অবিস্মরণীয় ভালোবাসা ❤ পর্ব ১৩
অবিস্মরণীয় ভালোবাসা ❤ পর্ব ১৩
সেদিন অহনার মায়ের সাথে বিয়ের ব্যাপারে সব আলোচনা সেরে সোজা আদির অফিসেই চলে আসে ইভান তারপর সেক্রেটারী মিঃ ঘোষালের সাথে ওয়েডিং প্ল্যানারদের তালিকা তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । দুজনে মিলে মোট পনেরোটি নামকরা ওয়েডিং প্ল্যানারদের একটা তালিকা তৈরী করে , তারপরে শুরু হয় ফোন করে পরের দিন আদির বাড়িতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ফিক্সড করা ।
সব কাজ সেরে মিঃ ঘোষাল ও ইভান দুজনেই এসে উপস্থিত হয় আদির কেবিনে ।
ইভান : " ভাই মোট পনেরোটি নামকরা ওয়েডিং প্ল্যানারদের সাথে কালকে সকাল দশটা থেকে তোর বাড়িতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ফিক্সড করা হয়েছে । আমি ভাবছি একবার অহনাকে ফোন করে বলবো কালকের দিনটা যদি ও একটু ছুটি নেয় তাহলে তোরা দুজন মিলে সব দেখেশুনে নিতে পারবি । তুই কি বলিস ? আমি কি ফোন করবো অহনাকে ? "
কাজে খুবই ব্যস্ত থাকায় আদি প্রথমে উপর - নীচে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায় তারপর প্রায় সাথে সাথেই না করে বলে, " না থাক তোকে ফোন করতে হবে না, আমিই ফোন করে নেবো । "
ইভান : ( ভ্রু কুঞ্চিত করে ) " তুই করে নিবি ? কেনো ভাই আমি ফোন করলে ক্ষতি কী ? "
মিঃ ঘোষাল : ( একটু হেসে ) " ইভান স্যার, আপনি ফোন করলে হবে না । আপনি বুঝতে পারছেন না , একটু বোঝার চেষ্টা করুন । "
এই বলে মিঃ ঘোষাল ইভানের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে সটান তাকায় আদির দিকে , আর থতমত খেয়ে মাথা নিচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে । আদি বুঝতে পারে এরা দুজন মিলে মজা করছে তার সাথে , তাই খুব রেগে যাওয়ার ভান করে ইভান এবং মিঃ ঘোষালের দিকে কটমট করে তাকিয়ে জলদগম্ভীর স্বরে বলে , " মিঃ ঘোষাল আপনি দয়া করে ইভানকে নিয়ে আমার কেবিন থেকে বেরিয়ে যান । "
ইভান : " আচ্ছা আচ্ছা , আমরা চলে
যাচ্ছি । তুই মন - প্রাণ দিয়ে অহনার সাথে কথা বল , দেখিস গল্প করতে গিয়ে আবার আমাকে ভুলে যাস না । হ্যারে আদি এখনি এই অবস্থা, বিয়ের পর তো বোধহয় আমাকে বাড়িতে ঢুকতেই দিবি না । "
এই বলে মজা করে হাসতে থাকে ইভান আর তখনই আদি টেবিল চাপড়ে চীৎকার করে বলে , " বেরোবি তুই আমার কেবিন থেকে , get lost . "
ইভান আবারও মজা করে মুখটা করুণ করে আদির কেবিন থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে গান শুরু করে --
" দোস্ত দোস্ত না রাহা
প্যায়ার প্যায়ার না রাহা
জিন্দেগী হামে তেরা
এ্যায়তবার না রাহা, এ্যায়তবার না রাহা "
ইভান আর মিঃ ঘোষাল ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আদি অহনাকে ফোন করে । এবার ফোন করার প্রায় সাথে সাথেই ফোনটা রিসিভ করে অহনা ।
অহনা : ( একটু অবাক হয়ে ) " কি হোলো আদি ? সকালে একবার ফোন করলে আবার এখন , any problem ? মায়ের সাথে কি ইভানের কথা হয়েছে ? কি বললো মা ? "
আদি : ( একটু হেসে ) " আরে একটু দম নাও, একনাগাড়ে বলতে থাকলে তো হাপিয়ে যাবে তুমি । আমি এখন মারাত্মকভাবে আহত । "
অহনা : ( অবাক হয়ে কাঁদো কাঁদো স্বরে )
" আহত মানে ? কি হয়েছে তোমার ? কোথায়, কিভাবে চোট লাগলো ? আদি, আমি এক্ষুনি আসছি । "
আদি : ( হো হো করে হেসে ) " রোসো রোসো মিস সান্যাল , ওহ্ ! Sorry মিসেস
মুখার্জী । "
অহনা : ( একটু রাগত স্বরে ) " আদি এখন মজা করার সময় না , কোথায় আঘাত লেগেছে আগে সেটা বলো । আমার খুব টেনশন হচ্ছে , আমি এখনই আসছি তোমার অফিসে । "
আদি : ( ঠাট্টার মেজাজে ) " আঘাত লেগেছে ? কার আঘাত লেগেছে ? "
অহনা : ( পুনরায় রাগত স্বরে ) " What do you mean Adi . তুমি সত্যি বলবে না আমি ইভানকে ফোন করবো । তুমি একটু আগেই বললে তুমি নাকি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছো , আর এখন বলছো কার আঘাত লেগেছে ? দ্যাখো আদি, আমি কিন্তু.......... " ।
আদি : ( শান্ত গলায় ) " আহা ! রাগ করছো কেনো ? সত্যিই আমার কোনো আঘাত লাগে নি , আমি মজা করেছি । আমি ঐ কথা বলেছিলাম কারণ তুমি আমার ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথেই যেভাবে প্রশ্নবাণে আমাকে বিদ্ধ করতে শুরু করলে তাই । আমার কিছু হয়নি , তবে হ্যাঁ তুমি যখন আসবে বললে তখন আর অফিসে এসে লাভ নেই । তুমি তো এমনিতেই আয়ুশের কাছে যাবে, আমিও এখন বাড়িতে ফিরবো । তবে এখন ফোনটা রাখছি মিসেস মুখার্জী , বাড়িতে সামনাসামনি বসে কথা হবে । "
এই বলে অহনাকে পাল্টা আক্রমণের কোনো সুযোগ না দিয়েই আদি তাড়াতাড়ি করে ফোনটা কেটে দিয়েই মিঃ ঘোষালকে ডাকে ।
মিঃ ঘোষাল : ( কেবিনের দরজায় ঠকঠক শব্দ করে ) " May I come in Sir ? "
আদি : ( শশব্যস্ত হয়ে ) " হ্যাঁ হ্যাঁ আসুন , আসুন মিঃ ঘোষাল । "
অনুমতি পেয়ে আদির কেবিনে ঢুকে আসে মিঃ ঘোষাল ।
********* To Be Continued