Rinki Banik Mondal

Classics

3  

Rinki Banik Mondal

Classics

কারার ঐ লৌহকপাট

কারার ঐ লৌহকপাট

8 mins
686


 ------"ও বাবা, বাবা বালি চলো"

 রবির কথা শুনে আজ হরেনের যে বড় কষ্ট হচ্ছে। ছোট্ট রবি বোঝেনা যে তার বাবা এখন কারাগারে বন্দি। হরেন যখন গ্রেফতার হলো তখন রবি মিনতীর গর্ভে। কিন্তু ওর মা মিনতী যে ওদের সম্পর্কের বাঁধনটা শক্ত সুতোয় বেঁধে রেখেছে। ছোট্ট রবিকে বলতে শিখিয়েছে হরেনই তার বাবা, সে আলাদা বাড়িতে থাকে। রবির তো এখনো বোঝার বয়স হয়নি যে, তার মায়ের কথায় আলাদা বাড়িটার নাম হল কারাগার। যেখানে তার বাবা বন্দি। রবি বড় হলে ধীরে ধীরে বুঝতে শিখে যাবে। হয়তো সে তখন এখানে আসার জন্য মা'র কাছে বায়না করবে না। হয়তো তার বাবাকে ভুল বুঝবে, বাবার পাশে দাঁড়ানোর জন্য হয়তো মিনতীকে ভুল বুঝবে, তবুও মিনতী ছেলেকে কখনো মিথ্যের আড়ালে রাখতে চায় না। ভবিষ্যতে কি হবে তা নয় ওপরওয়ালা'র হাতেই থাকুক।

 ছোট্ট ঘুপচি সেলটাতে আজ হরেন আনমনে বসে আছে। হরেন সন্ধ্যেবেলা এই সময়টা একটু বিশ্রাম নেয়। দীর্ঘ নয় বছরের কারাদন্ড হয়েছে তার। রান্নাঘরের কাজ আরও বিভিন্ন ধরনের কায়িক শ্রমের কাজ করতে হয় তাকে। এরই মধ্যে এক দাগি আসামীর ডাকে তার সম্বিত ফেরে।

 -----"এই প্যাকেটগুলো পাশের ওয়ার্ডে দিয়ে আয়। আমি যেতে পারবো না। কারণ এমনিতেই ওরা আমায় সন্দেহ করছে।"

 -----"এই প্যাকেট গুলোতে তো মাদক রয়েছে। আমি এইগুলো দিতে গেলে, ওরা তো আমাকেও সন্দেহ করতে পারে। আমি পারবো না। নয় বছরের তো কারাবাস। দু বছর তো হয়েই গেল। সাত'টা বছর ভালোভাবে থেকে যাই। আমি আর পাপ করে যাবজ্জীবনের বোঝা ঘাড়ে নিতে চাই না।"

 ----"তাই নাকি? তুই তো দেখছি বেশ সাধু পুরুষ হয়ে গেছিস। এই কাজটা না করলে কিন্তু তুই আজকে খাওয়া পাবি না।"

 ----"সে নাইবা পেলাম। ওই যা খাবার, তা তো পশুরাও মুখে দিতে পারবে না। তার থেকে না খেয়ে মরে যাওয়া ভালো।"

