গৃহবন্দী
গৃহবন্দী
আজ পনেরো দিন থেকে ঘরে রয়েছে নিখিল।। বাইরের কাজ করতে যাওয়া বন্ধ হয়েছে। এদিকে জিনিস পত্রের দাম আকাশ ছোয়া।। কলকাতা থেকে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে যা অর্থ রোজগার হলো তা মায়ের চিকিৎসা করতে সব শেষ। গত বছর চাষের যে সামান্য ধান পেয়েছিল সব শেষ।। এখন এ কদিন থেকে কিনে চলিল।। এবারে কাজ করে চাল কিনিবার অর্থ দিয়ে পাঠাবার কথা ভেবেছিল নিখিল।। কিন্তু ভাইরাস এর কারণে দেশে বন্দি ঘোষণা হলো তাই ফিরে আসতে হলো।।
নিখিলের বৌ এর সামান্য কিছু টাকা ছিল তাতে দু চার দিন চলিলো। কাল নিখিলের বৌ বলিয়াছে চাল শেষ হয়ে গেছে। এই কথা শুনিয়া নিখিলের মাথা গরম " সারাদিন বসে বসে গিলিস তা থাকবে ক্যানো,আগে বলিতে লজ্জা লাগে" ।।
পাশের বড়ির এক জনের কাছে চাল ধার চাইলো। সে একবাক্যে অস্বীকার করিলো, সামান্য চাল আছে ,এ অবস্থায় কি করিয়া চলিবে তাই ভাবনা।।
ভাত রান্নার সময় পার হয়ে গেছে নিখিলের বৌ মন খারাপ করিয়া রান্নার চালায় বসিয়া আছে। নিমাই ডাক্তার বাড়ির কাজের জন্য নিখিল কে ডাকিয়াছে ।। দুপুর পার হয়ে বিকাল হয়।। নিখিল কে 20 টাকা চা খাবার জন্য দিয়েছে।। গরিব মানুষের চা না খেলেও চালে তবে বৌ বাচ্চার মুখে খাবার তুলে দিতে হবে।। কুড়ি টাকার এক কেজি রেশনের চাল কিনে বাড়ি ফিরিলো।। নিখিলের বৌ চাল দেখিয়া মনে মনে খুশি হলো। ছেলে মেয়ের পেটের দু মুটো খাবার তুলে দেওয়া যাবে।।
রান্না হলে সবাই মিলে খেতে বসে।। বহু কষ্টে জোগাড় করা খাবার খেতে খুব মজা।।
নিখিল দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলিলো " আজ তো হলো কাল কি হবে"।