মেঘের চেয়ে উঁচু
মেঘের চেয়ে উঁচু


-এই টিকিটে ভেতরটা ঢোকা যাবেনা বলছে রে।
-তাই? কিন্তু টিকিট কাটার সময় এরকম কিছু বললোনা তো?
-ছাড়, ওপরে উঠে কি এমন আর দেখতাম? মেঘলা আকাশ, শহরটা এমনিও দেখা যাবেনা। তার চেয়ে কাল পাহাড়ে উঠে দেখে নেবো।
-প্লেন থেকেও তো সুন্দর দেখতে পেলাম। এখানেই বসি তাহলে?
-বসবি কি রে! ফটো তুলবিনা?
-ফটো?
-কান লাল করে মুখ লুকাচ্ছিস কেন?
-আসলে ক্যামেরায় ব্যাটারি শেষ।
-যাহ! ঠিক আছে, চোখের দেখাটাই আসল কি বলিস?
-হ্যাঁ, আইফেল টাওয়ারের কথা দিদিমনি কত বলে! কত ইতিহাস!
-এমনিও যা ভিড়, তুই ভালো ফটো তুলতে পারতিনা। রোদও নেই।
-মা বাবা দেরি করছে কেন? ভীষণ খিদে পেয়ে যাচ্ছে।
-এখানে কি অত সহজে খাবার কিনে আনা যায়? দেখছিসনা ঝাঁচকচকে সব দোকান, নিয়ম আছে অনেক। তাছাড়া দামি খাবার সাজিয়ে গুছিয়ে দিতে সময় লাগে।
-তা ঠিক, আমাদের জয়ন্তদার চায়ের দোকানের মতো না। আয় ততক্ষনে আমার ব্যাগে যা আছে খেতে থাকি।
***
ধর্মতলার বাস টার্মিনাসে জয়ন্তর ছোট ঝুপড়ি। চা, দুপুরের খাবার ছাড়াও কিছু চটি বই, ম্যাগাজিন আর পোস্টার বিক্রি করে আরেকপাশে।
চায়ের জলটা বসিয়ে দোকানের সামনের ফুটপাথে দেখছিলো ও।
আজ সমাজসেবকদের বিকেলের স্কুল বন্ধ, সপ্তাহে তিনদিন করে গরীব বাচ্চাগুলোকে পড়ায় ওরা।
ছেঁড়া জামাকাপড় গায়ে, আধপেটা খেতে পাওয়া ময়লা চেহারার উষ্কখুষ্ক চুলের হাঘরে দুই ভাই ওর দোকানের একটা পোস্টারের দিকে তাকিয়ে নিজেদের মধ্যে কিসব যেন বলাবলি করছে।
পোস্টারটা আইফেল টাওয়ারের।