সম্পর্কের সাতকাহন
সম্পর্কের সাতকাহন


কিছু বোকা মানুষ তাদের একান্ত ব্যাক্তিগত স্বম্পর্কের খুনসুটি গুলোকে অভিমানী সুখ দুঃখের কথা ভেবে তার চারপাশের কিছু মানুষকে বলতে গিয়ে নিজের অজান্তেই সেই স্বম্পর্কটাকেই নিলামে চড়িয়ে দেয়..! বোকা মানুষ বোঝে না যে এতে তার স্বজনদের কাছে কেবল তার ব্যক্তিত্বই নষ্ট হচ্ছে..;
আর সেই সুখ দুঃখের আবেগ হালকা করতে গিয়ে যাদের সে তার একান্ত স্বম্পর্কের ব্যক্তিগত খুঁটিনাটি শেয়ার করছে, সেইসব তথাকথিত শুভাকাঙ্ক্ষীগন তার আড়ালে তাকে সান্ত্বনা বা ভরসা দেয়ার নাম করে খোদ তাকেই যে তাদের প্রিয় মহলে মুখরোচক গসিপ বিনোদন হিসেবে বেছে নিচ্ছে..! এভাবেই সে বোকা মানুষগুলোকে আরও বোকা বানিয়ে তার ভরসার শুভাকাঙ্ক্ষীটি ক্ষনিক এন্টার্টেইন্মেন্ট অথবা আপন কোন স্বার্থ লাভের জন্য তার প্রতি আহারে উহুরে মলম দেয়ার নামে অবশেষে তার একান্ত ব্যক্তিগত স্বম্পর্কে একটি ফুলস্টপ টেনে দিচ্ছে...!
আমরা সারাজীবনে আমাদের একান্ত প্রিয়জনের সাথে যে সময়টা পাশাপাশি হাঁটি..সেই হাঁটার পথে স্বম্পর্কের অনেক মাত্রার রুপ বদলের সাথে মানিয়ে নিয়েই নিজেদের ব্যাক্তিগত স্বম্পর্কটাকে আরও পরিনত করে আমরা সেই পথেই হেঁটে এগিয়ে যাই মৃত্যুর দিকে...! এই পৃথিবীতে আমরা কেউ পারফেক্ট নই... একটা স্বম্পর্ক দুটো মানুষের কাছে মন্দিরের মতো পবিত্র এক গোপনীয় প্রার্থনা সুখের মতো.. সেখানে হাসি কান্না রোদ ঝর বৃষ্টি থাকবেই...
সেখানে কখনোই তৃতীয় কোন ব্যক্তিকে থুতু ছেটানোর সুযোগ দিতে নেই...! কারণ ব্যক্তিগত সবচাইতে নির্ভরতার যায়গায় তৃতীয় কোন মানুষের প্রবেশাধিকার দিলেই সেই বাঁধনের উপর অকারণ নোংরা ফেলে তা নষ্ট করে দিই আমরা..! যারা এই বোকা কাজটা করে ভাবেন যে তারা তাদের চারপাশের শুভাকাঙ্ক্ষী পাচ্ছেন, তারা কি জানেন, যে নিজের অজান্তেই তারা তাদের জীবনের একান্ত দূর্বলতাটা প্রকাশ করে যাদের কাছে প্রিয়জন হতে চাইছেন, সেই মানুষগুলো শুধুই সুখের পাখি তাদের জীবনে..দুঃখের নয়...!
একমাত্র নিজের একান্ত ব্যক্তিগত স্বম্পর্কটাই মানুষের সুখ দুঃখের সারাজীবনের এক উন্মুক্ত আকাশ..যে আকাশে আমরা একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে আঁকড়ে ধরে জীবনের রুপ গন্ধ বুঝতে পারি...! পৃথিবীতে সবার বুকে যদি দুঃখে মাথা রেখে কান্না করা যেতো তবে মানুষ কখনোই নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নিজের ব্যক্তিগত পরিধি সৃষ্টিতে কোন একান্ত স্বম্পর্ক গড়তো না... তখন তাদের আর পশুদের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকতো না...! আসলে সভ্যতার আলোয় মানুষ অনেকটা উন্নত হলেও জ্বিনগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে শারীরিক বহুগামিতা কিছুটা সামলে নিলেও আজও মানষিক বহুগামিতায় অতিমাত্রায় আসক্ত...! তাইতো একজন নারী কিংবা পুরুষের এক জীবনে আজকে বহু একান্ত স্বম্পর্কের গল্প নিয়ে চলচিত্র নির্মাতারা দু'হাতে বানিজ্য করতে পারছে, আর আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এক সুতোয় বাঁধা সুন্দর স্বম্পর্কগুলো...! মজার ব্যাপার হচ্ছে, যে মানুষই একসময় চরিত্র নামক শব্দটাকে সৃষ্টি করেছিলো, আজকের দিনে সেই চরিত্রই সৃষ্টি করছে কে মানুষ আর কে পশু...!