STORYMIRROR

Boi Besh

Horror Romance Fantasy

3  

Boi Besh

Horror Romance Fantasy

অচেনা অতিথি ( পএার প্রথম পাঠ )

অচেনা অতিথি ( পএার প্রথম পাঠ )

8 mins
231

রাত টা বেশ গভীর , একটা শীতল হাওয়া , নিস্তব্ধ চাঁদ , গাছ গুলো আপন মনে দুলে চলেছে , যেন তারা কারো একটা অচেনা সুরে তাল মিলিয়ে নাচছে । আকাশের অসংখ্য তারা গুলো কি সুন্দর আলোময় ও ঝলমলে দেখাচ্ছে , দু ধারে নাম না জানা অজানা গাছেরা সুর বহন করে চলেছে ।
দুপুর রাত তখন , নদীর জল বেশ শান্ত , তাই নৌকো চালাতে খুব একটা খাটনি হচ্ছে না । সৌরভ তার নৌকা চালাতে চালাতে নানান দৃশ্য দেখছিল ।
সে আজ প্রথমবার তার বাবার নৌকো নিয়ে এতো রাতে পাল তুলেছে , গভীর অরন্যের এক নিরিবিলি নদীতে ।
চালাতে সে পারে , বাবার থেকে কতবার এই নৌকা চালিয়েছে সে । তার বাবার বয়স বেরেছে , যতই হোক তার বাবার নৌক চালাবার কাজটি এবার তার হাতে নিতে হবে । কিন্তু এই তল্লাটে এতো রাতে কেউ নৌক চালায় না । তাই তো সে চুপি চুপি এই অচেনা অরন্যের এক নিরিবিলি নদীতে নৌক চালাচ্ছে ।
নৌকটা ধীরে ধীরে চলে চলেছে , সৌরভ একটা গান বেশ খানিকক্ষণ ধরে গুন গুন করে চলেছে ,
ধরো হাল শক্ত হাতে…
হুঁ… হুঁ হউঁয়… হুঁ…
ভয় কি নদীর সাথে…
হুঁ… হুঁ হউঁয়… হুঁ… হুঁ…
নদীর গতি একটু একটু করে ধির হতে লাগলো , অনুমান করলে বোঝা যায় একা অরন্যের বেশ গভীর ,
এই অরন্যের এতোটা গভীরে গ্ৰামের কেউ আজ পর্যন্ত এসেছে কিনা এ বিষয়ে তার বেশ সন্দেহ রয়েছে ।
নদীর ধারে এক নারী কন্ঠস্বর তার সুর করে গুন গুন করে চলেছে ,
কিন্তু সেটা ঠিক কোন গান বা ঠিক কোন ভাষা সেটা বোঝা যায় না । পুর্নিমার চাঁদ , নদীর ধারে কেউ একটা গুন গুন করে চলেছে !
আচ্ছা , গ্ৰামের কেউ নয়তো , হয়তো পথ ভুলে এপথে এসে পরেছে এবং মনের দুঃখ একত্রিত করে গান গেয়ে চলেছে !
সৌরভ নৌকটা নদীর ধারে একটা গাছে বেশ শক্ত করে দড়ি দিয়ে বেঁধে দিল ।
একপা দুপা করে এগিয়ে যেতে লাগলো সেই স্থানের চেয়ে বেশ কিছুটা দুরের সেই নারী কন্ঠস্বর এর দিকে ।
আকাশটা একটা অদ্ভুত রং করে মেঘ ঘনিয়ে নিল ।
একটা বেশ ঠাণ্ডা ফুরফুরে বাতাস , ছুঁয়ে যাচ্ছে তার শরীর স্পর্শ করে ।
কে ?
কে কে ?
সৌরভ তার সামনে উল্টো হয়ে বসে থাকা নেই নারীকে প্রশ্ন করতে লাগলো ।
আকাশটা মেঘলা থাকার কারনে বোঝা যায় না , সে ঠিক কি পরিস্থিতিতে আছে ।
উল্টো হয়ে বসে থাকা নারী মূর্তি তার শুন শুন করতে থাকা অজানা সুরটা এক মুহুর্তের জন্য বন্ধ করে তার দিকে ঘুরে তাকালো , এবং আবার উল্টো হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে আবার তার সামনে ফিরে তাকালো ।
হুঁ … বলুন !
সৌরভ একটু সন্দেহের মতো মুখটাকে অনুসরণ করে বললো , আপনি কে ? আপনার নাম কি ? এতো রাতে এই অরন্যে কি করছেন আপনি ? আমি কি আপনাকে কোনরকম ভাবে সাহায্য করতে পারি ?
ওপাশের নারি মুর্তি মেঘলা আকাশের অন্ধকারে একগাল বেশ করে হা হা করে হাসতে লাগলো , এবং বললো , বাপরে বাপ !
আস্তে আস্তে এতো প্রশ্ন একসাথে করলে আমিতো থতমত খেয়ে যাবো !
শুনুন আপনি প্রথমে ঠিক করুন আপনি সবার আগে কোন প্রশ্নটি আমাকে করতে চান ?
সৌরভ হা করে তার কথা গুলো মন দিয়ে শুনছিল , কি অপূর্ব তার গলার কন্ঠস্বর , তাকে আকর্ষণ করে চলে , এতো অপূর্ব গলার কন্ঠস্বর যে তাকে দেখতে যে ঠিক কতটা অপূর্ব তা ভেবেই কেমন একটা হতো লাগলো তার ।
সৌরভ বললো , তাহলে বলুন যে আপনার নাম কি ?
পএা !
সৌরভ বলল , পএা ! এতো ভারি অদ্ভুত নাম , এর আগে কখনও শুনিনি ।
ওপাশ থেকে উওর আসে , শোনেন নি তো এবার শুনে নিন ,
তার পর একরাশ হাসি ।
যেটা ভারী মিষ্টি লাগছে সৌরভের ।
সৌরভ আবার বললো , এতো রাতে এই অরন্যে কি করছেন আপনি ?
ওপাশ থেকে উওর এলো , কি করছি , সেটা নাহয় নাই বললাম ।
আচ্ছা তার মানে বলা যাবে না , তা আপনি কোথায় থাকেন , এই অরন্যে বুঝি ? সৌরভ বললো ।
ওপাশের আবছায়া নারী মূর্তিটি উওরে বললো , হ্যা , আমি এই অরন্যেই থাকি আর আপনি ?
সৌরভ বললো, আমি ওই নদীটা দেখছেন , আমি সেই নদীর ভেতর থাকি !
ওপাশের আবছায়া নারী মূর্তিটি বললো , ঠাট্টা করছেন মানুষ কখনো নদীর ভেতরে থাকতে পারে !
সৌরভ বললো , আচ্ছা তাই , তাহলে আপনি এই অরন্যে কি করে আছেন , গ্ৰামের মানুষ এই অরন্যে সাপের ভয়ে আসে না , শুনেছি এখানে নাকি হিংস্র জন্তু জানোয়ার আছে ।
ওপাশের আবছায়া নারী মূর্তিটি বললো , হ্যা তা অবস্য ঠিক , মানুষ ভীষন ভিতু প্রানী ।
সৌরভ বললো , ও আপনি কি তাহলে ভুত নাকি ?
আবছায়া নারী মূর্তিটি একটু গম্ভীর স্বরে বললো , না আমি ভুত নই , আমি এই বিশ্বের অচেনা অতিথি !
সৌরভ বললো , কি ভুলভাল বকছেন বলুন তো , পাগল টাগল নাকি আপনি !
ওপাশের আবছায়া নারী মূর্তিটি এবারে বিদ্রুপ করে উওর দেয় আপনি ভাবছেন আমি মজা করছি , তাহলে দেখুন আমি এই মেঘলা আকাশ নিমেষেই শেষ করে আবার আগের জোৎস্না আবহাওয়া এনে দিতে পারি । আমি আশ্চর্য হয়ে যাবেন ।
কথাটা শেষ করে সে আকাশের দিকে দু হাত বাড়িয়ে কিছু একটা বিরবির করে বলে চললো , এবং ভিষন আশ্চর্যজনক ভাবে আকাশের সমস্ত কালো মেঘ সরে যেতে লাগলো ,

সৌরভ আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো , এতে আর আশ্চর্য হবার কি আছে , হয়তো এমনিতেও এখন আবহাওয়া বদলাতো ।
কথাটা শেষ করে সে তার সামনে আবির্ভূত পএার দিকে তাকাতেই তার শরীরের রক্ত হিম হয়ে যেতে লাগলো ।
ওপাশের আবছায়া নারী মূর্তিটি যার নাম পএা সে তার সামনে উলঙ্গ অবস্থায় দারিয়ে রয়েছিল এতোক্ষন , যেটা এই মেঘলা আকাশে সে দেখতে পায়নি । কি অপরুপ তার সেই রুপ , তার ঠোঁট দুটি যেন যেন গোলাপ ভেজা পাপড়ি । তার হাসি যেন সদ্য ফোটা পদ্মের ভিজে আভাষ । তার দুটি হাত যেন নদীর শান্ত জল । তার অপরূপ স্তন দুটি যেন তুলো তে মোরা মনমেঘ।
তার ভিজে কোমরের তিনটি ভাঁজ কি অপূর্ব । তার গোপনাঙ্গ যেন আর্দ্র রক্তপদ্ম । তার দুটি পা অপূর্ব এর অঙ্গিকার । জীবনের সবটুকু রং যেন ফিকে তার কাছে ।
ওপাশ থেকে উওর আসে ,কি দেখছ ওমন করে ?
সৌরভ বললো, তোমাকে !
পএা বললো তাই , আমাকে নাকি আমার এই অপরুপ শরীরটাকে , যেটাকে দেখলে কোন পুরুষ মানুষের মাথার অবস্থা ঠিক থাকে না ।
কিন্তু মনে রেখো তুমি যদি আমাকে স্পর্শ করো তাহলে আমার মুক্তি হবে এই জগতের সমস্ত মহমায়া থেকে ।
সৌরভ বললো কিসের মুক্তি ?
পএা বললো , বেশ কিছু বছর আগে আমি এই গ্ৰামের এক কৃষকের মেয়ে ছিলাম , আমি দেখতে একদম সুন্দর ছিলাম না , তার ওপর আমার পায়ে একটা অজানা অসুখের কারনে আমি একটু বেঁকে বেঁকে হাঁটতাম । লোকে আমায় নায়ে হাসা হাসি করতো । বাবা বেশ জায়গায় ছেলে দেখলেও কেউ আমাকে বিয়ে করতে চায় ছিল না । তখন আমি নাম ছিল অনু , আমার একটা ভাই ও ছিল । এরপর ধীরে ধীরে আমার মা বাবা ও আমার ভাই আমার ওপর অস্থিরতার ভার বহন করাতে লাগলো । একদিন জীবনের সব দুঃখ এক জায়গায় করে বেরিয়ে গেলাম বারি ছেরে বহুদুর , বেশ কিছুদিন এদিক ওদিক ঘোরার পর আমার দেখা হয় এক সন্ন্যাসীর সাথে , এরপর আমি নিজের বাকি টুকু জীবন ওনার সেবায় অর্পন করলাম । এভাবেই কাটছিল বেশ কিছু বছর , একদিন সেই সন্ন্যাসীর এক নতুন শীর্ষ তার অবর্তমানের সুযোগে আমাকে ধর্ষণ করে , বিশ্বাস করো আমি সেদিন নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করি , কিন্ত এক পুরুষ মানুষের কাছে কিকরে এর রোগা অবলা নারী জয়ী হতে পারে বলুন ।
এরপর সন্ন্যাসী তার নতুন শীর্ষকে মৃত্যুদন্ড দেয় এবং আমাকে বলে , দেখো মা , আমি তোমাকে তার হয়ে ক্ষমা চাইছি , কিন্ত তুমি আমার এতদিনের তপস্যার স্থানকে অপর্বিএ করছো , হ্যা এতো তোমার কোনো দোষ নেই আমি জানি কিন্তু এটা তো একটা পাপ , তাই আমি তোমাকে অভিশাপ দেব কিন্তু হ্যা যেহেতু তুমি আমার অতি প্রিয় একজন শীর্ষ তাই আমি তোমাকে একটি আর্শিবাদ ও দেবো ।
কথাটা শেষ করে তিনি বলেন আমি তোমাকে আর্শিবাদ করলাম এর পরজম্নে তুমি একজন অতি সুন্দরী একজন নারী রুপ ধারন করবে এবং তুমি কিছুটা প্রাকৃতিক শক্তির মুল্য পাবে , কিন্ত আমি তোমাকে এও অভিশাপ দিচ্ছি যে তুমি সেই সুন্দর রুপের ওপর কোনরকম পোশাক অর্পন করতে পারবেনা এবং যদি কোন পুরুষ মানুষ তোমাকে স্পর্শ করে তাহলে তোমার এই অপরুপ জগতের মহমায়া থেকে তুমি মুক্তি পায়ে যাবে ।
এরপর পএা একটা বেশ গম্ভীর নিঃশ্বাস নিয়ে বললো , তাই তোমাকে বলছি আমি কোন সাধারণ মানুষ নই আমি অসাধারণ কিছু কিনবা এই জগতের…
অচেনা অতিথি , কি তাইতো সৌরভ বললো ।
পএা বললো , হ্যা ।
সৌরভ আবার বললো তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো আমি তোমাকে স্পর্শ করবো না ।
কথাটা শেষ করে সৌরভ পএা কে বেশ ভালো করে দেখছিল । কি অপূর্ব তার দৃষ্টি কি সুন্দরী সে , এই জগতের সমস্ত সৌন্দর্য যেন তার সামনে অপমানে ছায়া ফেলে । তার কোমল দেহ হাত পা… এই দেহে অলঙ্কার যেনো ফিকে , তবুও তাকে ঠিক কি পরলে মানাবে !
সৌরভ বললো , ভোরের আলো ফোটার আগেই আমাকে ফিরতে হবে , আজ আমি আসি , কিন্তু আমি আবার আসবো কাল , তুমি আসবে তো কাল ?
পএা বললো , আমি আর কোথায় যাবো বলুন ।
সৌরভ বললো আপনি নয় আমি কি আপনাকে তুমি বলে ডাকতে পারি ?
পএা বললো , হ্যা নিশ্চই ।
সৌরভ তার ঘাটে বাধা নৌকর দিগে এগোতে লাগলো , সে বারবার করে পেছনে দেখছিল , কিছু একটা যেন তাকে টানছে পএার দিকে ,
সে নৌকায় চরে পাল তুললো এবং অরন্যে বাইরে চলে আসতে লাগলো , সেই অপরুপ নারী মূর্তিটি যেন রাতের শেষ জোৎস্না টুকুতে নিজেকে মিশিয়ে দিতে লাগল ।
সেইদিন সৌরভ বাড়ি ফিরে সারাটাদিন সেই অপরুপ নারী মূর্তি পএার কথা ভাবতে লাগলো , ইস কি সুন্দরী সে , সে যেন তাকে একপ্রকার ভালো বেসে ফেলেছে । এরপর বেশ কিছুদিন ও কিছু রাত তার কাটতে টাকে পএার সাথে আরালে আরালে , তাদের মধ্যে গল্প হয় হয় কত কথা । কিন্তু রাত শেষে কেউ কাউকে স্পর্শ করতে পারে না । যেন সে তার অনেকটা কাছে এসে আবার ফিরে যায় , এবপর আসে সেই রাত যেদিনটা আসার অপেক্ষায় যেন ছিল তারা দুজনেই আবার ছিলনা তারা দুজনেই ।

সৌরভ বেশ কিছু কথা বলার পর বলে , পএা আমি তোমাকে ভীষন ভালোবাসি , আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না । আমি তোমাকে ছাড়া আর কোন নারীর কথা নিজের মনে আনতে পারি না । কথা শেষ করে পএা একটু মুচকি হেসে বলে , আ… আমিও…
এরপর তারা একে অপরের হাতে হাত রাখে , রাখে ঠোঁটে ঠোঁট , কি অপূর্ব এই স্পর্শ , কি আলতো , কি মধুর , যেন অনাধারের আভাষ , এরপর ওরা একে অপরকে জরিয়ে ধরে , সৌরভ তার শরীরের সমস্ত পোশাক একে একে খুলে ফেলে , আজ যেন এর প্রেমের মিলনের দিন , একে অপরের আত্মাকে শান্তি দেবার দিন , তারা শুয়ে পরে নিচের নরম ঘাসের ওপর , একজন আরেকজনের ওপরে , তাদের অঙ্গ একে অপরকে ছোয়ায় মাশিয়ে দেয় গোপনে , তার স্তনের ওপর হাত রেখে ভালোবার মাএাকে বারিয়ে তোকে অকারন্ত ভাবে , তাদের গোপনাঙ্গের স্পর্শতা তাদের আভাষের রুপ ফেরায় । এরপর নিজেদের মিলনের শেষ পর্য়াযে এসে নিজের সমস্ত টুকু ছোয়া ছুঁয়ে দেয় তারা , তারপর দুজনের দুপাশে শুয়ে পরে , এবং ক্লান্ত শরীরে বিশ্রাম দেয় ।
পএা বলে , আজ আমার শেষ রাত শেষ সময় , এবং একটা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সৌরভের দিকে তাকিয়ে বলে…
পুরুষ মানুষকে বোকা বানানো সবচাইতে সহজ !
এবং জোরে হেসে ওঠে সে , সেই অদ্ভুত হাসিতে কেপে ওঠে পুরো নিস্তব্ধ অরন্য ।
এরপর পএা আস্তে আস্তে অদৃশ্য হয়ে যায় ।
এবং নরম ঘাসের ওপর চোখ বন্ধ করে পরে থাকে সৌরভ ।

সমাপ্ত



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror