Apurba Kr Chakrabarty

Romance Tragedy Classics

4.5  

Apurba Kr Chakrabarty

Romance Tragedy Classics

প্রেম বিরহ (২য় পর্ব)

প্রেম বিরহ (২য় পর্ব)

14 mins
305


আটের দশকের প্রথম দিকে এয়ারফোর্স রিক্রুটমেন্ট সেন্টার তখন টালিগঞ্জে ,অপু এয়ারফোর্স চাকরীর দরখাস্তের মাস খানেক পর স্ক্রিনিং টেস্টের জন্য লিখিত পরীক্ষা অ্যাডমিট কার্ড এল।পরীক্ষার নিয়ম বিধি, সিলেবাসের ধারনা ও পরীক্ষার সময়সুচী ছিল। অপুর তখন দ্বাদশ শ্রেণির ফল সদ্য বের হয়েছিল। আশানুরূপ ফল হয়েছিল। কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয় নি। অপুর দাদা কলকাতায় পড়ে , সিটি কলেজে। ঐ কলেজে ভর্তির ওর পরিকল্পনা থাকলেও, এয়ারফোর্স রিক্রুটমেন্ট স্ক্রিনিং পরীক্ষা দিল। 

টালিগঞ্জ ট্রামডিপো থেকে কাছেই ছিল এয়ারফোর্স রিক্রুটমেন্ট সেন্টার। পরীক্ষা দিয়েছিল প্রায় বারো শো ছেলে।অপুর কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ, ম্যাথে অনার্স পেয়েছিল। ক্লাস শুরু হয়নি। এয়ারফোর্স রিক্রুটমেন্ট স্ক্রিনিং সফলতার চিঠি এল।আবার পরীক্ষা।

অনুর মোহে অপু তখন পাগল, ছোট গ্রাম জন শুন্য প্রায় পুকুরের পাড়ে মাছ ধরা আর বাগানের গাছের ফল পেড়ে খাওয়ার ,সাথে সাথেই অনুর নিরীহ সরল সুন্দর মুখমন্ভল অপুকে পাগল করত।কত বার কিশোর অনুর নিষ্পাপ মুখে চুমু খেয়ে আদর করেছে অপু তার হিসাব ছিল না। অনু কোন আপত্তি করত না।শিবের ভক্ত আস্তিক অনু তো অপুকে তার জন্ম জন্মান্তরে স্বামী মনে করত। 

দীর্ঘ নিয়োগ প্রক্রিয়া ,প্রাথমিক ফিজিক্যাল ফিটনেস আবার ,লিখিত পরীক্ষা,অঙ্ক ফিজিক্স ইংরেজী,তার ফল ভিত্তিক তার অঙ্ক ভালো ফলের জন্য নাকি সে মেকানিক্যাল ট্রেড প্রাথমিক সিলেক্ট হল।তারপর মেডিক্যাল, পায়ের নখ থেকে মাথার চুল, আক্ষরিক অর্থেই পরীক্ষা নিরীক্ষা।লাজুক অপুর লজ্জার শেষ থাকে না,কোন পোষাক ছাড়াই তাকে মেডিক্যাল বোর্ডতে অ্যাপিয়ার হতে হল, তবে সে একা নয়,পাঁচ জন করে ছেলেদের একসাথেই ঘরে একই ভাবে,কচি কার্তিক ঠাকুর হয়ে দাঁড়িয়ে ,তাই একটু লজ্জা কম লাগছিল।

 দাঁত,নাকের হাড় বাঁকা,বুকের কফ,চোখের দৃষ্টি কালার ব্লাইন্ড, আরও কত কী ত্রুটির কারণে অনেকেই বাতিল হল, সাময়িক স্থগিত হল,আবার কেউ ট্যকনিক্যাল ট্রেড নন ট্যকনিক্যালে বদল হল । আরও সব কত রকম কান্ড! ইন্টারভিউ, পুলিশ ভেরিফিকেশন, স্কুলে, লোকাল পঞ্চায়েতে তদন্ত হয়েছিল। শেষে বন্ড, অরিজিনাল শিক্ষাগত সার্টিফিকেট জমা ।আরও কত কী! এ চাকরী তাকে গ্রামে, আর যতসব আত্মীয়স্বজনের মাঝে হিরো করে দিল। তখন গ্রামের মানুষের এতসব জানা নেই। এয়ারফোর্সে চাকরী মানেই বিমান চালাবে। 

অক্টোবর মাসের শেষ ট্রেনি হিসাবে মেকানিক্যাল ট্রেডে এ রাজ্যের পঁচিশ ছাব্বিশ জন ছেলে নিয়োগপত্র পেলো সঙ্গে নির্দেশিকা। মাদ্রাজের কাছে ট্যামবারাম ট্রেনিং কেন্দ্রে প্রথমে ট্রনিং,তার পর এক মাস ছুটি আবার ন মাস ট্রেনিং তারপর প্রাথমিক পোষ্টিং।

ছমাসে একটানা গৃহ ছাড়া থাকতে তাকে ভীষণ ব্যাথিত করছে।।মাদ্রাজ মেলে চাপার পর তার মনটা কেমন গ্রাম আর বাড়ির জন্য ব্যাকুল হচ্ছে। এদিন ছিল কালী পুজোর পরদিন।আগামীকাল ভাই দ্বিতীয়া,আবার তার জন্মদিন।উনিশ অতিক্রম করে কুড়িতে পা দেবে। ট্রেন টা রাতে ছাড়ল, দাদা হাওড়া স্টেশনে এসে বিদায় জানাল। কিন্তু মনের ব্যাকুলতা যেন শান্ত হয় না। মিলিটারী কোচ।আজ থেকেই তাদের বেতন শুরু। তীব্র বেকার যুগে, মাধ্যমিক ফাস্ট ডিভিশন, কেউ এইচ এস ,ষোল থেকে কুড়ি বছর বয়সে খোদ কেন্দ্র সরকারের চাকরী।

 কুড়ি বছর বন্ড শেষ করে,আজীবন পেনশন সঙ্গে অন্য চাকরীর সুযোগ , সংরক্ষণ সুবিধা।এতসব অপু জানত না।সঙ্গীরা অনেকেই জানে,দুজনের বাবা তো এয়ারফোর্স চাকরীরত, বন্ড শেষে আবার যারা এয়ারফোর্সে চাকরী করছেন,তেমন অপশনও আছে।এরা দুজন অনেক জ্ঞান দিচ্ছিল বাকীরা আনন্দে উত্তেজনায় ফুটছিল।

একজন আনন্দে পোষাক খুলে জাঙ্গিয়া পড়ে বসে। গ্রামের ছেলে গুলো লাজুক চুপচাপ ছিল। লাফালাফি হৈহুল্লোর কলকাতা আর বাকী শহরের ছেলেরা বেশী করছিল। খড়্গপুরের ছেলেটি অসীম ব্যানার্জি খোলা গায়ে জাঙ্গিয়া পড়ে আনন্দে নাচন কোদন করছে।

বলছিল, যাক শালা এবার কে আমার রিঙ্কু সোনার সাথে বিয়ে আটকায়! রিঙ্কুর উদ্দেশ্য শুন্যে চুমু ছুড়ে বলছিল,পনের ষোল মাস ট্রেনিং ,এরপর চাকরী পাকা , পোষ্টিং পেলেই রিঙ্কু সোনাকে বিয়ে করব।তোদের সবাইকে ইনভাইট করব। ফুলশস্যার রাতে পেন্টি ব্রেসিয়ার পড়ে আমার রিঙ্কু সোনা লাল নরম ভেলভটের গদি চেয়ারে বসে থাকবে। কেমন ওর রূপ, তোরা দেখে জ্ঞান হারাবি। অনেক ছেলে তাকে আরও উৎসাহ দিচ্ছিল।

অপুর ভালো লাগে না।অনুর কথা ভাবে।তার শরীর সবার সামনে আনব, ভাবতে পারে না। ও আমার, শুধুমাত্র আমার। অসীমের কান্ড জ্ঞান ভেবে অবাক! কেমন সে তার রিঙ্কু সোনাকে ভালবাসে! বাজারের মেয়ে নাকি! এই কমপার্টমেন্টে বিহারের চল্লিশ জন সহ ট্রেনি হাওড়া থেকেই উঠেছিল। 

একটু চাপাচাপি সংকীর্ণ সিটে, অপু বসে বসে ঘুম ভালো হচ্ছিল না।আপন মনে মায়ের মুখটা মনে পড়ছিল। মা তাকে আরও পড়াশোনার করতে বলেছিল।অপু হয়ত তাই করত,কিন্তু অনুর মোহে সে পাগল। অসীমের মত প্রকাশ্যে না বললেও সে ঠিক করছে, ওর মতই ষোল মাস পরে ট্রেনিং শেষ করে পাকা চাকরী আর পোস্টিং পেলেই, দাদার বিয়ে হোক না হোক অনুকে বিয়ের প্রস্তাব বাড়িতে দেবে।মা রাজি না হলে রেজিস্ট্রেশন ম্যরেজ করে তার কাছে অনুকে নিয়ে আসবে।

অনুর সরল সাদাসিদে সুন্দর মুখটা ভাবলেই সে কেমন অধৈর্য হয়ে যায়। সেদিনের ঝড় বৃষ্টির কালবৈশাখী বিকাল শেষে,আম কুড়োতে গিয়ে ভিজে একাকার । নির্জন বাগানে তার হটকারিতায় অনুকে উর্দ্ধভাগ বিবস্ত্র করে, অনুর তাকে তীব্র আবেগ উত্তেজনা কাঁপা নরম হাতে জড়িয়ে ধরেছিল ,ঘনঘন গরম নিশ্বাস,অর্দ্ধ নগ্ন শরীরে তীব্র কাঁপনী।তারপর বাড়ি ফিরে ভীষণ জ্বর, বিকার ভুল বকা ,কিন্তু তার দুষ্টমী চেপে রেখেছিল! তার এই দায়বদ্ধতা ,অপুর কত সম্মান রেখেছিল মা কামীমার কাছে। অপু কৃতজ্ঞ, তারপর থেকেই অনুকে ভীষণ বিশ্বাস করে ,ভালোবাসে।

একান্তভাবে অনুকে আজীবন কাছে পেতেই অপুর এই এয়ারফোর্স চাকরী।যদি তার আগে অনুর বিয়ে হয়ে যায়! আর সে ছাত্র থাকে, তার কোন জোরই থাকবে না। অনু ছাড়া তার জীবন অসম্পূর্ণ ,অপুর এটাই তো অন্তরের কথা।

এয়ারফোর্স আসার আগেদিন অনু শিব মন্দিরের অনেকক্ষণ পড়েছিল।অপু তার কাছে গিয়ে বলে কি ব্যাপার তোর! কতক্ষণ তোদের বাড়িতে ছিলাম তোর সাথে দেখা করতে গেছিলাম। কাল ভোড়েই রওনা হব।তোর সাথে আর দেখা হবে না।

অনু ফুঁপিয়ে কাঁদছিল চোখে জল, অপুকে প্রনাম করল।

কী পাগলামী করছিস।

তুমি আমার স্বামী,বাবা মহাদেবের কাছে তোমার মঙ্গল কামনা করছিলাম।

তোর মা বলল তুই আজ উপোস আছিস!

ও কিছু নয়। তুমি কতদিন থাকবে না ,দেখতে পাব না মনটা ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।

তোর জন্যই তো যাওয়া,একটু কষ্ট কর।কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে কী! তোকে তারপর আজীবন আমার কাছেই রাখব, আর কমাস অপেক্ষা কর।

অনু কাদঁ কাঁদ অপরাধী মনে বলে মা জেনে গেছে তুমি আমাকে ভালোবাস ,আর এই চাকরী তুমি আমার জন্য করতে যাচ্ছ।

সেকী মা জানলে !

জেঠু মাকে বলবে না, আমার মাথা ছুয়ে মা দিব্যি করেছে।মা ভীষণ খুশী বলল,পরে সব জানাজানি হলে জেঠুমা যদি আপত্তি করে,মা জেঠিমার পা ধরে রাজী করাবে।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে অপু বলে কাকীমা ভীষণ সরল পেটখোলা আমার ভয় হচ্ছে।কী করে জানল আমি তোকে এত ভালোবাসী! তোর মাকে তুই বলেছিস !

আমি কদিন তোমার কথা ভেবে ভেবে মনমরা। পড়াশোনার মন আসছিল না, কাল কেমন তোমার জন্যে মনটা খারাপ হচ্ছিল।এখনই পড়াশোনার ছেড়ে আমার জন্য তুমি কত কষ্ট করবে, ভেবে কাঁদছিলাম। মা দেখতে পেয়ে চেপে ধরল, কেন কাঁদছি!

আমি নিজেকে আর সামলাতে পারিনি। মাকে জড়িয়ে কেঁদে সব বলে ফেললাম ।

মা বলল,আমি জানি তোদের এ ঘনিষ্ঠতা ভাইবোন এমনি বন্ধুত্বের নয়।তবে অপুরা ধনী,বনেদী শিক্ষিত ফ্যামিলি, আমরা ওদের মন্দিরের পুরোহিতের এর উপর আমাদের জীবিকা, তাই চেপে আছি।আমি না জানার ভানে থাকি। তোর জেঠিমা তোকে খুব ভালোবাসে, কিন্তু অপুর বৌ তোকে মেনে নেবে কীনা আমার ভয় হয়। জোর করা যাবে না আমরা গরীব,ওদের উপর আমাদের জীবিকা। 

এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে অপুকে ওর মা তো ভীষণ ভালোবাসে। পড়াশোনার ছেড়ে এ চাকরীতে যাক একদম রাজি নয়, ওর বাবা দাদা জামাই ,দিদিরা সবাই অপুর সিদ্ধান্ত সঠিক মনে করছে। বেকার যুগ ,কেন্দ্র সরকারের ভালো চাকরী,তাই তোর জেঠিমা নিমরাজী। এখন যদি এসব জানে, হয়ত ভীষণ রেগে যাবে।

অনু একটু উদ্বিগ্ন হয়ে বলে আমি আজ তাই বাবা মহাদেবের কাছে বসে। যেন জেঠিমার এখন কিছু না জানতে পারে। তুমি পাকা চাকরী পেলে জেঠিমা রাজি না হলে তোমার সাথে লুকিয়ে পালাব।"

অপু হাসে "তার দরকার হবে না।তোকে ভালোবাসী বিয়ে করব বললে মা কিচ্ছু বলতে পারবে না ।মাকে আমি চিনি। আমার মনে দুঃখ দেবে না। আর তুই খারাপ কী ,তোরাও ব্রাহ্মণ, এত তুই ভালো দেখতে । পড়াশোনার করছিস, মাধ্যমিক ভালো করে পাশ কর। বারোক্লাসে ভর্তি হবি।তারপর কী করতে হয় আমি আছি।"

কত কথা অপুর মনে পড়ছিল। পরদিন সকালে অপুর মন ভীষণ খারাপ ,তার আজ জন্মদিন আবার আজই ভাইদ্বিতীয়া। দিদিরা আসবে, দাদাকে ফোঁটা দেবে, আর আমাকে না পেয়ে দেওয়ালে ফোঁটা দেবে। মা যেমন মামারা ভাইদ্বিতীয়াতে না এলে দেয়! দুঃখে দুচোখ জলে ভরে ওঠে।

সকালেই চিল্কা হ্রদ পার হয়ে, এখন অন্ধ্রপ্রদেশ, ভারতের পূর্ব উপকূলের মালভূমি মাধ্যমিক ভুগোলে পড়েছে ,পাহাড়ি মালভুমি অনুর্বর তাল গাছে ভর্তি, আর ছোট ছোট পাহাড়।জীবনে সে নিজের জেলা আর কলকাতা যাওয়া আসার পথ ছাড়া কিছূ চেনে না।বাইরে কোথাও সে বেড়াতে যায়নি। দুঃখের মাঝে আনন্দ হচ্ছিল, বড় বড় নদী,রাতে ঊরিষ্যাটা তেমন দেখতে পায়নি।চিল্কা মানেই তো প্রায় উরিষ্যা শেষ!

তারপর গোদাবরী কৃষ্ণা আরও কত নদী শহর! ট্রেনের সারাদিন তাদের আজ কাটাতে হবে,পরদিন সকালেই তাদের গন্তব্য মাদ্রাজ স্টেশন।

মাদ্রাজ স্টেশনে তারা খানিকক্ষন অপেক্ষা করছিল তার পর ট্যামবারাম এয়ারফোর্স ট্রেনিং সেন্টারের নিজস্ব গাড়িতে তাদের তুলল। হুডখোলা গাড়ি। জে ডব্লিউ ও, পি সিং, আর কর্পোরেল মারকেনডিও, তাদের নির্দেশ দিচ্ছিল । ভীড় ভাট্টা গদাগদি।একজন অপুর সহট্রেনি সঙ্গী,রসীকতা করে বলল,ডিফেন্স টাফ ট্রেনিং শুরু হয়ে গেল।

মাদ্রাজটা তেমন বুঝতেই পারে না অপু ,কখন হৈচৈ আর গাদাগাদি করে ট্যামবারাম ট্রনিং ক্যাম্পাসে এসে ছিল। নিদিষ্ট ভিলেট গিয়ে ল্যাগেজ রেখে, আবার কিট নিতে একটা স্টোর রুমে হাজির। সব নয় বাকি পরে দেওয়া হবে।নিত্য দরকারী কিছু সামগ্রী,খাবার পাত্র, কাটা চামচ, বিবিধ ড্রেস ,সু, এংলেট, মোজা বেল্ট বিছানার চাদর মশারীর মত আরো কত কিছু।আবার এর মধ্যে ছিল হাউস ওয়াইফ একটা আইটেম। দরকারী ছোট মাল রাখার জন ছোট ব্যাগের মত সুইং কিট।

সেদিন খেতে বেশ অবেলা হল।খুব শারীরিক ধকল গেল। কষ্ট হচ্ছিল, মনে হচ্ছিল এই জন্যই মা বলেছিল পড়াশোনা কর। চোখে জল আসছিল।তার তো খাবার অভাব নেই! কিন্তু ঐ যে অনু ওকে পেতেই হবে। এত কষ্ট অনুর জন্য, কিন্তু অনুর জন্য এতটুকু রাগ ক্ষোভ হচ্ছিল না।এটাই হয়ত,প্রকৃত ভালোবাসা আর অনুরাগ

নিজের কষ্ট ক্রমে অপু সামলে নিচ্ছিল। কষ্ট হলেই মায়ের মুখটা মনে পড়ে দুঃখে চোখ জলে ভরে যায়। মায়ের যত্ন করে খেতে দেওয়া,আর স্নেহের ডাক অপু খাবি আয়। আর অনুর কথা ভাবলে শত কষ্ট দুঃখ তার আর মনে হয় না।কবে অনুকে একা পাবে,আর কী ভাবে আদর করবে ভাবতে ভাবতে কতক্ষণ যে স্বপ্ন দেখে! যত সব আকাশ কুসুম আবোল তাবোল স্বপ্ন, ভেবে নিজের মনেই হাসত, লজ্জা লাগত কী সব অনুকে নিয়ে ভাবছি।

ভোড় চারটে অপুরা উঠে পড়ে ,বাথরুম থেকে এসে অপু নিজের কেনা হরলিক্স বড় কাপে জলে গুলে খেয়ে নিতো ।তারপর ভোড়ের হেল্থ রানের জন্য কেডস শর্টস গেঞ্জি অপু পড়ে নেয়, হুইসেল পড়লে হাজির হতে হত নিদিষ্ট স্থানে, তার পর ছুট ।প্রথম প্রথম কষ্ট হতো, পিছিয়ে গেলে ইনস্ট্রাক্টর পিছন থেকে ধাক্কা দিত, ঠেলত।কিছুদিন পর সমস্যা হত না।

তারপর, সকালে মেসে চা টিফিন ,কোন দিন, রুটি ডাল,কোন দিন পাউরুটি জেলী, কোন দিন লুচি তরকারি, আরও দক্ষিণি টক খাবার ,অপুর ভালো লাগত। স্টং রুমে লম্বা লাইন দিয়ে ভারী রাইফেল নিত, তার পর আড়াই তিন ঘন্টা প্যারেড, তার পর মার্চ করতে করতে এক কিমি এডুকেশন সেন্টার।ওখানে থাকত তামিলনাড়ুর কিছু সিভিল মানুষ সিঙ্গাপুরী কলা বেচত।অপু চারটে কলা কিনে খেয়ে নিতো।প্যারেডের পরিশ্রম সকালের হালকা টিফিন তল হয়ে যেত।

এডুকেশন তার কোন সমস্যাই নয়। রাজ্য বোর্ডের তার হায়ার সেকেন্ডারী যা সিলেবাস, কোন সমস্যাই হত না।এক সার্ভিস সংক্রান্ত নলেজ বুক আর ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং একটু নতুন। এডুকেশনে বড় বড় রাঙ্কের কমিশনার অফিসার, ফ্লাইং অফিসার থেকে স্কোড্রেনলিডার , গ্রুপ ক্যাপ্টেন, আবার নন কমিশনার রাংকের সার্জেন , তাদের ক্লাস নিত।এই সময়টাই অপুর খুব ভালো লাগত।

এক সার্জেন ছিলেন বাঙালি নাম এম মুখার্জি ,খুব শান্ত ভদ্র মানুষ, তিনি ম্যাথে এম এস সি করে সরাসরি এডুকেশন বিভাগে সার্জেন হিসাবে যোগ দেন।বনগাঁ বাড়ি। তিনি বাঙালি ছেলেদের উৎসাহ দিতেন,বলতেন দেখো যত কমিশনার রাঙ্কের যত অফিসার বেশীরভাগ অবাঙ্গালী ।বাঙালি মেধাবী ছেলেরা কেবল ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তার হবে, প্রফেসর, ব্যাঙ্ক পিও লক্ষ্য, আর ,আই এ এস ,আই পি এস তো স্বপ্ন। কিন্তু ডিফেন্সের বড় বড় পদে আসে কম। ডিফেন্স একাডেমী কথা কজনই বা জানে!

আর তোমরাও এ এম আই ই ডিগ্রি করবে,এতে পরে নন কমিশনার অফিসার থেকে কমিশনার অফিসার হতে পারো। বেতন,সম্মান ক্ষমতা পদোন্নতি অনেক গুন বেড়ে যায়। তোমাদের বয়স এখন কম।নিজের একাডেমিক কেরিয়ার দিকে মন দাও।

অপু তখন এসব ভাবত না।আগে অনুকে বিয়ে করে আমার কাছে আনি ,তারপর ভাবা যাবে কেরিয়ারের কথা।তবে অনেক বাঙালি ছেলে তার কথায় উদ্বুদ্ধ হত।তাকে পছন্দ করত।পদে বা রাঙ্কের অনেক নিচে অবস্থান করলেও উনি অনেক স্কোড্রেনলিডার স্যারের চেয়েও ভালো পড়াতেন।

এডুকেশন ক্লাস থেকে ফিরে স্নান,সে এক কান্ড, কিছু ছেলে ঘেরা বাথরুমে কপাট লাগিয়ে ,আবার কেউ খোলা স্নানাগারে,আপাদমস্তক খোলা শরীরে হৈহৈ করে স্নান করত।তারপর ছুটত খাবার মেস হল। খাওয়ার মান ভালো,সপ্তাহে চার দিন মটন, একদিন মাছ,একদিন চিকেন আর রবিবার জোড়া ডিম সিদ্ধ। ডাল দরকারী চাটনী ছিলই, ভাত রুটি নিজের খুসী মত।ভেজ খাবার যারা খেতো ডাল অনেক উন্নত মানের আর দুধ।আবার অনেকেই বাড়ী থেকে আচার ঘী এনেছিল। বড় চামচ ভর্তি সঙ্গে নিয়ে খাবার হলে যেতো।নিজের খাবার থালা সব কিছুই নিজে ধুয়ে নিতে হত। 

বিকালে পি টি অপুর খুব পছন্দ ছিল, খুব উপভোগ করত।রাতে ডিনার শু পড়ে মেসে খেতে যেত। এসে খানিক পড়াশোনা,আর দশটার পর তাদের মস্ত ঘরের আলো অফ করে শুয়ে পড়তে হত। রাতে মাঝে মাঝে আবার তাদের উপস্থিতি দেখতে রোলকর হত। এসব তার ভালোলাগত না।বড় হলঘর যেন মিনি ভারত।মোট চব্বিশ জনের বেড এই বড় হলে । দুই সারিতে বারো জন করে ।চার জন বাঙালি পর পর বেড একদিকের হলের পূর্ব দেওয়াল বরাবর।আর ঠিক উল্টো দিকে পশ্চিম দেওয়াল বরাবর, দুই জন কেরলের, তারপর তিন জন কর্নাটকের । আর তাদের সারি চার জন বাঙালির পর, ইউ পি,বিহার,এম পি, হরিয়ানা পাঞ্জাব আর উল্টো সারিতে কেরল কর্নাটক অন্ধ্র তামিলনাড়ু উরিষ্যা মারাঠা ছেলেরা থাকত।

মোট অপুদের ব্যাচে তিনশো ছত্রিশ জন এ সি এয়ার ক্র্যাপ্ট মেকানিক্যাল ট্রেড সারা ভারত থেকে ছেলেরা ট্রেনিং নিচ্ছিল। রাজ্যে জন সংখ্যার অনুপাত এই রিক্রুটমেন্ট কিনা কে জানে।ছোট রাজ্য যেমন ত্রিপুরার দুজন,আর অবিভক্ত তখনকার ইউ পি তে পঞ্চান্ন জন ছেলে ট্রেনিং নিতে এসেছিল।এই তিন শো ছত্রিশ জনকে আটটা গ্রুপে ভেঙ্গে প্রতি গ্রুপের ছেলেদের একসাথে এক বা দুই হলে রাখা হত।আর তাই প্রতিটি গ্রুপেই সব রাজ্যের বিশেষত বড় রাজ্যের ছেলেরা থাকত।

অপুর খুব ভালো লাগত।সারাভারত নিজের দেশ মনে হত।প্রাদেশিক আর ভাষাগত সংকীর্ণতা থাকত না অপুর প্রিয় বন্ধু ছিল ,কর্নাটকের ছেলে বি হংগেল আর কেরলের পি কুমার ,তার ঠিক উল্টো দিকে ওদের বেড ছিল।তারা ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরাজীতে কথাবার্তা বলত। কিছু কথা যেমন ছেলে, মেয়ে, বাবা, মা, আর আই লাভ ইউ তো বটেই,তাদের ভাষায় কী বলে অপু যেমন শিখত, তারাও বাংলা ভাষায় জানতে চাইত।

এ রাজ্যের কলকাতা দুর্গাপুর দার্জিলিঙ ছাড়া কিছু বুঝত না।কিন্তু, রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিম,বিবেকানন্দ, চৈতন্য নেতাজী মত বহু বাঙালি মনীষীদের এক নামেই তারা জানত। ট্যামবারামে হোস্টেল বিল্ডিং বা ভিলেট গুলো নাম নেতাজী,রাজাজী, মুখার্জী, নেহেরু ইত্যাদি নানা নাম ছিল। অপু সব ভিলেট যায় বাঙালি বন্ধুদের সাথে দেখা করতে।আবার কমন রুমে টিভি দেখতে যেত লুকিয়ে সন্ধ্যার পর ।

ক্যাম্পাসে, সেলুনে গুলো জুনিয়র ট্রেনিদের খুব অবহেলা করত ।বহু অপেক্ষা শেষে চুল কাটত।না চুল কাটলে দাড়ি গোঁফ না সেভ করলে,শু পালিশ না করলে,এংলেট সাদা রং নিয়মিত না করলেই পানিশমেন্ট।রবিবার ছুটি থাকলেও সকালে গাডেনিং করত, আবার মাঝে মাঝেই রবিবার দুপুরে তাদের কাউন্সেলিং হত।সমস্যা শোনা হত। হাসি খুশী জোক করে একঘেয়েমী দুর করত।অপুর ভালো লাগত।

ওয়ারেন্ট অফিসার এস লাল,রসীকতা না সিরিয়াস বুঝা যায় না,বলত,ব্লাডি ফুল ,ডোন্ট লস ইওর এনার্জি বাই হ্যান্ড প্রাকটিস। আবার ইঞ্জেকশন নিতে কেউ ভয় পেলে বা কাঁদ কাঁদ মুখ করলে, রসীকতায় বলত, "ব্লাডি ফুল,জাষ্ট পুশ ইঞ্জেকশন এন্ড ইউ ক্রাইং! এন্ড হোয়েন ইউ পুশ ইওর বিগ ইঞ্জেকশন থাউজেন টাইমস থিক,এন্ড মোর লার্জার, ইওর ওয়াইফ উইল এনজয়! ব্লাডি ম্যান! সেম টু ইউ, টিচ্ ফ্রম উওমেন্স।"

ট্রেনিং ক্যাম্পাসে ছিল জেনারেল স্টোর হাউস, আবার রেস্টুরেন্ট,আইস ক্রিম সোপ। স্টুডি আরও দোকান। ক্যাম্পাসে মধ্যেই এক ধারে এয়ারফোর্স চাকরীরত কর্মীদের স্টাফকোয়ার্টার। ফ্যামিলির বৌ বাচ্চারা,বাজার দোকান আসত।অপু মনে মনে ভাবত।আমিও দুবছর পর,যেখানেই পোস্টিং পাই।অনুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াব, আইসক্রিম খাবো, সিনেমা দেখব।কত রঙিন স্বপ্ন তার চোখে ভাসে।এই স্বপ্ন তাকে শত ট্রেনিং আর ডিসিপ্লিনের কষ্ট অসুবিধা সহ্য করতে প্রেরণা দিত।

এডুকেশন ক্লাস শেষে আবার মার্চ করে ভিলেট ফিরে সবাই প্রায় হন্যে হয়ে খুঁজত একটা কাঠের খোলা সেল্ফ। ট্রেনি ছেলেদের বাড়ি থেকে ডাক যোগে চিঠি আসত তা রাখা থাকত ।অপুর বাবা আর মায়ের চিঠি পত্র আসত।আর খুব কম মাঝে মধ্যে দিদি জামাই বাবুদের পত্র ,জ্ঞান আর ভারাক্কী কথা। এই সব পত্র অপুর ভালো লাগে না, তাই উত্তর দিত না।

বাবা মাকে প্রতি সপ্তাহেই একটা পত্র লিখত। অনূর কথা লিখত না,কায়দা করে,কাকীমাদের খবর জানতে চাইত। কত রকম সব রঙিন খামে অনেক ছেলেরা তাদের বন্ধু প্রেমিকাদের পত্র লিখত। তাদের পত্রও আসত ঘন ঘন।

অপুর খুব ইচ্ছা হল,মাধ্যমিক পরীক্ষা অনুর নিশ্চয়ই শেষ হয়েছে,মার্চ মাসের শেষ, অনুর জন্মদিন চৌদ্দ এপ্রিল তাই সারপ্রাইজ দিতে দশ এপ্রিল একটি রঙিন খামে পত্র লিখল, অনুকে নয় তার বাবার নামে। খুব সরল ভাষা।অনু মাধ্যমিক পরীক্ষা কেমন হল।তোর জন্মদিন, অন্যবার কাকীমা পায়েস খাওয়ায় , এবার আমি তো মে মাসে প্রথম করে যাবো। খাওয়াটা তখন তোর কাছে পুষিয়ে নেবো। এই ঠিকানায় একটা অন্তত পত্র দিবি। ইতি অপু।

একদিন ছমাসের ট্রেনিং শেষ হয়।মহা আনন্দে অপু বাড়ি আসে। মে মাসের দু তারিখ ।অপুর অনেক আশা স্বপ্ন। বাড়িতে মা একটু যেন গম্ভীর। বাবা সরল মনে কথা বলছে।মা একটু যেন অন্যরকম। বিকাল চারটের সময় বাড়ি এলেও কাকীমা এল না! কাকীমা তো জানে! অনু এল না।একটা চাপা আবেগ যেন অধৈর্য হয়ে পড়েছিল। শিব মন্দিরে প্রনাম করে সে অনুদের বাড়ি এল।

কাকীমা কেমন যেন উদাসীন, অপু প্রনাম করে বলে কাকু, অনু কেমন আছে।

কাকীমা একটু আনমনা মত,কিছু যেন ভাবছে।

অপু এবার বলে "অনূ কোথায়?"

কাকীমা বলে "ও তো মামার বাড়িতে গেছে।"

"আমি আজ আসব ও জানে না! "

"কি জানি, দিদি তো তোমার আসার কথা কালকে আমাকে বলল,অনু তো অনেক দিন ওর মামার বাড়িতে।"

"কবে আসবে!"

"সে তো বলতে পারব না।হয়ত মাধ্যমিক ফল বের হলে আসবে।"

"মামার বাড়িতে এতদিন তো থাকে না।"

"অনু তো মামার বাড়ি থেকেই বারো ক্লাসটা পড়বে।"

"কেন এখানে কি অসুবিধা।"

"অনুর ইচ্ছা মামার বাড়িতে পড়বে। স্কুল টা তো ওর মামার বাড়ির কাছেই। এখানে অনেকটাই হাঁটতে হয়।"

"সেতো ফাইভ থেকে টেন পর্যন্ত পড়াশোনার এতটা হেঁটে করল,এতদিন তো সমস্যা হয়নি।"

"আমি বাবা বলতে পারব না ওর সখ,মামার বাড়ি থেকেই পড়বে।"

অপু আর কিছু বলে না।একটা রহস্য সে বুঝেছিল।মায়ের আচরণ, কাকীমা, অনুর মায়ের কথার ধরন আর অনুকে গ্রাম থেকেই সড়িয়ে দেওয়া।ভাবল সে অনুর মামার বাড়ি যাবে,আর খুব গোপনে।অনুর মামা তার পরিচিত, এ গ্রামে এলেই তাদের বাড়ি যায়।মা তাকে যত্ন করে খেতে দেয়।তেমন সচ্ছল নয়, তাই সচ্ছল অপুদের একটু সম্মান সমীহ করে।

দুদিন পর অপূ মাকে বলে আমার ট্রেনি এক বন্ধুর বাড়ি নবদ্বীপ,ওর বাড়ি যেতে বলছিল। একসাথেই ফিরেছি। ইসকনে মন্দির দেখে আসব।

বাবা মা বিশ্বাস করে,আপত্তি করেনি।অপু বন্ধুর বাড়ি গেছিল ঠিকই তবে তার পরদিন, অনু মামার বাড়ি গেল অপুদের বাড়ীর পশ্চিমে অনুর মামার বাড়ি , আর নবদ্বীপ পুবে।নবদ্বীপে ট্রেন ধরে কাটোয়া হয়ে ঘুরপথে মানকর গেল।

অনু মামার বাড়ি এককালে সচ্ছল এখন ভাঙ্গটা ঘর।

পুরোন বাড়ির জীর্ণ দশা।তবে অনেকটাই বড় প্রাঙ্গন সামনে ভাঙ্গা শিব মন্দির,এখন পুজো হয় না পরিত্যক্ত। অনু ঐ মন্দিরের সামনে,মামাতো ভাই বোনদের সাথে বসে গল্প করছিল।

অপু কাছে আসতে অনু কেমন যেন চমকে ওঠে।

অপু জিজ্ঞেস করে "কী ব্যাপার সত্যি বলত!"

অনু মুখ নামিয়ে বসেছিল কোন উত্তর দেয় না।

ইতিমধ্যেই তার দুই মামাতো ভাই বোন বাড়িতে খবর দিয়েছিল। অনুর মামা এসে তাকে যত্ন করে বাড়িতে ডাকে।

অপু বলে "আমি কিন্তু অনুর কোন উত্তর পাই নেই।ওর উত্তর না পেলে আপনার ঘরের যাব না।আমি এখানেই বসে থাকব।"

মামা বলে "তুমি বাবা এখানে এসেছ তোমার মা বাবা জানে!"

"না, তার দরকার নেই, আমি এখন স্বাধীন, কোথায় যাব বলে যাব কেন!"

"কিন্তু এখানে এলে সমস্যাই হবে।"

"কেন !"

অনু বলে "মামা তুমি চুপ করো আমি বলি।আমার সাথে যাতে তোমার দেখা না হয় জেঠিমার সেটা ইচ্ছা,তাই মা আমাকে মামার বাড়িতে থাকতে বলেছে।"

"কেন?"

"আমাকে দেখলে তোমার কষ্ট হবে ,আর আমিও চাই না আমাকে দেখে, আমার সাথে কথা বলে তুমি কষ্ট পাও।"

"কী বলছিস একটু খুলে বল না !" অপু বেশ অধৈর্য উত্তেজিত।

অপুদা, জেঠিমা জানে তুমি আমাকে ভালোবাস, আর আমাকে বিয়ে করতে চাও ,আমাকে তুমি একটা পত্র লিখেছিলে, ঐ সময়ে আমার জন্মদিন ছিল ,আমি মা ,মামার বাড়িতে এসেছিলাম। এখানকার জাগ্রত মা কালীকে আমি ষোল বছর পূর্ণ হলে মা,বুক চিড়ে রক্ত দেবে,মানত ছিল,মায়ের অনেক দিন বিয়ের পর সন্তান হয়নি তাই এই মানত। 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance