ইট স্টার্টস উইথ অ্যান ইমেইল
ইট স্টার্টস উইথ অ্যান ইমেইল


শরন্যা প্রথম যেদিন এ অফিসে ঢুকল লোকে একবার কৌতূহলী দৃষ্টি নিয়ে দেখে নিল শুধু। এত ফিটফাট চেহারার পাবলিক এখানে খুবই কম। বেশিরভাগই আতিপাতি, ভবঘুরে টাইপ।
চ্যানেলটির বেশ নামডাক আছে। কয়েকটা সিরিয়ালের টিআরপিতে এটা ভালো দশ চ্যানেলের মধ্যে এখন। একটা কায়দা করা ওয়েবসাইটও আছে ওদের।
মাস মিডিয়া নিয়ে পড়াশোনা করা, ইংরেজিতে তুখোড়, ও বাংলায় লেখালেখির ভালোবাসায় ভরা শরন্যাকে ইর্ন্টাভিউতে তাই সেদিন টপকাতে পারেনি কেউই। মিসেস বাসু মানে চ্যানেল হেডের ধর্মপত্নী ও সিরিয়ালের সু লেখিকা তো প্রথম দর্শনেই কুপোকাত।
তা এত চ্যানেল থাকতে এখানে কিভাবে? প্রশ্ন ছুঁড়েছিল অনন্ত ঘোষ। ক্রিয়েটিভ হেডের চাকরিতে এটা তার দশ বছর। ভালো লাগা এতটাই যে বেরোতে পারেনি এখান থেকে।
শরন্যার উত্তরটা গোছানোই ছিল। আপনাদের গল্পগুলো ভালো হয়। বাকিতে সেই এক, চলছে তো চলছেই।
বলেই আলতো হাসি দিয়েছিল মেয়েটা। ওর গালের দু পাশে দুটো খাদ তখনই ফোকাসে এলো, আর অনন্তও গর্তে পড়তে এতটুকুও সময় নিলো না।
এরপর বাইরে বসতে হলো। পার্সোনাল ইন্টার্ভিউয়ের পর এবার অপেক্ষা পরের রাউন্ডের। প্রত
্যেককে একটা করে ছবি দেওয়া হবে আর তা দিয়ে স্ক্রিপ্ট লেখা এক মিনিটের দৃশ্যে।
রাউন্ড শুরু হতে এখনও প্রায় আধঘণ্টা। ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে একটা ফ্রুট স্যালাড নিলো শরন্যা, সাথে মাকেও জানিয়ে দিলেন ফার্স্ট রাউন্ড ওয়াজ ওকে। রোহিতকে ফোন করলেও ভালো হত। বাট হি মাস্ট বি বিজি দিস টাইম...
পাশের টেবিলে বসা আরেকটি মেয়ে, তখন থেকে দেখে যাচ্ছিল শরন্যাকে। তাই ও নিজেই একটা হাসি দিল। কেমন হয়েছে ফার্স্ট রাউন্ড? মেয়েটা মাথা ঝাঁকাল শুধু।
কনফারেন্স রুমে কোণের এক চেয়ারে বসতেই হাতে পেল এই চ্যানেলেরই নতুন ধারাবাহিক "পূবের আকাশ লাল" এর নায়ক সূর্য সেনগুপ্তকে। গল্পটায় কি হচ্ছে ও জানে। ছেলেটা ফ্রাস্টেটেড, আগের প্রেমিকার জন্য।
শরন্যার মাথায় এলো গত রাতে পাওয়া ইমেইলটা। হুবহু লিখে দিল তা।
চিঠিটা অদরকারী ভেবে ডিলিট করতেই পারেন কিন্তু তার আগে জানাতে চাই, আপনার লেখা আমি পড়ি। খুব ভালো লাগে। একটু অনধিকার প্রবেশ চাইছি আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে।
ফুটনোট: খুব ভয়ে ভয়ে লেখা এ চিঠি। করোনা কালে এমনিতেই আধমরা হয়ে আছি, বাকিটা নিরাশ করবেন না।