Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Suravi Roy

Horror Thriller

3.7  

Suravi Roy

Horror Thriller

রক্ত

রক্ত

4 mins
1.5K


 অনেক বছর আগের কথা। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি।পড়াশুনায় ভাল হলেও, আমার একটা খারাপ অভ্যাস ছিল বা এখনও আছে। সেটা হল কোন কাজ থাক বা না থাক অনেক রাত পর্যন্ত আমাকে জেগে থাকতেই হবে, না হলে আমার ঘুমই আসত না।আর এটার জন্য মোবাইল ফোন বা ফেসবুক দায়ী তা নয়।কারণ এই সময়ে আমার কাছে কোন রকমের মোবাইল ফোন ছিল না। আমার এই রাত জাগার বিশেষ কারন ছিল শুধুমাত্র গল্পের বই।কি যে নেশা ছিল গল্পের বই এর প্রতি তা আজও বোঝাতে পারব না।যত মোটা বই হোক না কেন এক রাতেই সবটা পড়ে শেষ করতাম। এর জন্য কোন কোন দিন ঘুমাতে ভোর চারটে বা পাঁচটাও হয়ে যেত ।এই জন্য মা-বাবা খুব বকাবকি করতেন ।একদিন হঠাত রাতে মা রেগে গিয়ে আমার গল্পের বই কেড়ে নিয়ে আমাকে ঘুমাতে পাঠালেন।আর আমিও মন খারাপ করে ঘুমাতে গেলাম।অনেক চেষ্টা করেছিলাম ঘুমানোর কিন্তু ঘুমই আসছিল না।শুধু বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছিলাম এর মধ্যেই যে কখন ঘুমিয়ে গেছিলাম বুঝতে পারিনি।


হঠাৎই মনে হল আমার ঘরের দেওয়াল বেয়ে কি রকম একটা কুমিরের মতো গায়ে আঁশযুক্ত প্রাণী ঘর থেকে বেরিয়ে সিড়ির দিকে চলে গেল।আমি ভয় পাওয়ার মতো মেয়ে কোন দিনই ছিলাম না তাই একটা বড়ো লাঠি হাতে নিয়ে ওই প্রাণীটার পিছু পিছু সিড়ির দিকে এলাম।আর আমাকে দেখে প্রাণীটা তাড়াতাড়ি সিড়ির দেওয়াল বেয়ে ছাদের বাইরে চলে গেল।আমার যেন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হতে লাগল।


তারপর হঠাৎই বাড়িতে কয়েকজন অতিথির আগমনে আমি ওই অদ্ভুত প্রাণীর কথাটা মা-বাবা কে বলতে প্রায় ভুলেই গেছিলাম।আমাদের বাড়িতে তখন দোতলায় একটা ঘর হচ্ছিল, মোটামুটি ঘরটা হয়ে গেলেও প্লাস্টার এবং জানালা লাগানো বাকি ছিল।কয়েক জন আমার সমবয়সী আত্মীয় আর আমি মিলে ওই নতুন ঘরটাই আড্ডা দিচ্ছিলাম।বিপত্তি ঠিক সেই সময়ে ঘটল।দেখি সেই কুমিরের মতো আঁশযুক্ত প্রাণীটা নতুন ঘরের দেয়াল বেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।ওর আকৃতি এতটাই বড়ো যে সে একটা মানুষকে সহজেই খেয়ে ফেলতে পারে।এই রকম একটা ভয়ংকর প্রাণী দেখে আমরা সবাই মিলে চিৎকার করে মা-বাবাকে ডাকতে শুরু করলাম।আমাদের চেঁচামেচিতে ওই প্রাণীটা ঘরের খোলা জানলা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল।আমিও মা-বাবা কে সব কিছু ঠিকঠাক বললাম।তারপর ঠিক হল যে এই প্রাণীটাকে যে ভাবেই হোক মেরে ফেলতে হবে..না হলে কোন বড়ো বিপদ ঘটতে পারে।তাই বাবা আর আমি একটা লাঠি,একটা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওই ভয়ংকর প্রাণীটার জন্য সেই সিড়িতেই অপেক্ষা করতে লাগলাম।


অবশেষে আমাদের অপেক্ষার ইতি ঘটল। দেখলাম ওই অদ্ভুত প্রাণীটা সিড়ির দেওয়াল বেয়ে আমাদের দিকেই আসছে। প্রাণীটা কাছে আসতেই বাবা তার হাতের লাঠিটা দিয়ে ওর মোটা আঁশযুক্ত পিঠে সজোরে আঘাত করলেন। আর সঙ্গে সঙ্গেই প্রাণীটা একটা বিকট শব্দ করে সিড়িতে পড়ে গেল এবং বাবার দিকে তেড়ে গেল । আর আমিও সেই সময় আমার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রাণীটার পিঠে সজোরে কোপের পর কোপ্ মারতে থাকি আর চারিদিকে রক্তের বন্যা বইতে থাকে । তখন প্রাণীটার শরীর থেকে খোলকের মতো আঁশ গুলো পরস্পর বিচ্ছিন্ন হতে থাকে। এক সময় সমস্ত প্রানীটাই টুকরো টুকরো হয়ে যায়।তারপর ওই প্রাণীটা থেকে কোন রোগ ছড়াতে পারে ভেবে বাবা ওই প্রাণীটার দেহাংশগুলোকে আমাদের বাড়ির পাশের আবর্জনা ফেলার ঝোঁপজঙ্গলটাই ফেলতে গেল । আমিও আনন্দের সঙ্গে মাকে বলতে গেলাম ওই ভয়ংকর প্রাণীটাকে মেরে ফেলেছি। মা দেখল আমার হাতে ওই প্রাণীটার রক্ত লেগে আছে । মায়ের কথা শুনে আমি আমার নিজের হাত তা দেখে শিউরে উঠলাম আর তাড়াতাড়ি হাতটা ধুতে গেলাম। কিন্তু যতই হাত ধুচ্ছি তাও হাত থেকে রক্ত যেতেই চাইছে না। আমি রক্ত রক্ত বলে চিৎকার করে কেঁদে উঠলাম। তখন আমি সম্পূর্ণ ঘামে ভিজে গেছি । অর্থাৎ আমি স্বপ্ন দেখছিলাম ।


কিন্তু আমি ভাবতেই পারছিলাম না যে সত্যিই কি আমি স্বপ্ন দেখছিলাম নাকি অন্য কিছু । এই সব ভাবতেই রক্তের প্রতি একটা ভয় জেগে উঠল আমার মনে, নিজের হাত দুটো ভাল করে দেখলাম কোথাও রক্ত লেগে আছে কিনা। আবার জল খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম কিন্তু মনের মধ্যে একটা ভয় থেকেই গেল। সকালে ঘুম থেকে উঠে মাকে সব কিছু বললাম । মা বলল খারাপ স্বপ্ন ভুলে যেতে । আমিও ভুলতে চেষ্টা করতে লাগলাম কিন্তু খেতে বসার আগে হাত ধুতে গেলে মনে হত এখনও হাতে কিছু লেগে আছে, বারবার ধুয়েও যেন পরিস্কার হত না। এরপর থেকে হাতে করে কোন খাবার খেতে অসম্ভব ঘৃণা বোধ করতে শুরু করি। এর পর থেকে আমি সব রকম খাবার চামচ দিয়ে খেতে শুরু করলাম। মা এই জন্য আমাকে কিছু বলল না কারণ মাই বুঝেছিল আমার মনের অবস্থাটা।


আর এখন আমার রক্তের ভয়টা চলে গেলেও চামচের দ্বারা খাবার খাওয়ার অভ্যাসটা থেকে গেছে । আজও কেউ হাতে করে খাবার খাওয়ার কথা বললে সেই খাবারের প্রতি ঘৃণা বোধটা আবার জেগে ওঠে ।।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror