Goutam Nayak

Drama Romance Others

4.5  

Goutam Nayak

Drama Romance Others

তোমার ছোঁয়ায়

তোমার ছোঁয়ায়

3 mins
571


পৃথিবী যেন তাহারে বলিতেছে :

তুমি এ পৃথিবী ছাড়িয়া চলিয়া যাও, তোমারে আর প্রয়োজন নাহি।

তুমি যদি নিজও, দেহ ত্যাগ না করো, তাহলে তোমার মন শুন্য করিয়া দেবো।

 

পৃথিবী’ বলিতে ইহা যে, মনুষ্য জীবের অভিমুখে অঙ্গুলি নির্দেশিত হইতেছে; তাহা এই উন্নত প্রাণিকুল বুঝিতে না পারিলেও,অদৃশ্যে যে অদৃষ্ট রহিয়াছে- তিনি বুঝিবার নামে ;অট্টহাস্যে তীব্র কটাক্ষ করিতেছেন, তাহা যেন কেহ দেখিয়াও দেখিতে পাই নাই।

একবিংশ শতাব্দীতেও, এই উন্নীত প্রজাতির বিকৃত মানসিকতার কেন যে বিলুপ্ত ঘটে নাই, তাহা কিছুতেই বুঝিতে পারে নাই; এই কয় দিনের পরিচিতা, খুবই মলিন ও সাদাসিদে, মিষ্টভাষী মেয়েটা। মনের বিকৃতি তাহাকে যে কিরূপে অবস্থান্তর করিয়াছে, তাহার খুব নিকটে না আসিলে; সহজে কেহ বুঝিতে পারিবে নাই।

ভালোবাসার ঘোরটোপে বন্দি, অতীতের ভাবনাগুলো বর্তমান পরিস্থিতির সহিত তুলনায়; বর্তমান যে বেশ খানিকটাই তার মর্যাদা হারিয়েছে তা তিল তিল করে অনুভব করিতেছে। তাহার হৃদয় বিষণ্নভাবাপন্ন। প্রিয়জনেরা, নাকি চিন্তা ভাবনাগুলো কে নাটক বলিয়া গণ্য করিয়াছে। বড্ড প্রশ্ন করিতে ইচ্ছা করে, বাস্তবরূপী ভগবানের কি দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না ? নাকি তিনি ঘুমোচ্ছেন? সমস্যা যে বহুগুণ বাড়িয়া গিয়াছে। সৃজনকারিনি দের প্রতি কেনই বা এত তিক্ততা বাড়িয়েছে।

ছিঃ লজ্জা করে।

তাহাদের তো অভ্যন্তরে ঢুকিবার জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই। একবার জানিবার চেষ্টা করিলেই তো পারে। হোক’না নাটক, তা যদি একবার দেখিয়াই নেয়! তাহলে কি আসে বা যাই। শুধুমাত্র সময় একটুখানির প্রয়োজন। এই জন্যই নিজেকে কলঙ্কিত মনে হয়।

তিক্ত ও বিরক্ত হইয়া ডাইরির কভার পাতাটা সপাটে বন্ধ করে দিলাম। মা’ যদি জানিতে পারিত তাহলে হয়তো বড্ড দুঃখিত হইতো। দু চার কথা হয়তো আমায় শুনিতেও হইতো। আমি নিশ্চিত যে তিনি আমায় বলিতেন, আমি সমস্তকিছু জানিবার পরেও কেন সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসিনি।

ছবিতে দেখা, আর ভার্চুয়ালি বার্তালাপে প্রিয়ভাষিণী বর্ণালি কে কিভাবে সাহায্য করিতে পারিব আমার জানা নেই।তবুও আমার দৈনন্দিন সময়ের বেশ খানিকটা অংশই বর্ণালীর জন্য বরাদ্দ থাকে। নিঃস্বার্থ ভাবেই তার পাশে দাঁড়ানো সত্যিই যে গভীর ভাবে সুখ প্রদান করে তাহা , তাহার মিতভাষিণী সৃজনকারিণী গনের অতীত মানসিকতায় উল্লিখিত হয় না।

এক দুপুরে বিশ্রামপূর্ব একটি পত্রিকা নিয়ে বসিয়াছিলাম। ইহাতে সকলেই গল্প লিখিয়া থাকে। সমস্ত রকম জঁ এর গল্পের সমন্বয়ে পত্রিকার রূপের ঘনঘটা বিদ্যমান। নানান লেখক ও লেখিকার অমূল্য অবদান পত্রিকার রূপে যেন চার চাঁদ লাগিয়েছে। গল্প গুচ্ছের মধ্যেই একটি গল্প বেশ দৃষ্টি আকর্ষণ করিল। মজাদার সমস্ত গল্পের মধ্যে ওই গল্পটি কেন যে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিলো তাহা বলিতে পারিব নাই। তথাপি গল্পটি যে আমার বিশ্রাম অপব্যায়িত করিয়াছিলো তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই।

গল্পের স্রষ্টা যিনি, তিনি গল্পটিতে তাহার আত্মজীবনী প্রকাশ করিয়াছিলেন; নাকি এক মুহূর্তের হৃদয় শুন্য হয়ে যাওয়ার বর্ণনা দিয়েছিলেন,তাহা ঠিক বুঝিতে পারি নাই বটে ,তবে তাহার লেখনিতে যে স্ফুলিঙ্গ বের হয়েছিল, তাহা সকলকে ভারাক্রান্ত না করলেও;আমাকে বেশ খানিকটা অস্থির করিয়া তুলিয়াছিলো। তাহার প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়েছিলাম ঠিকিই কিন্তু খুব জটিল ছিল। কঠোর বাস্তবের হাড়হিম করা উত্তর পর্ব যখন সমাপ্ত হইয়াছিলো তখন বর্ণালী বোধহয় কিছুটা স্বস্তি পাইয়াছিল। সে অন্তত এটা ভাবিয়াছিলো, যে সে সঠিক।তাহার কথা হৃদয় দিয়ে বোঝার মত কেউ তো একজন আছে।

ডাইরি লইয়া, কতক্ষন যে তাহার বিরল বিরহ যন্ত্রনার হৃদয় অভন্তরে ছবি আঁকিতেছিলাম,তাহা নিজেও যে সঠিক বলিতে পারিব না; তাহাতে কোনোই সন্দেহ নাই।

মিষ্টভাষী বর্ণালির প্রথম সম্ভাষণ হৃদয়ে দাগ টেনে দেয়।সেদিন প্রভাতে, প্রাতরাশ সারিবার পূর্বে , পত্রিকায় যখন চোখ রাখিলাম, বিস্তৃত অক্ষরে লিখিত গল্পের নামেই, সম্পূর্ণ না হইলেও কিছুটা যে বিরক্তি ভাব জাগিয়েছিলো তাহাতেই আর গল্প অভ্যন্তরীণ বিভিন্নতা দেখিবার ইচ্ছা থাকে নাই। অতঃপর দিনের শুরুতেই যখন চোখের সামনে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছিলো, তাহাই তাহার রেটিং পূর্বক এক দিয়া বোঝাতে চাহিয়াছিলাম আমি গল্পটি পড়িয়াছি। কিন্তু;এই কারন হেতু তাহার হৃদয়ে আমি যে বেশ খানিকটাই চোট পৌঁছিয়েছিলাম তাহা তাহার প্রথম সম্ভাশনেই প্রকাশ পাইয়াছিলো।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama