্র তুলে নেয় হাতে,

প্রতিবাদ ক'রে ওঠে অন্যায়ের;

তখন কত সহজেই আমরা তাদের গায়ে,

খুনি, নষ্ট, সাংঘাতিক মেয়েমানুষের তকমা লাগিয়ে দিই।

একটু ভেবে বলুন তো,

কাঠগড়ায় দাঁড়ানো প্রকৃত আসামি কে?

শতাব্দী, না, আমাদের সমাজ?


শতাব্দী, ভালো থাকিস।




—সুপ্রিয়া মণ্ডল




Rate this content
Log in