বিদ্যাসাগর দিনকর
বিদ্যাসাগর দিনকর
পৈত্রিক নিবাস ছিলো হুগলির বনমালীপুরে,
প্রপিতামহ ভূবনেশ্বর বিদ্যালঙ্কার, রত্ন সেই ঘরে।
তাঁর পুত্র রামজয় তর্কভূষণ বিয়ে করেন বীরসিংহের,
বিদগ্ধ পন্ডিত উমাপতি তর্কসিদ্ধান্তের কন্যারে।
রামজয়ের দেশান্তরের পর দুর্গাদেবী পুত্র
ঠাকুরদাস কে নিয়ে থাকতেন বীরসিংহের সেই পিতৃগৃহেই।
জন্ম নেন ঈশ্বরচন্দ্র মাতা ভগবতী দেবীর কোলে,
মেদিনীপুরের বীরসিংহে, বাবার মামার বাড়িতেই।
সনাতন বিশ্বাসের পাঠশালার শাস্তি অপছন্দ তাই,
ভর্তি হন তিনি কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের পাঠশালায়।
আদর্শ শিক্ষকের ছোঁয়ায় ছাত্রটি রূপান্তরিত হন,
আদর্শ মানুষ হিসেবে সমাজে পরিচিতি লাভ করেন।
পিতা ঠাকুরদাসের সাথে পায়ে হেঁটে যেতে যেতে,
কলকাতার পথে মাইলষ্টোনে ইংরেজী এক, দুই দেখে,
ইংরেজীর ওয়ান, টু, থ্রী,ফোর,ফাইভ সব যান শিখে।
"বর্ণপরিচয়" লিখে সব বাঙালিকে দেন অক্ষর জ্ঞান,
সহমর্মিতার পরাকাষ্ঠা, দয়ার সাগর, মহান বিদ্বান।
সারাজীবনে যে তিনি কতো মানুষের উপকার করেন,
মেয়েদের পড়াশোনার ব্যাপারে প্রথম চিন্তা করেন।
শুধু তাই নয়, কুলীন প্রথার কবলে পড়ে যত বালিকা,
সেই সময় হতো বিধবা, জীবন যেন জ্বলন্ত শলাকা !
তাদের উদ্ধারের তরে বিধবা বিবাহ করেন প্রচলন,
যদিও এই কাজে বিপক্ষে ছিল দেশের যত জনগন।
মায়ের আদেশে স্থাপন করেন দাতব্য চিকিৎসালয়,
কথা রাখতে মায়ের এই দামাল ছেলে নদী সাঁতরায়,
উত্তাল দামোদর নদ পার হন সম্পূর্ণ নিজের ভরসায়।
ক্ষীরপাই এর কন্যা দিনমনী ছিলেন তাঁর সহধর্মিণী,
দিনকর তিনি সকলের, আমরা বাঙালীরা তাই মানি।
