অস্তিত্ব
অস্তিত্ব
অর্ণব আর স্বাতীর তিন বছর হল বিয়ে হয়েছে, কিন্তু এখনও ওদের যেন হনিমুন ফেজ।একটু সুযোগ-সুবিধে আর অফিসে ক’দিন ছুটি পেলেই, ওরা দুজনে বেরিয়ে পড়ে রোমান্টিক আউটিংয়ে। অর্ণব কদিন হল একটা নতুন এসইউভি কিনেছে। ক’দিন ধরেই প্ল্যান করছে, কোথাও একটা গাড়িটা নিয়ে লংড্রাইভে বেরিয়ে পড়তে হবে।আর সুযোগটাও সেরকম হঠাৎই এসে গেল ।শুক্রবার পনেরোই আগস্ট পড়াতে টানা তিন দিন ছুটি । ক’দিন ধরেই স্বাতীও বায়না করছিল
‘চলনা , অনেকদিন ধরে কোথাও যাওয়া হয়নি।‘
‘সেকি গো! এইতো দু’মাস আগেই দীঘা থেকে ঘুরে এলে।‘
‘ধুর,দীঘায় গিয়ে গিয়ে পচে গিয়েছে। কোন অফবিট জায়গায় চলনা যাই। দু’ দিনের জন্য।‘
‘দাঁড়াও দেখি, সেরকম কোন জায়গা খুঁজে পাই কিনা।‘
বেশি খুঁজতে হল না, ওদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ড সুকল্যানরা কদিন আগেই ঘুরে এসেছিল পুরুলিয়ার বড়ন্তি থেকে।সুকল্যান রসিয়ে রসিয়ে বলল
‘লেকের ঠিক সামনেই কটেজগুলো,বুঝলি? শুধু নীল জল চারিদিকে, দারুন জায়গা। বিকেলে লেকের সামনে দুজনে চেয়ার নিয়ে বসে, যখন পকোড়া আর চা খাবি, দেখবি বিশাল লেকের পিছনে, বড় বড় পাহাড়ের আড়ালে সূর্যাস্ত হচ্ছে, আর তার সাতরঙা আলো ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে।‘
ওর বউ সুস্মিতাও টিপ্পনি কাটল,
’বুঝলি স্বাতী,ওখানে তোদের রোমান্স আরো জমে উঠবে।‘
সত্যিই ওদের রোমান্স যেন শেষ হবার নয়,আর বর্ণনা শুনে জায়গাটাও ওদের মনে ধরল। স্বাতী তো এক পায়ে খাড়া।অর্ণবও বলে উঠল,
’আরিব্বাস,দারুন তো,নেক্স্ট ট্রিপ তাহলে বড়ন্তি’ ।
বর্ষাকাল, খুব একটা ভিড়ভাট্টা নেই বলে,সুকল্যানের বলে দেওয়া কটেজই খালি পাওয়া গেল।ব্যাস,শুধু গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়া। দুর্গাপুর থেকে তো মাত্র তিন ঘন্টার রাস্তা। রাস্তাঘাটও এখন অনেক ভাল হয়েছে আগের থেকে, গাড়িটাও চলছিল ভালই। স্পিডটা ষাট সত্তর থেকে খুব একটা নামাতে হয়নি কোথাও ।তাছাড়া সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছিল বলে, রাস্তার ভিড়ভাট্টা একটু কমই ছিল।