অন্তরালে (পর্ব ৫)
অন্তরালে (পর্ব ৫)
(সমাপ্তি থেকে যেখানে ভালোবাসার সূচনা)
Wishywave Hospital :
-----------------------‐------------
প্রায় পাঁচ ঘন্টা হতে চললো অপারেশন থিয়েটারের বাইরের নীল আলোটা জ্বলছে... বাইরে আদর্শ, সংস্কার-শ্রেষ্ঠা, ওদের কাকাই দর্পণ আর সম্প্রীতি... এর মধ্যে দু'বার নার্স বেরিয়ে এসে শুধু Blood নিয়ে আসতে বলেছে- শ্রদ্ধার প্রচুর Bleeding হচ্ছে... সেটা আদর্শ শ্রদ্ধাকে হসপিটালে নিয়ে আসার সময়ই বুঝেছিল, রাস্তাতেই ওর রক্তক্ষরণের জন্য শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল... যতক্ষণ শ্রদ্ধাকে O.T.-তে নিয়ে গেছে, আদর্শ জানলার দিক থেকে বাইরের দিকে তাকিয়েই চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে... সংস্কারকে আঁকড়ে ধরে শ্রেষ্ঠা কেঁদেই চলেছে একনাগাড়ে... সংস্কারের চোখের ইশারায় সম্প্রীতি গিয়ে আদর্শের পাশে দাঁড়ায়... আদর্শ এতটাই আত্মমগ্ন ছিল যে, সম্প্রীতির উপস্থিতি অনুভব করতে পারে না সে... সম্প্রীতি আদর্শকে জড়িয়ে ধরলে আদর্শ চমকে ওঠে...
সম্প্রীতি : বড়দাভাই, এবার একটু বসবি চল...
আদর্শ সম্প্রীতিকে কাছে টেনে মাথায় ছোটোবেলার মতো কপালে চুমু খেয়ে বলে,
আদর্শ : তুই গিয়ে বোস ছুটকি... আমি এখানেই ঠিক আছি...
সম্প্রীতি : না দাভাই, তখন থেকে একনাগাড়ে দাঁড়িয়ে আছিস... চল... গিয়ে বসবি চল...
আদর্শ : (আনমনে) দেখ ছুটকি, আমি এইজন্যই নিজের সাথে কাউকে জড়াতে চাইতাম না... আজ আমার জন্য রাহী মৃত্যুর সাথে...
সম্প্রীতি : এইভাবে কেন ভাবছিস দাভাই !!! ভাব তো, রাহী ঠিক কতটা ভালোবাসে যে তোর মৃত্যুটা নিজে নিয়ে নিল... এতটাও কে ভালোবাসতে পারে বল তো !!
আদর্শ : আমাকে... আমাকে বলেছিল জানিস- আমার কাছে রয়ে যাবার কোনো কারণ আছে কি না !!! তাই কি এমন হলো ওর সাথেই !!! (আতঙ্কিত গলায়) ও... ও কি আমা... আমাকে ছেড়ে চলে যাবে বলে এত দেরী হচ্ছে অপারেশনে !!!
সম্প্রীতি : যাবার হলে ও এর মধ্যেই চলে যেত... ও তোকে ছেড়ে কোথাও যাবে না... কখনো যাবে না দেখিস... তুই এইসব চিন্তা ছেড়ে এসে বোস তো !!! আয়...
সম্প্রীতির জেদের কাছে হেরে গিয়ে আদর্শ গিয়ে চেয়ারে বসে...
শ্রেষ্ঠা : দাভাই, আমার বোনের এমনি অবস্থা কি করে হলো !!!
সংস্কার : আহহহ শ্রী !!!
শ্রেষ্ঠা : নাহহহ বাবিন... O.T.-তে আমার বোন শুয়ে আছে...
আদর্শ : ও আমার স্ত্রী হয় শ্রী... আমার... আমার এই হাতেই লুটিয়ে পড়েছিল...
শ্রেষ্ঠা : স্ত্রী হয়! স্ত্রী হয় বলেই কি এতদিন ছেড়ে চলে গিয়েছিলে !!! কোথায় চলে গিয়েছিলে দাভাই !!! যে... যেই এলে তোমার উপর গুলি চললো !!
আদর্শের চোখদুটো জ্বলে ওঠে মূহুর্তের জন্য... সত্যিই তো এই কথাটা সে এতক্ষণ ভাবতেই পারে নি, হয়তো তার মাথাটাই কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল...
আদর্শ : (অস্ফুটভাবে) তাহলে ওরা দেশে চলে এসেছে !!!
শ্রেষ্ঠা : কি বিড়বিড় করছো দাভাই !!!
আদর্শ : একটা হিসেব মেলানোর চেষ্টা করছিলাম শ্রী...
শ্রেষ্ঠা : তুমি কি এমন কাজ করো দাভাই, যে তোমার উপর গুলি চলে আর যেটা গিয়ে আমার বোনের পিঠে লাগে !!
সংস্কার : শ্রী !!! তুমি কাকে কি বলছো !!
শ্রেষ্ঠা : কেন বাবিন !!! এতগুলো মাস ধরে তো আমার বোনটাকে এই প্রশ্নটারই সম্মুখীন হতে হয়েছে... আজ আমি তোমার দাভাইকে করছি.. বলো দাভাই, কি কাজ করো তুমি !!!
এমনসময় O.T.-র নীল আলো নিভে যায়... সবাই মূহুর্তে উঠে দাঁড়ায়... সম্প্রীতি আতঙ্কে ওর বাবার হাতটা জড়িয়ে ধরে... আদর্শ ধীর পায়ে এগিয়ে যায় দরজার দিকে, এমনসময় দরজা ঠেলে বেরিয়ে আসে সার্জেন....
আদর্শ : শ্রদ্ধা কে... কেমন আছে ডক্টর !!!
ডক্টর সর্বজ্ঞ : আমরা গুলি বার করে দিয়েছি... গুলিটা এতটাই জোরে এসে বিঁধেছিল যে, ওটা পিঠে এসে লাগলে বিঁধেছিল Heart-এর খুব কাছেই... এখন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করুন যাতে Infections না হয়... নাহলে, Heart-এ...
নার্স : স্যার, গুলিটা...
ডক্টর সর্বজ্ঞ : হ্যাঁ, দেখুন এই গুলিটা বিঁধেছিল ওনার পিঠে...
আদর্শ : (মনে মনে) 14.5 × 114 mm Special Ball Cartridges... এটা তো Military Sniper Rifles-এ ব্যবহার হয়... তার মানে, আমার সন্দেহই ঠিক...
ডক্টর সর্বজ্ঞ : আমরা ওনাকে কড়া Dose-এর Anti-Biotic Injection দিয়েছি... এখন অপেক্ষা ওনার জ্ঞান ফেরার... প্রার্থনা করুন, এই Anti Biotic যেন ওনার শরীরে কাজ করে দ্রুত ওনার জ্ঞান ফিরে আসে... আমরা একটু পরেই ওনাকে ICU-তে Shift করছি...
ডক্টর এগিয়ে যেতেই আদর্শর ফোনটা Vibrate হয়ে বেজে ওঠে...
আদর্শ : (দৃঢ় স্বরে) হ্যাঁ স্যার... বলুন...
অভয়াঙ্কারা : Sorry Meghdoot... আমাকে তোমাদের ছুটি Cancel করতে হচ্ছে... আতঙ্কবাদীরা ভারতে পা দিয়ে দিয়েছে...
আদর্শ : (একইরকম স্বরে) জানি স্যার...
অভয়াঙ্কারা : কি করে !!!
আদর্শ : এসেই ওরা আমার উপর গুলি চালিয়েছে স্যার...
অভয়াঙ্কারা : (উদ্বেগের সুরে) মানে !!! কেমন আছো তুমি এখন !!!
আদর্শ : (গলাটা এবার বোধহয় একটু কেঁপে যায়) গুলিটা আমার না লেগে আমার স্ত্রীর লেগেছে স্যার...
অভয়াঙ্কারা : (আতঙ্কিত গলায়) কিইইই !!! কেমন আছে !!!
আদর্শ : অবস্থা খুব Critical...
অভয়াঙ্কারা : তুমি... তুমি ওর কাছে থাকো মেঘদূত...
আদর্শ : (আবার দৃঢ় স্বরে) আমার দেশের প্রতি ভালোবাসা সব সম্পর্কের উর্ধ্বে স্যার... আর শ্রদ্ধার ভালোবাসা সেখানে আমার শক্তি... ও কখনোই আমার দুর্বলতা হতে চাইবে না... ও সব পরিস্থিতিতে আমার পাশে থাকতে চেয়েছিলো... ভালোবাসার সাথে স্নেহ, নিঃস্বার্থতা, সহমর্মিতাবোধ জড়িয়ে থাকে... আমাদের সম্পর্কেও আছে... আর ওর সব কষ্টের দামও আমাকে নিতে হবে... আমি কালই Office Join করছি স্যার... জয় হিন্দ...
অভয়াঙ্কারা : (দ্বিধাগ্রস্থ গলায়) তুমি আরো একবার ভেবে দেখো মেঘদূত...
আদর্শ : ভাবার তো কোনই অবকাশ নেই স্যার... আমি আসছি...
অভয়াঙ্কারা : জয় হিন্দ
ICU :
---------
ICU-তে প্রবেশের অনুমতি নেই, বাধ্য হয়ে আদর্শ বিশেষ অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করে... বেডে শোয়ানো রয়েছে তার প্রেয়সীর অর্ধমৃত শরীরটা... চারিদিকে কতরকম মেশিন, নানারকম শব্দ করে চলেছে নিজের শরীরে... মাঝে শায়িত নিস্তব্ধ প্রতিক্রিয়াহীন শরীরটা, মৃত্যুর সাথে লড়াই করে চলেছে প্রতিটা মূহুর্তে... শ্রদ্ধার চ্যানেল করা হাতটা নিজের মূঠোবন্দী করে আদর্শ...
আদর্শ : জানি রাহী, তোমাকে ফেলে রেখে যেতে বাধ্য হচ্ছি... যদি ফিরে আসতে পারি, দু'জনে একসাথে আবার কাঁদব... হয়তো সেদিন তোমার মন দিয়ে, তোমার ভালোবাসা দিয়ে তুমি ঠিক বুঝে নেবে- ঠিক কতটা কষ্ট, কতটা কান্না বুকে চেপে আমি তোমাকে এইভাবে ছেড়ে যাচ্ছি... জানি, জ্ঞান ফেরার পর তুমি আমাকেই খুঁজবে... আমি চলে গেছি শুনে অভিমান করবে... কিন্তু, আমি তোমার সামনে এসে দাঁড়াতেই তুমি আমাকে তোমার বুকের ওমে আবার আগলে নেবে... সে আমি জীবিত ফিরি বা মৃত... তোমার ভালোবাসায় আমি সবসময়ই বেঁচে থাকবো... পরিস্থিতির ঘেরাটোপে প্রতি মূহুর্তে আমি জর্জরিত হচ্ছি, ক্ষতবিক্ষত হচ্ছি তোমাকে এই অবস্থায় ভালোবেসে আগলে রাখতে না পেরে... রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত, ভগ্ন হৃদয় নিয়ে অনেক ব্যাথায় তোমার থেকে আমি ক্ষণিক বিদায় নিচ্ছি... দেশমায়ের আমাকে দরকার রাহী... আমার শক্তি হয়ে, আমার ভালোবাসা হয়ে আমার পাশে থেকো, আমার অন্তরে আমার সাথে জড়িয়ে থেকো... দেশের নিরাপত্তার তরে কাউকে না কাউকে তো নিজেদের উৎসর্গ করতে হয়... আমি যে দেশমাতৃকার পায়ে উপসর্গিত রাহী... জানি, জ্ঞান ফেরার পর এক মূহুর্তে, এক লহমায় আমার নিষ্ঠুরতা তোমার বিশ্বাস, তোমার ভালোবাসাকে বিবর্ণ করে দেবে... জানি তীব্র অভিমানে মনে মনে বলবে, 'যাচ্ছ যাও... কিন্তু পদচিহ্ন রেখে যাও... যদি মনে পড়ে, তবে নয় আবার ফিরে এসো'
তবে আমি আসি রাহী... আমাকে ছেড়ে যেও না রাহী, আমাকে হারিয়ে দিও না... তোমার আদি শুধু তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবে...
কিন্তু আমি একটা মিষ্টি আশা হৃদয় মাঝে নিয়ে এই লড়াই-এ যাব- কোনো এক শুভক্ষণে আবার আমাদের দেখা হবে... গানের ছন্দে মন মাতাব, সুর মেলাব দু'জনে... হারিয়ে যাব 'শেষের কবিতা'-য়... মান, অভিমান, রাগে, অনুরাগে খুনসুটিতে আত্মার সাথে আত্মার মিলন হবে... সেই শুভমিলন শুধু একটা দিন, একটা ক্ষণের জন্য নয়- চিরন্তন হবে... সেই মূহুর্তের জন্য আমি থাকবো শুধু তোমার অপেক্ষায়, তোমার ভালোবাসার অপেক্ষায়, তোমার আদরের অপেক্ষায়, তোমার সোহা... তোমার সোহাগের অপেক্ষায়...
আঙুলগুলো একবার নড়ে ওঠে শ্রদ্ধার... আঁকড়ে ধরে আদর্শের হাত... একটা স্নিগ্ধ হাসিতে মুখটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে... আদর্শ শ্রদ্ধার কপালে অধরপরশ দিয়ে ওর হাতটা বিছানায় রেখে দরজা ঠেলে এগিয়ে যায় অজানার পথে....
Mission Azrail :
--------------------------
MDB এবং IA ভারতের নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীকে সর্তক করে দেয়, কারন পাকিস্তান থেকে ভারতে আসতে গেলে আরবসাগরের জলপথ ও স্থলপথের মাধ্যমেই আসতে হবে... IA পাঞ্জাব ও কাশ্মীরের সীমান্ত, অভয়াঙ্কারা রাজস্থানের সীমান্ত এবং MDB গুজরাটের সীমান্তের দায়িত্ব নেয়...
কিন্তু আতঙ্কবাদীদের প্রধান দলটি ভারতে আসার আগেই বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়... বাকি যে কয়েকজন আতঙ্কবাদী ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল, তাদের সঠিক অবস্থান অনুধাবন করে MDB, IA এবং ভারতের সামরিক সেনারা সন্ত্রাস ছড়ানোর আগেই শিবাজীর অতর্কিত গেরিলা রণকৌশলের মাধ্যমে হত্যা করে ফেলে....
Wishywave Hospital :
-----------------------‐------------
ডক্টর সর্বজ্ঞ : আপনারা Please আসুন... ওনার জ্ঞান ফিরছে...
সবাই একে একে শ্রদ্ধার কেবিনে ঢোকে... চোখের ভারি পাতা ঠেলে ধীরে ধীরে চোখ মেলে চায় শ্রদ্ধা... আস্তে আস্তে সবার মুখ স্পষ্ট হয়ে ওঠে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে... কেবল তার অন্তর যাকে খুঁজছিল, তাকেই দেখতে পায় না শ্রদ্ধা... ভাবে, হয়তো ওষুধ আনতে গেছে বা অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত আছে... এক্ষুনি এসে পড়বে... শ্রেষ্ঠা শ্রদ্ধার মাথার হাত রাখে...
শ্রদ্ধা : (ক্লান্ত জড়ানো স্বরে) দি... দিভাই... ও... ও কো... কোথায় !!!
নন্দিতা : (ব্যঙ্গাত্মক স্বরে) কে !! আদি !! সে তো তোমায় ছেড়ে আবার চলে গেছে... তুমি তো তেমন মেয়ে নও মা, যে নিজের স্বাম...
শ্রদ্ধা : (জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে) আহহহ... আহহহ...
শ্রেষ্ঠা : ক্কি !!! কি হলো তোর !!!
ডক্টর সর্বজ্ঞ চমকে ওঠেন Cardiac Monitor-এ Ventricular Fibrillation-এর Alarm বেজে ওঠায়... Heart Rate প্রায় 100 ছুঁই ছুঁই... Oxygen Saturation Line-ও প্রায় High Tension Line ছুঁতে চলেছে, যা খুবই কম দেখা যায়...
ডক্টর সর্বজ্ঞ : নার্স, ও Breath করতে পারছে না... Oxygen Level বাড়ান Please... আর আপনি !! আপনি কি পাগল !! এই অবস্থায় ওনাকে !!!
নন্দিতা : ভুল কি বললাম ডক্টর !!!
ডক্টর সর্বজ্ঞ : (দৃঢ়ভাবে) কিছু না.... আপনারা Please বাইরে যান... আমাদের ওনাকে Stable করতে দিন...
কিছুক্ষণ পর :
~~~~~~~~~~
ডক্টর সর্বজ্ঞ কেবিন থেকে বেরিয়ে এলে সংস্কার আর শ্রেষ্ঠা দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসে,
সংস্কার : ডক্টর !!! কেমন আছে রাহী !!!
ডক্টর সর্বজ্ঞ : আপনাদের মধ্যে যে Nominal Sense-টাই নেই, সেটা বুঝতে আমার খুব ভুল হয়ে গিয়েছিল... I'm Sorry to say, উনি কোনোভাবেই আর Respond করছেন না... মানে করতে চাইছেন না, যাকে বলে একেবারেই জীবনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন... এবার কোনো Miracle-ই ওনাকে বাঁচাতে পারে... ওনার Respond করাটা খুব দরকার, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব... নয়তো ওনার কোমায় চলে যেতে ওনার বেশি সময় লাগবে না...
ডক্টর সর্বজ্ঞ সংস্কার আর শ্রেষ্ঠাকে স্তব্ধ করে রেখে দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে চলে যায়....
The Preemptive Strike :
--------------------------------------
আতঙ্কবাদীদের নিধন করার পর সবকিছু শান্তি আর নিশ্চয়তার অধীনে আসে... ভারত সরকার 2021-এর SAARC Meeting-e মেঘদূতের Record করা পাকিস্তান আর চীন-এর কথোপকথনের ভিডিও প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরলে পাকিস্তান এবং চীনকে সাবধান করা হয়, যাতে তারা এই জাতীয় কাপুরুষতা আর না দেখায়... SAARC Meeting-এ এও বলা হয় যে- এই জাতীয় কাপুরুষতা যদি পাকিস্তান চালিয়ে যায়, তাহলে তাদের Ban করতে বাধ্য হবে SAARC... কারন, এটা যে শুধু পাকিস্তানকে প্রভাবিত করবে তা নয়... গোটা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর কালিমা লেপন করবে...
এরপর Three Masketeers- অভয়াঙ্কারা, মেঘদূত আর ইনায়েৎ-কে তাদের সাহসিকতার জন্য প্রশংসা করা হয় এবং ভারত সরকারকে তাদের সাহসিকতা ও আত্মস্বার্থ বলিদান-এর জন্য পরম বীর চক্র পুরস্কারে পুরস্কৃত করতে বলা হয়... ভারত সরকার তাতে রাজিও হয়ে যায়...
অভয়াঙ্কারা : মেঘদূত, আমাকে কি বলতে হবে তোমাকে Explain করতে !!! Please explain your 'The Preemptive Strike'....
মেঘদূত : পাকিস্তানে থাকাকালীনই ওদের রান্না করার সময় আমি ওদের রান্নায় প্রতিদিনই কিছুটা Rohypnol মিশিয়ে দিতাম... ওরা ঘুমিয়ে পড়তেই আমি ওদের Bag-এ Spy GPS লাগিয়ে দিতাম... আর তারপর ওদের কথাবার্তা শুনে সেই অনুযায়ী বেশ কিছু Bomb-এর Remote Control Change করে আমার Remote-এ Set করে দিই... সবচেয়ে বড় কথা, ওদের মিসাইল-এর Setting Change করে মিসাইল-এর ভেতর একটা Spy Camera set করে দিয়ে আমি মিসাইল-এর নতুন Remote সাথে করে আমার সাথে নিয়ে আসি... GPS set করা থাকায় ওরা নিজেদের অজান্তেই সর্বক্ষণই আমার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতেই ছিল... (হঠাৎই গলাটা যেন ধরে আসে MDB-র) শুধু যেদিন স্যার আমাদের ছুটি দিয়েছিলেন, সেই দিনটা বাদ দিয়ে...
(গলাটা একটু ঝেড়ে) ওরা ভারতের সীমান্ত অতিক্রম করার ঠিক আগেই আমি একটার পর একটা বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকি... ওরা নিজেদেরই ফাঁদা জালে নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যায়... বাকিদের ধরাটা খুব একটা কঠিন কাজ ছিল না... তবে একটু সময় লাগলো এই যা... কোনো নিরপরাধ মানুষের প্রাণ যায় নি, এটা 'ঈশ্বরের করুণা'-ই বলা যেতে পারে...
কিন্তু স্যার, এবার আমাকে বাড়ি ফিরতে হবে... (কাঁপা গলায়) আপনার কাছে কি কোনো খবর আছে, কে... কেমন আছে শ্রদ্ধা !!!
অভয়াঙ্কারা : আমি নিজেই আজ রাতে তোমার টিকিট কেটে রেখেছি... তুমি আজ রাতের Flight-এই কলকাতা রওনা দেবে মেঘদূত....
মেঘদূত : স্যার... এইটা আমার প্রশ্নের উত্তর নয়... শ্রদ্ধা কেমন আছে স্যার !!!
অভয়াঙ্কারা : She needs You, Meghdoot... ওকে Ventilation-এ...
একটা চাপা চিৎকার যেন আর্তনাদের মতো বেরিয়ে আসে মেঘদূতের গলা দিয়ে...
মেঘদূত : Ventilation !!! Ventilation কেন স্যার !!
অভয়াঙ্কারা : ও Respond করা ছেড়ে দিয়েছে মেঘদূত !!!
মেঘদূত : কিইইই !! ও কি জানতে পেরে গেছে যে আমি ওকে ছেড়ে...
অভয়াঙ্কারা : হ্যাঁ... তোমার কাকিমা সম্ভবত...
নিষ্ফল আক্রোশে টেবিলে জোরে একটা ঘুসি মেরে নিজের কপালের রগটা চেপে ধরে মেঘদূত... অভয়াঙ্কারা উঠে এসে মেঘদূতের কাঁধে হাত রাখেন...
অভয়াঙ্কারা : এটাই জীবন My Son... তুমি যাও... Flight-এর আর বেশি দেরী নেই... নীচে গাড়ি Wait করছে...
মেঘদূত চলে যেতে গিয়েও আবার ফিরে আসে...
মেঘদূত : স্যার... আমরা বাইরের শত্রুর সাথে তো মোকাবিলা করে নেব... কিন্তু, আমাদের ঘরেই কোনো শত্রু লুকিয়ে নেই তো !!! কোনো মীরজাফর !!! নয়তো আমার ফুলসজ্জার রাতে আমার ঘরে Bomb কি করে পৌছায় !!! তাও মেঘদূত-এর জন্য !!! ছুটি আপনি যেদিন আমাদের দিলেন, সেই দিনই আমার উপর Attack হলো... How !!! কথায় আছে, First Time is an Accident, Second Time is a Coincidence, and Third Time is an Enemies Action... আমাদের Intelligence Bureau-তেই কেউ নেই তো, যে দেশের নিরাপত্তাকে নিলামে তুলছে !!!
অভয়াঙ্কারা : কথাটা আমার আর ইনায়েৎ-এর মাথাতেও এসেছে মেঘদূত... কিন্তু, তুমি এখন বাড়ি যাও... সেটা আরো গুরুত্বপূর্ণ....
গাড়িতে ওঠে মেঘদূত... বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি, মেঘদূতের গাড়ির কাচের ছিটে পড়ছে... মেঘদূত হাতে ধরা Beer-এর Can-এ আলতো চুমুক দিচ্ছে... গাড়িতে হাল্কা নীল আলো জ্বলছে... ড্রাইভার FM-টা চালিয়ে দেয়... বেজে ওঠে,
ছোট ছোট দিন আলাপে রঙিন নুড়ির মতন
ছোট ছোট রাত চেনা মৌতাত পলাশের বন
আহা অগোছালো ঘর খড়কুটোময় চিলেকোঠা কোণ
আহা-হা-আ-হা-হা...
কথা ছিল হেঁটে যাব ছায়াপথ
আজো আছে গোপন- ফেরারি মন
বেজে গেছে কখন- সে টেলিফোন !!
কিছু-মিছু রাত পিছু পিছুটান অবিকল
আলো আলো রঙ জমকালো চাঁদ ঝলমল
আজো আছে গোপন- ফেরারি মন
বেজে গেছে কখন- সে টেলিফোন !!
Wishywave Hospital :
-----------------------‐------------
যখন গোটা দেশের প্রায় 20টা ভারতীয় TV Channel FIB এবং RAW-এর অপরিসীম আত্মত্যাগ, সমুহ বিপদকে তুচ্ছ করে তাদের সাহসিকতার সাথে গোপন তদন্ত নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত... ঠিক তখনই ICU ঘসা কাঁচ দিয়ে ভেতরে তাকায় এক জোড়া সিক্ত চোখ... ভেতরের বেড-এ একটু Oxygen নেবার জন্য কাতরাচ্ছে তার খুব কাছের মানুষটা, কিন্তু তার কাছে ICU-তে প্রবেশের অনুমতি নেই... একজন নার্স বেরিয়ে আসতেই ছুটে যায় সে,
নেপথ্যে : নার্স... নার্স... Please... আমাকে একটিবারের জন্য ভেতরে যেতে দিন... শুধুমাত্র একটিবার...
নার্স : দেখুন, আপনাকে তখন থেকে বলছি- আপনি কেন বুঝতে পারছেন না !! ভেতরে যাবার অনুম...
এবার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে মানুষটার... কোমর থেকে পিস্তল বার করে সোজা নার্সের কপালে ঠেকায়...
নেপথ্যে : (ধমকের সুরে) আমি সব বুঝতে পারছি... কিন্তু আমাকে যে ওর কাছে যেতেই হবে... আমার উপর অভিমান করে ও এইভাবে আমাকে ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে যাবে, সেটা আমি হতে দিতে পারব না... চলুন... আপনিই আমাকে ওর কাছে নিয়ে যাবেন... চলুন...
নার্সের কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে সে পৌছে যায় তার কাছের মানুষটার কাছে... নার্সকে ছেড়ে দিয়ে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেয় তার দুর্ব্যবহারের জন্য...
নেপথ্যে : আম... আমাকে ক্ষমা করবেন... আমি বাধ্য হয়েছি আপনার সাথে দুর্ব্যবহার করার জন্য... কিন্তু, আমাকে ওর কাছে আসতেই হতো... যদি সম্ভব হয়, ক্ষমা করবেন...
তারপর কাছের মানুষটার কপালে হাত রাখে... মূহুর্তের জন্য যেন থমকে যায় তার ভালোবাসা... তার ক্ষতবিক্ষত হাতটা ধরে তাতে আলতো চুম্বন করে মানুষটা... নার্স দেখে তাদের পেশেন্ট ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে... মনিটরের সব Reading তখন Normal-এর দিকে... একেই কি বলে 'মিরাকল' !!! না কি 'ভালোবাসার জোর' !!! ডাক্তারবাবু একটু দূর থেকে সবটাই দেখলেন... উনি নার্সকে ইশারায় ওখান থেকে সরে আসতে বলেন... সকালের রোদ্দুর এসে দেখে একটাই বালিশে পাশাপাশি মাথা রেখে একজোড়া ভালোবাসার মানুষ ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে আছে- তাদের একজন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে, অপরজন তার হাতের উপর হাত রেখে তার পাশের টুলে বসে তার মাথা পাশে মাথা রেখে... মিষ্টি হেসে রোদ্দুর তার তেজটা কমিয়ে নেয় যাতে ওদের ঘুম না ভাঙে....

