মুখোশ
মুখোশ
সবাই মুখোশ পরে থাকে, কেউ নরম কেউ শক্ত, আর তোরা যাদের বুদ্ধিজীবি বলে চ্যানেলে আনিস, তারা আরো বদ।সাপ ব্যাঙ বাদুড় মুখ পেলেই চুমু দিতে আরম্ভ করে।
বুদ্ধের কথাগুলো শুনে আমিই প্রতিবাদ করে বলি, ‘আমি তো আর ডাকিনা।লোকাল চ্যানেলের সামান্য ক্যামেরা-ম্যান, প্যান আর টিল্ট, আর একটু আধটু এডিটিং ব্যাস।’
বাড়ি ফিরেই শুনলাম পাশের ফ্ল্যাটের কাকিমা আবার নিজের বাড়ির নোংরা আবর্জনা আমাদের বাগানে ফেলে দিয়েছেন।মা কথা বলতে গেলে ঝগড়া করতে আরম্ভ করেন।এটা অবশ্য কাকিমার কাছে নতুন কিছু নয়।কারো সাথে ভাব ভালোবাসার কথা তো ছেড়েই দিলাম, অফিসিয়াল কাজ করতে এলেও ওনার মুখ ঝামটা শুনতে হয়।আমি মা’কে কাকিমার সাথে কোনরকমের বিতর্কে যেতে বারণ করে বলি,‘কাকিমার কোন মান সম্মান নেই।তাই বলে তুমি কিছু বোলো না।ওনাকে পাড়ার সবাই চেনে,তিনটে বিয়ে,একবার খুনের কেশেও ফেঁসেছিলেন।জানোই তো সব।’
কাকিমা বুদ্ধিজীবি।নাটক করেন, আবৃত্তি করেন, আবার লেখেনও।স্থানীয় চ্যানেলে প্রায়ই ওনার মুখ দেখা যায়।আমাদের চ্যানেলে ওনাকে যদিও ডাকা হয়নি।
সেদিন সকাল সকাল অফিসে পৌঁছে দেখি সেই কাকিমা।আমার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক।কেউ কারোর সাথে কথা বলিনা।কাজ তো মজবুরির নাম।ক্যামেরা ঠিক করে প্রোগ্রাম আরম্ভ হল।কথাবার্তা চলল।কাকিমা কথা প্রসঙ্গে বললেন,‘আমি চিরকাল ভালো মানুষ হতে চেয়েছি,ভবিষ্যতেও চাইব।সবাই যেন আমাকে একজন ভালো মানুষ হিসাবেই মনে রাখে।’পুরো সিস্টেমটা বন্ধ করে দিলাম।পাশের ঘর থেকে ডিরেক্টর চেল্লাতে আরম্ভ করল।রেকর্ডিং রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে বললাম,‘একটু কানেকসনে প্রবলেম হয়েছিল।’
অনুষ্ঠান মাঝখানেই শেষ করতে হল।কাকিমা আমি ছাড়া বাকি সবাইকে নমস্কার জানিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যেতেই বুদ্ধকে ফোন করলাম,‘আমিও একটা মুখোশ কিনেছি।'