Sangita Duary

Classics Inspirational

3  

Sangita Duary

Classics Inspirational

ছায়া

ছায়া

2 mins
268


গ্যাসের নব'টা কমিয়ে বেডরুমে দৌড়ে এলো সোনালী। টিয়া তোতা ঘুমোচ্ছে। এই সুযোগে হাতের কাজগুলো সেরে ফেলতে হবে।

দিপান সেই কখন বেরিয়েছে। জানিনা আজও কোনো মেডের সন্ধান পাবে কিনা! 

গেল সপ্তাহতেই বাপের বাড়ি থেকে ফিরেছে সোনালী। কনসিভ করার পর থেকে টানা একটা বছর সোনালী ওবাড়ি ছিল, ঠিকে ঝি শ্যামলীই এতদিন রান্না করে এসেছে।

পরশু থেকে সে আর কাজে আসেনা, ফোনে জানায়, তার বর দেশেরবাড়ি ফিরতে চাইছে, জমিজমা রয়েছে ওখানে।

মা'ও তার সংসার ছেড়ে মেয়ের সংসারে কতদিন পড়ে থাকবে!

অগত্যা, সোনালীকে তার অদৃশ্য বাকি আটটা হাতও বের করতে হয়েছে।

প্রেসারের সিটি উঠতেই, সোনালী শুনলো টিয়া কাঁদছে। দৌড়ে এসে সোনালী টিয়াকে কোলে নিতেই তোতাও নড়ে উঠলো। ইশ! ডায়পার একদম ভিজে গেছে যে! দুজনেই পটি করে ফেলেছে। একসঙ্গে দুজনকে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। ওদিকে দুজনেই ত্বারস্বরে চিৎকার জুড়েছে। এরকম কিছু কিছু মুহূর্তে বড্ড অসহায় হয়ে পড়ে সোনালী। সত্যিই তো পাশে কাউকে দরকার, মেয়েদের দশ হাতও অনেকসময় অকুলান হতে ওঠে। তখন একটা অন্তত সাহায্যের ছায়ার প্রয়োজন হয়।

কেঁদে ফেলে সোনালী।

দিপানের বাবা মা সোনালীকে মেনে নেননি। এমনকি নাতিনাতনীর মুখও দেখতে আসেননি একবারও। ওনারা সঙ্গে থাকলে হয়তো এইদিনটা দেখতে হতো না!

দরজায় বেল।

বাচ্চাদের শুইয়ে দরজা খোলে সোনালী। দিপান ফিরেছে। পিছনে মধ্যবয়স্ক একজন।

দিপান পরিচয় করিয়ে দেয়," আয়া সেন্টার থেকে ঠিকানা পেয়ে আজই দৌড়ে গিয়েছিলাম ওনার বাড়ি।"

মহিলা এগিয়ে আসেন, বেসিনে ভালো করে হাত ধুয়ে মুছে তোতাকে কোলে তুলে নেন।


------------------------


হীরা পিসি এসে অনেকটা নিশ্চিন্ত করেছেন সোনালীকে। রাত জাগা চোখ এখন আর তাড়াতাড়ি খুলতে হয়না। ঠিক সাতটায় সময় হীরাপিসি এসে শাড়ি পাল্টে কাজে লেগে যান। দিপানের চা, বাজারের ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে, বাচ্চাদের কাচাকুচি সেরে নেন। তারপর ট্রেতে ডিম সেদ্ধ আর অঙ্কুরিত মুগ নিয়ে এসে দাঁড়ান সোনালীর সামনে।

রান্নার কাজে সোনালীকে সাহায্য করেন।

 দিপান অফিস বেরিয়ে গেলে চা জলখাবার খেয়ে বসেন বারান্দায়, সোনালীকে বলেন নিজের জীবনের কথা, লড়াইয়ের কথা।

সারাদিন ছায়ার মতো সোনালীর সাথে লেগে থাকেন। সন্ধ্যের পর বাড়ি ফেরেন।


জীবনটা এখন অন্যরকম।

হীরাপিসি এলেন,তাই!!



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics