রক্তের দাগ
রক্তের দাগ


রজতের সঙ্গে সুনিতার আলাপ হয় রজতদের পাড়ার স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এর দিন। রজত পেশায় একজন ভারতীয় সেনা। আলাপ থেকে প্রেম, প্রেম থেকে গভীর সম্পর্ক। সেখান থেকে বিয়ে।
আজ ওদের বিয়ের একবছর পূর্ন হল। ফুলশয্যার রাতেই ভারত মাতার ডাকে রজত কে চলে যেতে হয়েছিল সীমান্তে। যাওয়ার আগে রজত সুনিতাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে , আগামী বছরের স্বাধীনতা দিবস তারা একসঙ্গে কাটবে। এমনকি দুই দিন আগেও রজতের সঙ্গে সুনিতার কথা হয়েছিল।
আজ সেই দিন। অর্থাৎ 15 ই আগস্ট। সকাল থেকেই সুনিতা খুব এক্সাইটেড। ওর শাশুড়ী অনিলা দেবী কে বলেই দিয়েছিল যে উনি যেন আজ রান্নাঘরে আজ না ঢোকেন। কারণ আজ রজতের জন্য সুনিতা নিজের হাতে রান্না করবে।
সকাল থেকে সুনিতা রান্নায় ব্যস্ত। এমন সময় সুনিতার শশুর প্রভাকর বাবু চিৎকার করে সুনিতা কে ডাকলেন। সুনিতা শশুরের ডাক শুনে এক ছুটে শশুরের সামনে আসে। এসে বলে , কি হয়েছে বাবা, আপনি এতজোরে চেঁচিয়ে উঠলেন কেন? প্রভাকর বাবু বললেন, বৌমা একটা খারাপ খবর আছে। সুনিতা কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, কি খবর বাবা? প্রভাকর বলল, টিভিতে এইমাত্র দেখাল, যে গতকাল সীমান্তের লড়াইয়ে ছয়জন ভারতীয় সেনা মারা গেছে। আর তার মধ্যে বাবুও আছে। সুনিতা সব কথা শুনে প্রস্তরমূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে রইল। অনিলা দেবী এসে সুনিতা কে পিছন থেকে জাপটে ধরল, অনিলা দেবীর কোলে লুটিয়ে পড়ল সুনিতার মৃতদেহ।
ডাক্তার ডাকা হল, ডাক্তার চেক করে বলল, ম্যাসিভ হার্ট এটাক। আর ঠিক সেই সময় বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল একটা এম্বুলেন্স। আর সেখান থেকে বেরোল, রজতের রক্তে রাঙানো মৃতদেহ।
মহা সমারোহে রজত আর সুনিতার মৃতদেহ রওনা দিল মহাপ্রস্থানের পথে।
** অতিরিক্ত অংশ **
রজত আর সুনিতা নিজের মধ্যে কথা বলে ঠিক করেছিল যে তারা দুজন একসঙ্গে এইবার স্বাধীনতা দিবস কাটাবে। কিন্তু, এদের মধ্যে যদি কেউ মারা যায়, তাহলে দুজনে একসঙ্গেই মহাপ্রস্থানের পথে রওনা দেবে।
তাই যখন রজতের মৃত্যুর খবর সুনিতা শুনল, তখনই সুনিতা একটা ছোট্ট ইনজেকশন নিজের শিরায় ফুটিয়ে দেয়, এবং মারা যায়।
সমাপ্ত