শিরোনাম- পাগলি
শিরোনাম- পাগলি
_মেয়েটাকে সবাই বলত অ্যাবনর্মাল।আবার কেউ বলেছে সেয়ানা।কেউ বলত,আধপাগলি।মেয়েটার চোখ মাঝে মাঝেই জলে ভরে থাকত।কখনও লুকিয়ে কাঁদত।আসলে তার দোষ কি?সত্যি কথা বলতে কি তার কোনও দোষ ছিল না।
খুব চুপচাপ গোছের, একটু ভালোবাসা পেলেই তার সব কাজ করে দিত।নিজের কথা ভাবার সময় কোথায়?
__সেই মেয়ের নাম রঞ্জা।বিবাহিতা।মা,বাবার আদরের মেয়ে।শ্বশুরবাড়ির সকলেই তাকে অ্যাবনর্মাল বলেছে,অথচ তাকে দিয়েই সমস্ত কাজ হাসিল করেছিল তারা।মেয়েটা আজও বড্ড কাঁদে।
রঞ্জা প্রতিবাদ করতে পারত না।অঝোর ধারায় কাঁদতে পারত।সেই সুযোগ নিয়েই সব হাসিল করত ওরা।অ্যাবনর্মাল রঞ্জা মোটেই ছিল না।
যারা ওকে অ্যাবনর্মাল বলত,তারা সবাই ছিল এক একজন মানসিক রোগী।সেই রোগ জেগে উঠল তাদের। রঞ্জার শরীরের ভিতরটা দেখবে বলে তারা উঁকি দিত তার ঘরে।
আসলে তারা তাকে মারতে চেয়েছিল সেকথা রঞ্জা বুঝতে পেরে যায়।
তাই সে সাবধানী হল।
ওকে নিয়ে ওদের এত উৎসাহ দেখে রঞ্জা নিজেকে বদলাতে শুরু করে বাহ্যিক ভাবে।ওদের সমস্ত কাজকর্ম খেয়াল রাখে।রঞ্জা দেখল, এরা সকলেই মানসিক দিক থেকে ভীষণ দুর্বল, শরীরে শুধু অসুরের মত ক্ষমতা।এই মেরে ফেলে আর কি...এমনই তাদের চেহারার রূপ।সুন্দর জিনিস পেতে চায়,সেটাও বল ক্ষমতা আর চাতুরী প্রয়োগ করে।ভালোবাসার নামে ছলনা করে।
হঠাৎই পাগলি রঞ্জা বলে উঠল, "তোরা সবাই সেয়ানা...মানুষের সাথে ছলনা করে লুট করিস,তারপর, তাকে পাগলি বানাস,নয়তো মেরে ফেলার পরিকল্পনা করিস...?নচ্ছাড় জাত্, তোরা অমানুষ, মানুষের রক্ত চিবিয়ে গিলে বেঁচে থাকিস...!"
__সবাই চমকে উঠল। "পাগলি কি সেয়ানা..!"
আসলে রঞ্জা মোটেও সেয়ানা নয়।সে মার খেতে খেতে একদিন নিজে বাঁচতে চাইল।ঈশ্বর বিশ্বাসী রঞ্জা ঘৃণা করল ঈশ্বরকে।কারণ, শুধুই সে ঠকছিল।আর যারা তাকে ঠকাচ্ছিল প্রত্যেকে মানসিক রোগী।রঞ্জাকে কখনও নিজের বলে তারা ভাবেনি।শুধুই তাকে সবার কাছে প্রশংসা, নয়তো উপহাস করে নিজেদের কার্যসিদ্ধি করে যাচ্ছে।
তাই সে একদিন মানসিক রোগের হসপিটাল তৈরি করল।
পাগলি আজ একটা হসপিটালের মালিক।সেই হসপিটালে বাড়ির সকলেই চিকিৎসার জন্য যায়।কেবল পাগলি যায় না।আসলে সে প্রকৃত সুস্থ একটা মানুষ।
