"অবহেলা"
"অবহেলা"
অবহেলা
সুমনার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল সে একদিন খুব বড় হবে, নিজের একটা পরিচয় গড়ে তুলবে। কিন্তু তার পরিবার কখনোই তাকে গুরুত্ব দিত না। ছোট বোন তৃষাকে সবাই আদরে রাখত, আর সুমনাকে যেন একদমই কেউ মনে রাখত না। মা-বাবার চোখে তৃষা সবসময়ই বেশি মেধাবী, বেশি আদুরে, আর সুমনা? সে ছিল শুধু এক অবহেলার নাম।
স্কুলে ভালো রেজাল্ট করলেও মা-বাবা কখনো তেমন প্রশংসা করত না। বরং বলত, "তৃষা তোমার চেয়ে অনেক ভালো করবে।" এসব শুনতে শুনতে সুমনা ধীরে ধীরে নিজের ভেতরেই গুটিয়ে গেল। কারও কাছ থেকে কিছু আশা করাও বন্ধ করে দিল।
কিন্তু সে হাল ছাড়েনি। পড়াশোনায় মন দিল, নিজের স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে বড় হতে লাগল, স্বপ্নের দিকে এক পা এক পা এগোতে লাগল। অবশেষে, কঠোর পরিশ্রমের ফলে সে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো। তার সফলতার খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী সবাই তাকে নিয়ে গর্ব করতে লাগল।
কিন্তু মা-বাবার প্রতিক্রিয়া? তারা কেবল বলল, "ভালোই তো, তবে তৃষা তো আরো ভালো করবে!"
সেদিন রাতে সুমনা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল, সে আসলে আর কষ্ট পায় না। সে শিখে গেছে, অবহেলা তার জীবনের অংশ হলেও, সে নিজেকে কখনো অবহেলা করবে না।
সেদিনই সে সিদ্ধান্ত নিল, সে শুধু নিজের জন্যই লড়বে। মা-বাবার স্বীকৃতি না পেলেও, সে নিজেকে প্রমাণ করবেই। কারণ, জীবন কখনো অন্যের স্বীকৃতির ওপর নির্ভর করে না, বরং নিজের প্রতি বিশ্বাসই সবচেয়ে বড় শক্তি।