নতুন গাড়ি,ছবির মতো সুন্দর রাস্তা, সিডিতে বাজছে লেটেস্ট গান,অর্ণবের পাশে বসে স্বাতীর মনটা তখন একদম উড়ু উড়ু। আর একটুখানি, তা হলেই তো সেই নীল জলের হাতছানি। হঠাৎ আকাশ কাল করে বৃষ্টি নামল। গাড়িটা তখন যাচ্ছে, দুপাশে ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা, জোরে শব্দ করে বাজ পড়ছে মুহুর্মুহু আর গাছগুলো অসম্ভব দুলছে ঝড় বৃষ্টির দাপটে। কোথাও থামার উপায় নেই ,কোন আশ্রয়ও নেই ধারেকাছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হোটেলে পৌঁছতে হবে, তবেই মঙ্গল। এতক্ষণ জিপিএস, নেট সব কাজ করছিল, রাস্তা দেখাচ্ছিল। হঠাৎই দুর্যোগে নেটটা বিগড়ে গেল আর জিপিএসও সাহায্য করা বন্ধ করে দিল। পথনির্দেশ ছাড়া অর্ণব দিশেহারা হয়ে পড়ল, এই বৃষ্টিতে সোজা চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায়ও নেই। ভুল পথে যাচ্ছে কিনা সেটা বোঝাও সম্ভব নয়। এই ফাঁকা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়ানোটাও সেফ নয়। এদিকে সামনের কাচ ঝাপসা হয়ে এসেছে বৃষ্টির তোড়ে, রাস্তাতেও জলের স্রোত। হঠাৎই অর্ণব দেখতে পেল ঠিক সামনেই রাস্তা জুড়ে একটা লরি কোনাকুনি বেঁকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর কাটিয়ে নেবার মত সময় বা জায়গা নেই, গাড়ির স্পিডও যথেষ্ট। তবু প্রাণপণে চেষ্টা করল অর্ণব, স্বাতী চিৎকার করে উঠল ভয়ে, ব্রেক ধরল না। একটা ভয়ঙ্কর আওয়াজ, আর তারপরই কাল অন্ধকার। আর কারো কিছু মনে নেই ।
হসপিটালের বেডে শুয়ে, তিনদিন পর প্রথম জ্ঞান ফিরল অর্ণবের। সারা শরীরে,মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা, ঘাড় ঘোরাতেও পারছে না ।অস্পষ্ট, কেমন যেন ঘোলাটে দৃষ্টি,আর আশপাশ থেকে প্রতিধ্বনির মত কিছু শব্দ কানে আসতে লাগল। এরকম কয়েকবার জ্ঞান আসা-যাওয়ার শেষে যখন ইনজেকশনের ডোজটা একটু কমে এসেছে হঠাৎই হুট্ করে সাড় ফিরল অর্ণবের। ও বুঝলো হসপিটালের বেডে শুয়ে আছে, এখন মোটামুটি দেখতে পাচ্ছে, সিস্টারের কথাগুলোও অল্প কানে আসছে ।
‘কি মিস্টার ব্যানার্জি, আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন ?’ অর্ণবকে তাকাতে দেখে সিস্টার বারবার জিজ্ঞেস করতে লাগল।
যন্ত্রণা সত্বেও অল্প ঘাড় নাড়ল অর্ণব। সারাদিনে আস্তে আস্তে ওর সারা শরীরে সাড় ফিরল। মাথায় ব্যান্ডেজ, সারা শরীরেও, অনেকগুলো অপারেশন হয়েছে ।তবে প্রাণে বেঁচে গেছে ।অর্ণবের তখনই বিদ্যুৎ গতিতে সব মনে পড়ে গেল। গাড়ির অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল ,ও বেঁচে আছে, স্বাতীর কি হল? খুব ভয় হতে লাগল । ডাক্তার রুটিনমাফিক ওর সঙ্গে নানা কথা বলে যেতে লাগলেন ।তখনই ধীরে ধীরে অর্ণব বলে উঠল ,’স্বাতী কোথায়?’
‘ও,আপনার মিসেস?’ডাক্তার বলে ওঠেন,’উনি ভাল আছেন,এই হসপিটালেই ভর্তি আছেন,এই তো পাশের ওয়ার্ডেই।‘
উত্তরটা শুনে ধড়ে প্রাণ এল ওর,যাক স্বাতী বেঁচে আছে।অর্ণব তখনই যেতে চেয়েছিল ওকে দেখতে ।ডাক্তার, নার্স দুজনেই হেসে বলল ,
’পাগল হয়েছেন? কতগুলো অপারেশন হয়েছে জানেন? আপনাকে এখনও বেশ ক’দিন শুয়ে থাকতে হবে ।আপনার স্ত্রী ভাল আছেন।ক’দিন পর দেখতে যাবেন।একদম চিন্তা করবেন না।‘
সেদিনটা এরকম করেই কাটল, ওষুধ-পথ্য-যন্ত্রণা। কখনও বা একটু ভাল থাকা, কখনও আবার সব ভুলভাল হয়ে যাওয়া, দুঃস্বপ্নে চেঁচিয়ে ওঠা। অর্ণবের বাবা-মা সবাই এসেছেন, সঙ্গে সুকল্যান-সুস্মিতাও। তখনই ভাল করে জানল, সেই ভয়ঙ্কর অ্যাক্সিডেন্টের কথা, কি বরাৎজোরে দুজনে প্রাণে বেঁচে গেছে, স্থানীয় আদিবাসীরাই ওদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছে,তারপর রেফার হয়ে এই বড় হাসপাতালে, দুর্গাপুরে। স্বাতীরও বাবা-মা-ভাই সবাই এসেছেন, এখনও জ্ঞান ফেরেনি ওর।
পরদিনই অর্ণবের কাতর অনুরোধে, স্ট্রেচারে শুইয়েই অবশেষে ওকে নিয়ে যাওয়া হল স্বাতীর বেডের কাছে। সেখানে বসে রয়েছে স্বাতীর বাবা-মা- ভাই ।সবাই ওকে দেখে, কেমন যেন একটা রাগী রাগী মুখ করে তাকিয়ে থাকল।অর্ণবের অন্য দিকে খেয়াল নেই, দ্রুত যেতে চায় স্বাতীর কাছে। অবশেষে দেখতে পেল ওকে, কিন্তু এ কি? স্বাতীর সারা শরীরে ব্য
ান্ডেজ, মাথায়- মুখে পর্যন্ত, শরীরের কোথাও একটুও জায়গা ফাঁকা নেই। ওর এখনও জ্ঞান ফেরেনি, অবস্থা ভাল নয়। অপরাধীর মত মুখ করে তাকিয়ে থাকে অর্ণব,চোখ জলে ভেসে যাচ্ছে।স্বাতীর বাবা-মার দিকে তাকাল, তারা সেভাবে কথা বলল না ওর সঙ্গে। একরকম জোর করেই অর্ণবকে ফিরিয়ে আনা হল নিজের বেডে।
এই রকম করেই ক’টা দিন পার হয়ে গেল।ক’দিন পরে, অর্ণব তখন মোটামুটি অনেকটাই সুস্থ, খুব তাড়াতাড়ি সেরে উঠছে ,শুধু প্লাস্টার আর ব্যান্ডজ সারা শরীরে। এখনও হাঁটতে পারে না,তবে নিজে নিজেই হুইল চেয়ার নিয়ে,দিনের মধ্যে দু’তিন বার চলে যায় স্বাতীর বেডের কাছে। ওর জন্য স্পেশালি বলে দেওয়া আছে সিস্টারদের, কেউ ওকে ফিমেল ওয়ার্ডে যেতে আটকায় না। স্বাতীর এখনও জ্ঞান ফেরেনি ,মাল্টিপল ইঞ্জুরি, অনেক কাটাছেঁড়া হয়েছে ওর শরীরটা নিয়ে, চেনাই যাচ্ছে না । প্রতিদিন প্রথমবার যখন হুইলচেয়ারে বসে স্বাতীকে দেখে, চোখের জল সামলাতে পারে না অর্ণব। ডক্টর বলেছেন, সব ঠিক আছে, শুধু জ্ঞান ফিরে আসার অপেক্ষা। আর কত অপেক্ষা করবে অর্ণব! কি থেকে কি হয়ে গেল ওদের সুখের জীবনটায়, অর্ণব ভাবে। এইভাবে ভগবান ওদের সুন্দর সংসারটা ছারখার করে দিতে পারল! স্বাতীর বাবা মা আজকাল ওর সঙ্গে একটু আধটু কথা বলে। ওরাও বুঝেছে এটা একটা অ্যাক্সিডেন্ট, অর্ণবের কোন দোষ ছিল না। স্বাতীর ভাই সুমনও মাঝে মাঝে আসে অর্ণবের বেডের কাছে, কথা বলে যায়।
‘অর্ণবদা, এখন কেমন আছ?’
‘অনেক ভাল রে।কবে যে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারব।‘
‘ ঠিক পারবে,চিন্তা কোরো না।’
‘ আরে চিন্তা আমাকে নিয়ে করছি না। তোর দিদির জ্ঞান ফেরা নিয়েই টেনশন হচ্ছে রে ।‘
‘ডাক্তাররা তো নানা রকম চেষ্টা করছে, বলছে শিগগিরই জ্ঞান ফিরবে ।‘
‘কে জানে,আমার তো মনে হচ্ছে এই হাসপাতলে আর বেশি কিছু হবেনা । কলকাতার বড় নার্সিংহোমে নিয়ে যাব ভাবছি ।‘
‘বাবাও তো তাই বলছিল। কালই তো কথা বলছিল আর একজন নিউরোলজিস্টের সঙ্গে।‘
‘ হুঁ, আমিও কয়েক জায়গায় ফোনাফোনি করেছি ।সুকল্যাণকেও বলেছি কথা বলতে।‘
‘এখান থেকে ছাড়বে ?’
‘কেন ছাড়বে না?একটু শিফ্ট করার মতো হলেই নিয়ে যাব। ওনারা বন্ডে রিলিজ দেবেন বলেছেন ।‘
‘কিন্তু অর্ণবদা,একটা জিনিস লক্ষ্য করেছ......’
‘কি জিনিস রে?’
‘দিদির.....না ,থাক ।পরে বলব।‘
‘কি ব্যাপার বল না,লুকোচ্ছিস কেন?’
‘না গো,আমি ঠিক শিওর নই,পরে বলব।‘
অর্ণব আর কিছু জিজ্ঞেস করে না।স্বাতীকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ওর আজকাল ভাল ঘুমও হয় না।বেশির ভাগ সময় চুপ করে বসে ঝিমোয়।ও এখন একা বাথরুমে যেতে পারে, যদিও মাথাটা ঘোরে, পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। মোবাইল ব্যবহার করতেও শুরু করেছে। সিমটা রি-অ্যাক্টিভেট করে, একটা নতুন মোবাইল দিয়ে গেছে সুকল্যান।
সেদিন অর্ণব অনেকটা ভাল ,ডাক্তারও বলেছেন, দু’দিন পরেই ওরা চাইলে স্বাতীকে কলকাতার বড় নার্সিংহোমে নিয়ে যেতে পারে। জলের মত টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে, আরও হবে।বড় বড় নার্সিংহোমে এইসব কেসে, একটা পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে যেতে পারে,সব জানে অর্ণব, তবু কুছপরোয়া নেহি।শুধু কোমা থেকে বের করে আনতেই হবে স্বাতীকে,স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে। এইসব দুশ্চিন্তাতেই কাটছিল অর্ণবের দিনগুলো। হঠাৎই একটা অচেনা নাম্বার থেকে এক সন্ধ্যায় ফোন আসল অর্ণবের।
‘হ্যালো’ বলতেই, ওপাশ থেকে একটা ভীষণ ভারী আর গম্ভীর গলা শোনা গেল ‘আপনি কি মিস্টার অর্ণব ব্যানার্জি বলছেন?’
‘হ্যাঁ ,বলুন।‘ অর্ণব বলে।
‘আপনি কি এখনও হাসপাতলে আছেন?’ লোকটা জিজ্ঞেস করে।
‘হ্যাঁ ,আপনি কে বলছেন?’
‘সেটা জেনে কি হবে ?’ লোকটা একটু অভদ্রের মত ধমক দেয়।
‘যা বলছি মন দিয়ে শুনুন।‘ লোকটা বলে চলে ।
‘আপনার মিসেসের নাম তো স্বাতী ব্যানার্জি,তাই না?’
‘হ্যাঁ’ অর্ণবের গলায় বিস্ময়।
‘আপনার মিসেস কোথায় ?’
‘কেন? আমার পাশের ওয়ার্ডেই ,ট্রিটমেন্ট চলছে ।কিন্তু আপনি কে?’
‘হাঃ হাঃ হাঃ’ ,লোকটা বিশ্রিভাবে অনেকক্ষণ হাসে। রাগে গা জ্বলে যায় অর্ণবের। কে লোকটা ,কেন এতসব জিজ্ঞেস করছে, ফোনটা কেটে দেবে নাকি! ঠিক তখনই হাসি থামিয়ে, শীতল কন্ঠে, গম্ভীর গলাটা কাটা কাটা শব্দগুলো বলে,’ মিস্টার ব্যানার্জি ,পাশের ওয়ার্ডে যাকে আপনি আপনার স্ত্রী বলে ভাবছেন, চিকিৎসা করাচ্ছেন, তিনি আপনার স্ত্রী স্বাতী ব্যানার্জি নন, আপনার স্ত্রী অ্যাক্সিডেন্টের দিন স্পটেই মারা গেছেন। পনেরো তারিখ।‘
অর্ণবের শিরদাঁড়া দিয়ে একটা যেন ঠান্ডা স্রোত নেমে যায় ,কি বলছে লোকটা!
‘কি বলছেন যা তা? কে আপনি?’ অর্ণব চিৎকার করে ওঠে।
কিন্তু তখনই ফোনটা কেটে যায়। উত্তেজিতভাবে অর্ণব আবার ওই নম্বরটাতে ঘুরিয়ে ডায়াল করে, কিন্তু ফোনটা বেজে যায় ,কেউ ধরে না। অর্ণবের বুকটা হাপরের মতো ওঠানামা করে। পাশের বেড থেকে সিস্টার অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন ,
‘কি হল অর্ণববাবু, কি হয়েছে? এত রেগে গেছেন কেন?’
অর্ণবের কানে কোন কথা ঢোকে না, দেয়াল ধরে ধরে কোনক্রমে ও স্বাতীর বেডের দিকে যেতে চেষ্টা করে। ওকে সাহায্য করতে আসে একজন সিস্টার,ও সাহায্য নেয় না, পাগলের মত ছুটে যেতে চায় স্বাতীর ওয়ার্ডে,দু একবার পড়ে যায়,আবার ওঠে,সুমন ওকে ধরে। স্বাতীর কাছে গিয়ে ও অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে দেখে, বোঝার চেষ্টা করে ওটাই স্বাতী তো! হুমড়ি খেয়ে স্বাতীকে ছুঁতে চেষ্টা করে। পাগলের মত চিৎকার করে ডাকে ‘স্বাতী,স্বাতী,সাড়া দাও।‘ সবাই ওর দিকে ছুটে আসে, ওকে ধরে ফেলে। অর্ণব চিৎকার করতেই থাকে।ওর মনে হয়,ব্যান্ডেজে ঢাকা স্বাতীর মুখটা যেন একটু অন্যরকম না!
আর ঠিক তখনই স্বাতীর প্রথমবারের মত, সাড় ফিরে আসে। ঠোঁটটায় যেন একটু হালকা হাসি খেলে গিয়ে,তখনই আবার মিলিয়ে যায়।
অর্ণব হাসিটা চিনতে পারে।