ভ্রমণে মুন্নার
ভ্রমণে মুন্নার
মানুষ চিরকাল ভ্রমণপিপাসু। খাচাবন্দি পাখি যেমন বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করে, তেমনি ঘরবন্দী মানুষও ছট্ফট্ করে ঘরের বাইরে পা রাখার জন্য।
তাই দীর্ঘ দেড় বছর করোনা
নামক এক দুষ্ট ভাইরাস এর উপদ্রবে ঘরবন্দী থাকার পর গত অক্টোবরে মুন্নার যাওয়ার পরিকল্পনাা হলো। কল্পনায় নানা রকম ছবি আঁকতে আঁকতে পৌঁছলাম মুন্নার। পথে আসবার সময় দেখেছি দুটি জলপ্রপাত, স্পাইস গার্ডেন, এলিফ্যান্ট রাইড পার্ক এবং সারি সারি চা বাগান। আর দেখেছি দূরের হালকা নীল রঙা আকাশ ছোঁয়া গাঢ় মায়াময় নীল পাহাড়।মুন্নার এ পৌঁছনোর পর তার সৌন্দর্য চোখ ধাঁধিয়ে দিল এবং হালকা হিম শীতল হাওয়া স্পর্শ করল।
আমরা প্রথমে এসে উঠলাম একটি হোটেলে। হোটেল থেকে যতদূর চোখ যায় শুুধু চা- বাগান। সেদিন আর ঘোরাঘুরি হলো না। পরদিন সকালে উঠেই দেখা মিলল আনাইমুদি পর্বতের যা কুয়াশায় ঝাপসা দেখাচ্ছিলো। জলখাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম মাতুপত্তির উদ্দেশ্যে। মাতুপত্তি ড্যাম খুবই বিখ্যাত। সেখানে পর্যটকদের স্পিড বোটে করে ঘুুরে বেড়ানো ব্যবস্থা রয়েছে।
দ্বিতীয় দিন আমরা চলে গেলাম মুন্নার থেকে ৩২ কিমি দূরে টপ স্টেশনে। চারিদিকে শুধুই পাহাড়় এবং সবুজ আর রয়েছে মিষ্টি রোদের লুকোচুরি। সবমিলিয়ে একেবারে স্বপ্নরাজ্যের অনুভূতি।
তৃতীয় দিন ছিল মুন্নারে আমাদের শেষ দিন। ওই দিন আমরা গিয়েছিলাম ইরাভিকুলোম। এই ৯৭ কিমি বিস্তৃৃত পার্কটিতে দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির পশু পাখির আবাসস্থল। এখানের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো নীলকুরিঞ্জিি ফুল। এই ফুল প্রতি ১২ বছরে একবার মাত্র আসে এবং সমগ্র্র পার্কটিকে নীল কার্পেটে মুড়িয়ে দেয়। শেষবাাাার এই ফুল দেখা গিয়েছিল ২০১৮ সালে। যদিও আমরা এই ফুল দেখার সুযোগ পাইনি।
ইরাভিকুলোম ন্যাশনাল পার্কের ভিতরে অবস্থিত আনাইমুদি শৃঙ্গ। এর সৌন্দর্য এতটাই মুগ্ধকর যেন পৃথিবীর সকল চিন্তা ও কাজ কিছুক্ষণের জন্য যেন ভুলিয়ে দেয়।
প্রকৃতির যে কত সুন্দর এর যে বৈ্চিত্র তা এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। মুন্নার ভ্রমণের স্মৃতি চিরকাল আমার মনে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।