Ushri Chatterjee Bandyopadhyay

Romance Action Thriller

4  

Ushri Chatterjee Bandyopadhyay

Romance Action Thriller

অন্তরালে (পর্ব ৪)

অন্তরালে (পর্ব ৪)

15 mins
368


(সমাপ্তি থেকে যেখানে ভালোবাসার সূচনা)


Mission Azrail, the Untold Story :

-----------------------------------------------------

IA : ক্যায়সা লাগ রাহা হে ভাই, অপনা বচপন কা প্যার কো আপনা বানাকে !!!

(ভাই, নিজের ছোট্টবেলার ভালোবাসাকে আপন করে পেয়ে তোমার কেমন লাগছে !!)

MDB : ম্যায় নে কভি ভি উসে আপনা বানানা নেহি চাহতা থা... হামারে জিন্দেগী কা ক্যা ভরোসা হে বোল... ওহ বহুত নাজুক হে... অগর মুঝে কুছ হো যায়েগা না, তো ওহ খুদ কো খতম কর দেগি... সমহল নেহি পায়েগি ওহ... প্যার ওহ ভি মুঝকো বচপন সে হি করতি হে, পর হালাত কুছ অ্যায়সা থা কি ওহ কুছ Feel নেহি কর পায়া...

(আমি কখনোই ওকে আপন করে, নিজের করে পেতে চাই নি... আমাদের জীবনের কি ভরসা আছে বলো !! ও খুব কোমলপ্রাণা... যদি আমার কিছু হয়ে যায় না, ও নিজেকে শেষ করে দেবে... ও নিজেকে সামলাতে পারবে না... ও নিজেও আমাকে ছোটো থেকেই ভালোবাসে, কিন্তু ওর পরিস্থিতি এমন ছিল যে, ও সেটা অনুভব করতে পারে নি)

IA : তু নে তো উসে কুছ বাতায়া নেহি, ফির শাদি ক্যায়সে হুয়া !!

(তুমি তো ওকে কিছুই বলো নি, তাহলে তোমাদের বিয়ে কি করে হলো !!)

MDB : তুঝে ওহ Women & Child Trafficking ওয়ালা কেস ইয়াদ হে... উস মে ওহ নীলাভ ভট্ট কো ইয়াদ হে, যো ভাগ গয়া থা- উস কে সাথ শাদি তয় হুয়া থা... অউর ইয়ে শাদি মে কিসি ভি হাল পে নেহি হো দে সকতা থা ...

(তোমার ওই Women & Child Trafficking-এর Case টার কথা মনে আছে !!! ওই কেস-এর নীলাভ ভট্ট-কে মনে পড়ে তোমার !!! ও তো পালিয়ে গিয়েছিল... ওই নীলাভ-র সাথেই বিয়ে ঠিক হয়েছিল ওর... আর এই বিয়েটা আমি কোনোভাবেই হতে দিতে পারতাম না...)

IA : ফির !!! (তারপর)

MDB : শাদি কে মণ্ডপ সে উসে Arrest কিয়া ম্যায়নে... পর সারা ইলজাম উস লড়কি কো দিয়া গিয়া, উসকে লিয়ে ইয়ে শাদি নেহি হুয়া... অউর মুঝে উসকা হাত থামনা পরা...

(বিয়ের মণ্ডপ থেকে আমি ওকে Arrest করি... কিন্তু সব দোষ গিয়ে পড়ে ওই মেয়েটার ওপর, যে ওর কারণেই এই বিয়েটা সম্পন্ন হলো না... তাই সেই মূহুর্তেই আমাকে ওর হাতটা সারাজীবনের জন্য ওর হাতটা ধরতে হলো)

IA : পর তুনে উসে বাতায়া কিউ নেহি কে তু উসে প্যার করতা হে...

(কিন্তু তুমি ওকে বললে না কেন যে, তুমি ওকে ভালোবাসো !!)

MDB : তু তো মুঝে জানতা হে না !!! ম্যায় বোল নেহি সকতা... ম্যায় সির্ফ উসে দূর সে হি প্যার কর সকতা হু...

(তুমি তো আমাকে জানো, তাই না !!! আমি ওকে কখনোই বলতে পারব না... আমি শুধু দূর থেকেই নীরবে ভালোবাসতে পারি...)

IA : মিশন পে যানে কে পহেলে একবার উসসে বাত করলে...

(মিশনে যাবার আগে একবার ওর সাথে কথা তো বলে নাও...)

MDB : নেহি... মুঝে মিশন পে Concentration করনা হে... Best Of Luck Yaar... আপনা খেয়াল রাখনা...

(নাহহহ... আমি এখন মিশনেই আমার সমস্ত মনোযোগ দিতে চাই... Best Of Luck... নিজের খেয়াল রেখো...)

IA : তু ভি আপনা খেয়াল রাখনা- আপনে লিয়ে ভি, মেরে লিয়ে ভি, অউর ভাবিকে লিয়ে ভি...

(তুমিও নিজের খেয়াল রেখো- নিজের জন্য, আমার জন্যও.... আর বৌদিভাই-এর জন্যও)

MDB : JAI HIND

IA : JAI HIND

IA ভারত থেকে তার কাজ শুরু করে, অন্যদিকে MDB একটা ছোট্ট টিফিন বাটিকে বুকে আগলে দু'দিন ধরে সিন্ধু নদ সাঁতরে Gilgit-Baltusthan Border-এ পৌছায়... সেখান থেকে পাকিস্তানের মূল ভূখন্ডে পৌছাতে তার আরো দু'দিন সময় লাগে... পাকিস্তানের মূল ভূখন্ডে, বিশেষতঃ ইসলামাবাদে পৌছানোর আগে MDB নিজেকে ছদ্মবেশে আবৃত করে নেয়... ঘন দাঁড়ি, গোফে ঢাকা এবং তার সাথে Achkan, WaistCoat, জিন্না টুপি পরিহিত MDB ইনায়েৎ-এর কাছ থেকে শেখা উর্দু ভাষায় অনর্গল কথা বলতে বলতে ইসলামাবাদ পৌছায়...

দু'মাস ধরে ইসলামাবাদ বাজারে জেলে হিসেবে কাজ শুরু করে MDB, যাতে পাকিস্তান-আফগানিস্থান সীমান্তের আতঙ্কবাদী কার্যকলাপের উপর তার প্রতি মূহুর্তে তীক্ষ্ণ নজর থাকে... এদিকে, IA MDB-কে আল-জিহাদিস-লস্কর আর তৈবা-উম্মাহ-জিহাদিহ-এর লইলাত-অল-মিরাজ উৎসব উপলক্ষে গুজরাটের ঘোগা মসজিদ, তামিলনাড়ুর কিলাকরাইতে পুরনো জুম্মা মসজিদ, আসামের পানবাড়ি মসজিদ এবং মধ্য কলকাতার পোস্তাতে নাখোদা মসজিদে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করে... এর সাথে IA MDB-কে যত দ্রুত সম্ভব পাকিস্তানের আতঙ্কবাদী কার্যকলাপের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সম্পর্ক সংগ্রহ করতে বলে কারণ সেই বিস্ফোরণের সম্ভাব্য তারিখ তারা ইতিমধ্যেই স্থির করে নিয়েছে যা হলো লইলাত-অল-মিরাজ উৎসবের দিন এবং তা হলো- বৃহস্পতিবার, ১১ই মার্চ ২০২১...

কলকাতা :

----------------

এই দু'মাস শ্রদ্ধা নিজেকে কঠোর অধ্যয়ণ, সঙ্গীত সাধনা আর পরিবারের কাজের মধ্যেই আবদ্ধ রাখে... সে চেষ্টা করতে থাকে যাতে আদর্শের জন্য উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা করার জন্য কোনো মূহুর্ত তার কাছে অবশিষ্ট না থাকে... কিন্তু, সে আদর্শকে এক মূহুর্তের জন্যও ভুলতে পারে না... তার মন নিরন্তর গোপালের কাছে আদর্শকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রার্থনা করে যায়... এদিকে পরিবারের সকল সদস্যরা সবকিছুতেই ধীরে ধীরে শ্রদ্ধার উপর নির্ভরশীল হতে শুরু করে... এমনকি বিপত্নীক দিব্য ব্যানার্জিরও এখন শ্রদ্ধাকে ছাড়া এক মূহুর্ত চলে না... তার হাতের সামনে সবকিছু গুছিয়ে রাখা থেকে শুরু করে সব ওষুধ খাওয়া- সব কিছুতেই তিনি এখন শ্রদ্ধার উপরই নির্ভরশীল...

কিন্তু, শ্রেষ্ঠার চোখ এড়ায় না যে তার বোনের গলা দিয়ে কোনো খাবার ঠিক করে নামে না... মুখে উদ্বেগের ঘন কালো মেঘ, আর চোখের তলায় দুশ্চিন্তার কালো কালি... শ্রেষ্ঠা শ্রদ্ধার শরীর নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত এবং সংস্কার গোপনে আদর্শের বিভিন্ন জায়গায় খবর নিয়েও কোনো খবর পায় নি.... এদিকে নন্দিতার শ্রদ্ধার প্রতি অত্যাচার ক্রমশই বেড়ে চলেছে, সংসারের সব দায়িত্ব সে শ্রদ্ধার উপর চাপিয়ে তার সব শক্তি শ্রদ্ধাকে শ্রদ্ধার অপরাধ স্মরণ করাতেই অপচয় করতে থাকে... কারুর আপত্তিতেই কোনো লাভ হয় নি... কারণ, আদর্শের উপর তীব্র অভিমানে শ্রদ্ধা সব অত্যাচারই নীরবে মুখ বুজে মেনে নিচ্ছে... আসলে আজ-ও বাংলাতে সব দোষ সবসময়ই মেয়েদের উপরই এসে পড়ে... যে মেয়ের বিয়ে প্রায় ভেঙ্গে যাচ্ছিল, যার বর বৌভাতের পরের দিন মাসের পর মাস নিখোঁজ হয়ে যায়, যে মেয়ের যোগ্যতা থাকে না নিজের বরকে ধরে রাখার- সেই মেয়েকে যে কোন অকথ্য কথনের মধ্যে দিয়ে প্রতিনিয়ত যেতে হয়, তা হয়তো বলার অপেক্ষা রাখে না... আসলে শ্রদ্ধা নিজেও জানে না, বিয়ের পর না চাইতেও মেয়েদের মধ্যেই কিছু পরিবর্তন এসে যায়... একটা মানুষ, ওই একটা মানুষকে ঘিরে তাদের সব চিন্তা-দুশ্চিন্তা, অনুভব-অনুভূতি সবকিছু আবর্তিত হতে থাকে...

কিন্তু কথায় বলে মানুষের জীবনে শান্তির অভাব সর্বদাই রয়ে গেছে... কোনো মানুষের পক্ষেই নির্বিঘ্নে, নিশ্চিন্তে সারাটা জীবন কাটানো সম্ভব হয়ে ওঠে না... তার কারণ আকাঙ্খা... উদ্দাম আকাঙ্খা, অভরসা আকাঙ্খা, নির্লজ্জ আকাঙ্খার যেন অন্ত নেই মানুষের... প্রত্যেকটা মানুষ অর্থলোভী, ক্ষমতালিপ্সু, মিথ্যেবাদী, স্বার্থপর হয়ে উঠছে ক্রমাগত... কেউ কম, কেউ বেশি, আবার কেউ অতি বেশি... কেউ কারুর পরোয়া করে না, কেউ কারুর জন্য নয়... কে কাকে কতটা নীচু দেখাতে পারে, তারই যেন সর্বত্র প্রতিযোগিতা চলছে... ভালোবাসা নিজেই আর মানুষের মনে বাসা বাঁধতে পারছে না, অজান্তেই মানুষের মনে বাসা বেঁধেছে ছল, কপট, স্বার্থ... এমনই এক পরিস্থিতিতে আদর্শের ভালোবাসা অনুভব করার আগেই আদর্শের থেকে দূরে সরে যেতে থাকে শ্রদ্ধা...

Mission Azrail, the Untold Story :

-----------------------------------------------------

MDB ইনায়েৎ-এর তথ্য অনুযায়ী নিজের তদন্তের কাজ ত্বরান্বিত করতে থাকে এবং করাচির নিকটস্থ দ্বীপগুলো থেকে যতটা সম্ভব এই আতঙ্কবাদী আক্রমণ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে... MDB যখন এই অঞ্চলের নিকটস্থ দ্বীপগুলোর উপর পড়াশোনা আর গবেষণা শুরু করেছিল, তখন এখানের দুটো আতঙ্কবাদী শাখা তৈবা-উম্মাহ-লস্কর আর আল-জিহাদিস-লস্কর সম্পর্কে জানতে পারে... এই অঞ্চলগুলো অস্ত্র তৈরি করার প্রায় প্রাণকেন্দ্রই বলা চলে... MDB তার ব্রিগেডিয়ার অভয়াঙ্কারাকে ফোন করে সব তথ্য দেয়,

MDB : স্যার, এই অস্ত্র কারখানার ভেতরে ঢুকতে গেলে আমাকে কোনো একজন Security Guard-কে হত্যা করে তার পরিচয়ে ওই চক্রব্যূহে ঢুকতে হবে....

অভয়াঙ্কারা : না মেঘদূত, কোনোরকম হটকারিতা করা এই মূহুর্তে ঠিক হবে না... প্রথমতঃ, আমরা আতঙ্কবাদী সংগঠনের সব গোপন তথ্য জেনে উঠতে পারি নি... দ্বিতীয়ত, কেউ একজন তোমার পথ চেয়ে বসে আছে মেঘদূত... আমার দায়িত্ব তোমাকে তার কাছে ফেরত পাঠানো... তাই প্রথমে তোমাকে ওদের পরিকল্পনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত হতে হবে এবং তারপরে ওদের পরিকল্পনাকে আমাদের নিষ্কাশিত করতে হবে... জয় হিন্দ মেঘদূত....

MDB : JAI HIND Sir...

ব্রিগেডিয়ার-এর পরিকল্পনা অনুযায়ী মাছ বিক্রি করার অজুহাতে দ্বীপের আতঙ্কবাদী সংগঠনের সাথে নিজের আত্মীয়তা বাড়াতে শুরু করে... সেখানে সে জানতে পারে, এই দলগুলির আলাস্কান শালমন নামক মাছ ভীষন প্রিয়... এরপর MDB এই দলগুলিকে ইনায়েৎ-এর কাছ থেকে শেখা সুস্বাদু বিরিয়ানি ও মাছের কাবাব রান্না করে খাইয়ে তাদের আস্থা অর্জন করে... MDB-এর ব্যবহার ও রন্ধনশৈলিতে মুগ্ধ আতঙ্কবাদী দলগুলি করাচি সমুদ্র থেকে তাকে আলাস্কান শালমন মাছ কিনে এনে তাদের জন্য রান্না করতে বলে...

MDB ব্রিগেডিয়ারকে তার প্রতি পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করতে থাকে এবং ব্রিগেডিয়ার MDB এই চাতুরতায় এবং প্রতারণামূলক পরিকল্পনার ভূয়সী প্রশংসা করেন... পরে তিনি MDB-কে যত দ্রুত সম্ভব এই আতঙ্কবাদীদের সম্পর্কে সব তথ্য আহরণ করতে বলে কারণ আতঙ্কবাদীদের আতঙ্কবাদী কার্যকলাপের দিন প্রায় আসন্ন...

মহেশ যখন করাচির দ্বীপে মাছ আহরণ করতে যায়, তখন সে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে চিন-চাং-চু কে সেখানে আসতে দেখে... সে তার গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে চিন-চাং-চু আর আতঙ্কবাদীদের গোপন কথোপকথনের ভিডিও রেকর্ড করে যাতে তারা S 400 মিসাইলের মাধ্যমে ভারতকে ধ্বংস করে দেবার পরিকল্পনা করতে থাকে... এই ভিডিও MDB তথা ভারতের Force Intelligence Bureau-কে (FIB) অভিঘানিত করে রেখে দেয়...

Chin-Chang-Chu : Are you all ready to destroy India on the Eve of Lailat-al-Miraj !!!!

Terrorist : إنشا شى الله... (Insha Allah)... the Weapon are almost ready... We will wipe out India from the Map...

Chin-Chang-Chu : We are going to be erased off India from the Map... Cheers 🥂...

এরপর আতঙ্কবাদীরা চিন-চাং-চু কে বেশকিছু জায়গা দেখায় যেখানে তারা ভারত এবং পাকিস্তানের বেশকিছু মুসলিম তরুণদের মগজ ধোলাই করার জন্য বেশ কিছু বছর ধরে রেখে দেয় এবং সেই সংক্রান্ত সব খরচ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগ তথা পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত হয়... এই দলগুলি তাদের দেশে Sleeper Cell হিসেবে পরিগণিত হয়, যাকে সেই দেশে 'জিহাদিস' বলে... MDB খাবার পরিবেশন করার অজুহাতে তার গোপন ক্যামেরাতে সব কিছু ভিডিও করতে থাকে... 

MDB তার সব সংগৃহীত তথ্য ও ভিডিও ব্রিগেডিয়ার ও IA-কে পাঠিয়ে দেয়, যা দেখে তারা উভয়েই দেশের নিরাপত্তা নিয়ে উৎকন্ঠিত হয়ে পড়ে...

MDB : স্যার, আমার মনে হয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্ত তথ্য আমাদের সরকারের হাতে তুলে দেওয়া উচিত...

IA : হ্যাঁ স্যার, ওরা আতঙ্কবাদী হামলার এমন দিনক্ষণ ঠিক করেছে যে, আক্রমণের পর পরেই দেশে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লেগে যেতে পারে...

MDB : স্যার, এটা শুধু আমাদের দেশের নিরাপত্তা নয়, সৌভ্রাতৃত্বের উপর আসন্ন অমঙ্গলের সঙ্কেত...

IA : হ্যাঁ স্যার, আমি মেঘদূতের সাথে একমত...

অভয়াঙ্কারা : মেঘদূত, ইনায়ৎ আমি তোমাদের দু'জনের সঙ্গেই একমত... আমি কালই দিল্লী যাচ্ছি... মেঘদূত, আমি এবার তোমাকে আদেশ করছি, এবার আতঙ্কবাদীদের ওই দ্বীপগুলো থেকে নিষ্কাশন করা শুরু করে দাও... আমরা আমাদের দেশের আর সৌভ্রাতৃত্বকে কোনোভাবেই কোনো আঁচড় লাগতে দেব না... জয় হিন্দ...

MDB & IA : JAI HIND


(সমাপ্তি থেকে যেখানে ভালোবাসার সূচনা)

(রচনা : উশ্রী ও তিতির

শুধুমাত্র প্রাপ্তমনস্কদের জন্য)

Mission Azrail :

--------------------------

ব্রিগেডিয়ার-এর আদেশ অনুযায়ী কাজ করতে গেলে MDB-কে একজন আতঙ্কবাদী জানায়,

আতঙ্কবাদী : এইবার ভারতকে ওই FIB, RAW, আর Defense Force-এর ত্রিশক্তি মিলেও বাঁচাতে পারবে না... আমাদের মিসাইল আমাদের অন্য এক আতঙ্কবাদী দলের কাছে সুরক্ষিত আছে... এবার শুধু দিওয়ালী হবার অপেক্ষা...

MDB : JAI HIND...

আতঙ্কবাদী : ক্কি !!! কি বললে তুমি !!! 'জয় হিন্দ' !!! তুমি ভারতীয় !!! Undercover Defence Force !!!

MDB : এই দুটো শব্দের ঠিক কতটা শক্তি তোরা জানিস !!! ছোটো থেকে আমদের শেখানো হয় -

আমরা তোমার শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে,

তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে লড়তে জানি...

আমরা কখনো কারুর ক্ষতি করি না, কিন্তু আমাদের মায়ের দিকে কেউ কু-দৃষ্টি দিলে, তার নিরাপত্তার বিঘ্নিত করতে চাইলে আমরা আকাশ থেকেও বজ্রের মতো ঝরে পড়তে আমাদের তিলমাত্র সময় লাগে না...

কথা বলতে না বলতেই MDB যেন কালভৈরবের রূপ নিয়ে আতঙ্কবাদীর দিকে এগোতে থাকে... আতঙ্কবাদীটি তাকে আক্রমণ করতে গেলে কুস্তির এক তীক্ষ্ণ শৈলীতে তাকে ধরাশায়ী করে তার বুকে ছুরি বিঁধে দিয়ে তাকে হত্যা করে...

MDB যেন মহাকালরূপী রুদ্র সংহারকার-এর রূপ নেয়, বেদে যে রুদ্রের রূপ বর্ণিত আছে- মর্তে ভয়ঙ্কর বৃষের মতো, আর আকাশে লোহিত বরাহের মতো... সে বিষাণ আর ডমরু বাজিয়ে ভারত মায়ের নিরাপত্তা লঙ্ঘণকারীদের মহাপ্রলয়রূপী ধ্বংসের সূচনা করে... দুই হাতে তার ত্রিশূল আর পিনাক (মহাদেবের ধনুক) তথা বিশ্ব ধ্বংসকারী পশুপাত অস্ত্র... ব্রহ্মা, বিষ্ণু মহেশ্বর-এর ত্রিশক্তির দরকার নেই- একা রুদ্রই গোটা পাকিস্তান জুড়ে তান্ডব শুরু করে...

একের পর এক আতঙ্কবাদীদের বুদ্ধিমত্তার সাথে হত্যা করতে করতে এবার MDB ছদ্মবেশে অস্ত্র কারখানায় প্রবেশ করে, যেখান থেকে সে বেশ কিছু PETN Bomb (Penta Erythritol Tetra Nitrate) সংগ্রহ করে নিয়ে দ্রুততার সাথে গোটা অস্ত্র কারখানা এবং সেই অস্ত্র তৈরির দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় সেই বিস্ফোরক লাগিয়ে দেয়... MDB সেই দ্বীপ থেকে সমুদ্র ঝাঁপ দেবার ক্ষণিক পরেই সেই দ্বীপ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে...

নিজের কাজ শেষ করার পর পাকিস্তানে এরপর আর থাকা নিরাপদ নয় বুঝতে পেরে MDB সেই দেশ থেকে নিজের মাতৃভূমিতে ফেরার পরিকল্পনা করে... কিন্তু, তার পূর্বেই পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর Intelligence Bureau তাকে সনাক্ত করে ফেলে, কারণ তাদের CCTV Footage-এ ধরা পড়ে MDB মাত্র 30 Second-এর মধ্যেই গোটা অস্ত্র কারখানা সহ দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় Bomb plant করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়... তারা ক্ষুধার্ত শ্বাপদের মতো MDB-কে খুঁজতে থাকে... কিছু সামরিক বাহিনী MDB-কে তাড়া করলেও সে সুকৌশলে তাদের থেকে আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করে পালাতে সক্ষম হয় এবং চার দিন ব্যাপী সিন্ধু নদ সাঁতরে কাশ্মীরের তাদের FIB Office-এ এসে পৌঁছায়...

অভয়াঙ্কারা ইনায়েৎ এবং মেঘদূতকে এক সপ্তাহের জন্য বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে বলেন... কারণ তিনি বোঝেন তাদের দু'জনেরই একটু বিশ্রামের এবং পরিবারের মানুষদের সান্নিধ্যের খুব দরকার... অপরদিকে ISI প্রধান সিদ্ধান্ত নেন যে, ভারতে তাদের Mission Azrail শুরু হবার আগেই যেন মেঘদূতের জীবনদীপ নির্বাপিত হয়, কারন মেঘদূত বেঁচে থাকলে তারা ভারতের গায়ে আঁচড়টুকুও কাটতে পারবে না...

কলকাতা :

-----------------

আঁধার গগন পৃথ্বী পদচিহ্ন নীল,

কৃষ্ণ বিনা রাধার জীবন পরিচয়হীন...

আমি প্রভু দীন বটি, তুমি প্রভু ধনী,

দেবতার অংশ বলে করে গেলে ঋণী...

রাধা কহে, সখী আমার দুখের নাহি ওর,

ভরা ভাদর দিনে আজি শূণ্য মন্দির মোর...

                                         (রচয়িতা : সুপর্ণা ঘোষ)

ভোরবেলা সবে পুজো সেরে শ্রদ্ধা ঠাকুর প্রণাম করছে, এমনসময় কলিং বেলের আওয়াজ ওঠে... দৌড়ে গিয়ে দরজাটা খুলতেই চোখের সামনে আদর্শকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ক্ষণিকের জন্য স্তম্ভিত হয়ে যায় শ্রদ্ধা... অন্যপ্রান্তও কোনো কথা বলতে পারছে না, কেবল নিষ্পলক চোখে শ্রদ্ধার মুখের দিকে তাকিয়ে, মনে হলো যেন গতজন্মের ওপার থেকে ছলকে উঠলো স্মৃতির তরঙ্গ... কিন্তু চোখের সামনে কাকে দেখছে আদর্শ !!! এই কি তার শ্রদ্ধা !!! চোখের, মুখে যেন কালির প্রলেপ পড়েছে !!! এতটা রোগা হয়ে গেছে মেয়েটা এই ক'মাসে !!! একদমই কি নিজের যত্ন করে নি, না কি !!!

হঠাৎই চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আদর্শ অস্পষ্ট হয়ে যায় শ্রদ্ধার চোখে... আদর্শ শক্ত করে ধরে না ফেললে হয়তো লুটিয়ে মাটিতে পড়ে যেত... কিন্তু পর মূহুর্তেই নিজেকে সামলে আদর্শের বাঁধন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয় শ্রদ্ধা...

শ্রদ্ধা : এত... এতদিন পর !!!

আদর্শ : ঘরে আসতে বলবে না রাহী !!!!

শ্রদ্ধা : আপ... আপনি আপনার ঘরে আসবেন আদর্শ বাবু, সেখানে আমি বলার কে !!!

আদর্শ : (বিস্মিত স্বরে) রাহীইইইই !!! কি বলছো কি তুমি !!!

শ্রদ্ধা : আমি সবাইকে খবর দিচ্ছি... আপনি আপনার ঘরে যান...

আদর্শের চোখের সামনে থেকে সরে গিয়ে গোপালের পায়ের কাছে আছড়ে পড়ে শ্রদ্ধা... সেই ঘরে ঠাম্মি এখন ঘুমের ওষুধ খেয়ে অঘোরে ঘুমাচ্ছে, তাই সে কিছুই জানতে পারে না... গোপালের পায়ে মাথা রেখে শ্রদ্ধা তার এতদিনের অভিমান, যন্ত্রণা চোখের জলে ভাসিয়ে দিতে থাকে... সারাদিনের পর আদর্শের তৃষিত হৃদয় রাতে অভিমানিনীর দেখা পায়... সারাদিনে একবারের জন্যও সে আদর্শের কাছে আসে নি... এমন কি খাবার সময়ও তার দিদি শ্রেষ্ঠাকে এগিয়ে দিয়ে নিজেকে রান্নাঘরেই আবদ্ধ করে রেখেছিল... আদর্শ তার নীরব তীব্র অভিমানের ঠিকই অনুভব করেছিল, কিন্তু মানভঞ্জনের সুযোগ পায় নি... রাতে অবশেষে সেই সুযোগ এলো... শ্রদ্ধা এসে পুবের জানলাটা খুলতেই এক আকাশ ভর্তি জোছনা এসে পড়ল আদর্শের বিছানায়... সেই জোছনায় যেন স্নান করছে শ্রদ্ধা... একঢাল ভিজে চুল এলিয়ে জানলা দিয়ে চাঁদ দেখতে থাকা শ্রদ্ধার কাঁধে আলতো করে হাত রাখে আদর্শ... অন্তরের অজস্র ধারাবর্ষনের মধ্যেই আদর্শ পাশে এসে দাঁড়াতেই শ্রদ্ধার সব ইন্দ্রিয় সজাগ হয়ে ওঠে... এই ক'মাসে আদর্শের অদর্শনে শ্রদ্ধার মনের চোরাকুঠুরিরে অভিমানের সাথে সাথে আস্তে আস্তে একটা অন্যরকম অজানা অনুভূতি তৈরি হয়েছিল, একটা গা ছমছমে অনুভূতি.... আদর্শ তার আত্মার অংশ হয়ে উঠেছে, আজ তাকে অদেয় শ্রদ্ধার কাছে কিছুই নেই... কিন্তু, কাঙ্খিত পুরুষের প্রথম স্পর্শ কেমন হয়, সেই মুহূর্তেই প্রথম জানলো শ্রদ্ধা... একটা শিহরণ খেলে গেল তার সারা শরীরে... আজ যেন সে প্রতিমূহুর্তে আদর্শের সঙ্গ কামনা করছে, কিন্তু তীব্র অভিমান !!! যদিও অভিমানের উপর অনুরাগের পলি ধীরে ধীরে পড়তে শুরু করে দিয়েছে... আজ সারাদিন শ্রদ্ধা যেন নিজের থেকে নিজেই পালিয়ে বেড়িয়েছে, বারংবার অসাড় হয়ে যাচ্ছিল তার সব অনুভূতি...

আদর্শ : রাগ করেছো আমার উপর !!! রাহী !!!

শ্রদ্ধা : রাগ করার আমি কে হই !!! আপনি আমাকে বিয়ে করে উদ্ধার করেছেন, আর আমি আপনার রাগ করলে তো আমি অকৃত...

আদর্শ : ফের ওই কথা !! তুমি কি বোঝো না, তুমি আমার পাঁকের পদ্ম !!!

শ্রদ্ধা : তাই বোধহয় আমাকে কাছে রাখতে চান না !!! সুখে দুঃখে পাশে চান না !!! (আদর্শের পাঞ্জাবি আঁকড়ে ধরে) কেন বিয়ে করেছিলেন আমাকে বলুন !!! কেন !! দয়া করার জন্য তো !!

শ্রদ্ধা এমনভাবে আদর্শের বুকের পাঞ্জাবিটা আঁকড়ে ধরে যেন ছাড়লেই এক্ষুনি হারিয়ে ফেলবে আদর্শকে... আদর্শের বুকের পাঞ্জাবিতে যেন একরাশ বসন্ত এসে ছুঁয়ে আছে...

শ্রদ্ধা : (বুজতে থাকা গলায় খুব কষ্টে বলে) তুমি চাইলে আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাব আদি... কিন্তু, তুমি নিজের বাড়ি ছেড়ে দূরে চলে যেও না... আমার অন্তিম অনুরোধ বলতে পারো...

আদর্শ : তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে রাহী !!!

শ্রদ্ধা : রয়ে যাবার কোনো কারণ তো রাখো নি... এমনিতেই সবার অবহেলার বহরে প্রতিদিন ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাচ্ছি.... তার উপর তোমার দয়া আর করুণায় জড়ানো অবহেলাগুলো ভীষণরকম যন্ত্রণা দেয়... কথা দিচ্ছি কোনো অনুতন জীর্ণতা তোমার তরে থাকবে না...

আদর্শ তার হাত দিয়ে টেনে খাটের কাছে নিয়ে আসতে গেলে দু'জনেই অসাবধানতাবশতঃ সামঞ্জস্যতা হারিয়ে খাটের উপর পরে যায়... শ্রদ্ধার যাতে আঘাত না লাগে, আদর্শ তাকে আগলাতে গিয়ে শ্রদ্ধাকে প্রায় তার পুরুষালী বুকের উপর এনে ফেলে... আদর্শকে নীরব থাকতে দেখে শ্রদ্ধা তার আরো বুকের কাছে ঘেষে আসলে আদর্শের প্রতিটা লোমকূপে শিহরণ জেগে ওঠে....

আদর্শ : জানি তোমার খুব অভিমান হয়েছে, কিন্তু আজ তোমার কোলে মাথা রেখে আমায় একটু ঘুমাতে দেবে রাহী !!! একটু চুলে বিলি কেটে দেবে !!! (শ্রদ্ধার কাঁধে মাথা রেখে) Please রাহী... একটু থাকতে দেবে আমায় তোমার কাছে... আমার ছেলেমানুষীগুলোকে একটু আগলে রাখবে !!! সময়কে হারিয়ে আমায় এনে দেবে অপূর্ণ ভালোবাসার কিছু মূহুর্ত !!! অভিমান সরিয়ে রেখে নতুন করে খুঁজতে দেবে সম্পর্কের গভীরতা... তুমি আমার কাছে অনেকটা রাতের অন্ধকারে এক মুঠো জোনাকির মতো, যা আমাকে একরাশ শান্তি এনে দেয়....

সব দ্বিধা সরিয়ে শ্রদ্ধার নরম দুটো বাহু দু'দিক দিয়ে আদর্শকে আলিঙ্গন করে নেয়... আদর্শের চুলে, পিঠে নরম হাতের পরশ দিয়ে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে... আদর্শের অধর শ্রদ্ধার চিবুক স্পর্শ করতেই শ্রদ্ধার সারা শরীর কেঁপে উঠলো... তারপর আদর্শের নোয়ানো কাঁধে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে...

আদর্শ : ব্যাস... ব্যাস... চুপ... চুপ... কাঁদে না রাহী... তোমাকে আমি যন্ত্রণাতে দেখতে পারি না, সহ্য করতে পারি না আমি...

শ্রদ্ধা : তুমি যে আমার কাছে ভরসার কাঁধ, শত অভিমান হলেও যে বুকে নিশ্চিত হয়ে আমি ভালোবাসার উষ্ণতা অনুভব করতে পারি...

আদর্শ : আজ আমার স্পর্শে স্পর্শিত হবে তুমি... আমাদের ভালোবাসার প্রত্যয় চিরকাল অমলিন থাকবে...

শ্রদ্ধাকে আর কিছু বলার সুযোগ দেয় না আদর্শ... মূহুর্তের জন্য যেন তার সংযমের বাঁধ ভাঙ্গে... শ্রদ্ধার কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেয় এই চাঁদনী রাতে... দুই হাতের বন্ধনে তার চন্দ্রিমাকে বুকের গহীনে আহ্বান করে... শ্রদ্ধাকে নিজের মধ্যে আঁকড়ে ধরে প্রেমের মূহুর্ত এঁকে দেয় সোহাগের পাল তুলে... অধরে অধরে চুম্বকীয় চুম্বনের আহ্লাদী ভালোবাসায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আবেগের নৌকায় অভিমানের ভেলা ভাসিয়ে দেয় শ্রদ্ধা... ঠোঁটে ঠোঁট মিশ্রিত হয় বারেবার নিরন্তর আবদারি সুখে... আবেশের ভিড়ে অনুভূতি আর ভালোবাসার যাত্রা শুরু হয়... প্রেম জোয়ারের স্রোত হয়ে শ্রদ্ধা আদর্শকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ভালোবাসার নিশ্চিত নীড়ে...

জানলা দিয়ে জুঁই ফুলের গন্ধ ভেসে এলো... শ্রদ্ধার লাজে রাঙা হওয়া হাসি ঢেকে গেল চাঁদের কিরণে... চন্দ্রকান্ত মনি চন্দ্রমল্লিকা রূপী প্রস্ফুটিত প্রেমের কাননে চন্দ্রালোকিত হয়... চাঁদের আলো ঘরের মধ্যে আসছে বড় দ্রুত... আদর্শের ভালোবাসায়, আদরে শ্রদ্ধার আঁচল আজ এলোমেলো... বিভাজিকা সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে... শ্রদ্ধা আদর্শের বুকে নিজের মাথা রাখলো... আদর্শ শ্রদ্ধার গায়ের আঁচল ঠিক করে দিয়ে তার কপালে অধরপরশ দেয়...

তারপর সরে এসে দাঁড়ায় জানলার কাছে, চোখ দিয়ে দু'ফোটা অশ্রু ঝরে পড়লো... শ্রদ্ধা আদর্শের বহু আকাঙ্খিত আবেগ, অনুভূতি যা এতদিন গভীরের চাওয়া-পাওয়ার তরঙ্গায়িত ঢেউ ছিল... আজ তার প্রেয়সী তাদের সুদৃঢ় সম্পর্কের ঘনিষ্ঠ আলিঙ্গনে উত্তপ্ত অনুভূতিতে তার কাছে ধরা দিয়েছে... এখনো আদর্শের শিরা উপশিরা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শ্রদ্ধার আদরের, ভালোবাসার ক্লান্তিহীন স্ফুলিঙ্গের অনন্তহীন দিশা... নিজেকে সংযত করতে থাকে আদর্শ... না... তার উচিত হয় নি সংযমের বাঁধ ভাঙার... সামনে বড় অগ্নিপরীক্ষা... সে বাঁচবে কি মরবে- কিছুই নিশ্চিত নয়... এর মধ্যে নিজের ভালোবাসার বাহুডোরে শ্রদ্ধার বেঁধে ফেলা তার একদমই উচিত হয় নি...

আত্মমগ্ন আদর্শ খেয়াল করে না, তার জানলার সোজাসুজি একটা ছাদে একটা আবছায়া Sniper Rifle-এ Silencer লাগিয়ে অপেক্ষা করছে তার প্রাণবায়ু চিরদিনের মতো নিভিয়ে দেবার জন্য, অপেক্ষা করছে সুবর্ণ সুযোগের... এতক্ষণ শ্রদ্ধা জানলার সামনে থাকায় সে গুলি চালাতে পারে নি... এবার আদর্শ একা জানলাতে এসে দাঁড়াতেই সে প্রস্তুতি নেয়...

শ্রদ্ধা এসে আদর্শের পিঠে মাথা রাখে, পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আদর্শকে...

শ্রদ্ধা : কি হয়েছে আদি !!! তুমি কি অনুতপ্ত !!!

আদর্শ শ্রদ্ধার একটা হাত টেনে তাতে আলতো চুম্বন করে...

আদর্শ : শ্রদ্ধা, তোমাকে ভালোবাসতে পেরে আমি ধন্য হলাম... একদিন তুমি সব সত্যি জানতে পারবে রাহী... তখন আমি থাকি আর নাই থাকি...

আদর্শের হাত গলে শ্রদ্ধা আদর্শের সামনে এসে দাঁড়ায়...

শ্রদ্ধা : আমি বেঁচে থাকতে তোমার কিছু হবে না... আমি গোপালকে বলেছি তোমার সব বিপদ আমা... আহহহ... আদ... আদিইই... আহহহ...

শ্রদ্ধা যন্ত্রণাতে কঁকিয়ে উঠে আঁকড়ে ধরে আদর্শকে.... আদর্শ ক্ষণিকের জন্য বুঝে উঠতে পারে না, কি হয়েছে শ্রদ্ধার !!!

আদর্শ : রাহীইইইই !!! রা... রাহী !!! কি হয়েছে !!! কি হয়েছে বলো !!! এমনি করছো কেন !!!

কথা বলার ক্ষমতা হারিয়েছে শ্রদ্ধা... লুটিয়ে পড়ে আদর্শের বুকে... শ্রদ্ধাকে আঁকড়ে ধরতে গিয়েই শ্রদ্ধার পিঠে কিছু একটা আদর্শের হাতে ঠেকে, আদর্শের বুঝতে অসুবিধা হয় না শ্রদ্ধার পিঠ ভিজে যাচ্ছে রক্তে...

শ্রদ্ধা চেতনার আড়ালে চলে যাবার আগে সে অনুভব করেছিল, আকুল দুটো চোখ তার মুখের উপর আর শক্ত দুটো বাহু নিজের সর্বশক্তি দিয়ে তাকে আঁকড়ে ধরেছে... তারপর আর কিছু মনে নেই শ্রদ্ধার...


(তাহলে কি আদর্শ তথা মেঘদূত তথা MDB-কে নিজের ভালোবাসার বিনিময়ে নিজের মাতৃভূমিকে ভালোবাসার মূল্য দিতে হবে !!! দেশের নিরাপত্তার জন্য থমকে যাবে আদি-রাহীর ভালোবাসা !!! হবে শ্রদ্ধা আর আদর্শের ভালোবাসার ভবিষ্যত !!)



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance