কোজাগরী
কোজাগরী


সিমন্তিনীর সামনে একটা বিরাট কাঁচের জানলা। জানলায় ঠিকরে পড়ছে চাঁদের হলুদ আলো। যতদূর চোখ যায় কেবল আবছা পাহাড়ের ছায়াময় শরীর। ফায়ার প্লেসের আলোয় নীলাদ্রির খোলা পিঠটা ঠিক সূর্য ডোবা নদীর বালুচরের মতন মনে হচ্ছে। শান্ত, ক্লান্ত—সহবাসের তৃপ্তিতে নিথর অবসন্ন পিঠের উপর থেকে নিজের খোলা বুকের উষ্ণতা আলগা করেছে সিমন্তিনী। মেঝেতে ছড়িয়ে থাকা পিঙ্ক ব্রা আর প্যান্টিটা জানলা খুলে উড়িয়ে দিয়েছে জ্যোৎস্নার আকাশে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে বসে সিমন্তিনী। ঠোঁটে,গলার ভাজে আদরের দাগ রয়ে গেছে। ড্রয়ার খুলে পার্ল সেটটা বের করে সিমন্তিনী। নিরাভরণ বুকের উত্থানে সপাটে আছড়ে পরে মুক্তোর দম্ভ আর মুহূর্তে ফিকে হয়ে যায় তার যাবতীয় জৌলুস। লিপস্টিকের ডার্ক মেরুন রঙে ঠোঁটটা আবার চকচকে হয়ে উঠে। প্রসাধন শেষ করে উঠে এসে জানলার স্লাইডিং পাল্লাটা একটানে সরিয়ে দেয় সিমন্তিনী। প্রচন্ড ঠান্ডা হাওয়ায় ঘরটা ভরে যায়। নীলাদ্রির থাইতে,পিঠে হাতে কাঁটা দিচ্ছে। ব্ল্যাঙ্কেটটা টেনে দেয় নীলাদ্রির শরীরের উপর। খাটের পাশে রাখা চেয়ারটা টেনে নিয়ে নীলাদ্রির পায়ের কাছে এসে সিমন্তিনী। ঘুম ভেঙে গেলেই নীলাদ্রি দেখতে পাবে সিমন্তিনীর বুক,কোমর,নাভি আর উরুসন্ধী। ঠিক তিন বছর পর,একই হোটেল। একই আদরের রাত। সেদিন যেমন করে আদর করেছিল নীলাদ্রিকে ঠিক সেভাবেই আজ আবার আদর করছে সিমন্তিনী। সেদিন আদরের পর ভীষণ ক্লান্ত হয়ে গেছিল সিমন্তিনী। চোখ লেগে গিয়েছিল। আজ জেগে আছে,কোজাগর চোখে প্রত্যক্ষ করছে সহবাসোত্তর মায়া।
জেগে উঠেছে জিনিয়া। এত ঠান্ডা কেন ঘর। নীলাদ্রির শরীরটা কেমন ভিজে উঠেছে কেন? ওকি ঘামছে? তাই তো কম্বলটাও ভিজে চুপসে গেছে। দ্রুত বেড সুইচটা অন করে জিনিয়া। চিৎকার করে উঠে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে নীলাদ্রি। পিঠটা কে যেন ধারালো নখ দিয়ে ফালাফালা করে দিয়েছে। গলা নলি ছিন্নভিন্ন। বিভৎস দৃশ্য দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে জিনিয়া।
আলো ফুটছে। সিমন্তনী কাঁদছে। ওদিন আমি রেপড হতে চেয়েছিলাম বলেই তুমি আমায় আদর করেছিলে। আর তুমি চাওনি বলে আমার শরীরের ভেতরে আসা আদরের অঙ্কুর তাকে তুমি বাঁচতে দিলে না যে। তিন বছর আমি কোথায় ছিলাম ,আদৌ ছিলাম কিনা বলেছ তুমি তোমার, জিনিয়াকে?
হোটেলের ঘরে জিনিয়া আর নীলাদ্রির লাশ পেয়েছিল পুলিশ। আঘাতের চিহ্ন মাত্র নেই,তাদের শরীরে।