STORYMIRROR

Rishita Debnath

Abstract Drama Tragedy

3  

Rishita Debnath

Abstract Drama Tragedy

অসম্পূর্ণ প্রতিশোধ

অসম্পূর্ণ প্রতিশোধ

2 mins
223

 "চুমকি রে! শুনে যা" রান্নাঘর থেকে চিৎকার করে ডাকে সেবন্তি।

 তৎক্ষণাৎ একটি কিশোরী মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে সেখানে উপস্থিত হয়।

 "কি মা?" সে জিজ্ঞেস করে।

 "সুমতির বাড়ি থেকে একটু 

হলুদ নিয়ে আয় তো" সেবন্তি বলে।

"ঠিক আছে" চুমকি উত্তর দেয়।


চুমকি হল চা বাগানের মেয়ে, তার বাবা একজন চা শ্রমিক। করোনা ভাইরাস এর প্রভাবে চা বাগান বন্ধ, তাই তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ।


"সুমতি দিদি!..অল্প হলুদ দে"

 "কে রে, চুমকি নাকি?" এই বলে একটি ২৪-২৫ বয়সী মেয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে।

 "অল্প হলুদ দে আমাকে" চুুমকি উত্তর দেয়।

 বাটিতে হলুদ ঢেলে দিতে দিতে সুুমতি জিজ্ঞেস করে "তোর বয়স কত রে?"

 "ষোলো, কেন রে?"

"তোর জন্য একটা ভালো কাজ আছে, ভালো মায়না দিবে, জামাকাপড় দিবে।"

প্রস্তাবটি শুনে চুুমকির চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তার মুখ দেখে বোঝা যায় যে প্রস্তাবটি তার পছন্দ হয়েছে। তবুও সে  

বলে যে সে ভেবে দেখবে।


১৫ দিন পর...

 

   আজ চুমকি কাজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। তার সঙ্গে সুমতি রয়েছে। সে চুমকিকে বলেছে যে তারা দিল্লি যাবে। একরাশ আশা নিয়ে চুমকি সুমতির সাথে ট্রেনে উঠে। ট্রেন যখন দিল্লি স্টেশনে পৌঁছয় তখন হঠাৎ সে সুমতিকে খুঁজে পায়না। কিন্তু একজন লোক এসে তাকে বলে যে কাজের মালিক তাকে পাঠিয়েছে। চুমকি তার সঙ্গে চলে যায়।

তাঁরা একটি বড় বাড়িতে গিয়ে ওঠে। 

  সেখানে পৌঁছে চুমকি আন্দাজ করতে পারে যে কিছু গন্ডগোল আছে। সেদিন থেকেই তার দুর্যোগের জীবন শুরু হয়। তাকে একটি ঘরে বন্দি করে রাখা হত। চুমকির মতো আরও মেয়েদেরকে সেখানে বন্দি করে রাখা হত। 

 এভাবেই ১৫ দিন কেটে যায়।

চুমকি বুঝতে পারে যে সে পাচারকারীর খপ্পরে পড়েছে এবং সে এও বুঝতে পারে যে সুমতি তার সঙ্গে প্রতারণাা করেছে। চুমকি যাকে নিজের দিদির মতো ভরসা করেছিল, সেই সুমতিই তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এসব ভেবে তার খুব কষ্ট হত, বাড়ির কথাও মনে পড়়ত তার। সে ভাবে যে সে তার প্রতি প্রতারণাার প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু সেজন্য তাকে আগে সেই বন্দি অবস্থাা থেকে বেড়িয়ে আসতে হত। তাই সে পরিকল্পনা করে যে সে পালিয়ে যাবে।


  ঘড়়িতে তখন রাত ২ টো। চুমকি জানালা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। গেটের গার্ডরা তখন ঘুমে ঢুলু ঢুলু। এই সুযোগে চুমকি দেওয়াল দিয়ে রাস্তায় লাফ দেয়। কিন্তু গার্ডরা জেগে যায়। তাঁরা চুমকির পিছু তাড়া করতে থাকে। চুুুুমকিও জোরে জোরে দৌড়াতে থাকে।দৌড়াতে দৌড়াতে সে অনেক দূরে রেললাইনের পাশে এসে পরে। কিন্তু গার্ডরা তখনও তার পিছু করতেই থাকে। 

 অনেকক্ষন দৌড়ানোর ফলে তার মাথা ঝিমঝিম করে, গলা শুকিয়ে যায়, কান বন্ধ হয়ে আসে। তবুও সে দৌড়াতেই থাকে নিজের জীবন বাচাঁনোর জন্য। সে থামে না, থামে না এই ভেবে যে সে তার প্রতি প্রতারণার প্রতিশোধ নেবেই।


  কিন্তু হঠাৎ...  একটি তাজা মরদেহ রেললাইনের পাশে পড়ে থাকে।

    রাত ৩টের দ্রুত গতির ট্রেনটি অজান্তেই এক কিশোরীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ হল সে, যে কিনা নিজের প্রতি প্রতারণার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল, তার প্রতিশোধ অসম্পূর্ণ রয়ে যায়।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract