Ananya Podder

Classics Inspirational

4  

Ananya Podder

Classics Inspirational

দীক্ষা

দীক্ষা

8 mins
262


অলকার প্রথম ছেলের পরে মেয়ে হয় | সে সেই যুগের মেয়ে, যে সময়ে মেয়েরা আঠেরো পেরোলেই তাদের বাবা মায়েরা মেয়েকে পাত্রস্থ করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যেতেন, কারণ সমাজের মস্তিষ্কে তখন একটা বাক্য তীরের মতো বিঁধে ছিল, "মেয়েরা কুড়িতেই বুড়ি " |


তাই অলকা উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় থেকেই তার জন্য পাত্র দেখা শুরু হোলো, আর উচ্চমাধ্যমিক দেওয়ার পর পরেই তার বিয়ে হয়ে গেলো তাপসের সাথে | তাপস বাড়ির বড়ো ছেলে, একটা বেসরকারি কোম্পানিতে একাউন্টস সেকশনে কাজ করে | বিশাল পয়সা না থাকলেও সচ্ছলতার অভাব ছিল না |


তাপসের মা বংশের প্রদীপ তাপসের ছেলে তনয়কে একটু বেশিই ভালোবাসেন | সেই ভালোবাসার মাত্রা এমনই যে নাতি তনয়ের খাবারের থালায় বড়ো মাছের টুকরোটা, বেশি দামের জামা, এমনকি ভালো স্কুলে ভালো শিক্ষা দেওয়ার জন্য ভীষণভাবে তৎপর | কিন্তু তাপসের মেয়ে তনুশ্রীর জন্য উনার আদর যেন কম হয়ে যায় |


অলকার এই ছেলে মেয়ের বিভেদ মানতে কষ্ট হয় | তাই সন্তানের ভালোর জন্য তার বিদ্রোহ সবসময় চলতেই থাকে | সেইজন্যই সে একদিন তনয়কে বড়ো মাছের টুকরো দিলে ঠিক তার পরেরদিন তনুশ্রীর পাতে দেন মাছের সেরা পিসটা | তনয়ের একই স্কুলে তনুশ্রীকে ভর্তি করানোর সময় শাশুড়িমা বলেছিলেন, "মেয়েছেলের লেখাপড়ার জন্য আবার এতো খরচ করা কিসের ?? সেই তো শেষে হেঁসেল ঠেলাই কাজ হবে | "


অলকা শাশুড়িমায়ের কথায় জবাব দিয়েছিলো, "মেয়েছেলে থেকে যেন মানুষ হয়ে উঠতে পারে,, তার জন্যই তো লেখাপড়া শেখানো মা | যাতে হেঁসেল ঠেলাটাই তনুর শেষ গতি না হয়,, তাই জন্যই তো শিক্ষা দেওয়া | "


শাশুড়িমা খুব রুষ্ট হয়ে বলেছিলেন, "মেয়েদের বেশি লেখাপড়া শিখতে হয়না, বুঝলে বৌমা | মেয়েরা লেখাপড়া শিখলে আর সংসার করতে পারবে না, ছেলে মানুষ করতে পারবে না | "


আশাপূর্ণা দেবীর একনিষ্ঠ ভক্ত অলকা তর্ক করে সেদিন বলেছিল, "মেয়ে বলে কি তার জনমটা এতটাই ব্যর্থ, যে নিজের জীবনটাকে সে নিজের মতো বাঁচার অধিকারটুকুও পাবে না ?? তাহলে ঈশ্বর যেন এ জনমের সব মেয়েকে পরের জনমে পুরুষ আর সব পুরুষকে পরের জনমে মেয়ে বানিয়ে পাঠান !! আমাদের মেয়েদেরও তো ইচ্ছে করে একটু পুরুষ হতে, তার জীবনের সুখটুকুকে ভোগ করতে !!"


অলকার সাথে তর্কে সেদিন হেরে গিয়েছিলেন অলকার শাশুড়ি | তনুশ্রী শেষমেশ তার দাদার স্কুলেই ভর্তি হয়েছিল, কারণ অলকার জেদে প্রচ্ছন্ন সামর্থ ছিল তার স্বামী তাপসেরও |


কিন্তু বিধি অলকার আরও অনেক বেশি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তৎপর ছিল | তাপস একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে ভিড় ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান | ছয় বছরের ছেলে আর সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে অলকা যখন অথৈ জলে পড়ে, তখন তার বয়স সবে পঁচিশ পেরিয়েছে | আজকের সময়ে যে বয়সে অনেক মেয়ের বিয়েই হয় না, সেই বয়সেই অলকা বিয়ে করে দুই সন্তানের মা হয়ে বিধবাও হয়ে গেলো | কিন্তু এই এতো খারাপের মধ্যে একটা ভালো খবর ছিল, যে, বিয়ের আগে অলকার বাবা মা যে ভুলটা করেছিলেন, বিয়ের পরে অলকার স্বামী তাপস সেই ভুলটা করেননি | স্ত্রীয়ের লেখাপড়ার প্রতি অদম্য উৎসাহ দেখে চুপিচুপি প্রাইভেটে অলকার গ্রাজুয়েশন করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি | তাই স্বামীকে হারানোর পরেও অর্থাভাব খুব একটা হোলো না অলকার, কারণ তাপসের অফিসেই ক্লারকের চাকরি পেয়ে গেলো সে | তাপসের মতো মাইনে না পেলেও যা মাইনে তার জন্য বরাদ্দ করেছিল কোম্পানি, তাতে মোটামুটি চলে যাচ্ছিলো অলকার |


কিন্তু সমস্যা এল অন্য জায়গায় | তাপসের মা ছেলেকে হারিয়ে নাতিকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইলেন | তনয়ের প্রতি অযাচিত প্রশ্রয় ও তনুশ্রীর প্রতি অর্থহীন তাচ্ছিল্য অলকার দুই সন্তানের চরিত্র গঠনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছিলো | তনয়কে যেন তিনি ভাবাতে শুরু করেন যে, তনয় বড়ো হয়ে পুরুষমানুষ হবে, আর পুরুষ মানেই সে পুরুষসিংহ | কিন্তু পুরুষসিংহ যে চরিত্রে হতে হয়, আচরণে নয়, সেটা শেখালেন না | ফলে জল গড়িয়ে খাওয়াও ভুলে গেলো তনয়, তার যে কোনো কাজে সে বোনকে হুকুম করেই খালাস | বোন কোনো কাজে প্রতিবাদ করলে বোনের গায়ে দুচারটে মার দিতেও লজ্জাবোধ করে না তনয় |


অলকা বুঝলো, জল অন্যদিকে গড়াচ্ছে | তাই সে একদিন শাশুড়ির সামনে দুই ছেলেমেয়েকে ডেকে স্পষ্ট বলল, "তোমাদের দুজনের জন্যই আমি কিছু কাজ ধার্য করেছি | আমি চাই, তোমরা তোমাদের ভাগের কাজ মন দিয়ে যথাসময়ে শেষ করবে | আমি চাকরি করি, আমাকে নিয়মিত বাইরে বেরোতে হয় | তাই সাবলম্বী হওয়াটা তোমাদের দুজনের জন্যই ভীষণ জরুরী | এক সপ্তাহ তনুশ্রী যে কাজ গুলো করবে, পরের সপ্তাহে তনুশ্রীর সেই সব কাজ তনয় করবে, আর তনয়ের এই সপ্তাহের কাজ পরের সপ্তাহে তনুশ্রী করবে | তাহলে তোমাদের মধ্যে আর কাজের ধরণ বা পরিমাণ নিয়ে কোনো সমস্যা থাকবে না | এবং খুব ভালো করে মনে রেখে দাও,, তোমাদের মধ্যে যে নিয়ম মেনে নিজের কাজ করবে না, তাকে আমি রবিবারের মাংসের ভাগ দেবো না | "


তনয়কে ঘরের কাজ করতে হবে শুনে অলকার শাশুড়িমা একেবারে তেড়ে উঠলেন, "এ কি বলছো বৌমা?? আমার তনয় কি মেয়েছেলে যে সংসারের কাজ করবে?? এখন আমরা আছি,, এরপরে বড়ো হয়ে চাকরি বাকরি করে বিয়ে করলে তখন ওর বৌ করে দেবে | ওর সংসারের কাজ শেখার কি দরকার?? "


"তার মানে আপনি তনয়কে আপেক্ষিকভাবে পঙ্গু বানাতে চান, তাই তো?? "


অলকার শাশুড়িমা বেশ অবাক হলেন, "পঙ্গু হবে কেন?? সে তো সংসারের জন্য রোজগার করতে যাবে বাইরে!! বাইরে রোজগার করলে আবার ঘরে এসে কাজ করবে কেন ?? "


অলকার খুব অবাক লাগলো | সে বুঝলো, ছেলেগুলোর চরিত্র বা অভ্যেস খারাপ হয়ই বাড়ির নির্বোধ অভিভাবকগুলোর জন্য | তাই সে শাশুড়িকে বলল, "কিন্তু আমি চাই, আমার ছেলেবৌও সাবলম্বী থাকবে অর্থনৈতিকভাবে | আর চাকরি করুক বা না করুক, বিয়ের পরে সংসারটা তনয় ও তার স্ত্রী, দুজনেরই হবে | তাই আজ বোনের উপরে হুকুম করা না শিখে তার সাথে সমানতালে তাল মিলিয়ে কাজ শিখলে ভবিষ্যতে বৌয়ের উপরেও হুকুম করবে না তনয় | আমি আমার দুই সন্তানকেই মানুষ হিসেবে বড়ো করতে চাই, ছেলে বা মেয়ে হিসেবে নয় | "


কিন্তু অলকার শাশুড়ি বড়ো ছেলেবৌয়ের কথা শুনলেন না, প্রশ্রয় দিতেই থাকলেন তনয়কে | অলকা বুঝলো, সন্তানদের মানুষ হিসেবে বড়ো করতে গেলে শাশুড়ির সাথে একই ছাদের তলায় থাকা যাবে না | এই মানুষটা কিছুতেই বুঝবেন না, তিনি অপত্য স্নেহে তনয়, তনুশ্রীর কি ক্ষতিটাই না করছেন !!


তাই একদিন শাশুড়িকে সে জানালো, "মা আমি বাড়ি বদল করবো | আপনার ছত্রছায়ায় থাকলে আমি আমার দুই ছেলেমেয়েকে যে ভাবে মানুষ করতে চাই, সেভাবে মানুষ করতে পারবো না | "


অলকার কথায় খুব অসম্মান বোধ করলেন অলকার শাশুড়িমা, আর সেটাই খুব স্বাভাবিক ব্যাপার | তাই তিনি স্পষ্টত জানিয়ে দিলেন, "যেতে চাও যাও, কিন্তু আমি যতদিন বেঁচে আছি, সম্পত্তির কোনো ভাগাভাগি হবে না | অতএব, এ বাড়ি থেকে তুমি কোনো সাহায্য পাবে না এখন |"


অলকা বলল, "বেশ, এবাড়িতে আমার বলে যেটুকু আমি ব্যবহার করি, সেগুলো নিয়েই আমি চলে যাবো |"


ছেলে মেয়ের সামনে নিজেকে উদাহরণ হিসেবে ধরতে চেয়েছিলো অলকা | তার সাথে চেয়েছিলো অর্থনৈতিক ভাবে নিজেকে আরও পোক্ত করতে, কারণ তার পায়ের তলার মাটি শক্ত হলেই সে তার দুই সন্তানের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করতে পারবে | তাই তার সেই সামান্য চাকরি তার কাছে যথেষ্ট ছিল না | ছেলে মেয়েকে উচ্চশিক্ষা দেওয়ার আগে নিজেকে আরও পোক্ত করতে চাইলো সে | তাই অফিসের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরে বাড়িতে এসেও কাজ করে সে ক্লান্ত হয়নি | ছেলে মেয়েকে পড়াতে বসে সেও হাতে তুলে নিয়েছে বই, তৈরী করেছে নিজেকে চাকরির পরীক্ষার জন্য, রাতের পর রাত তার প্রহর কেটেছে বইয়ে মুখ গুঁজে |


ঈশ্বর তার চেষ্টার মান রেখেছেন | তার নিষ্ঠা তাকে সরকারী চাকরির দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে | সে চাকরি যেমন তেমন চাকরি নয়, সে চাকরির পোস্টের নাম রিহ্যাবিলিটেসন অফিসার | ডবলু. বি. সি. এস. অফিসার হয়ে শাশুড়িমাকে প্রণাম করতে গিয়ে অলকা বলেছিল, "মা, আপনাকে, আমার মা বাবাকে আমি দেখিয়ে দিতে চেয়েছিলাম, মেয়ে মানেই ফেলনা নয় | আর সাহস করে স্বপ্ন দেখলে সেই স্বপ্ন একদিন ঠিক পূরণ করা যায়, যদি সেই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টায় নিষ্ঠা থাকে | তাই তো, একদম শেষ বারে ডবলু. বি. সি. এস. টা আমার পকেটে দিয়েই দিলেন ভগবান | আমি যেভাবে দাঁড়িয়েছি, ঠিক একই ভাবে তনয়ের সাথে সাথে তনুশ্রীকেও দাঁড় করাবো আমি | আজ আপনাকে কথা দিয়ে গেলাম | "


অলকার মানসিকতা আর জেদের সামনে হেরে যাওয়া অলকার শাশুড়িমা বলেছিলেন, "তুমি ফিরে এসো বৌমা | "


অলকা বলেছিল, "না মা, জীবনে যে দীক্ষা আমি আমার সন্তানদের দিতে চাই, সেটা হয়তো আপনাদের কারোর সাথে থাকলেই দিতে পারবো না আমি | এই সমাজ থেকে যা পেয়েছি, তাই ফেরত দেওয়ার দীক্ষা দেবো আমি আমার সন্তানদের | আমার সন্তান শুধু আমার হবে না, তারা তৈরী হবে দেশের সন্তান হিসেবে | "


অলকা পেরেছে তার কথার দাম রাখতে | তার দীক্ষায় দীক্ষিত তার দুই সন্তানই আজ দেশের সেবায় নিযুক্ত | তনয় বর্তমানে ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার | ফিজিক্স নিয়ে পড়াশোনা করে সোজা ভারতীয় বিমানচালক পদে চাকরি তার | তার অবাঙালি স্ত্রী রেশমাও ওই একই বিভাগে কাজ করে, তবে সে বিমান চালায় না, সে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের গ্রাউন্ড স্টাফ | ছেলের পছন্দকে সাদরে অভ্যর্থনা করেছিলেন অলকা | তনয় রেশমার কথা জানাতেই অলকা হাসি মুখে বলেছিলেন, "এটা খুব ভালো করেছিস তনয় | আমাদের এই সংসারটাকেই তুই একটা ছোট্ট ভারত বানাতে চাইছিস | বিবিধের মাঝে মিলন মহান | তোর সিদ্ধান্তে আমি খুব খুশি | শুধু একটা কথাই বলবো, রেশমাকে বৌ হিসেবে দেখার আগে মানুষ হিসেবে দেখবি, আর সংসারের দায়িত্বটা দুজনেই ভাগ করে নিবি | তোর মতো রেশমাও দেশের সন্তান, তাই দেশের প্রয়োজনে তার ডাক পড়লে তাকে কখনো সংসারের নামে আটকে রাখিস না যেন | "


আর অলকার দেওয়া দীক্ষা নিয়ে যে এতক্ষন গল্প বলে যাচ্ছিলো, সেই তনুশ্রী এখন ডবলু. বি. সি. এস. অফিসার, তার জয়েনিং অবশ্য রেভিনিউ অফিসার হিসেবে |


রিটায়ারড ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট শ্বশুরের সামনে বসে মায়ের গল্প করছিলো তনুশ্রী | সারাবছর বাড়ির সবাই কাজের সূত্রে বিভিন্ন জায়গায় থাকলেও দুর্গা পূজার সময় বর্ধমানের বাড়িতে সবাই একত্রিত হয় | সদ্য বিয়ে হয়ে আসা তনুশ্রীরও শ্বশুরবাড়িতে এই প্রথম দুর্গা পুজো কাটানো |


শ্বশুর রথীন্দ্র সেনের সাথে খুব ভাব তনুশ্রীর | পুজোর আগে ঠাকুর দালানে বসে নিজের মায়ের গল্প করে সে বলেছিল, "আমি সাক্ষাৎ দুর্গার দর্শন পেয়েছি | তাকে দু হাতে সংসারের দশটা সমস্যাকে ঝেলতে দেখেছি | তার দেওয়া শিক্ষা, তারই দেওয়া দীক্ষায় আমি আর আমার দাদা ছেলে বা মেয়ে নয়, মানুষ হয়ে উঠেছি | আমাদের জীবনের প্রকৃত গুরু আমাদের মা, তার জীবনের লড়াই দিয়ে সে আমাদের জীবনের দীক্ষা দিয়েছেন, যেখানে মানুষ হওয়াই ছিল মূল লক্ষ্য | "


ওদের কথার মাঝখানেই তনুশ্রীর শাশুড়ি শিবানী এসে পড়লেন, স্বামীকে বললেন, "হ্যাঁ গো, একটা সমস্যা হয়ে গেছে | মায়ের কাজ করবে, ভোগ রাঁধবে যে পাঁচ এয়ো, তাতে একজন কম পড়ে যাচ্ছে তো!! "


রথীন্দ্রবাবু জিজ্ঞেস করলেন, "কেন, কি হয়েছে?? "


শিবানী বললেন, "আরে, উর্মিলা তো আসতে পারছে না এবার | ওর মায়ের শরীরটা হঠাৎ খারাপ হয়ে গেছে | "


প্রসঙ্গত বলা ভালো, উর্মিলা তনুশ্রীর ছোট কাকী শাশুড়ি |


রথীন্দ্রবাবু সব শুনে ভাবলেশহীন হয়ে বললেন, "এ আর এমন কথা কি ?? উর্মিলার জায়গায় তনুশ্রীকে নিয়ে নাও | তনুশ্রী করবে মা দুর্গার ভোগের রান্না |"


শিবানী চিন্তিত হয়ে বললেন, "তা কি করে হয়?? তনুশ্রীর যে দীক্ষা নেওয়া নেই | "


তনুশ্রীর শাশুড়ির কথা শুনে তনুশ্রীর শ্বশুর খুব হাসলেন হো হো করে | তারপরে বললেন, "কি যে বলো শিবানী !! তনুশ্রীরই সবচেয়ে বড়ো দীক্ষা নেওয়া আছে,, সে দীক্ষার নাম মানুষ হওয়ার দীক্ষা | এ দীক্ষা তোমাদের সবার নেওয়া দীক্ষার চেয়ে বড়ো | চিন্তা কোরো না, তনুশ্রীর হাতের রান্না খেয়ে আমাদের ৭০ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠিত দেবী দুর্গাও আনন্দ পাবেন |"


তনুশ্রী মা দুর্গার মুখের দিকে তাকালো একবার | দেখতে পেল মা দুর্গার মুখটা যেন ঠিক তার গর্ভধারিনীর মতোই |


-----------------------------------------------------------


সমাপ্ত






Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics