মাফলার
মাফলার
বইমেলাতে পরিচয়। সেদিন অনিমেষ ওর সদ্য বেরোনো বইয়ের পাতাগুলো উলটে পালটে দেখছিল, কাউন্টারে তখনই হইচই...
- কালকেও ঘুরে গেলাম, নেই বললেন। আজও না।
মানিকদা নরম সুরে বোঝাতে চাইলেন, দেখুন শর্টেজ হয়ে গেছে। যে কটা কপি এনেছিলাম গত পরশু অবধি শেষ। আপনি কাল আসুন। একটা ম্যানেজ করে রাখব।
- আচ্ছা, কাল কিন্তু।
- হ্যাঁ হ্যাঁ। ঠিক পাবেন।
মেয়েটাকে বেরোতে দেখে অনিমেষ ডাকল।
- শুনছেন, এটা খুঁজছিলেন?
যে বইটা তন্ন তন্ন করে গত দুদিন...আজ অন্য হাতে পেয়ে ছিনিয়ে নিতে মন চাইলেও পারলনা শ্রীপর্না।
- কিন্তু আপনি পেলেন কোত্থেকে? এই যে বলল, একটাও কপি নেই।
- না। মানে আমার কাছে আগে থেকেই ছিল।
- আগে থেকে মানে। আমি কালও এসেছি...
- আচ
্ছা। আপনার যদি তেমন দরকার হয়, এটা নিন। আমার লাগবে না।
- কেন, পড়ার ইচ্ছে নেই বুঝি। নতুন লেখক তাই!
- সে তো অবশ্যই। নতুনদের একটা চাপ তো থাকবেই। দেখুন না কেমন খালি সব কাউন্টার।
মেয়েটা হাত ঘুরিয়ে সময় দেখে নিল। তারপর বলল,
- দিন তাহলে...
অনিমেষ এক মিনিট বলে একটু দূরে গেল। যখন ফেরত এলো হাতে বইটা।
- আচ্ছা নিন। পড়ে জানাবেন কিন্তু কেমন লাগলো।
বইটা হাতে নিয়ে শ্রীপর্না বেরিয়ে গেল। একটা অদ্ভুত আনন্দ ঘিরে ছিল ওকে। এ কবি ওর খুব চেনা...কবিতা পড়ছে বহুদিন...
সেদিন বাড়ি ফিরতে রাত হলো...তারপর কাজ সেরে নিজের ঘরে বসে বইটা খুলতেই নজরে পড়ল সইটা...
এতো “বিম্বিসার”...কবির ছদ্মনাম...কে করল এটা...
ওর মনে পড়ল, অনিমেষের কথা...নির্ঘাৎ উনিই... তাই পর পর আরো কদিন শ্রীপর্না ঘুরে বেরালো বইমেলা চত্ত্বরে...কিন্তু মাফলার গলায় সেই কবিমানুষটিকে আর দেখা গেল না...
স্টল থেকে জানালো, উনি শুধু সেদিনই এসেছিলেন। পরে কবে আসবেন, জানা নেই।