অতিথি প্রথম পর্ব।
অতিথি প্রথম পর্ব।
অডিসিয়ুস নামের এক ব্যক্তি, নগরে ঢুকছেন । তখন রাত নেমেছে এই অজানা নগরে। পদে পদে তার দুশ্চিন্তা। পথে একটি মেয়েকে দেখতে পেয়ে বললেন :
' এই যে মেয়ে, শোনো, আমি এদেশের লোক নই। বাইরে থেকে এসেছি। আমি এখানকার কাউকেই চিনি না। আমি রাজবাড়ী যাবো। একটু বলে দেবে রাজবাড়ীর পথটা কোনদিকে? '
মেয়েটির বাড়ি রাজবাড়ীর কাছেই। তার স্বভাবটি ভারি মিষ্টি। মেয়েটি বলল:
' আপনি আমার সঙ্গে আসুন। আমি দেখিয়ে দিব।
কিন্তু আপনি যে বিদেশি , তা কাউকে বুঝতে দেবেন না। কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। '
অডিসিয়ুস বুঝলেন এই মেয়ে খুব বুদ্ধিমতি। কোনো কথা না বলে তিনি চললেন ওর পিছু পিছু।
অডিসিয়ুস দেখলেন নগরটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। প্রাচীরের ওপরে জাহাজের মাস্তুল সব দাঁড়িয়ে আছে আকাশের দিকে তাকিয়ে।
কিছুদূর গিয়েই দেখেন চোখের সামনে জেগে উঠেছে রাজবাড়ী। দেখলেন চমৎকার এক দৃশ্য। দূর থেকেই চোখে পড়লো রাজবাড়ীর সামনের সারি সারি নানা ফলের গাছ । ডালিমের, আপেলের, নাশপাতির আরও কত ফলের গাছ। এখানে মনে হয় ফল আর কোনো দিন শেষ হবে না । আসলে তাই। যেসব গাছের একদল ফল দেয় গ্রীষ্মকালে, আরেকদল শীতে। সারাবছর ধরেই ফুল ফুটছে আর ফল পাকছে। এক দিক দিয়ে পাকে আরেকদিক দিয়ে ফলে । তরকারিরও চাষ আছে। সবুজেরা যেনো আপন মনে খেলছে। মাঠের দুপাশে দুটো ঝরনা। একটি একেঁবেকেঁ চলে গেছে মাঠের মধ্য দিয়ে।
অন্যটি সারা শহরের লোকদের পানির জোগান দেওয়া শেষ করে এখন এসে যেনো বিশ্রাম নিচ্ছে রাজবাড়ীর কাছে। নিজে না দেখলে সেই দৃশ্যের বর্ণনা দেয়াও কঠিন ।
অডিসিয়ুস দেখলেন, যে রাজপ্রাসাদের দরজা গুলো সোনা দিয়ে তৈরি। দরজার কাঠামো কাঠের নয়, রুপোর।
হাতলগুলো সোনার। এগিয়ে দেখেন ভেতরে অনেকগুলো
কুকুর, কোনোটি সোনার, কোনোটি রুপোর, যেনো পাহারা দিচ্ছে সবাই মিলে। ভেতরে ঢুকতেই চোখ পড়লো দেয়ালের পাশে উচুঁ উচুঁ সব আসন বসানো। প্রত্যেকটি ঢাকা অতি সুন্দর কাপড়ে। রাজবাড়ীর মেয়েরা সবাই কাজ করে। কেউ শস্য ভাঙ্গে খুব মিহি করে। কেউ- বা তাত বোনে, কেউ কাটে সুতা। এই দেশে ছেলেদের দক্ষতা যেমন জাহাজ চালানোতে, মেয়েদের দক্ষতা তেমনি গৃহকাজে। এর মধ্যে দিয়ে অডিসিয়ুস ঢিপঢিপ - করা - বুকে এগিয়ে গেলেন সামনে। দেখেন সোনার তৈরি যুবকেরা সব মশাল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আর গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সব খেতে বসেছে একসঙ্গে। সিংহাসন দেখে
অডিসিয়ুস রাজাকে চিনলেন, চেহারা দেখে রাণীকে। সোজা চলে গেলেন সেদিকেই । রাজাকে পার হয়ে রাণীর সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসে হাত ধরলেন রাণীর।
হটাৎ এমন একটা ঘটনা দেখে থ - মেরে গেছে সবাই। কারো মুখে রা নেই। কাউকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে অডিসিয়ুসই শুরু করে দিলেন তাঁর নিজের কথা। বলেলন:
' মহারানী, দয়া করে আমার কথা টি শুনুন। আমি এসেছি আপনাদের কাছে সাহায্য চাইতে। আপনার অতিথিদের কাছেও আমার একই আবেদন। আমি দেশছাড়া পথহারা
এক পথিক। আমার প্রার্থনা, আপনারা আমাকে আমার দেশে পাঠিয়ে দেবার একটা ব্যবস্থা করুন। '
আবেদন শেষে রাজা - রানির সামনে ওই মেঝের ওপরেই বসে পড়লেন অডিসিয়ুস। দেখা গেলো কেউই কোনো কথা বলছেন না। বোধ করি বিস্ময় কাটছে না তাঁদের। শেষে একজন কথা বললেন................
চলবে?...
চিন্তা নেই।।।।। দ্বিতীয় পর্ব শীঘ্রই আসছে।