শ্যামাঙ্গিনীর আখ্যান 💔 পর্ব ৩
শ্যামাঙ্গিনীর আখ্যান 💔 পর্ব ৩
মিঃ জোতানিয়া : ( হেসে উঠে হঠাৎ করে শ্যামার হাতের উপর আলতো করে চাপ দিয়ে ) " Well then let's talk in Hindi and English. "
বিভিন্ন কথা আলোচনার মধ্যে মধ্যে মিঃ জোতানিয়া কখনো শ্যামার হাত কখনো পিঠে হাত দিতে লাগলো তাতে শ্যামা খুব অস্বস্তিতে পড়লেও মুখে কিছুই বলতে পারলো না কারণ তিনি ছিলেন সম্রাটের অফিসের বস । তাই দাঁতে দাঁত চেপে মিঃ জোতানিয়ার সাথে কথা বলতে থাকে সে ।
বিভিন্ন কথা বলতে বলতে হঠাৎ কখন যেন চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে শ্যামার । তারপর যখন চোখ খোলে তখন নিজেকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় আবিষ্কার করে , শুধুমাত্র শরীরের উর্ধাঙ্গ থেকে নিন্মাঙ্গ পর্যন্ত সাদা রেশমের চাদরে ঢাকা । পাশেই বিশাল দেহ নিয়ে অকাতরে নিদ্রামগ্ন মিঃ জোতানিয়া আর তার পরণে শুধুমাত্র একটি সাদা তোয়ালে ।
শ্যামা ধীরে ধীরে বিছানা থেকে নেমে মেঝেতে পড়ে থাকা পোশাক কোনোরকমে তাড়াতাড়ি করে গায়ে গলিয়ে নিয়েই খুব সন্তর্পনে হোটেলের রুম থেকে এক ছুটে বেরিয়ে যায় । হোটেল থেকে বেরিয়ে একটা ট্যাক্সি ডেকে রওনা হয় বাড়ির পথে । ট্যাক্সিতে বসেই আগের দিন রাতে পার্টির কথা ভাবতে ভাবতে মনে মনে বলে , " ওয়াইন তো আমি খাইনি তাহলে হঠাৎ চোখের পাতা ভারী হয়ে গিয়েছিল কেনো ? আমি তো শুধুই সম্রাটের আনা সরবৎ খেয়েছিলাম তাহলে...... তাহলে
তাতেই কি ? " ব্যস সবকিছু মিলিয়ে দুয়ে দুয়ে চার করতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে শ্যামা ।
আসলে প্রচন্ড কড়া মাপের ঘুমের ওষুধ অথবা মাদকদ্রব্য কিছু মিশিয়ে দিয়েছিল ওর সরবতে তাই কিছুই স্পষ্ট মনে নেই কিন্তু ঘুমের মধ্যে কিছু অশ্লীল কথা কানে আসছিল শ্যামার আর সেখানে একটা পুরানো দিনের হিন্দি গানও কানে আসছিল -
" হুস্ন কে লাখো রং
কৌনসা রং দেখোগে
আগ হ্যায় ইয়ে বদন
কৌনসা অঙ্গ দেখোগে .........." ।
ট্যাক্সি ড্রাইভারকে গাড়ি ঘুরিয়ে গঙ্গার ঘাটের দিকে নিয়ে যেতে বলে, তখন রাতের আঁধার কেটে ফুটে উঠেছে সামান্য আলোর রেশ। ট্যাক্সি থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে টলমল পায়ে কোনোরকমে গঙ্গার ঘাটে পৌঁছে জলের দিকে তাকিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে তারপর চিৎকারে করে কাঁদতে কাঁদতে ধপ করে মাটিতে বসে পড়ে গঙ্গার জলের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে , " হে মা গঙ্গা , আমি কি এমন অপরাধ করেছিলাম যার জন্য এভাবে আবারও আমাকে অপমানিত - লাঞ্ছিত হতে হোলো । ছোটোবেলায় লজ্জাজনক কালিমা লেপে দিয়েছিলে সারা শরীর - মন জুড়ে এখনো সেসব মন থেকে সম্পূর্ণ মুছে না যেতেই আবার কেনো ? আবারও একই কালিমা কেনো লেপে দিলে মা ? আবার কেনো মা , আবার কেনো ? এতো বছর ধরে কায়মনোবাক্যে যাকে ভালোবাসলাম , বিয়ে করে সংসার গড়ে তুললাম , তার ভালোবাসার বীজ গর্ভে ধারণ করে পিতৃত্বের অধিকার দিলাম আর সেই কিনা আমাকে.......... । এতো লোভ , এতো লোভ সামান্য প্রমোশনের জন্য নিজের বিবাহিত স্ত্রীকে তুলে দিল পরের শয্যায় । এতো বড়ো অপমান সহ্য করেও আমি বেঁচে থাকবো কি করে ? এভাবে কি বাঁচা যায় মা ? " এই বলে গঙ্গা বক্ষে ঝাঁপ দিতে গিয়েও থমকে দাঁড়ায়, গঙ্গার জলে হঠাৎ করেই ভেসে ওঠে ছোট্ট নব্যাংশের কচি মুখটা । ছেলের মুখটা মনে পড়তেই দুহাতে মুখ ঢেকে কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে বসে পড়ে শ্যামা, বেশ অনেকক্ষণ বসে থাকার পর আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ায় তারপর শ্লথ গতিতে পা বাড়ায় বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে ।
বাড়িতে ঢুকেই সোজা চলে যায় বাথরুমে , আয়নায় নিজের মুখটা দেখে রীতিমতো আৎকে ওঠে । একি অবস্থা মুখের ? ছিঃ ছিঃ! চোখের কাজল লেপ্টে গেছে সারা চোখের কোলে , লিপস্টিক ছড়িয়ে রয়েছে গাল পর্যন্ত, ঠোঁটের কোণে জমাট বাঁধা রক্ত , সিঁথির সিঁদুর লেপে রয়েছে পুরো কপাল জুড়ে , গলায় - কানের লতিতে পড়েছে কালশিটে । শাওয়ার চালিয়ে তার নীচে দাঁড়িয়ে মুখে - হাতে - গায়ে পাগলিনীর মতো সাবান ঘষতে থাকে কিন্তু যে দাগ মনে লেগেছে তা যে সহস্রবার ধুলেও উঠবে না। সাবান ঘষতে ঘষতে আর কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে বাথরুমের মেঝেতেই বসে পড়ে শ্যামা । হঠাৎ শুনতে পায় দরজায় টোকা দেওয়ার শব্দ, বাইরে থেকে সম্রাট বলছে ,
" কিগো শ্যামা কখন ফিরলে ? আরে এতোক্ষণ বাথরুমে কি করছো ? " শ্যামা কোনো উত্তর না দিয়ে কেঁদে চলে চুপিসারে তারপর ধীরে ধীরে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসতেই সম্রাট ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে শ্যামাকে তারপর দুই গালে গোটা চার - পাঁচেক চুম্বন করে বলে , " Oh Shayma , my sweetheart. Shayma, you have no comparison. You have really done a great job. I love you darling . মিঃ জোতানিয়া তোমাকে পেয়ে তো একেবারে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিল । হোটেলের রুমে তোমাকে আদর করার সময় বারবার বলছিল , " সম্রাট তুম বাস্তবমে বহত ভাগ্যশালী হো । তুম রোজ শ্যামাকি বদনকো ছুঁ সকতে হো । মেরা কিসমত কাহা ইতনা আচ্ছা হ্যায় বোলো , আজকে বাদ পাতা নেহি ফির কব শ্যামাকো ইসতরহা প্যায়ার কর পাউঙ্গা । "
শ্যামা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে সম্রাটের মুখের দিকে দু চোখ বেয়ে গড়িয়ে নামছে জলের ধারা অথচ সম্রাটকে সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই সে অনবরত বলে চলে , " ডার্লিং,আমিতো মিঃ জোতানিয়াকে বলেই দিয়েছি no problem sir , আপ যব তব চাহেঙ্গে ম্যায় শ্যামাকো খুদ লেকর আউঙ্গা আপকে পাস । তব তব আপ কর লেনা প্যায়ার জি ভরকে । "
******** To Be Continued