ধ্বংস ও ক্ষতি
ধ্বংস ও ক্ষতি
বরাবরই সেন পরিবারের মানুষ সমুদ্রের স্থানে বেরাতে ভালোবাসে। অঙ্কিতা তার শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে সমুদ্রের পাশ দিয়ে গল্প করতে করতে হেঁটে চলেছে। আর ঐদিকে আট বছরের ঝিলিক আর ওর বাবা অনুরাগ মিলে সমুদ্রের ধারে বালি দিয়ে কি সুন্দর একটা রাজপ্রাসাদ বানিয়েছে। ঝিলিকের তো খুব মজা! ও তো আবার বাবাকে বলছে, ছোট ছোট পুতুল কিনে দিতে, রাজপ্রাসাদে নাকি রাখবে! ছোট্ট মেয়ের বায়নাতে অনুরাগও চলল ওকে সঙ্গে করে পুতুল কিনতে। পুতুল কিনে ফেরার সময় ওরা দেখল, একটা বড় ঢেউ আছড়ে পড়ল সমুদ্রের কিনারে। কিন্তু ঐ ঢেউটার জেরে ঝিলিকের শখের রাজপ্রাসাদটা একদম ধ্বংস হয়ে গেল। ঝিলিকের তো তা দেখে কান্নাই থামে না। ওর কান্না দেখে ওর মা, দাদু-ঠাম্মি সবাই ছুটে এসেছে। কিছুতেই কেউ মেয়ের কান্না থামাতে পারে না। অবশেষে ঝিলিকের দাদু বলেন-"খুকি রে ,কান্না থাম
া দেখি।তোর এই বালি দিয়ে বানানো রাজপ্রাসাদ'টা শুধু ধ্বংসই তো হয়েছে। কিন্তু কারোর তো কোনো ক্ষতি হয়নি। সেদিনকে তো তুই'ই টিভিতে দেখে বলছিলি, নেপালের ভূমিকম্পের কথা। জানিস তো তুই, ভূমিকম্পে ওখানকার মানুষদের বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে। ধ্বংসের সাথে সাথে ওদের কত বড় ক্ষতি হল বল দেখি! তোর এই বালি দিয়ে বানানো রাজপ্রাসাদ এক্ষুণি আবার নতুন করে বানানো যাবে। আর ঐ রাজপ্রাসাদে তো কোনও মানুষও থাকতো না, যে তাদের ক্ষতি হবে; কিন্তু ঐ মানুষগুলোর বাড়ি-ঘর আবার কবে ঠিক হবে তারই তো ঠিক নেই। চল্! এবার আমরা দাদু-নাতনীতে বসে নতুন করে আবার একটা রাজপ্রাসাদ তৈরি করি, কেমন?"
ঝিলিক বুঝতে পারল যে, ও যেই কারণে কাঁদছে সেটা সত্যিই একটা তুচ্ছ বিষয়। ও বোঝার চেষ্টা করলো নেপালে ভূমিকম্পে বিদ্ধস্ত অসহায় মানুষগুলোর কথা।