Nikhil Mitra Thakur

Romance Tragedy

3  

Nikhil Mitra Thakur

Romance Tragedy

কালোমেয়ের প্রেম

কালোমেয়ের প্রেম

2 mins
446


কালোমেয়ের প্রেমচারবছর ধরে ওরা ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করে। কলেজে একসাথে ক্যান্টিনে খেতে যাওয়া, পাশাপাশি ক্লাস করতে বসা, কলেজ ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়া সবই করেছে। কলেজ জীবনে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলে যা যা করে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সবই ওদের ক্ষেত্রে ঘটেছে।

চারবছর পর সুবর্ণ আজ সন্ধ্যায় ডেকেছে কালীমতিকে। এক নির্জন রাস্তায় ওদের হল দেখা। কালীমতি এবার বিয়ের প্রসঙ্গ তোলে। সুবর্ণ বলে, সেটার ব্যাপারে জানাতে এসেছি তোমায়। আমার বাবা- মা কোনভাবেই কালো মেয়ের সাথে বিয়ে মেনে নেবেন না। বাবা- মায়ের অমতে কিছু করতে পারবো না আমি। এই কথাগুলো বলে হনহন করে হেঁটে চলে গেল সুবর্ণ। পেছন ফিরে একবার দেখলোও না কালীমতি কি করছে।

বেশ কিছুক্ষণ স্তম্ভিত হয়ে অসহায় দাঁড়িয়ে থাকলো কালীমতি। দুচোখ বেয়ে অঝোরে বেয়ে আসছে অশ্রুধারা। ধীর গতিতে টলমল পায়ে বাড়ির দিকে এগিয়ে গেল কালীমতি। আজ ওর মনে পরছে কলেজের বান্ধবীদের কথা। বান্ধবীরা ওকে বারবার বলেছিল সুবর্ন ওকে সময় কাটানোর জন্য সঙ্গী করেছে, কোনদিন বিয়ে করবে না তোকে। কালীমতি কোন দিন সন্দেহ করেনি সুবর্ণকে।

আমার যত গুন সব ঢেকে গেল কালো রঙে। রঙটায় সব তোমার কাছে, গুণের কোন মূল্য নেই। তুমি একবারও চিন্তা করলে না সন্ধ্যাবেলায় এই নির্জন রাস্তায় একটা মেয়ে ছুটে আসতে পারে কতটা ভরসা করলে। ভেবে দেখলে না তুমি প্রত্যাখান করার পর যদি আমি একটা কিছু করে বসি। একবারও মনে হল না এই নির্জন রাস্তায় একা পেয়ে আমার,কেউ যদি ক্ষতি করে দেয়।

চারটে বছর পেরিয়ে গেল বুকে পাথর চাপা দিয়ে কালীমতির। ও এখন নামকরা একজন উকিল। এক সুন্দরী মহিলা ডিভোর্স চায়, কোর্টে মামলা করবে। কালীমতিকে উকিল হিসাবে দাঁড় করাতে চায়। রিট পিটিশন লিখতে গিয়ে দেখলো স্বামীর নাম সুবর্ন মুখার্জি। এই কি সেই সুবর্ণ মুখার্জি। দেখা যাক্, কোর্টে দেখা হবে।


আজ ডিভোর্স মামলার হেয়ারিং। আসামী হিসাবে কাঠগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে সুবর্ণ। এই সেই সুবর্ণ যে একটা মেয়েকে শুধু কালো বলে নির্জন রাস্তায় নির্দয়ের মতো একা ফেলে দিয়ে এসেছিল।কালীমতি একের পর এক যুক্তিজাল বিস্তার করে দাম্পত্য জীবনে সুবর্ণের দোষ তুলে ধরছে, প্রমাণ করছে কেন ওর সাথে দাম্পত্য জীবন কাটানো সম্ভব নয়।

অসহায়ের মতো কালীমতির মুখের দিকে তাকিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে সুবর্ণ। সাওয়াল পর্বের একেবারে শেষে সুবর্ণের মুখের সামনে গিয়ে চোখে চোখ রেখে কলীমতি বলে এলো, "জোর করে কি কাউকে ধরে রাখা যায়"? শেষ বাক্যটিতে তিনটি জীবনের ছবি এঁকে দিল কালীমতি।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance