Abanti Pal

Crime Thriller

2  

Abanti Pal

Crime Thriller

আত্মসমর্পণ

আত্মসমর্পণ

2 mins
206


আজ প্রায় একযুগ দীর্ঘাপেক্ষার নিরসন ঘটিয়ে, প্রখ্যাত অপরাধী রনধীর চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হল। কমপক্ষে ত্রিশ-বত্রিশটি নৃসংশ হত্যামামলায় এই দাগী আসামীর নাম জড়িয়ে আছে। তার হালচাল যেমন বোধগম্যের বাইরে ছিল, তেমনি ধুরন্ধর ছিল সে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে ধরা যায়নি। সমাজের নিয়মশৃঙ্খলাকে হেলায় বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নির্বিরোধে পালিয়ে বেড়াত অনায়াসে। আজ সেই ধরা দিয়েছে স্বেচ্ছায়। রাজ্য জুড়ে আজ স্বস্তির নিঃশ্বাস আর পুলিশমহলের জয়জয়কার।

সবাই আনন্দে মেতে উঠলেও, বড় সাহেব মৃদুল সান্যালের মনের খচ্খচানিটা কিছুতেই দূর হচ্ছে না। কি এমন অপ্রত্যাশিত বিবেকদংশনে পড়ল লোকটা, যে নিজে থেকে এসে ধরা দিল আজ? নিশ্চুপে, বিশিষ্ট কারাকক্ষের দিকে পা বাড়ালেন উনি। এই রহস্যের উদঘাটন না করলে শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন না কিছুতেই।

পায়ের আওয়াজে ঘুরে তাকালো আসামী,

‘আজ তো আপনার বিজয়ের রাত, সাহেব’ মুখে এক ক্রূর হাসি লেগে রয়েছে।

‘নিজে থেকে ধরা দেওয়ার কারণটা কি?’ রক্তবর্ণ চক্ষে চাপা গর্জন ছাড়লেন সান্যালবাবু।

‘সারাজীবন স্বার্থান্বেষে, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে সমাজের প্রকৃত হোতাদের শেষ করে অনেক পাপ করলাম। তবে যার নির্দেশে ছদ্মপরিচয়ে, জীবন বাজি রেখে এতো কিছু করলাম, সেই যখন আমাকে সৎ-পথে আসতে বাধা দিল, উপরন্তু আমার স্ত্রী-সন্তানকেও কেড়ে নিলো, তখন তাকে আর মর্যাদা দেব কেন? তাই আজ নিজেই শেষ করতে এলাম আসামী রনধীর চট্টোপাধ্যায়কে।’

‘রণধীরদের কখনো মৃত্যু হয় না, একজনের পরিবর্তে আরো সহস্ৰজন আসবেই’ কুন্ঠাভরা স্বরে বললেন সান্যালবাবু।

‘সেইজন্যই তাদেরকে উৎস থেকে নির্মূল করতে ধরা দিলাম আজ’ প্রত্যুত্তর আসামীর।

‘নিজেই বন্দী হয়ে সেটা অসম্ভব’ হুঙ্কার সান্যালের ।

আচমকা গরাদের ফাঁক দিয়ে একটা সাইলেন্সার বন্দুক সান্যালের দিকে তাগ করে হেসে উঠল আসামী

‘বাঘকে নিজের ডেরায় শিকার করার মজাই আলাদা, মিস্টার রনধীর চট্টোপাধ্যায়। আজ ছদ্মনামের আর স্বনামের রনধীর, দুজনেই শেষ হল চিরতরে!’


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Crime