চিঠি (প্রথম পর্ব) শারদ সংখ্যা
চিঠি (প্রথম পর্ব) শারদ সংখ্যা
প্রিয়
বিলাসিনী,
স্ব ষড়রিপু বিসর্জন করিয়া আপনার নিভৃত আসিয়াছিলাম। কভু কটু কথা বলি নাই।শুধু আপনাকে প্ৰণয়িনী ভাবিয়াছি।কতবার আপনার নিকট প্রণয় বিশ্লেষণ করিয়াছি তাহা আজ লেখনীর নিকট হিসাব নাই।শুভ দিন দেখিয়া আমার প্রণয়, প্রেমালয়ের নিকট― নিথর নদীটাতে বিসর্জন দিয়া আসিব।
হৃদয় অভ্যন্তরে জ্বলনের দগ্ধতা, প্রণয়ের আর কোনোই জায়গা দেবে না বলিয়াছে।আপনার নিকট কভু আর প্রণয় পাত্র নিয়া ভিক্ষা করিতে আসিব না।
প্রিয় পরিজনেরা শুনিয়া যে অতিশয় ক্লেশ অনুভব করিয়াছে তাহা, তাহাদের মুখমন্ডলে পরিলক্ষিত।বর্তমানে সকলেই প্রসন্নচিত্তে আমার পার্শ্বে বেষ্টন করিয়া আছে।মুহূর্মুহ শান্তনা ও সকলের আলিঙ্গন পাইতেছি।কিন্তু আপনার সেই মর্মস্পর্শী হৃদয়ালিঙ্গন কিছুতেই হৃদয় থেকে মুছিইয়া ফেলিতে পারছি না।আপনার সৌন্দর্য ও ভাষার ভাষ্যশৈলী, স্বজনদের কাছে আমার প্রলাপের কারন হইয়া উঠিয়াছে।এই মনবিনোদনকারী প্রণয় বারংবার প্রশ্নাভিমুখ হইয়াছে।
কে এই বিলাসিনী ? যাহার অনুরাগ উন্মুক্ত হৃদয়ে তীব্র প্রহার হানিয়াছে ?
বারংবার এই প্রশ্ন নির্বিকারে আমায় প্রতিনিয়ত দংশন করিতেছে।আমি এরূপ বিচিত্র প্রশ্নাবলির উত্তর স্বরূপ নির্বাক থাকিতে বাধ্য হইয়াছি। আপনার সমন্ধে প্রিয়জনের নিকট কটু কথা শুনিতে চাই না। কতিপয় নয়ন দ্বয় ভিজিয়া আসছিল। প্রিয়জন দেখিলে তাহাতে প্রবল যন্ত্রণাময় মান
সিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হইবে তাই গোপনে মুছিয়া ফেলিয়াছি।আপনার প্ৰদান করা প্রণয় আমার নিকট গান ও কবিতার ডালি সাজিয়া তুলিয়াছে।এছাড়া ভাবাবেগ ব্যক্ত করিবার অভিন্ন কৌশল ছিল না।
শান্ত দীঘির নির্মল জলরাশির ন্যায় বিচার করিবার ক্ষমতা আমার নেই যে আপনার বিচার করে অপেক্ষাকৃত শান্তি অনুভব করিব। আপনার অবগত হইয়া থাকিবে হয়তো, আলাপচারিতার দিন আপনার কূটনৈতিকতা বিন্দুমাত্র ওয়াকিবহাল হয়নি আমার। কেবলমাত্র ভাষ্যশৈলীর চাটুকারিতা গোচরগত হইয়াছিল। আপনি যে কি নিষ্ঠুর হইয়াছেন তাহা নিত্যদিন অনুভব হইতেছে।
আপনাকে ভুলিয়া যাওয়া যে আমার পক্ষে অসম্ভব তাহা আপনার অন্তিম সাক্ষাতেই স্পষ্ট করিয়াছিলাম।আপনার নিকট আমি সুনিশ্চিত যে― কভু আমার প্রিয়জন কারন জানিতে চাই তাহলে আপনার সহিত পুনরায় সাক্ষাৎ হইবে।
ইতি
আপনার শুভাকাঙ্খী