ক্ষুধার্ত
ক্ষুধার্ত
'কি অসাধারণ জায়গায় এলাম ঋষি'
'তোমার জায়গাটা পছন্দ হয়েছে রুষী?'
'নিশ্চয়ই! এখানে প্রকৃতির গন্ধই যে আলাদা, একেবারে ঝুঁকে এসে ধরা দিয়েছে দোরগোড়ায়!'
ঋষি আর রুষীর বিয়ে হয়েছে সপ্তাহ দুয়েক আগে। লোলেগাঁও থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত একটা গ্রামে ওরা বেড়াতে এসেছে মধুচন্দ্রিমায়।
একান্ত নিভৃতে, সবুজে আবেষ্টিত একটা হোটেলে উঠেছে ঋষিরা। চারদিকের আবহাওয়া মনোরম। হিমেল হাওয়ার স্পর্শনের সাথে রোদ্দুরের ঈষদুষ্ণ তাপের সমন্বয়, কুয়াশাঘন নিবিড় নিস্তব্ধতার মাঝে আকস্মিক কোন অচিনপাখির সুমিষ্ট ডাক, সুদূর পাহাড়ের কোলে ভেসে যাওয়া মেঘের ভেলার সাথে সূর্যের রহস্যময় আলো ছায়ার খেলা, অনতিদূরে অবারিত প্রবাহস্রোতের ছলাৎছল আওয়াজ তুলে কোনো নদীর ঠিকানায় হারিয়ে যাওয়া, এইরকম হাজারো খুচরো প্রাকৃতিক খামখেয়ালিপনা অকারনেই একঝাঁক আনন্দ এনে দিচ্ছিল এই নবদম্পতির চেনা-পরিচিতির নতুন পথ চলায়।
এইসব এলাকায় সূর্যাস্তের প্রায় সাথেসাথেই ঝুপ করে নামে নিরালা রাত। ঘন হয়ে আসা অন্ধকার আর নিস্তব্ধতার তালে তালে বাড়তে থাকে চারপাশের কীটপতঙ্গের সম্মিলিত আওয়াজ, ছোটখাটো জন্তুদের পদশব্দ। যেন পৃথিবীর কোন অক্লান্ত পথিক জেগে উঠে এগিয়ে চলেছে বিরামহীন, গন্তব্যহীন।
রাতের নৈশভোজের পর অকাতরে ঘুমিয়ে পড়েছে ঋষি। আজ ওদের ভ্রমণের দ্বিতীয় দিন। এদিকে রুষীর কিছুতেই ঘুম আসছে না। বেশ কিছুটা পরিত্যক্ত খাবার ঘরের ঠিক বাইরেটা রেখে এলো সে। ঘরে, বাইরে কোনো ডাস্টবিন নেই। এত রাতে রুমবয়ও আসবে না। কাঠের সাঁকোর ওপর এই অন্ধকার পেরিয়ে হেঁটে গিয়ে কোনো যথার্থ জায়গায় এর গতি করবে, অত বুকের পাটাও তার নেই। সক্কালবেলায় এসে না হয় রুমবয় নিয়ে যাবে।
সামনের খোলা কাঠবারান্দা জোৎস্নার আলোয় ভেসে যাচ্ছে। ঘরের ভেতরে চাঁদের মায়াবী আলো এসে পড়েছে। বাইরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা মহীরুহের পাতারা মৃদুমন্দ বাতাসের দুলুনিতে তিরতির করে কাঁপছে। গভীর কালো আকাশের জ্যোৎস্না মাখা গায়ে একটা মাত্র ছোট দুধ-সাদা মেঘ ছেঁড়া কাঁথার মত চাঁদের সাথে লেপ্টে গিয়ে কালচে গেরুয়া রং ধারণ করেছে। চারদিকের ঝিমধরা সৌন্দর্য্য প্রাণভরে উপভোগ করছিল রুষী। পর্যটনশিল্প এখানে এখনও সেভাবে থাবা বসাতে পারেনি। এখানে আকাশ বাতাস দূষণহীন। যে কয়েকজন মানুষের সান্নিধ্যে এসেছে, তারাও খুব সহজ সরল। ওদের থাকার জায়গাটা একটা বিশাল জমি জুড়ে, বেশ নিরিবিলি এলাকায়। কয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঝুলন্ত কুটিরঘর রয়েছে। তাদের মধ্যেকার যোগসূত্র হচ্ছে ঝুলন্ত কাঠের সেতু। অনেকদূর পর্যন্ত বিস্তৃত বিশালাকার গাছের ঘেরাটোপ। অফিসঘর আরও দূরে। কুটিরঘরগুলো প্রত্যেকটা গোলাকার, চারদিকটা কাঠের বারান্দা দিয়ে ঘেরা। ঘরে ঢোকার একটাই সদর দরজা কাঁচের। গোলাকার ঘরের প্রায় সবটাই কাঁচের জানালা, যাতে প্রাকৃতিক দৃশ্য ঘরে বসেও উপভোগ করা যায় যে কোন সময়ে।
এখন মধ্যরাত পেরিয়ে গেছে। বারান্দায় বেশিক্ষণ দাঁড়ানো যায় না। একটা চোরা ঠান্ডা অজান্তে মাথার ওপর চেপে বসতে শুরু করে। রুষী ঘরের আরামকেদারায় এসে বসল। হাল্কা ঝিমুনি এসে গিয়েছিল, হঠাৎ সন্ত্রস্ত হয়ে কান পেতে শুনতে লাগল। ও কি? একটা আওয়াজ আসছে দূর থেকে – খট্ খট্ খট্ খট্। ভারী কাঠের ওপর কাঠের আওয়াজ। ক্রমশই জোরালো হচ্ছে আওয়াজটা। কেউ কি এদিকে এগিয়ে আসছে? কিন্তু এত রাতে কে আসবে? মনে হতেই, ঝটিকায় উঠে বারান্দার খোলা দরজাটা বন্ধ করে দিল রুষী। চারদিক আবার নিস্তব্ধ। কোথায় গেল আওয়াজটা? তবে কি কোন নিশাচরের জান্তব আওয়াজ ছিল? রাতের নিস্তব্ধতায় কোনো চারপেয়ের চলাফেরার শব্দ প্রশমিত হয়ে এক আলাদা মাত্রা নিয়েছিল কি? শব্দের খেলাও এই অন্ধকারে কত প্রতারণা করতে পারে, ভেবে নিজের মনেই হাসল সে।
কিছুক্ষণ পর, আর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল রুষী। তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল, আবার কানে এলো সেই আওয়াজ - খট্ খট্ খট্ খট্। স্বপ্নের ঘোর ভেবে পড়ে রইল বিছানায়। আচমকা কাঠবারান্দায় সেই আওয়াজ। কেউ বারান্দার চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর সমানে প্রত্যেকটা জানলায় দুম দুম করে ধাক্কা দিচ্ছে। ধড়ফড়িয়ে উঠে পড়ল রুষী। ঋষিকে ডেকে কোন লাভ হচ্ছেনা, ছেলেটা এত অঘোরে ঘুমোতে পারে! এদিকে আওয়াজও থামছে না। পর্দার ওপারে একটা ছায়ামূর্তি বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু সে কি কোন শরীরির না অশরীরির? বুকের ভেতরটা ছ্যাঁত করে উঠলো রুষীর। মধ্যরাতে অনভিপ্রেত এই আগন্তুক কে অথবা কি হতে পারে, সেটা বাইরে বেরিয়ে যাচাই করার ইচ্ছা অথবা দুঃসাহস কোনোটাই তার নেই।
বেশ কিছুক্ষন পরে, আওয়াজটা ঘুরে ঘুরে সদর দরজার সামনে এসে থেমে গেল। রুষীর মনে হল ওর সমস্ত নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। মনপ্রাণ দিয়ে চাইছে কোন অঘটন না ঘটুক। অফিসঘরের নম্বরে ডায়াল করল, কিন্তু এত রাতে কেউ ফোন তুলল না। কতক্ষন এভাবে নিশ্চুপ অপেক্ষায় থাকলো জানা নেই রুষীর, কিন্তু একসময়ে খট্ খট্ আওয়াজ করতে করতে, সদর দরজা থেকে প্রস্থান করল সেই অজ্ঞাত নিশাচর। রাতভর রুষীর আর ঘুম হলনা।
সকাল থেকে শুরু হল মুষলধারে বৃষ্টি। ঋষিকে আগের রাতের ঘটনা বলতে, নিজের ঘুমের জন্য লজ্জিত না হয়ে উল্টে রুষীকেই একপ্রস্থ বকা লাগালো সে,
'রাতে এভাবে একা কেউ বারান্দায় বেরোয়? অজানা জায়গা, জঙ্গল চারপাশে, যদি কোনো বিপদ হয়ে যেত?'
'ওরকম অঘোরে ঘুম দিলেও বিপদ হতে পারে মশাই! জানতেই পারলে না, সকাল হলে দেখলে নদীর ওপর লোটাকম্বল নিয়ে শুয়ে আছো!' আচ্ছা ক্ষেপে গিয়ে প্রত্যুত্তর দেয় রুষী।
ব্যাপার বেগতিক দেখে মাথা চুলকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে ঋষি,
'আচ্ছা আজ জেগে থাকবো'
'জেগে থেকে কি পাহারা দেবে? চলো আজই রওনা হয়ে যাই আমরা। আমার কেন জানিনা সুবিধার লাগছে না জায়গাটা। এতটা জনমানবশূন্য জায়গাতে আমাদের আসা ঠিক হয়নি ঋষি'
'আজ যেমন বৃষ্টি পড়ছে, এই অবস্থায় এইসব রাস্তায় বেরোনো মানে নিজেদের বিপদ ডেকে আনা। তাছাড়া এখানকার স্থানীয় ড্রাইভার, যার সাথে কথা বলে রেখেছিলাম, সে ফোন তুলছে না' উত্তরে বলে ঋষি। তারপর রুষীর চিন্তিত মুখটা দেখে নিজেরই খারাপ লাগলো। সাহস যোগাতে বলল, 'আহা, চিন্তা করছো কেন? কত রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা হচ্ছে বলো তো? মধুচন্দ্রিমায় এসে এরকম একটা রহস্যজনক ঘটনা উপভোগ করতে পারবে, এটা ভেবেছিলে? সারা জীবন মনে থাকবে দেখ'
'মধুচন্দ্রিমায় রহস্যরোমাঞ্চ? তুমিই উপভোগ করো ঋষি। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে' কথাগুলো বেশ কেটে কেটে বলল রুষী। আর কথা বাড়ালো না ঋষি।
বেলার দিকে রুমবয় আসতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল, কিন্তু সে এই বিষয়ে কোনো আলোকপাত করতে পারল না। ছেলেটা এখানে মাত্র মাসদুয়েক হলো কাজ শুরু করেছে। রোজ রাত ন'টায়, ডিউটি শেষে তিনটে গ্রাম পরে তার বাড়ি ফিরে যায়। সেখানে অপেক্ষাকৃত জমজমাট লোকালয়। হুট করে জনবসতির মধ্যে কোনো নিশাচরের এসে পড়ার খবর তার জানা নেই।
কিন্তু রুষী খেয়াল করলো, গতরাতে ঘরের বাইরে ওর রাখা খাবারের থালার ওপর বাড়তি খাবার যত্রতত্র ছড়ানো। কেউ বুঝি খুব তাড়াহুড়োতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে খেয়েছে। তাহলে কি এটা কোন বন্যপ্রাণীর কাজ? অফিসঘরের উপস্থিত কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগ করে বিশেষ লাভ হলো না। যে এক-দুজন স্টাফেদের সাথে কথা বলা গেল, তারা গতকালের আগন্তুকের কোন হদিস দিতে পারল না।
সারাদিন নিরন্তর বৃষ্টি চলল, বিকেলের দিক থেকে তার সাথে বাড়ল ঝড়ো হাওয়া। বৃষ্টির পর্দা ভেদ করে অনতিদূরের কুটিরঘরটাও চোখে পড়ে না। থেকে থেকে মেঘের বজ্রনিনাদ। ওরা দুজনেই আশঙ্কিত হয়ে পড়ে, এই বুঝি কোন বড় গাছ ভেঙে পড়লো কুটিরের ওপর। এই বুঝি কোন জন্তু ঝপাং করে বেরিয়ে এল জঙ্গল থেকে! সেদিন বেড়ানো অথবা চলে যাওয়া তো দূর, নিজেদের ঘর ছেড়ে বেরোতেই পারলো না ঝড় বৃষ্টির জেরে। গাড়িচালকও জানিয়ে দিল পরেরদিন বৃষ্টি কমলে তবেই সে আসতে পারবে।এইসব রাস্তা পিচ্ছিল অবস্থায় অত্যন্ত বিপজ্জনক।
সে রাতে উপায়ান্তর না দেখে ঘরেই খাবার দিতে বলল ঋষি। কারেন্ট চলে গেছে অনেক্ষন। মোমবাতির ক্ষীণ শিখার আলোর দুলুনির প্রভাবে আলো-আঁধারিতে থরথর কাঁপছে বুঝি ঘরটা। এই দুর্যোগের রাতে ওই স্বল্প আলোয়, ঘরের ভেতরে অগোচরে থাকা বিভিন্ন জিনিসপত্রের বিশালাকৃতি ছায়া পড়েছে দেওয়ালে। কিছুক্ষন পর যথারীতি ঢলে পড়ল ঋষি। সোফাতে গা এলিয়ে তেড়ে নাক ডাকতে লাগলো। উফ, এই লোকটা পারেও বটে, মনে মনে খানিক বিরক্তই হল রুষী। এই কিনা সকালে কথা দিয়েছিল, আজ কিছুতেই ঘুমোবে না। সে কোনো আগন্তুক আসুক কি না আসুক। সমস্ত রাত দুজনে বসে গল্প করে কাটাবে। হলো গল্পের ইতি!
মধ্যরাত পেরিয়ে গেছে। একসময়ে বৃষ্টি কমে এল। মেঘের ফাঁক দিয়ে এক ফালি চাঁদ উঁকি দিল। ঝিঁঝিঁপোকাদের সমবেত কলরব শুরু হয়েছে। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই রুষী টের পেল, আবার সেই গত রাত্রের আওয়াজ… খট্ খট্ খট্ খট্। এগিয়ে আসছে ওদের কুটিরঘরের দিকেই। আজ এই এত ভারী বর্ষণের রাতেও কে ও? সেই অনাহুত অতিথি কি বেরিয়েছে শিকার ধরতে? কি অভিপ্রায় তার? কিসের টানে বারংবার নিশানা বানাচ্ছে ওদের কুটিরঘরকেই? তবে কি এই ঘরেই কিছু আছে যা সেই আগন্তুককে আকৃষ্ট করছে বিগত দুই রাত ধরে? ওদের কুটিরঘর সব ঘরগুলোর একেবারে শেষে। আর কিছু দূর থেকেই শুরু হচ্ছে জঙ্গলের সীমানা। চাপা উত্তজনায় গলাটা শুকিয়ে এলো রুষীর।
গতদিনের মতন সেই আওয়াজ বারান্দা অবধি উঠে এসেছে। সারা বারান্দাময় সেই আওয়াজ। মনে হল কোন ছায়ামূর্তি এই জানালা সেই জানালা দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলসানির সাথে সাথে জানালার সাদা পর্দা ভেদ করে একটা অবয়ব স্পষ্ট হয়ে উঠল – একটা শতছিন্ন, আজানুলম্বিত শীতবস্ত্র পরিহিতা কঙ্কালসার মহিলা। চিৎকার করে উঠল রুষী আর সঙ্গেসঙ্গে চমকে উঠে পিছিয়ে গেল সেই অবয়ব। রুষীর ত্রাহী চিৎকারে ঘুম ভেঙে উঠে বসেছে ঋষি। সে তো এই রাতেও দরজা খুলে তদন্ত করতে বদ্ধপরিকর। ভূতপ্রেত তো কোনকালেই মানেনি, এমন জায়গায় যে চোর ডাকাত থাকতে পারে, সেটা ঋষি মানতে নারাজ। অবয়বটা তো একটা মানুষের, সে কোন হিংস্র জন্তুর অন্তত নয়, এই বিষয়ে ও নিশ্চিত।
সাহস সঞ্চয় করে ওই অন্ধকারের মধ্যে বারান্দার দরজা খুলে বেরোতেই, ঋষি দেখল বারান্দার এক কোণে আপাদমস্তক চাদরে মোড়া কেউ একজন পড়ে আছে। পাশেই একটা লম্বা লাঠি রাখা।
‘কে ওখানে?’ হাতের তীব্র টর্চলাইটটা ফেলতেই, চাদরের ভেতর থেকে অতি শীর্ণকায় কঙ্কালসার দুই হাত বেরিয়ে এলো সামনের দিকে।
‘কিছু খেতে দিবি বাবা?’ বক্তার গলা শুকনো, চোখ কোটরে ঢুকে গেছে, পাক ধরা চুল দড়ির মতন পেঁচিয়ে নীচে নেমে এসেছে।
‘গতকাল তো খাবার রেখেছিলি, আজ দিবি না?’ পুনরায় বলে ওঠে বৃদ্ধা সেই মহিলা।
‘কে তুমি? এখানে কি করছ?' ঋষি হতবাক।
বৃদ্ধা নির্দ্বিধায় বলল, ‘আমি এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা বাবা। আমরা ভাল করে খেতে পাই না যে… কাল খাবারের গন্ধে ঠিক চলে এসেছিলাম। কত ডাকলাম, কেউ দোর খুললি না। তারপর দেখলাম আমার জন্য দরজার বাইরে প্রসাদ রেখেছিস। সেই আশায় আজও এসেছি, কিছু খেতে দিবি রে মা?’ এবার রুষীর দিকে নজর গেল তার।
জিজ্ঞাসাবাদ করতে জানা গেল ধারেকাছে স্থানীয় কিছু গোষ্ঠীর মানুষ আছে, যারা চরম দারিদ্রে কোনরকমে দিনযাপন করে। বৃদ্ধা বুঝি মনোহরা পৃথিবীর অন্য পিঠে থাকা নিশ্চুপ বিভীষিকাময় রাতের অন্তরালে মূর্তিমতী এক বন্য গ্লানিময় ক্ষুধার্ত প্রতীকী। সামান্য বেঁচে থাকার লড়াইয়ে এ কি আদিম করুণ আর্তি তার!
রুষী মিহিকণ্ঠে জানালো, 'বসো মা, ভাত নিয়ে আসছি!'
সমাপ্ত।।
