তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম
তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম
"আজ ঠোঁটের কোলাজ থামালো কাজ
মন তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম"
এই ছোঁয়া টা আজ আমার মনে প্রেমের নেশা ধরিয়ে দিচ্ছে না। বরং শেষ বারের মতো তোমাকে ছুঁয়ে দেখলাম কথাটা ভেবেই হাজার কষ্টেরা এসে ভীড় করছে।
সৌমেন জানলো না যে আমি আজ শেষ বারের মতো দেখা করতে গেছিলাম। কি করে বলতাম ওকে, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে!!! গত পাঁচ বছর ধরে আমার সুখ দুঃখের সাথী ছিল সৌমেন। ক্লাস ইলেভেন থেকে আমরা জুটি বেঁধেছি। স্কুলে সবাই বলতো সোমলতা আর সৌমেন 'লক্ষী নারায়ন' জুটি। এত গুলো বছর একসাথে থাকার পর ওকে ছেড়ে অন্য কোনো পাত্রের সামনে বসতে হবে ভেবেই যে মরে যেতে ইচ্ছা করছে।
সোমলতা বাড়ি ফিরে ফোনটা বন্ধ করে দিল, বিচ্ছিন্ন করে দিত চাইলো সৌমেনের সাথে যোগাযোগের সমস্ত রাস্তা। ঘুমহীন সারাটা রাত কেটে গেল, চোখের পাতাটা এক করলেই বারবার ভেসে উঠছে আজ সৌমেনের শেষ ছোঁয়া.... সেই ঠোঁটের স্পর্শ।
পাত্রপক্ষ এসে গেছে। সোমলতা আজ সেজেছে তবে এই সাজের উপর অধিকারটা অন্য কারোর হবে এটা কিছুতেই মানতে পারছে না মেয়েটা। মায়ের ডাক শুনে সোমলতা বসার ঘরে এলো। মাথা তুলে সামনে বসে থাকা মানুষ গুলোকে দেখতে ইচ্ছে করছে না সোমলতার। মায়ের কথা মতো সোমলতা এগিয়ে গেলো প্রনাম করতে, কিন্তু প্রনাম করে মাথা তুলে তাকাতে সোমলতা চমকে উঠল "একি এ যে সৌমেনের বাবা", সঙ্গে সঙ্গে মাথা ঘুরিয়ে পাত্রের দিকে তাকাতে দেখল সৌমেন সেই মিষ্টি হাসি নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
বেশ কিছুক্ষণ বড়রা নিজেদের মধ্যে কথা বলার পর সোমলতার সাথে সৌমেনকে পাঠালো একা কথা বলার জন্য।
সোমলতা নিজের রুমে এসেই সৌমেন এর জামা খাঁমচে ধরল, "তুমি যে সেই পাত্র, এটা আমাকে বলোনি কেন?"।
"তুমিও তো কাল বললে না যে তোমাকে দেখতে পাত্রপক্ষ আসছে!!" সৌমেন ঘুরিয়ে প্রশ্ন করল।
"কি করে বলতাম? আমি তো ভেবেছিলাম ওটাই শেষ দেখা, শেষ ছোঁয়া" সোমলতার চোখ দুটো জলে ভরে উঠল।
"উঁহু কখনো নয়, শেষ দেখা নয় এমনকি শেষ ছোঁয়াও নয়" সৌমেন সোমলতার ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ালো। পরম আবেশে মিশে যেতে লাগলো সোমলতা সৌমেনের সঙ্গে।
"এই যে তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম, আর সবসময় এটাই হবে" সৌমেন এর কথা শেষ হতেই সোমলতা শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো তার ভালোবাসার মানুষকে।