রাজ নর্তকী-৪
রাজ নর্তকী-৪
রক্ষীরা যখন আমাকে জিজ্ঞেস করল, আমি কে আর প্রাচীরের ভিতরে ঢুকে কি করছি, তখন আমি সত্যি কথাই বললাম। ওরা সে কথা বিশ্বাস করল কি না জানি না, তবে দুজন মিলে আমাকে একটা রাজ প্রাসাদের মধ্যে নিয়ে গেল। প্রত্যেকটা দুয়ারে দুজন করে দ্বারপাল বর্শা হাতে মজুত আছে। সবাই আমাদেরকে রাস্তা দেওয়ার আগে নাম ধাম জিজ্ঞেস করল। শেষে আমরা যেখানে পৌঁছলাম, তা রাজ দরবার বলে মনে হল। রক্ষীরা আমাকে রাজ দরবারের মধ্যখানে নিয়ে গেল। মহারাজ রাজ সভা পরিচালনা করছিলেন। হটাত আমাকে দেখে রক্ষীদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, “এ কে? এখানে কেন নিয়ে এসেছ একে?” রক্ষীরা মহারাজের সামনে নত মস্তক হল, আমাকেও তাই করতে বলল। আমি বাধ্য হয়ে মহারাজকে হাত জোড় করে মাথা নুইয়ে প্রণাম করলাম। মহারাজ আমার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়লেন। এবার রক্ষীরা বলতে আরম্ভ করল, “মহারাজ! এই যুবক বাটিকার শেষ প্রান্তে, প্রাচীরের কাছে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আমরা ধরে ফেলায়, বলে কি না, জঙ্গলে চড়ুইভাতি করতে গিয়ে ছিল, হাতি তাড়া করায় প্রাচীর টপকে এদিকে এসে পড়ে। ওর কথা আমাদের বিশ্বাস হয় না বলে আমরা ওকে রাজ দরবারে নিয়ে আস্তে বাধ্য হই”। মহারাজ মন্ত্রীকে বললেন যাচাই করে দেখতে, আর নিজে সভার কাজে পুনরায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।
মন্ত্রী মহাশয় আমার কাছে এসে অনেক্ষন ধরে আমার জামা কাপড় দেখতে লাগলেন। আমাকে আরও অনেক কিছু জিজ্ঞেস করলেন। আমি সব কথার যথারীতি উত্তর দিলাম। সব শেষে মন্ত্রী মহাশয় রাজার কাছে ফিরে গিয়ে বললেন, “মহারাজ! এই যুবক শত্রু প্রেরিত হতে পারে। এর বেশ ভূষা দেখে কোন কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। আফগান সৈন্যরা যেভাবে আক্রমণ করে চলেছে, তাতে এ একটা গুপ্তচর বলেই আমার সন্দেহ হচ্ছে। একে এখনি মৃত্যু দণ্ড দেওয়া উচিত”। মন্ত্রীর কথা শুনে মহারাজ আদেশ দিলেন, “একে এখনি আমার সম্মুখে হত্যা করা হোক”। আমি হতভম্ব। এরা কি সত্যি সত্যি আমাকে মেরে ফেলবে নাকি! এ তো বেশ মুশকিলে পড়লাম তাহলে! আমি কি করব এবার! কে বাঁচাবে আমাকে? প্রাচীরটা না ডিঙ্গলেই হত। কেন যে মরতে এই জঙ্গলে বনভোজি করতে এসে ছিলাম কে জানে! আমি এই সব ভাবছি আর বাবা মায়ের কথা ভেবে আমার চোখে জল এসে গেল।
দুজন সৈনিক আমাকে হাত আর পায়ে দড়ি বেঁধে দু দিক থেকে ধরে থাকল, আর একটা বিশাল দেহি, দৈত্যের মত দেখতে জল্লাদ, বিরাট বড় একটা খাঁড়া নিয়ে আমাকে শেষ করতে এগিয়ে এলো। আমি তখন পাগলের মত চিৎকার করতে আরম্ভ করেছি। বলে চলেছি, “ছেড়ে দাও আমাকে! আমি কোন শত্রু দেশের গুপ্তচর নই। আমার ঘর কাছেই। চল আমার সঙ্গে, আমি দেখিয়ে দেব!” কিন্তু, জল্লাদটা আমার কথায় কোন ভ্রূক্ষেপ না করে, খাঁড়াটাকে আমার শরীরের সঙ্গে আড়াআড়ি ভাবে দু হাতে ধরে পুরো দমে চালিয়ে দিল। আমি ভয়ের চোটে কেঁদে ফেলেছি। কিন্তু, হটাত একটা জোর ধাতব টক্করের আওয়াজে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। দেখলাম, একটা বর্শা আমার সামনে মাটিতে গাঁথা হয়ে গেছে, তার পেছন দিকটা তির তির করে কাঁপছে, আর জল্লাদটার খাঁড়াটা তাতে লেগে ছিটকে দূরে পড়ে গেছে।
মহারাজ সিঙ্ঘাসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন, “কার এত আস্পর্ধা?” তখন দেখতে পেলাম, রাজ দরবারের উপর তলায়, সারা গায়ে সোনার অলঙ্কারে ভর্তি এক মহিলা এসে দাঁড়িয়ে রাজার উদ্দেশ্যে বললেন, “এ কাজ আমি করিয়েছি মহারাজ!” মহারাজ উপরে তাকিয়ে অবিশ্বাসের সহিত বললেন, “আপনি এই কাজ কেন করলেন মহারাণী?” মহারাণী বললেন, “রাজ সভায় কোন নির্দোষ যুবককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না মহারাজ!” মহারাজ তখন বললেন, “কিন্তু আপনি কি করে জানলেন, যে, এই যুবক নির্দোষ? কোন প্রমাণ আছে?” মহারাণী বললেন, “এই যুবককে বেশ ভাল ভাবে চেনে আমাদের রাজ নর্তকী, শৈলজা। ঐ যুবককে রাজ সভায় দেখে সে এসে আমাকে সব কথা বলে। কাজেই, সত্যি জেনে পর আমি আপনার রাজ সভায় অন্যায় হতে দিতে পারি না, মহারাজ! বাধ্য হয়েই আমি আমার দেহ রক্ষীকে আদেশ করি বর্শা ছুড়ে জল্লাদের হাত থেকে ওকে বাঁচাতে। এতে আমার যা অপরাধ হয়েছে, তার জন্য আমি যে কোন শাস্তি মাথা পেতে নিতে রাজি আছি, মহারাজ!” মহারাণীর উপস্থিত বুদ্ধি আর তাঁর দেহ রক্ষীর বর্শা ছোঁড়ার ক্ষমতা, দুটোকেই মহারাজ সাধুবাদ জানিয়ে, বললেন, “এই পবিত্র রাজ সভার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমি খুবই গর্বিত। তবে, যুবককে মুক্তি দেওয়ার আগে শৈলজাকে এই রাজ সভায় উপস্থিত করা হোক। সে কি ভাবে এই যুবককে চিনল, আর তার পরিচয়ই বা কী, সব জানা যাবে”। মহারাণী বললেন, “এতে কিন্তু রাজ্যের মহারাণীর আত্মসম্মান ক্ষুণ্ণ হবে মহারাজ, কারণ আমি সব যাচাই করার পরেই এই নিষ্পত্তি নিই”। মহারাজ বললেন, “ঠিক আছে, শৈলজাকে আর এখানে আনার দরকার নেই। আমি আপনার সঙ্গে এই বিষয়ে পরে আলোচনা করব। তবে, ততক্ষণ পর্যন্ত, শৈলজা আর এই যুবক, দুজনেই কারাগারে বন্দী থাকবে”। মহারাণী এর পর আর কোন দ্বিরুক্তি না করে চলে গেলেন। রক্ষীরা আমাকে নিয়ে গিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করে চলে গেল। কিছুক্ষণ পরে একজন মেয়েকে আরও দুজন রক্ষী এনে আমার কাছের বন্দী গৃহে রেখে দিয়ে গেল।
আমি অবাক হয়ে ভাবছি, যে, একজন রাজ নর্তকী আমাকে জানে বলে মিথ্যা বলে আমাকে বাঁচাল কেন, আর মহারাণীই বা তার কথা শুনে এতটা বিশ্বাস করলেন কি করে, যখন সে আমাকে চেনেই না! তবু সে আমার জীবন বাঁচিয়েছে মহারাণীকে বলে, সে জন্য আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ । আমি এইসব কথা ভাবতে ভাবতে, আমার কাছের বন্দীগৃহের দিকে তাকিয়ে দেখি সেই মেয়েটাও আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আর যেন মিটি মিটি হাসছে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, “কি ব্যাপার! তুমি হাসছ কেন?” বলল, “আমাকে চিনতে পার নি ?” একী শুনছি আমি? এর কথা তো আমাকে মৃণ্ময়ীর স্মরণ করিয়ে দিল। কিন্তু, বন্দী গৃহের ক্ষীণ আলোয় যতদূর দেখা যাচ্ছে, এ তো মৃণ্ময়ী নয়। একদম আলাদা চেহারা। তা ছাড়া, মৃণ্ময়ী ছিল ভীষণ ফর্সা। এও সুন্দরী, কিন্তু কৃষ্ণাঙ্গ। সুধু একটা বিষয় খুব ভাল ভাবে লক্ষ করলে, দুজনের মধ্যে একটা অপূর্ব রকমের মিল খুঁজে পাওয়া যায়, আর তা হচ্ছে, কথা বলার ভঙ্গী। আমি চুপচাপ তার দিকে তাকিয়ে কি সব ভেবে চলেছি, তার প্রশ্নের কোন উত্তর দিচ্ছি না । সে আবার আমাকে জিজ্ঞেস করল, “আমাকে চিনতে পার নি এখনও?” আমি চিনতে এত দেরি করলাম! অথচ, সে আমাকে অত দূর থেকে চিনতে পেরে ছিল বলেই তো মহারাণীকে আমার কথা বলে আমাকে বাঁচাল! নাহলে, আমি তো মরেই যেতাম। আমি ওর দিকে অপলক নয়নে চেয়ে রইলাম। বললাম, “তাহলে মৃণ্ময়ী, শেষে তুমিই আমাকে বাঁচালে! আমি তো জেনেই গেছিলাম যে মৃত্যু সুনিশ্চিত”। আমার দিকে তাকিয়ে, মুচকি হেঁসে, সে বলল, “আমি মৃণ্ময়ী না, শৈলজা। সেই জন্যই তুমি আমাকে চিনতে পার নি। মৃণ্ময়ী ছিল বিরাট রাজার রাজ নর্তকী, আর আমি হলাম মহামান্য রাজা অনঙ্গভিমের দরবারের রাজ নর্তকী। এখন এখানে এসে আফগান সৈন্যরা প্রায়ই উৎপাত করছে। সে জন্যই রক্ষীরা তোমাকে গুপ্তচর ভেবে বন্দী করে ছিল। আমি তোমাকে রাজ প্রাসাদে ঢোকা মাত্র চিন্তে পারি, আর মহারাণীকে সঙ্গে সঙ্গে তোমার কথা বলি। রাজ সভায় পৌঁছতে মহারাণীর একটু দেরি হয়ে গেল, নাহলে এই কাণ্ড হত না”। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘এরপর কি হবে?” শৈলজা বলল, “এরপর তোমাকে আর আমাকে চিরদিন এই বন্দিশালায় থাকতে হবে”। আমি বললাম, “তা কি করে হয়? তুমি আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারলে, আর, বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করতে পারবে না?” শৈলজা বলল, ‘কাল ভোরে ওসব নিয়ে চিন্তা কোর। এখন খাবার নিয়ে আসবে। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়”। আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম ওর কথায়।
কিছুক্ষণ পরেই খাবার চলে এলো। খেয়ে নিয়ে আমি আবার শৈলজার সঙ্গে কথা বলতে থাকলাম। আমি ওকে বললাম, কত বার আমি সেই যায়গায় গেছি দেখা করতে। বললাম, কত কষ্ট হত আমার ওকে না দেখতে পেয়ে। ও এইসব কথা মন দিয়ে শুনতে লাগল। শেষে বলল, “তুমি আমাকে এত ভালবাসো?” আমি বললাম, ‘আমি তোমাকে সত্যি খুব ভালবাসি। তুমি সুধু আমাকে রাস্তা বলে দাও, আমি তোমাকে এখান থেকে নিয়ে চলে যাব”। শৈলজা স্মিত হেঁসে বলল, “এখান থেকে পালাতে গেলে এক মাত্র রাস্তা হচ্ছে মৃত্যু। এখানে যে একবার ঢুকেছে, সে আর কখনও বেরতে পারবে না”। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কেন?” সে বলল, “এখান থেকে যে পালাতে চায় সে দেশদ্রোহী। তার কোন ক্ষমা নেই”।
এই সব কথা শুনতে শুনতে আমি একেবারে মুষড়ে পড়লাম। ভাবতে থাকলাম, “আর বোধয় ঘরে ফেরা হবে না। বাবা মা কি ভাববে কে জানে!” এর মধ্যে কখন আমি ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়াল নেই। স্বপ্নে মা আর বাবাকে দেখলাম। বাবা বললেন, “চিন্তা করিস না! সব ঠিক হয়ে যাবে”। হটাত, একটা আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে গেল। দেখলাম, শৈলজা আমার বন্দি গৃহে এসে দাঁড়িয়ে আছে। আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। শৈলজা বলল, “উঠ, আর দেরি করলে পালাতে পারবে না”। আমি বললাম, “তুমি যে বললে, আর এখান থেকে বেরনো যাবে না”। শৈলজা মুখে আঙ্গুল রেখে আমাকে চুপচাপ ওর সঙ্গে বেরিয়ে যেতে ইশারা করল। আমি বন্দি গৃহ থেকে ওর সঙ্গে বেরলাম। তখন ভোর হতে চলেছে। আমরা ধীরে ধীরে পা ফেলে মুখ্য দরজার দিকে এগোলাম। দুজন রক্ষী তখন আমাদের জন্য দরজা খুলে ধরল। শৈলজা আমার হাত ধরে সেই দরজা দিয়ে আমাকে বার করে আনল। হটাত সেখানে মহারাণী এসে উপস্থিত হলেন। আমাকে বললেন, “তোমাদের প্রীতি ও ভালবাসা দেখে মহারাজ খুবই মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি তোমাদের দুজনকে মুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন। তবে, তোমাদেরকে ভোর হওয়ার আগেই এখান থেকে চলে যেতে বলেছেন। তোমরা আর দেরি না করে, যত শিগগিরি সম্ভব, এখান থেকে দূরে চলে যাও”। আমাদের জন্য মহারাণী একটা ঘোড়া গাড়ি দিলেন, আর দুজনের হাতেই তরবারি। বললেন, “রাস্তায় বিপদ হলে, এর ব্যাবহার কোর”। আমরা মহারাণীকে প্রণাম করে সেখান থেকে বেরলাম। ঘোড়া গাড়ি ছুটতে থাকল। আমি তখন কিছুই বুঝতে পারছি না, কি হচ্ছে, আর আমরা কোথায় বা যাচ্ছি। শৈলজাকে সে কথা বলতে, সে ঘোড়ার রাশ টেনে ধরে গাড়ি থামাল। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “তুমি আমাকে এবার বিদায় দাও, বন্ধু! সূর্য উঠতে চলল। আর আমি তোমার সঙ্গে যেতে পারব না”। আমি কিংকর্তব্য বিমুঢ় হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “মহারাণী যে বললেন আমাদেরকে দূরে চলে যেতে! তুমি তাহলে আমার থেকে বিদায় নিতে চাইছ কেন?” শৈলজা বলল, “আমাদের যুগ বহুত পিছনে পড়ে আছে বন্ধু, আর তুমি হলে এখনকার যুগের সুপুরুষ। আমাদের মিলন কখনোই সম্ভব নয়। তবে তোমাকে কথা দিয়ে ছিলাম দেখা করব বলে। তাই এই ঘটনার সাক্ষী হতে পারলে তুমি। এবার আমাকে বিদায় দাও, আর নিজের কর্মক্ষেত্রে সফল হও!” শৈলজা এবার দু হাত প্রসারিত করে আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসল। আমি তাকে ধরতে গেলাম, কিন্তু, কেবল তার হাত দুটোই আমার হাতকে স্পর্শ করতে পারল। ধীরে ধীরে, ঘোড়া গাড়ি সমেত, শৈলজা আমার চোখের সামনে হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।
তখন আমি নিজেকে আবার সেই ডম ডমণী জঙ্গলের কাছে পেলাম। সূর্য উঠে গেছে। চার দিকের গাছপালা সব ভেঙ্গে ধ্বস্ত বিধ্বস্ত হয়ে আছে। আমি একটু এগিয়ে গিয়ে সেইখানে পৌঁছলাম, যেখানে আমরা আগের দিন ভোজ করছিলাম। সেখানে আমার বাইকটা পড়ে আছে। বাইকটাকে তুলে, ওতে বসে কিক মারলাম। গাড়ি চালু হয়ে গেল। আমি যখন ঘরের কাছাকাছি পৌঁছলাম, তখন রবি, তপন আর শঙ্কর আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমাকে দেখে ওরা তিন জনই তেড়ে এলো। রবি আমার শার্টের কলার ধরে বলল, “তুই এত দেরি করলি কেন? এত দেরি করলে, আমরা কখন গিয়ে পৌঁছব ডম ডমণীতে? ওখানে গিয়ে তাড়াতাড়ি না পৌঁছলে, আজকে যায়গা পাব না রান্না বান্না করার, তা জানিস?” আমি অবাক হয়ে গেলাম। এরা কি বলছে? আমরা তো কালই ডম ডমণী গেছিলাম ভোজ করতে, খাওয়া দাওয়া করে উঠতে যাব, তখন হাতি তাড়া করল! এরা আজকে আবার যাওয়ার কথা কেন বলছে? আমি জিজ্ঞেস করলাম, “আজকে কি বার?” শঙ্কর বলল, “নে বাবা! এ আবার ভুলেই গেছে যে আজ রবিবার, মকর সঙ্ক্রান্তি। তাহলে তো তুই নিশ্চয় আমাদের পিকনিকের প্ল্যানও ভুলে গেছিস?” আমি হতভম্ব হয়ে একবার ওর দিকে তাকালাম আর একবার আমার হাত ঘড়ির দিকে। ঘড়িতে দেখলাম, আজ ১৪ জানুয়ারি, রবিবার।
সমাপ্ত।
