যশোদা মা
যশোদা মা


১
সেই কবে ঠাকুরের সিংহাসনটা বানানোর জন্য বাড়িতেই লোক ডাকিয়েছিলাম। কিন্তু সেই লোক তিন দিন কাজ করে আর আসেনা। এই একসপ্তাহ বাদে এসে আবার হাজির হয়েছে। কিন্তু সাথে ঐ ছোট্ট ছেলেটা কি মিষ্টি। মনে হয়, উনারই ছেলে। কে জানে আবার এই ছোট্ট ছেলেটাকে দিয়েও কাজ করাবে নাকি! বাচ্চাটার পরনে একটা বড় স্যান্ডো গেঞ্জি। আর ওর হাফ প্যান্টটা এত বড়, শুধু টেনে ওপরে তুলছে। গায়ের রঙটা ওর কালো হলেও মুখটা যে কি মিষ্টি, যেন কৃষ্ণ ঠাকুর।
---------"কি হল দাদা, আপনি এই অর্ধেক কাজ করে চলে গেলেন। তারপরে আপনার তো একসপ্তাহ পাত্তাই নেই। আপনার ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। আমি যে আপনাকে বললাম, পাথরের রাধা কৃষ্ণ এনেছি। দোল পূর্ণিমার দিন পুরোহিত দিয়ে সিংহাসনে তা প্রতিষ্ঠা করবো। কিন্তু সিংহাসনটাই তো এখনো পুরো তৈরি হলো না।"
----------"রাগ করবেন না বোন। আসলে আমার শরীরটা কদিন এত খারাপ হয়ে গেছিল যে বিছানা ছেড়ে উঠতে পারিনি। আমি দোলের আগেই সিংহাসনটা তৈরি করে দেব। এই তো প্রায় হয়ে এসেছে।"
--------"আমার কর্তা তো বলছিল, দোকান থেকেই পাথরের একটা সিংহাসন কিনে নিয়ে আসতে। কিন্তু আমার শখ কাঠেরই। আর তপুর দোকানে বলাতে ওরাই বলল, এই বিষয়ে আপনিই ভালো কারীগর। কিন্তু আপনি যে এরকম অর্ধেক কাজ ফেলে চলে যাবেন কে জানে! তা আপনার কি হয়েছিল? আর এই ছোট বাচ্চাটা কে, আপনার ছেলে? "
---------"হ্যাঁ, আমার একমাত্র ছেলে। ও আজ জোর করেই বলল, আমার সাথে কাজে আসবে। তাই'ই নিয়ে এলাম। আপনাকে আমার বোন বলে ডেকেছি, মিথ্যে বলব না,,,,,,আসলে আমার ব্রেন টিউমার আছে। আজ নয়, তা এক বছর আগেই ধরা পড়েছে। ডাক্তারবাবু বলেছেন অপারেশন করতে। আমিই আর ওতে মাথা ঘামাইনি। যদি অপারেশনের পর আর না বাঁচি! তার চেয়ে এইভাবেই চলুক যতদিন আছি।"
---------"সে কি! তাহলে আপনি কাজ করছেন কেন? আর অপারেশনটা করে নেওয়াই উচিত।"
---------"আমার এই চার বছরের ছোট ছেলেটাকে কে দেখবে বোন? আমার বৌ'ও নেই। আগের বছর সে কাজ করে ফেরার সময় গাড়ি চাপা পড়েছে। এই ছোট্ট ছেলেটাকে কে দেখবে! বড়ই অসহায় যে ও। আমি ছাড়া ওর আর কে আছে!"
কাঠ মিস্ত্রী আলি দা'র কথা শুনে আজ আমার চোখ দুটোতে যেন কোথা দিয়ে জল চলে এল। এত দুঃখও ভগবান মানুষকে দিতে পারে! আমি আর বেশীক্ষণ ওদের বাপ ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। বড্ড কষ্ট হচ্ছে আমার।
এতদিন জানতাম, ভগবান হয়তো শুধু আমাকেই পৃথিবীর সব থেকে বড় কষ্টটা দিচ্ছে। কারণ নয় বছর হতে চলেছে, আমি এখনো নিঃসন্তান। প্রথমে আমি আর আমার স্বামী সুভাষ ঠিক করেছিলাম একটু দেরি করেই সন্তান নেব। কারণ আমি আরেকটু পড়াশোনাটা এগোতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের লোকজন, পাড়াপ্রতিবেশী, এমনকি আমার বাপেরবাড়ি থেকেও আমাদেরকে তাড়াতাড়ি সন্তান নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়। যদিও পরামর্শর থেকে এইটা একরকমের জোর করাই বলা চলে। আমরাও তাই আর বেশি দেরি করিনি। বিয়ের দুবছর পরেই আমরা সন্তান নেওয়ার কথা ভাবি। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই আমরা জানতে পারি, আমি সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য অক্ষম। কথাটা জানা মাত্রই আমরা দুজনেই খুব ভেঙ্গে পড়ি। তা অনেক ডাক্তার বদ্যি করা হয়েছে, আর এখনো হচ্ছে, তবুও কোথাও কোনো আশার আলো নেই। সুভাষও এই ব্যাপারে চিন্তিত, মনের ভেতরে তারও একটা চাপা কষ্ট আছে। কিন্তু আমাকে ও কখনো বুঝতে দেয় না।
তবে শ্বশুরবাড়ির বাকি লোকজন আমাকে কথা শোনাতে মোটেও ছাড়েন না। শ্বশুর শাশুড়ি থেকে শুরু করে আমার দুই জা, ভাসুর সকলে আমাকে কথা শোনায়। যদিও আমি এখন আর শ্বশুরবাড়িতে থাকি না। বিয়ের তিনবছরের মাথায় আমি আমার স্বামীর কাজের সূত্রে কলকাতায় চলে আসি। কারণ সুভাষ ইচ্ছে করেই চাকরিটা বদলি করে নিয়েছিল কলকাতায়। ও আমাকে রোজ রোজ সংসারের অশান্তির মধ্যে জড়াতে দিতে চাইছিল না। আর সেই জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া। তবুও আমার ওপর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কটূ বাক্যের বন্যা শেষ হয়নি। কোনো অনুষ্ঠান বাড়িতে বা এই বাড়িতে এসে যখনই ওরা আমাকে সামনে পায়, তখনই শুরু করে অশান্তি। যদিও আমি কোনোদিনও ওদের মুখের ওপর কথা বলিনি বা তর্ক করিনি। আমার যখন কারোর কথা শুনতে ভালো লাগে না, আমি আলাদা ঘরে চলে যাই। কখনো ছাদে, কখনো ঠাকুরঘরে। আমার জানেন, ঠাকুরের প্রতিই যত রাগ অভিমান। একদিকে মা না হতে পারার জন্য আমি যেরকম ঠাকুরকে দায়ী করি, আবার সব পার্বণেই যত্ন করে ঠাকুরের সেবা করি। কি আর করব বলুন, ঐ পাথরের মূর্তিই আমার ভরসা।
২
---------"নিন বোন, আপনার রাধাকৃষ্ণের জন্য সিংহাসন তৈরি। দাদা তো বললেন ভালো। এবার আপনি বলুন কেমন হয়েছে?"
--------"অপূর্ব। অসাধারণ আপনার হাতের কাজ।"
--------"এ আমার ওপর ওপরয়ালার কৃপা বলতে পারেন।"
--------"আপনি ওপরয়ালাকে মানেন?"
--------"নিশ্চয়ই। সে না থাকলে কি আমাদের জীবন চলতো!"
--------"কিন্তু আপনার....."
--------"হ্যাঁ, আমার জীবনটা অনিশ্চিত। কিন্তু চলে তো যাচ্ছে। শুধু ছেলেটাকে নিয়েই চিন্তা। আমি জানি, আমি না থাকলেও ওকে ওপরয়ালা ঠিক ভালো রাখবে। কোনো একটা ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে। আর নাহলে নিজে খেটে খাবে।"
--------"ঐটুকুনি ছেলে কি কাজ করবে! একটা কথা বলব দাদা? আপনার ছেলেটাকে আমায় দেবেন?"
--------"মানে?"
---------"জানেন, আমি কোনোদিনও মা হতে পারবো না। এমনিতেই আমরা একটা বাচ্চা দত্তক নেওয়ার কথা ভাবছিলাম। দেবেন ওকে? এক মায়ের সন্তানকে নয় আরেক মা মানুষ করুক।"
----------"কি বলছেন! আপনি জানেন, আমরা জাতে মুসলমান। আপনার পরিবারের সবাই ওকে মেনে নেবে?"
---------"আপনার হাতে গড়া সিংহাসনে যদি আমার রাধামাধবের প্রতিষ্ঠা হতে পারে, তাহলে সেই ঈশ্বরই যদি সন্তান রূপে আমার ঘরে আসে, আমি কি করে তাকে অমান্য করবো? কেউ না মেনে নিক, আমি তো মেনেছি, তাহলেই হবে। সেই প্রথম দিন ওকে দেখেই যে আমার বুক জুড়িয়ে গেছে। ও যে আমার ছেলে। দেবেন দাদা ওকে?"
--------"আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিনা। ওকে আপনার মত একজন মায়ের কোলে তুলে দিতে পারলে আমি মরেও শান্তি পাবো আর আমার বৌটার আত্মাও শান্তি পাবে। কিন্তু এ কি সম্ভব?"
---------"হ্যাঁ সম্ভব দাদা। কাল দোলের দিনে আমার বাড়িতে রাধামাধবের প্রতিষ্ঠা। আমার কৃষ্ণকে নিয়ে আসবেন। ও এখন থেকে নয় এ বাড়িতেই থাকবে। আপনি রোজ এসে ওকে দেখে যাবেন। আপনার কোনো আপত্তি নেই তো দাদা? "
--------"না বোন, আমার কোনো আপত্তি নেই। আমাদের বাড়ির উপরয়ালকে মানে কানহাকে তার যশোদা মায়ের কোলে তুলে দেব। আমিও বড় নিশ্চিন্ত হলাম বোন।"
সত্যিই সেদিনকে আলিদার ছেলেটাকে দেখে আমার বুকটা জড়িয়ে গেছিল। আমি যেন এতদিন ওর অপেক্ষাতেই আছি। জানিনা, যতটা আমি ভাবছি হয়ত এতটা সহজভাবে তা নাও হতে পারে। আলি দা এখন তো বলল যে ছেলেকে আমার কাছে দিয়ে দেবে। কিন্তু বাড়ি গিয়ে যদি মত বদলে যায়! তবে ঐই যে আমার গোপাল। আমার ছেলে। বড্ড ভালোবাসি আমি ওকে। যদিও ওর সাথে আমার কোনো কথা হয়নি, তবুও মনটা যেন বলছে ও আমার আগের জন্মের কেউ। যে কিনা এই জন্মে আমার সন্তান। সুভাষকে এই ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। জানিনা, ও মানবে কিনা! না মানলে দেখা যাবে। তবে আলি দা যদি ওকে আমার কোলে তুলে দেয়, আমি ওকে নিয়েই খুশি থাকবো। সুভাষকে আমি বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করবো। তারপর রাধামাধব'ই পথ দেখাবে। তবে আমি আমার মানুষরূপী গোপালকে অবহেলা করবো না। তাহলে যে পাথরের রাধামাধব রাগ করবেন। আমি আজই সুভাষকে সব বুঝিয়ে বলবো। আশা করি, সুভাষ বুঝবে।
৩
--------"হোলি হে! ও মা তোমার জিলিপি ভাজা হল?"
---------"আরে করিস কি! দিলি তো আমায় রঙ মাখিয়ে। এখন আবার আমায় স্নান করে পুজোর জন্য তৈরি হতে হবে। এইভাবে রঙ খেলে ভূতের মত সেজে তোর জিলিপি খাওয়া চাই? একটু ঠান্ডা হোক দিচ্ছি। আগে রাধামাধবের জন্য তুলে রাখি।"
এই হয়েছে আমার ছেলের কান্ড! ওর কোনো কিছুতে তস সয় না। বাড়িতে রাধামাধবের জন্য একটু ভোগ আর কিছু মিষ্টি আর জিলিপি বানিয়েছি। আমার ছেলের তা এক্ষুনি চাই। না দিলেই তার আবার মুখভার হয়ে যাবে। আসলে সেই যে আমার কৃষ্ণ ঠাকুর। ওকে আমি গোপাল বলেই ডাকি। আমার গোপাল।
আজ দুবছর হয়ে গেছে আলি দাদা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তার সন্তান এখন আমার কাছেই। দাদার কথায় তো আমি উনার সন্তানের যশোদা মা'ই। যখন আমরা সন্তান নিতে চাইনি তখনও সমাজের কুমন্তব্যের ঝড় বইছিল, বিয়ের পর সন্তান নেব কি নেব না, সেটাতে যেন আমাদের স্বামী স্ত্রীর তুলনায় বাইরের লোকেরই চিন্তা বেশি। যখন আমার সন্তান হচ্ছিল না তখনও আমি অপয়া নারী বলে সমাজে স্থান নিলাম। আমার শুভ কাজে যাওয়া বারণ হয়ে গেল। ছোট বাচ্চাদের আদর করা বারণ হয়ে গেল। অনেকের কথাতেই তখন, আমি সন্তানের মর্ম বুঝি না। আমার সংস্পর্শে কোনো সন্তান থাকলে তার ক্ষতি হতে পারে। যদিও আমি এইজন্য নিজেকে এইসব ব্যাপার থেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছিলাম সমাজের ভয়ে। তারপর যখন আমি আলি দা'র থেকে গোপালকে কোলে নিলাম তখনও লোকের নানা কথা। আমার স্বামী গোপালকে দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে কোনো আপত্তি করেনি, কিন্তু এই সমাজে বসবাসকারীদের মধ্যে অনেকেই করেছেন। প্রথমেই ছিল কথাগুলো এমন,
- 'শেষে কিনা মুসলিম সন্তান', 'একটু সুন্দর দেখতে বাচ্চা নিতে পারতে, এর তো গায়ের রঙটা কালো', 'আচ্ছা, তোমার ওকে দত্তক নেওয়ার পর তো সেরকম অনুভূতি হয় না, যেটা প্রসব যন্ত্রনা ভোগ করে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর হয়', 'রক্তের সম্পর্কে গড়া সন্তানই মা বাবাকে দেখে না, এ তো দত্তক! দেখো ওকে সব কিছুতে ভাগ দিতে যেও না, সাবধান!"
- শুনুন কথা! এই হল আমাদের সমাজ। প্রথম প্রথম খুব কষ্ট হত জানেন, এইটা ভেবে যে, মানুষ এখনো জাতের বিচার করে। যেখানে কিনা কোনো নির্দিষ্ট দিনে মঞ্চে উঠে অনেকেই পাঠ করেন কাজি নজরুল ইসলামের সেই কবিতা-
"মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান।
মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।।"
কৈ; সেগুলো তো মানুষ শুনছে, একই সুরে তাল মেলাচ্ছে, তাহলে সেগুলো কি মন থেকে নয়? আমার কাছে তো রাম রহিম একই। জানেন, যখন আমি মা হতে পারছিলাম না, তখন কতবার মসজিদে গিয়েও মাথা ঠেকিয়েছি। আল্লা আমাকে খালি হাতে ফেরায়নি। রক্তের সম্পর্ক না হলে নাকি মা হবার অনুভূতি হয় না। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমার ক্ষেত্রে তো তা হয়নি। গোপালকে দেখার পরই আমার মনে হয়েছে ঐ আমার সন্তান। ওর জন্যই আমি এতদিন অপেক্ষা করছিলাম আর ও'ও ওর এই যশোদা মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। এখনো যারা আমাকে এরকম খারাপভাবে কথা বলে আমি তাদের একটু এড়িয়েই চলি। আমি মুসলিম সন্তান দত্তক নিয়ছি বলে আমার শ্বশুরবাড়ির লোক তো আমার সাথে এবার পাকাপাকি ভাবেই সব সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছে। এবাড়িতে তারা আর আসেনিই না। তবে আমার স্বামী সুভাষ আমার পাশে ছিল বলেই আমি ঘন কালো অন্ধকারেও আলোর দিশা খুঁজে পেয়েছি। আমার গোপালকে পেয়েছি। এখন ভগবানের ওপর আমার আস্হা অনেক বেড়ে গেছে। যার কেউ নেই, তার যে ভগবান আছে, সেই পথ দেখাবে। কিন্তু আমার একটা জিনিস ভেবে খুব খারাপ লাগে, আমাদের সমাজে মেয়েরাই যে মেয়েদের সবকিছুতে দায়ী করে। যেরকম কোনো একজন সন্তানের জন্মদাত্রী মা, আমার মত অপয়া মেয়েকে দায়ী করে, যে কিনা প্রসব যন্ত্রনা ভোগ করে সন্তান জন্ম দেয়নি। পুরুষদের কথা বাদ দিন। নারীদের তো নিজেদের মধ্যেই এই বিভেদ। নিজেদের মধ্যে এই বৈষম্যের পাঁচিল যেদিন সমস্ত নারী ভাঙ্গতে পারবে সেদিন হয়ত, 'আমরা পুরুষের মত ক্ষমতাশালী, আমারও তাদের মত সমান তালে চলতে পারি,'- এই কথাগুলো বলে চিৎকার করতে হবে না।
এখন আমি তনয়া মল্লিক আর আমার স্বামী সুভাষ মল্লিক একটা এনজিও সংস্হার সাথে যুক্ত। আমরা একটা নিজেদের অফিসও খুলেছি। যেখানে থেকে অন্যদের জন্য, যারা বাচ্চা দত্তক নিতে চাইছেন, তাদের জন্য বাচ্চা দত্তকের ব্যবস্হাটা আমরা খুব সহজেই করে দিতে পারি।এমনকি সেই সব বাবা মা'রা যারা বাচ্চা দত্তক নিতে চান, তাদের ফর্ম ফিলাপ করে দেই, দত্তক নেওয়ার প্রতিটা পদক্ষেপ যেন তাড়াতাড়ি হয়, তার ব্যবস্হা করে দিই। ভালো আছি আমি। ব্যস্, আশির্বাদ করবেন, এইভাবেই যেন ভালো থাকতে পারি আমার স্বামী, সন্তান আর কাজ নিয়ে।
--------"কি গো তোমার গোপাল তো তোমাকে রঙ মাখিয়ে জিলিপি নিয়ে পালিয়েছে। এবার একটা সুন্দর করে গান ধরো তো গিন্নী। কতদিন তোমার গলার গান শুনি না!"
এই হল আমার কর্তার কথা। বড্ড রসিক মানুষ। না, যে মানুষটা আমার পাশে সবসময় আছে, তার কথাকে অমান্য করি কি করে! আমিও শুরু করলাম-
ওরে গৃহবাসী খোল্, দ্বার খোল্, লাগল যে দোল।
স্থলে জলে বনতলে লাগল যে দোল।
দ্বার খোল্, দ্বার খোল্॥