 মুখে মুখে তর্ক করার অপরাধে হরেনের গালে একটা সপাটে চড় জুটল মুন্না নামক দাগি আসামীর থেকে। হরেন এই দু'বছর ধরে সবই সহ্য করছে। কঠোর সাজাপ্রাপ্ত, চোদ্দবার জেলখাটা আসামীদের চোখে হরেন ঘৃণ্য হয়ে উঠেছে। কারণ সে তো তাদের কোন কথা শুনতে নারাজ। তার জন্য তাদের কাছে কম মার খায় না হরেন। ওই দাগি আসামীদের পাল্লায় পড়ে সাধারণ বন্দি গুলোও ধীরে ধীরে কারাগারের ভেতরেই জল্লাদের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। কি আছে এই হাজতে? শুধু পাপ আর পাপ। জেলখানা যে খুবই কষ্টের জায়গা। হাফ্ বালতি জলে স্নান, ভাত খাওয়ার আগে হাত ধুতে গেলে যদি জল কবজির ওপর পর্যন্ত উঠে যায় তাহলেই অপমান। একটা ওয়ার্ডে দুশো জন লোক থাকে, কিন্তু তার জন্য বাথরুম মাত্র দুটো, কিন্তু তার মধ্যে একটা নষ্ট। সেখানেও আবার সিরিয়ালে প্রবেশ করতে হয়। ঘুমানোর সময় কারারক্ষীরা যেভাবে ঘুমাতে দেবে সেইভাবেই থাকতে হবে, তার ব্যতিক্রম হলে পরিনাম মোটেও ভালো হয় না। ভোর চার'টের সময় উঠে পড়তে হয় ঘুম থেকে। তারপরে লাইন করে বেরোতে হয়। কেউ এখানে সুখ পায় না। তবে বড় বড় দাদা মস্তানরা সুখ পায়। টাকা থাকলে যে সুখের অন্ত নেই। এখানেও তাদের জন্য প্রয়োজনীয় জলের ব্যবস্থা আছে। ভালো খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ভালো বিছানায় ঘুমানোর ব্যবস্থা আছে। কিন্তু হরেনের টাকা কোথায়? হরেনের বউ মিনতী তো এখন একা হাতেই সংসার সামলাচ্ছে। বাচ্চাটাকে বড় করছে। লোকের বাড়ি কাজ করে কত টাকা পায় সে? তাই হরনের কপালে ওই অসম্ভব তিতা আর গন্ধওয়ালা খিচুড়ি নাহলে খোয়া ভরা চালের ভাতই জুটত। যেই কক্ষে ৪০ জন বন্দি থাকার কথা, সেখানে স্থান পায় ১০০ জন বন্দি। জেলখানায় বিনোদনের জন্য লুডু, টিভি, রেডিও, ক্যারাম বোর্ডের যে ব্যবস্থা আছে- সেই সব সরঞ্জাম এর সাথে কারোরই সাক্ষাৎ মেলে না। একহাত জায়গায় একজনের বুকে মুখে আরেকজনের পা দিয়ে চারজনকে ঘুমানোর চেষ্টা করা হয়। কতটা অমানবিক ও অমানসিক কষ্টে এখানে সাধারন বন্দিরা থাকে তারাই শুধু জানেন। এই ভাবেই তো রাতের পর দিন আর দিনের পর রাত কাটছে হরেনের, কিন্তু এটা তো হরেনেরই পাপের শাস্তি। খুব বড় পাপ করেছিল যে সে। দুই বছর আগে সে তো একজনকে খুন করতে চেয়েছিল। বটী দিয়ে বীরেন নামে এক ব্যবসায়ীর হাত কেটে দিয়েছিল হরেন। ওর এই নৃশংস কাজের পেছনে যে একটা কারণও লুকিয়ে আছে কিন্তু সেটা ক'জনে জানতে পারে? বা কজনই বা জানতে চায়? মিনতী যে বাড়িতে কাজ করত, সেই বাড়ির লোকটাই তো কাজে যাওয়ার কথা বলতে এসে মিনতীর সর্বনাশ করতে চেয়েছিল। ভাগ্যের জোরে হরেন সেদিনকে কাজ থেকে সেই সময় ঘরে ফিরেছিল, নাহলে তো মিনতীর জীবনটা নষ্ট হয়ে যেত, সাথে ওর গর্ভে থাকা শিশুটারও। কিন্তু এই সত্যিটা যে কোনদিন সামনে আসবে না। টাকার পাহাড়ে যে সব পাপ ধামাচাপা পড়ে গেছে। হরেন তো এখন বীরেনের কাছ থেকে মোটা টাকা না পাওয়ার জন্য, তাকে খুন করার চেষ্টার অপরাধে অপরাধী, একজন জেল বন্দি আসামী। হরেনের যে বড় কষ্ট হচ্ছে। কি হবে এই জীবন রেখে? তাই হরেন যে আজ ঠিকই করে ফেলল আত্মহত্যার পথটাই বেছে নেবে। পরেরদিন দড়ি জোগাড় করে এনেছে সে। সব বন্দিরা যখন খাওয়ার জন্য লাইন দিয়েছে, হরেন ঠিক করে কারাগারের পেছনে যে বড় গাছটা আছে তার মধ্যে গিয়ে ঝুলে পড়বে। হরেন নিজের মনকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই দেবী মায়ের মত কারাগারে হাজির হলেন প্রতিমাদেবী। প্রতিমা চৌধুরী। বয়েস পঞ্চাশের কাছাকাছি বা তার একটু বেশি। বন্দিদের জীবনে আলো ফেরাতে তাদেরকে দিয়ে নাচ-গান-নাটক-আবৃত্তি-রংতুলি আঁকড়ে ধরার কথা ভাবলেন তিনি। তাঁর সাথে অনেকেই এসেছেন সেদিন। তাঁদের মধ্যে কেউ চিত্রশিল্পী, কেউ লেখক। তাঁদের মধ্যে সবথেকে মমতা ভরা মানুষটি ছিলেন প্রতিমা চৌধুরী, একজন নৃত্যশিল্পী তার সাথে একজন নাট্যকারও বটে। তাঁর শেষজীবনটা তিনি বন্দিদের জীবনে আলোর পথ দেখানোর কাজে লাগাতে চান। সামনে গোটা জীবন পড়ে থাকা এই অপরাধীদের আবার নতুন করে বিপথে ছিটকে যাওয়া রুখতে এই পন্থাই কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন তিনি।

 কথায় আছে, রাখে হরি মারে কে! না। সেদিনকে প্রতিমাদেবীর আগমনে হরেনের আত্মহত্যা আর করা হয়নি। হবেই বা কি করে? প্রতিমাদেবীতো বন্দিদের পাপের বোঝা কমানোর এক বৃক্ষ। যে বৃক্ষ কিনা পাপ নাশ করে, পুণ্য প্রদান করে। তিনি পুলিশের প্রধান কর্তার কাছে ছেলে-মেয়ে সব বন্দিকে নাচ শেখানোর আর্জি জানিয়ে ছিলেন। বন্দিদের অন্ধকার জীবনে এক মুঠো আলো দান করতে চেয়েছিলেন, আর এই সুবাদেই কারাগারে তাঁর আগমন। প্রথম দিনই তিনি সবার মন জয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর হবেন নাই বা কেন? তিনি যে মহান, বড় সাহসী একজন মহিলা। তাঁর মনে ভয় কে জয় করার এক উদ্যম ইচ্ছে। প্রথমে কয়েকজন বন্দি তাঁকে নিয়ে অট্টহাসিতে মেতেছিল। কিন্তু না, তাদের সেই ক্ষণিকের হাসিকেই তিনি সারা জীবনের খুশিতে পরিণত করতে উদ্যত হয়েছিলেন।

 হরেন যে নাচ, নাটক কোনটাই জানেনা। ও তো পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিল। কিন্তু প্রতিমাদেবী তার মমতার ছোঁয়ায় ওকে নাচ শিখিয়েছেন, নাটক শিখিয়েছেন। হরেনের অপরাধের কথা প্রতিমাদেবী কখনো জানতে চাননি। হরেনই প্রতিমাদেবীকে সব বলেছে। কারাগারে পুরোদমে চলতে লাগলো নাচ আর নাটকের ক্লাস। কিন্তু একদিন প্রতিমাদেবীর মধ্যে এক শাসনরূপী মাকে খুঁজে পেল কারাগারের বন্দিরা। কথায় কথায় প্রতিমাদেবীর কাছে উড়ে এলো খবরটা। রনিত নামে একটি ছেলে রেপ কেসে এসেছে। সেদিনই রনিতকে দেখে প্রতিমাদেবীর ভেতরটা কেমন গুলিয়ে উঠেছিল। সেদিন সেই একবারই তাঁর নাচের ছন্দে তাল কেটে ছিল। হঠাৎ তিনি ঝাঁঝিয়ে উঠলেন রনিতের ওপর-

 "কি করে পারলে এসব করতে? একবারও নিজেকে মানুষ বলে মনে হলো না?"

 রনিত প্রত্যুত্তরে বলল-

 "আমি তো জন্তু। আমি তো ভুল করেছি স্বীকার করি। আমি তো শাস্তি পাচ্ছি। এর থেকে কঠিন শাস্তি আমায় দেওয়া হোক। আমি চাই আমার ফাঁসি হোক। কিন্তু আমার সঙ্গে কি হয়েছে সে খবর কি কেউ নিতে চেয়েছে? ছোটবেলা থেকে আমার না পাওয়ার বেদনা, ক্ষোভ সব এক হয়ে যে আমি জল্লাদ হয়ে গেছি মা।"

 সেদিনকের সেই ঘটনা থেকে প্রতিমাদেবী ঠিক করেন কার কি ইতিহাস ছোটবেলায় নির্মাণ যখন তিনি জানেন না তখন কাউকে দূরে ঠেলার অধিকার তাঁর নেই। প্রতিমাদেবী সংশোধনাগারে নাটক আর নাচের ক্লাস করে চলেছেন। সাথে বন্দিদের দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় স্টেজ শো'ও করাচ্ছেন। এর জন্য তাঁকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। কিন্তু বন্দিরা তাঁর বিশ্বাসের অমর্যাদা করেনি। কারণ তিনি যে সকলের মা। তাঁর দৌলতে কারাগারে হরেনকে আর অন্যদের হাতে মার খেতে হয় না। কারাগারে অসামাজিক ব্যবসাও ধীরে ধীরে বন্ধ হতে চলেছে। নতুন এক ছন্দে যেন বন্দিদের জীবনগুলো সেজে উঠতে শুরু করেছে।জেলের জীবনটা হয়তো অনেক অন্ধকার। কিন্তু ওখানে সবাই প্রমিলাদেবীর কৃপায় অনেক বেঁধে বেঁধে থাকে, হাত ধরাধরি করে। ওরা একসাথে নাচ বা নাটক যখন করে, তখন বোঝা যায় ওদের মধ্যে একটা সংহতি তৈরি হয়েছে। বন্দিদের সৃষ্টিশীলতা তথা উত্তরণের আখ্যানটি ও তাঁর হাতে ধরে পূর্ণতার পথে এগোচ্ছে।

 হরেনের শাস্তির সময়সীমা দু বছর কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ সে বাড়ি যাবে। মিনতী আর ওর ছোট্ট ছেলে যে হরেনের জন্য অপেক্ষারত। হরেন কারাগারের প্রধান গেটের কাছে বেরোতেই ছুটে এলো রবি। মিনতীর চোখে যে আজ জলের বাঁধ ভেঙেছে। হরেনও বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে আনন্দে বিভোর। কিন্তু মনের মধ্যে তাও হরেনের একটা চিন্তা কাজ করছে যে, সে তো জেল খাটা আসামী। কে দেবে তাকে কাজ? কি করবে সে? রবির ভবিষ্যৎ? হয়তো হরেনের চাপা কষ্টটা মিনতী বুঝতে পেরেছিল, তাইতো সান্ত্বনা দিয়ে হরেনকে সে বলতে পেরেছিল-

 "আমরা দুজন মিলে ঠিক কিছু একটা করে নেব। রবিকে মানুষ করবো। লোকে যা বলে বলুক।"

 মিনতীর কথাগুলো আজ হরেনের কাছে অনেক বড় ভরসা হয়ে দাঁড়ালো।

 -----"মা তোমার জন্য আজ একটা শাড়ি কিনে এনেছি। দেখো তো তোমার পছন্দ হলো কিনা?"

 ------"এই টা তো ডিজাইনার শাড়ি। যেরকম আমি পছন্দ করি। এত টাকা তুই কোথায় পেলি হরেন? তুই আবার কোন খারাপ কাজ করিস নি তো?"

-----"না, মা। তোমার আশিস আমার মাথার ওপরে যবে থেকে পেয়েছি তবে থেকে খারাপ কাজের কথাটা আর মাথাতেই আসে না। তুমি তো আমায় নতুন জীবন দিয়েছ। শুধু আমার কেন, অনেক বন্দিদেরই তো তুমিই ভরসা। আমি একটা টোটো কিনেছি মা। টোটো চালিয়ে রোজগার করে তোমার জন্য আর আমার ওই বউটার জন্য একটা করে শাড়ি কিনেছি। জন্মের পর মা'কে তো চোখে দেখিনি। দুর্গা পুজোর সময় আমার জীবনের এই দুই দেবীকে আমি এইটুকুনি দিয়েই প্রণাম করি।"

 হরেনের কথা আর কাজে যে প্রতিমাদেবী আজ ভীষণ খুশি। একশো জনের মধ্যে দশজনকে হলেও তো তিনি বদলাতে পেরেছেন। তাই তো হরেন তার ছোট্ট ছেলে রবিকে নিয়ে আজ প্রতিমাদেবীর বাড়ি এসেছে। সত্যিই তো প্রতিমাদেবীর ভাবনায় বড় বড় দোষ করেও কত লোক বুক ফুলিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিজের স্ত্রী'কে চেনা বিছানায় ধর্ষণ করছে, বৃদ্ধ মা বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়ে তাঁদের মৃত্যুর পথের সিঁড়িটায় একধাপ এগিয়ে দিচ্ছে। দিনের পর দিন কন্যাভ্রণগুলোকে হত্যা করছে। এগুলো তো কেউ দোষ হিসেবে দেখছে না। তাদের তো কারাগারে বসবাস করতে হচ্ছে না। তাহলে পেটের দায় বা নিজের লোককে বাঁচাতে গিয়ে কেউ যদি চুরি করে বা খুন করে তাহলে এমন কি বিরাট অপরাধ করছে সে? কিন্তু হ্যাঁ, যে পশুগুলো ধর্ষণ করছে, যে নরকের কীট গুলো পয়সার লোভে মানুষকে খুন করছে, তাদের শাস্তি দেওয়াটা বা ফাঁসি হওয়াটাই সঠিক। কিন্তু তাদের মধ্যে সবাই তো কারাগারে বন্দি হচ্ছে না। পয়সার গদিতে বসে তারা আবার কোন খারাপ কাজ করার মতলব আঁটছে। তবে যারা নানা কারণে, নানা অপরাধে বন্দি হয়েছে তাদের একটা সুযোগ তো দেওয়াই যায়। যদি তারা সেই নতুন ছন্দে তাদের জীবনটাকে আবার গুছিয়ে তুলতে পারে, ভুলটাকে সংশোধন করে একটা আলোর ঠিকানা খুঁজে বের করতে পারে। এরই মধ্যে হরেনের ছোট্ট ছেলে রবি প্রতিমাদেবীকে বলে উঠলো-

 ----"দিদুন তুমি আমাকেও একটা নাচ শিখিয়ে দেবে?"

 -----"হ্যাঁ, নিশ্চয়ই দেবো।"

 ----কি গানের নাচ শেখাবে বলোনা দিদুন?"

 ------"হুম! কি গানের নাচ তোমায় শেখাই বলতো?"

 ----"বলোনা দিদুন।"

 ----"হুম! মনে পড়েছে। সেই নজরুল গীতি-

 কারার ঐ লৌহকপাট,

ভেঙ্গে ফেল, কর রে লোপাট,

রক্ত-জমাট

শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।

ওরে ও তরুণ ঈশান!

বাজা তোর প্রলয় বিষাণ!

ধ্বংস নিশান

উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদি।

গাজনের বাজনা বাজা! কে মালিক? কে সে রাজা?

কে দেয় সাজা

মুক্ত স্বাধীন সত্যকে রে?

হা হা হা পায় যে হাসি,

ভগবান পরবে ফাঁসি!

সর্বনাশী

শিখায় এ হীন তথ্য কে রে!


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics