Twisha Ghosh

Comedy Inspirational Children

4.5  

Twisha Ghosh

Comedy Inspirational Children

জগাখিচুড়ি

জগাখিচুড়ি

7 mins
348


ঘুম থেকে উঠে ক্যালেন্ডারের দিকে তাকাতেই মেজাজটা বিগড়ে গেল রিকুর। উফ্! আজকে আবার গানের পরীক্ষা আছে। এই একটা জিনিসকে যারপরনাই অপছন্দ করে রিকু। আচ্ছা, লোকে তো মন ভালো রাখার জন্যে গান করে, নাকি? সেখানে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো মানে হয়? যাচ্ছেতাই একেবারে! ব্যাজার মুখে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং এ এসে বসলো রিকু। মা রান্নাঘরে। সেখান থেকেই বলল, " গিয়ে গানটা আরেকবার প্র্যাকটিস করে নে। খাবার তৈরি হতে দেরি আছে।" মাতৃবাক্য শিরোধার্য করে রিকু ঘরে গেল গান প্র্যাকটিস করতে। এই আরেকটা বাজে ব্যাপার। জোর করে ধরেবেঁধে গান করতে বসানো! ইচ্ছে করছে না, তবু গান করতে হবে। আপনা থেকেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো ও। ছোটদের ওপর আর যে কত জুলুম হবে, সে আর কে জানে!?


 বারোটা বাজলে মা এসে রিকুর নীল ফুল ফুল ছাপা ফ্রকটা( যেটা মা সারা বছর আলমারিতে তালা দিয়ে রাখে। ওটা নাকি ভীষণ পয়া।) বের করে দিয়ে ওকে তৈরি হতে বলে গেলেন । রিকু দেখলো, মা একেবারেই ভাবলেশহীন। যেন পরীক্ষা কাকে বলে সেটা মা জানেই না, এবং ঐভাবে একজন আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ, কিন্তু আসলে ক্রুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা স্যারের সামনে বসে গান গাওয়াটা কোনো ব্যাপারই নয়! অবশ্য এই ব্যাপারটা একমাত্র পরীক্ষার্থী ছাড়া আর কারোর পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। আবার একটা দীর্ঘশ্বাস পড়লো রিকুর। ওর এবছর ফিফথ ইয়ারের পরীক্ষা। শুধুমাত্র এই কথাটা ভাবলেই ওর পেট গুড়গুড়, মাথা ঝিমঝিম, আরো কিসব যেন হচ্ছে! ফার্স্ট, সেকেন্ড, কিম্বা ফোর্থ ইয়ার পর্যন্ত টেনেটুনে পাশ করেছে। এবার আবার খোদ এলাহাবাদ থেকেই পরীক্ষক আসার কথা। কম্পিত চিত্তে রেডি হয়ে যখন গাড়িতে চাপছে, তখন মা ওরদিকে জ্বলন্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন, " সপ্তাহে সাতদিনের বদলে চারদিন গান করেছিস। এবার টেনেটুনে পাশ-ফাশ চলবে না। ভালো নম্বর পেতে হবে। কথাটা যেন মনে থাকে।" রিকু নিঃশব্দে ঘাড় নাড়ল। আর ভালো নম্বর!


পনেরো মিনিটের পথ উজিয়ে যখন গানের স্কুলে এসে পৌঁছাল, তখন পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। মানে ঠিক শুরু হয়নি, পরীক্ষক বসে বসে চা আর মিষ্টি খাচ্ছিল, (আসলে মনে মনে এইটুকু টুকু ছেলেমেয়েগুলকে ফাঁসানোর কুমতলব ফাঁদছিলো ) আর স্যারের সঙ্গে কি যেন বেশ শলাপরামর্শ করছিল। আজকে যেন সবাইকেই চক্রান্তকারী মনে হচ্ছিল রিকুর। সবাই যেন ওকে মায়ের কাছে বেধরক পিটানি খাওয়ানোর ফন্দি আঁটছিলো। কি ভয়ানক! দুরুদুরু বুকে পিছনের ওয়েটিং রুমে গিয়ে সতীর্থদের দেখতে পেলো রিকু। কারোরই অবস্থা অবশ্য ওর চেয়ে ভালো নয়। শর্মিষ্ঠা কোনো এক অজানা কারণে চোখ বুজে সোফায় ধ্যানস্থ হয়েছে, প্রতুল একমনে হাতে তালি দিয়ে সিলেবাসের তালগুলো প্র্যাক্টিস করছে, যদিও হাতে কি তাল পড়ছে আর ও মুখে কি বলছে সে বিষয়ে ও নিজেও খুব একটা অবগত বলে মনে হচ্ছে না।


রিকু খুঁজছিল রাহিকে, কারণ ওদের ইয়ারে রাহি আর ও একই ব্যাচে শেখে। কিন্তু কোথায় রাহি? আসেনি নাকি? একটু পরেই তো পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। চিন্তিত মুখে ইতিউতি তাকাচ্ছিল রিকু, তখনই দরজা খুলে স্যার ঢুকে এসে বললেন যে এক্ষুনি পরীক্ষা শুরু হবে, সবাই যেন তৈরি থাকে, নাম ডাকলেই তাড়াতাড়ি ঢুকে পড়তে হবে, বেশি অপেক্ষা করালে পরীক্ষক খেপে যেতে পারে। রিকুর মাথায় আরেকটা চিন্তাও ঘুরছিল। চট করে উঁকি মেরে দেখেই ওর হৃদকম্প শুরু হয়ে গেল। প্রতিবারই হয় অবশ্য, তবে এবার যেন বেশিই হচ্ছে। পিছনে ঘুরতেই বন্ধুদের জিজ্ঞাসু দৃষ্টির মুখে পড়তে হল ওকে। সবাই নিজের দুঃস্বপ্নটা সত্যি হল কি না সেটা জানতে চাইছে। রিকু শুকনো মুখে ছোট্ট করে ঘাড় নেড়ে বুঝিয়ে দিলো যে ওদের আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। এই সময় একটা গুরুগম্ভীর গলা প্রথম নাম ডাকতেই শর্মিষ্ঠা তড়াক করে উঠে বসলো, দিয়ে এমন একটা দৃষ্টিতে সবার দিকে তাকালো, যার অর্থ হয়, " বিদায় বন্ধুরা। আজ হয় আমি এই ঘরশত্রু বিভীষণের হাতে, আর নাহলে বাড়িতে মায়ের হাতে শহীদ হব। তোমরা আমার নামে শহীদ মিনার স্থাপন কোরো।" 


সবাই সহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে শর্মিষ্ঠাকে বিদায় জানালে ও কাঁপতে কাঁপতে ভেতরে ঢুকে গেলো। আর সঙ্গে সঙ্গে দরজাটা বন্ধ হয়ে গেল। প্রচন্ড টেনশনে রিকুর মাথা ঘুরছিল, তাই ও একটা ডিভানের ওপর বসে পড়লো। প্রতুলের গলা এত কাঁপছে, যে এখন থেকে থেকে 'ধা' ছাড়া আর কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। রিকুর রাহির জন্যে চিন্তা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এখন এত টেনশন হচ্ছে, ও আর কিছুই ভাবতে পারছে না। কিন্তু এতদিন রাহি যথেষ্ট সাহসের সঙ্গে এই শত্রুদের মোকাবিলা করে এসেছে, বলতে গেলে এখানে সবার মধ্যে ওর নার্ভ সবচেয়ে শক্ত। তাই আজ ওর অনুপস্থিতি একটু অস্বস্তি তৈরি করছে বটে। 

এমন সময় প্রতুল শব্দ করে তালের বইটা বন্ধ করে সবার দিকে তাকালো। এতক্ষন ওর বোলের চোটে আর কিছু শোনা যাচ্ছিল না। এবার একটা অস্পষ্ট গোঁ গোঁ আওয়াজ কানে এলো। শব্দের উৎস হচ্ছে সবার পিছনে বসে থাকা কুশল। প্রচন্ড মানসিক চাপে আওয়াজ করে ফেলেছে বোধহয়। না: আর এই 'চাপিত' পরিবেশে থাকা যাবে না, ভাবলো রিকু। ওর নাম আসতে এখনও ঘন্টাখানেক দেরি আছে, কারণ এখন ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্টদের ডাকবে। ওদের সিস্টেম এরকমই। প্রথমে একজন একটু বড় কাউকে ডাকবে, তারপর কচিকাঁচাদের। একটু হাওয়া খেতে বাইরে এলো রিকু।


স্যারের বাড়ির সামনে একটা বড় পুকুর আছে। গাছগাছালিতে ছাওয়া উঠোন। গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে ফুরফুরে বাতাসে বেশ আরাম লাগছিল রিকুর। ও গিয়ে ঘাটের পাশে পাথরের বেঞ্চটায় বসে পড়লো। কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘুমে চোখ জড়িয়ে এলো ওর। 

কতক্ষন এভাবে কেটেছে কে জানে, হঠাৎ একটা ঝাঁকুনিতে রিকুর ঘুম ভেঙে গেল। একটু ধাতস্থ হয়ে ও বললো, "কিরে, কেমন হলো?" শর্মিষ্ঠা রাগত মুখে ওর পাশে বসে পড়ে বললো, " যেমন হয়! ও না কাউকে পাশ করতে দেবে না দেখিস! হ্যাঁরে, ওর এত কেন শত্রুতা আমাদের সঙ্গে? আমরা ওর কোন পাকা ধানে মইটা দিয়েছি বলতো?" রিকু ব্যাজার মুখে বললো, " সেটা জানা থাকলে মইটা অনেক আগেই সরিয়ে নিতাম শর্মি। বছর বছর কি আর মায়ের কাছে মুখ বুজে মার খেতাম তাহলে? " শর্মিষ্ঠা একটা ভেংচি কেটে বললো, "মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে ওই শয়তানটাকে ধরে আচ্ছাসে পেটাই। শোধবোধ হয়ে যেত তাহলে।" "ছাড় ওর কথা। কপালে যা আছে তাই হবে। আচ্ছা, রাহির কি ব্যাপার, কিছু জানিস?" শর্মিষ্ঠা মাথা নেড়ে না বললো।


 রিকু আবার পুকুরের টলটলে জলের দিকে তাকালো। এই তবলচির জন্য গানের ওপরেই ওদের বিতৃষ্ণা এসে গেছে। হ্যাঁ, শুধুমাত্র একটি তবলচির জন্যে, যে কিনা কেবল মাত্র পরীক্ষার সময় দর্শন দেয়, কিন্তু যার এফেক্ট চলে সারা বছর। ও আবার রাহির কাকা। তাই ও হচ্ছে 'ঘরশত্রু বিভীষণ' । ও বিশেষ কিছু করে না, শুধু যখন ওরা ওই নিষ্ঠুর, প্রস্তরহৃদয় পরীক্ষকের সামনে বসে গান করে, তখন তালের আসল বোলের মধ্যে ওর নিজস্ব কারিকুরি করে। যেমন, একটা ষোলো মাত্রার ত্রিতালের মধ্যে ও তিন চারটে তেহাই দেবেই দেবে। সাথে থেকে থেকে " ধা তেরকেটে, তা তা ধা ধা...." ইত্যাদি। যার জন্য ওদের প্র্যাক্টিস করে আসা ছন্দের সাথে এখানে কোন মিল থাকে না, এবং ওরা প্রত্যেকে একটা ভালো গানের বদলে বিভিন্ন স্বাদের জগাখিচুড়ি পেশ করে থাকে। যার ফলস্বরূপ বাড়ি গিয়ে মায়েরা ওদের পিঠে ধা তেরকেটে বাজিয়ে থাকেন। 


এমন সময় গানের ঘরের দিক থেকে একটা শোরগোল শোনা গেল। দুদ্দার করে ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলো বেরোচ্ছে। বিরতি হয়েছে তার মানে। ভেতর থেকে একে একে চক্রান্তকারীরাও বেরিয়ে এল। সাথে রিকুদের নয়নের মণি ওই...ওই তবলচি। কিন্তু...কিন্তু একি? ওর মুখে ওই সবজান্তা পটলচাঁদ হাসিটা তো নেই! আজ আবার কি নতুন কুমতলব এঁটেছে রে বাবা! গতিক সুবিধের নয় বুঝে রিকু ভেতরে গিয়ে বন্ধুদের খবরটা দিলো। সবাই খুব সিরিয়াস হয়ে গেল শুনে। কুশল বললো, " রিকু, হাসিটা থাকলে বুঝতাম যে ও এখনও স্বাভাবিক আছে। নেই যখন, তার মানে ও নির্ঘাত পাগল হয়ে গেছে। আজ যে কি বাজাবে ঈশ্বরই জানেন।" রিকুরও তাই মনে হচ্ছে। তবু....আসল কেসটা জানতে পারলে মন্দ হত না। 


দোনোমনো করে শেষ পর্যন্ত কথাটা পাড়তেই শর্মিষ্ঠা একপায়ে খাড়া। ওর নতুন প্ল্যানটা না জানতে পারলে ওর নাকি শান্তি হবে না। স্যারের ডাইনিংয়ে শত্রুপক্ষ বসে গল্প করছিল। ওরা সবাই দলবেঁধে ডাইনিংয়ের বাইরের বন্ধ জানলাটার পাশে দাঁড়ালো। যদি কিছু শোনা যায়! ভেতরের টুকরোটাকরা কথা শোনাও যাচ্ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে ভলিউম বাড়তে আর টুকরো নয়, পুরো কথাটাই শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু ওরা যা শুনলো, তাতে ওরা ওখানেই স্থানুর মতো দাঁড়িয়ে পড়লো।


স্যার বলছেন, " তুমি চিন্তা কোরো না বাদল। সব ঠিক হয়ে যাবে। তোমার বোনের বিয়েও তোমরা নির্বিঘ্নেই দিতে পারবে।"

তবলচি, যার নাম বাদল, সে ধরা গলায় বলছে, " আমাদের একটাই দুঃখ দাদা, বিন্তির বিয়েটা মা দেখে যেতে পারলেন না। কত শখ ছিল মায়ের....সব.....আমিও ভালো বাজাতে পারছি না আজ......." বলতে বলতে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে বাদলস্যার। 

তাদের পরীক্ষক, আনন্দ স্যার, বাদলস্যারকে শান্ত করতে করতে বলছেন, " তুমি যে এই অবস্থাতেও আসতে পেরেছো, বাদল, এই অনেক। আজ যে তুমি মন শক্ত করে বাজাতে পারছো, এই যথেষ্ট। তুমি ভেবো না। সব ঠিক হয়ে যাবে। তোমার ভাইঝির পরীক্ষা আমরা পরে একদিন নেওয়ার ব্যবস্থা করবো। তুমি এসব নিয়ে একদম ভেবো না ভাই......"

বাদলস্যার বলছে, " আমি যে সংগীত ভীষণ ভালোবাসি। তারপর ওই ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলোর গান শুনতে আমার খুব ভালো লাগে। প্রতি বছর এই পরীক্ষার দিনটার জন্য আমি অপেক্ষা করি। এরা কেউ আমার কাছে রাহির থেকে কম নয়। এরা যদিও আমাকে খুব একটা খুশি মনে মেনে নেয় না.....কিন্তু আমি তো ওদের ভালোই চাই.....মাও বলতেন, যেন ওদের পরীক্ষার সময় আমি একটু সহানুভূতিশীল হই, তা হয়তো হতে পারিনি কোনোদিন.....তাই মা কাল এভাবে চলে........", আবার কেঁদে ফেলেন স্যার।


ওরা সবাই দৌড়ে পালিয়ে এল ওখান থেকে। সবাই নিশ্চুপ, বিমূঢ়, শ্রান্ত। অবশেষে রিকুই নিস্তব্ধতা ভাঙলো, " রাহি তোদের কাউকে বলেছিল যে ওর ঠাকুমা মারা গেছেন?" সবাই নিঃশব্দে ঘাড় নাড়লো। সবাই যেন কথা বলার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। এই মানুষটাকে ওরা শত্রুসম ভাবতো? এই মানুষটাকে? যে কিনা সদ্য মাতৃবিয়োগের পরেও ওদের পরীক্ষা যাতে না পিছিয়ে যায়, তার জন্য এসে ওদের সঙ্গে সঙ্গত করছে! এত দুঃখের মধ্যেও? সবাই ভাবছে। ভেবেই যাচ্ছে। এতদিনের এত রাগ পুষে রেখেছিল, এই মানুষটার বিরুদ্ধে। সবচেয়ে শক পেয়েছে শর্মিষ্ঠা। ও তো বাদলস্যারকে পেটানোর মতলব করছিল। এখন মনে হয় প্রণাম করবার কথা ভাবছে। 


এই স্তব্ধতা খানখান হলো একটা গুরুগম্ভীর গলার স্বরে, "কৌশাণি রায়, ফিফথ ইয়ার!" নিজের নামটা শুনে রিকু উঠে দাঁড়াল। এখন আর বুক কাঁপছে না। মাথাও ঝিমঝিম করছে না। অন্যবার ওই ঘরে ঢোকার সময় যেমন রাগ হয়, তেমন আজ আর হচ্ছে না। মনটা অনেক শান্ত। রিকু ঠিক করে ফেললো, আজ আর কিছুতেই তাল কাটতে দেবে না। যদি একজন এত শোকগ্রস্ত অবস্থাতেও শুধুমাত্র ওদের জন্যে তবলা বাজাতে পারে, তবে রিকুও ওই উৎকট তালে তাল না কেটে গান গেয়ে আসতে পারে। আজ আর আনন্দ স্যারের জগাখিচুড়িটা খাওয়া হবে না, ভেবে মনে মনে হাসলো রিকু। তারপর দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকলো।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy