ওদিকে যেওনা !
ওদিকে যেওনা !
ট্রেন রাতের অন্ধকারকে তুচ্ছ করে অবশেষে নির্জন স্টেশনে এসে থামলো।
অতুল একটু তারাহুরো করে কোনোমতে ট্রেন থেকে নামলো।
কারনটা খুবই স্বাভাবিক, একে ছোট স্টেশন, মাসে দু-চারটে লোক ট্রেনে ওঠে কিনবা নামে,
তাই ট্রেন খুব অল্প সময়ের জন্য এই স্টেশনে থামে।
অতুল স্টেশনের চারপাশটায় চোখ রাখে, অন্ধকার, শান্ত এবং খুবই নির্জন, যেনো জনমানবহীন এলাকা।
চাকরির কারনে এখানে আশা, একটা লোক থাকলে পথ চিনতে সুবিধা হতো তার।
সামনের স্টেশন ঘর থেকে একটা আলতো আলো এদিকটায় এসে পড়ছে, তাই দেখে সেদিকে চেয়ে রইলাম, ঠিক সেইসময় একটা অস্ফুট স্বরে কেউ বলে উঠলো,
অতুল… অতুল…
গলার স্বরটা অতুলের ভীষন চেনা মনে হলো।
অতুল পেছন ঘুরে তাকাতেই দেখতে পেলো, একজন গর্ভবতী মহিলা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে তার দিকে।
মহিলার চুল এলোমেলো…
পরনের শাড়ি কোনরকমে জরিয়ে রয়েছে শরীরটাকে।
অনিক সেই মহিলাকে ভালো করে দেখতেই তার নিজের অজান্তেই তার মুখ থেকে একটা শব্দ বেরিয়ে এলো,
মা…
ঠিক এমনি সময় হাজারো কল্পনার মাঝে তার মনে পড়লো অনেক বছর আগে কেউ তাকে বলেছিল,
…
এই জলাশয়ে তুমি যাই চাইবে তাই পাবে, কিন্তু মনে রেখো যে কোনো একটা ইচ্ছা তোমার পুর্ন হবে…
প্রথমে তার এসব বিশ্বাস না করলেও , সে তাও মনে মনে বলেছিল; আমি একবার শেষবারের মতো নিজের মা কে দেখতে চাই !
…
অর্থাৎ সে আমার ইচ্ছে পূরণ করছে,
সে মানে পএা…!
অনিকের হাত এবং পা ক্রমে ঠান্ডা হয়ে এলো, সে একরকম ভয় ও কষ্ট দুই নিয়ে কেমন যেনো করতে লাগলো,
অবশেষে সে তার জ্ঞান হারিয়ে স্টেশনের মেঝেতে পড়ে গেলো।
অবশেষে যখন জ্ঞান ফিরলো , তখন অতুল নিজেকে পেল স্টেশন মাস্টারের রুমে।
যদিও ঘোর কাটার পর স্টেশন মাস্টার তাকে অনেক কথাই জিজ্ঞাসা করেছে,
কিন্তু অতুল তার মধ্যে কোন কথারি উত্তর দেয়নি। শুধু বোকার মত হা হয়ে তাকিয়ে ছিল,
আর বললেও বা সে উওরে কি বলতো…
যে তার মা… যে কিনা বহু বছর আগে গর্ভবতী অবস্থায় মারা গেছে,
সে আজ ভূত হয়ে অতুলের সাথে দেখা করতে এসেছে,
তাও আবার এক রহস্যময়ী নারীর কথায়…!
আদৌ কি তা সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য।
স্টেশন মাস্টারের সাথে বেশ কিছু সাধারণ এদিক ওদিকের কথা বলার পর, অতনু বললে: সে এই শহরে এসেছে, নিজের চাকরির সূত্রে, সে বর্তমানে একজন ডিটেক্টিভ, চারিদিকে খোঁজখবর করে, কেস সম্পুর্ন করাই তার কাজ।
এসমস্ত কথা বলে নিজের গন্তব্যের জন্য রওনা হলো অতুল।
রাত তখন সাড়ে এগারোটা হবে, স্টেশন থেকে বেরিয়ে বেশ খানিকটা পথ পেরিয়ে সামনে একটা হোটেল নজরে এলো তার,
হোটেলের নাম 'ভাতের অভাব'।
অদ্ভুত তো যেখানে কিনা ভরপেট খাওয়ানোর কথা সেখানে কিনা ভাতের অভাব,
অতুলের খুব খিদে পেয়েছিল সে ভাবলো ভাত না হোক অন্তত কিছু রুটি কিনবা সবজি যদি পাওয়া যায়…!
তাই সে 'ভাতের অভাব' হোটেলের দিকে এগিয়ে যায়।
শুনছেন…? কেউ কি আছেন…?
অতুল বেশ কয়েকবার হাকডাক করার পরেও কোনো সাড়াশব্দ নেই।
অতএব বিরক্ত হয়ে অতুল ফিরেই যাচ্ছিল ঠিক এমনি সময় হোটেলের পেছন থেকে একজন এসে বলেন, বলুন কি চাই…!
অতুল বললো; বলি একটু যদি ভরপেট খাবার মতো যদি কিছু পেতাম, তবে আমার খুব উপকার হতো, তার জন্য আমি আপনাকে যথাযথ টাকা দেবো, সে নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবেনা।
লোকটি বললো; আহা, নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই, কেনো পাবেন না।
আমি হলেম গেয়ে… এই হোটেলের মালিক তারিনীচরন, গায়ের লোকে তারিনী বলেই ডাকে, আমার এই হোটেলে কেউ না খেয়ে ফিরে যায় না।
কিছু না কিছু পেটে পড়বেই, শুধু ওই ভাত বাদ দিয়ে।
ঠিক এমনি সময় নিজের কৌতুহল চেপে না রাখতে পেরে অতুল বললে, আচ্ছা তারিনীবাবু আপনার হোটেলে ভাত কেনো পাওয়া যায়না ?
তারিনীচরন বলেন; কারন সে এই হোটেলে আসে, আর সেয়ে একেবারেই ভাতের গন্ধ সহ্য করতে পারে না।
অতুল আবারো জিজ্ঞেস করে; সে মানে কে…?
তারিনীচরন উওেজিত হয়ে বলেন; ও… কেউ না কেউ না।
আপনি ওই খানে রাখা কলসি থাকে ডল ডেলে হাত পা ধুয়ে বসুন, আমি আপনার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছি।
রাত তো ভালোই হলো, আবার সময় হয়ে যাবে…
একথা বলতে বলতে তারিনীচরন সম্ভবত হোটেলের রান্নাঘরের দিকে চলে গেলেন।
অতুল হাত পা ধুয়ে কাটের চেয়ারে বসে থাকে।
খানিকক্ষণ পর তারিনীচরন হাতে একটি মাটির থালায়… লুচি, ঘুগনি, সঙ্গে আলুর চপ আর বেগুনি নিয়ে এলো।
এরপর খাবারের থালাটি আমার সামনের টেবিলে রেখে ঠিক যেমনি তারাহুরো করে এসেছিলেন ঠিক তেমনি তারাহুরো করে চলে গেলেন, কোনো কথা না বলেই।
কিন্তু যাবার সময় তিনি রান্নাঘরের দিকে গেলাম না বরং তার পাসের শেকল লাগানো ঘরের দরজা খুলে সেই ঘরের দিকেই গেলেন।
অতুলের সত্যিই ভিষন খিদে পেয়েছিল, তাই সে বেশি সাতপাঁচ না ভেবে খেতে শুরু করলো।
তার খাওয়া দাওয়া শেষ হলে নিয়ের হাত ধুয়ে, যখন খেয়াল করলেন যে এতো দেরি হয়ে গেলো অথচ তারিনীবাবু তো সে ঘর থেকে বেরোলেন না তখন তার কেমন যেনো ভয় হতো লাগলো।
সে ভেবেছিল যদি লোকটার হাতে খাবারের সাথে আরো কিছু টাকা ধরিয়ে আজকের মতো রাতটা এই হোটেলে শুতে দেওয়ার ব্যবস্থা হতো।
কিন্তু কোথায় তিনি…?
শৌর্যের বাধ ভেঙে যায়, অবশেষে আর বেশি না ভেবে অতুল সেই ঘরের দিকে পা বাড়ালো…
ঠিক এমনি সময় তার কানে ভেসে এলো এক নারী কন্ঠ, সে বলছে; ওদিকে যেওনা…!
অতুল পেছনে ঘুরে তাকালো… কই, আশেপাশে তো কেউ নেই…!
অতুল ভাবলো হয়তো তার মনের ভুল। সে ঘরে প্রবেশ করলো, এবং ঘরে প্রবেশ করে দেখলো যে এই ঘর সম্পুর্ন ভাবে ফাকা… এবং এই ঘরের ভেতরের ঠিক বা দিকে একটি বাইরে যাওয়ার দরদা, এবং সেই দরজাটি সম্পুর্ন ভাবে খোলা।
তাই দেখে অতুল সেই দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলে সে বুঝতে পারে এটা একটি ঘন অরণ্য,
আর ঠিক এমনি সময় অতুল শুনতে পায়, খুব অস্পষ্ট কিন্তু আন্দাজ করলে ধরা যেতে পারে তারিনীচরনের গলার স্বর, যেনো এই অরন্যের মধ্যিখান থেকেই আসছে,
অতুল বেশি না ভেবে ঢুকে গেলো অরন্যের ভেতরে, খুব পরিস্কার না হলেও মোটামুটি ভাবে অন্ধকারে পথ চিনে পা ফেলতে সমস্যা হচ্ছিল না অতুলের।
বেশ খানিকটা চলার পর অরন্যের ঠিক মাঝখানে এসছ অতুলের পা থমকে যায়।
তার চোখ স্থির হয়ে যায়… কারন এই মধ্যরাতে নির্জন অরন্যের মধ্যে তার চোখের সামনে যা ঘটছিল, তা সে কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারছিল না।
অতুল দেখলো… তারিণীচরণ নারীর নগ্ন শরীরের ওপর ঝুঁকে পড়েছে, তার হাত ধীরে ধীরে শরীরের প্রতিটি অংশে ছুঁয়ে যাচ্ছে, অনুভব করছে প্রতিটি শিহরণ। নারীর ঠোঁট থেকে চাপা শ্বাস বেরিয়ে আসছে, তারিণীচরণের হাতে আরও বেশি করে বাঁকিয়ে দিচ্ছে নিজেকে।
চাঁদের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাদের ঘামেভেজা ত্বক, একে অপরের প্রতি আকর্ষণে ডুবে যাচ্ছে ধীরে ধীরে… নারীটি হঠাৎ তারিণীচরণের চুল টেনে ধরল, এক অদ্ভুত সুখমিশ্রিত আর্তনাদ বেরিয়ে এলো তার গলা দিয়ে। তারিণীচরণও যেন আরও গভীরে তলিয়ে গেল, তাদের শরীর একসাথে বাঁধা পড়ে রইল মুহূর্তের জন্য।
অতুল আর সহ্য করতে পারছে না। শরীরটা ছটফট করছে, যেন এক অদ্ভুত শূন্যতা অনুভব করছে সে।
এমন আকাঙ্ক্ষা… এমন নিষিদ্ধ উত্তেজনা…
তার নিঃশ্বাস এতটাই ভারী হয়ে উঠেছে যে মনে হচ্ছে, এখনই তার বুকে বিস্ফোরণ ঘটবে। গরমে শরীরটা ঘামে ভিজে গেছে, কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে, কিন্তু সে নড়তে পারছে না। কামনার শিখা তাকে স্থবির করে ফেলেছে, অথচ শরীর চাইছে আরও বেশি, আরও গভীর কিছু।
তার আঙুলগুলো উরুর ওপর শক্ত করে চেপে আছে, কিন্তু এতটুকু ছোঁয়া কিছুই পরিবর্তন করতে পারছে না। দম আটকে আসছে, গলা শুকিয়ে গেছে। এই অনুভূতি তাকে যেন শেষ করে দিচ্ছে।
সে আর সহ্য করতে পারল না। কাঁপা কাঁপা হাতে কোমরের বোতাম খুলল, জিপ ধীরে ধীরে নামাল। এক মুহূর্তের জন্য নিঃশ্বাস আটকে গেল, তারপর প্যান্ট নামিয়ে দিল হাঁটুর নিচে। উত্তেজনায় তার পুরো শরীর কাঁপছে, রক্ত যেন গর্জে উঠছে শিরায় শিরায়।
তার আঙুল ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামছে, প্রতিটি ছোঁয়ায় শরীরে তীব্র শিহরণ জাগছে। তার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে, ঠোঁট ফাঁক হয়ে গেছে, শ্বাস দ্রুততর হচ্ছে। শরীরের প্রতিটি রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়ছে এক অসহনীয় উষ্ণতা, যেন আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করা সম্ভব নয়।
তার হাত শক্ত হয়ে উঠছে, তীব্র হয়ে উঠছে স্পর্শ। শরীর ধীরে ধীরে মোচড়াচ্ছে উত্তেজনায়, পিঠ বেকে যাচ্ছে, মাথা পেছনে ঠেকিয়ে ফেলছে। তার বুক থেকে বেরিয়ে আসছে গরম শ্বাসের দীর্ঘ তরঙ্গ, এক অস্ফুট গোঙানির শব্দ ভেসে আসছে ঠোঁটের ফাঁক থেকে।
একটি মুহূর্তে সমস্ত শরীরের ভেতর দিয়ে শিহরণ খেলে গেল। সে চোখ বন্ধ করে অনুভব করল সেই বিস্ফোরণ, সেই নিঃশেষিত সুখ, যা তার শরীরকে নিস্তেজ করে দিল। বুকের ওঠানামা ধীরে ধীরে শান্ত হলো, শ্বাস স্বাভাবিক হলো।
অতুল চোখ খুলল, শরীর ঢিলে হয়ে এল। বাতাসে এখনো কামনার উষ্ণতা ভাসছে, আর তার ত্বকে সেই স্পর্শের স্মৃতি লেগে আছে, নিষিদ্ধ তৃপ্তির মতো…
চোখ মেলে সে সামনের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো, সামনে তারিনীচরন বিবস্ত্র হয়ে পড়ে করেছেন।
আর কেউ কোথাও নেই… কেউ বলতে সেই নারী, অর্থাৎ সেই পএা…!
অতুলের ঠোঁটে আল্তো হাঁসি, সত্যিই পুরুষ মানুষকে বোকা বানানো সব চাইতে সহজ......
কারন…

